
মিয়ানমারের উত্তর সালিঙ্গি টাউনশিপ ও সাগাইং অঞ্চলে নতুন করে আবার তাণ্ডব চালিয়েছে দেশটির সামরিক জান্তা।এছাড়া এসব এলাকার অসংখ্য গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে সেনাবাহিনী। এতে আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে প্রায় সহস্রাধিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এ ঘটনা ঘটে বলে খবর প্রকাশ করে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
খবরে বলা হয়, ইয়ে খার এবং শ্বে হতাউক গ্রামের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে প্রায় ১৫০ জন সেনা সদস্য। সালিঙ্গির এক বাসিন্দা বলেন, গত মাসে জান্তা বাহিনী এখানে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছিল। যারা প্রাণ নিয়ে পালাতে পেরেছিলেন তারা ক'দিন আগেই ফিরেছেন। এরমধ্যে আবারও হামলা চালালো সেনারা।
খবরে বলা আরো হয়েছে, ইয়ে খার এবং শ্বে হতাউকে সব মিলিয়ে আড়াই শতাধিক ঘর আছে। সেনা সদস্যদের লাগানো আগুনে কতগুলো ঘরে পুড়ে গেছে, তাৎক্ষণিকভাবে বের করতে পারেনি গ্রামবাসী। তবে এলাক ১০টি গ্রাম পরিত্যাক্ত হয়েছে। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য দ্রুত খাদ্য সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন অনেকে।
গত জুনেও সালিঙ্গির গ্রামে সামরিক অভিযানে কয়েক হাজার বেসামরিক লোক নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। যাদের অনেকে এখনও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারেনি।
সালিঙ্গিকে মিয়ানমারের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের শক্ত ঘাঁটি বলে ধারণা করা হচ্ছে। সু চি’র সরকার ক্ষমতাচ্যুতের পর থেকেই দেশটির সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ছোট বড় বিভিন্ন গোষ্ঠী। সাবেক সেনা, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠন হওয়া এসব গোষ্ঠীগুলো প্রায় সময় সেনা বহরে হামলা চালিয়ে আসছে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর সাগাইং অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস্তচ্যুত হয়েছেন। অভ্যুত্থানের আগে মিয়ানমারে অনেক বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যা ছিল এবং জাতিসংঘের সংস্থা ধারণা করছে দেশটির ১২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সু চি’র সরকার পতনের আগে ২০১৭ সালে রাখাইনে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নে সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সব মিলিয়ে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজার, উখিয়াসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে। সূত্র: ইরাবতী