Logo
শিরোনাম

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ল

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ |

Image

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার দেশে জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাতে সেনা অভ্যুত্থানের চার বছর পূর্তির ঠিক একদিন আগে এই ঘোষণা এলো। খবর রয়টার্সের।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জান্তা বাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে দেশে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বার বার বৃদ্ধি করে ক্ষমতা আকড়ে ধরে রেখেছে জান্তা বাহিনী।

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে সেনাবাহিনী উৎখাত করায় মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। জান্তা সরকার এই বছর একটি নির্বাচন আয়োজেনর করার পরিকল্পনা করছে। যদিও সমালোচকরা বলছেন, ক্ষমতাসীন জেনারেলরা প্রক্সির মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে নির্বাচনের নামে প্রহসন করছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার ডিজিটাল নিউজ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জরুরি অবস্থা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলেছে, সফলভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা ও শান্তি এখনো প্রয়োজন।


আরও খবর



ডাকাত-ধর্ষকদের রক্ষার নোংরা খেলা বন্ধ করুন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫ |

Image

রাশেদ মেহেদী, সিনিয়র সাংবাদিক :

ভুক্তভোগী যাত্রীদের বর্ণনায় এটা স্পষ্ট যে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলসের "আমরি ট্রাভেলসের" বাসটিতে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় বাসের চালক ও তার সহকরারিরা জড়িত। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এই চালক ও সহকারিরাই ডাকাত দলকে বাসে তুলে ডাকাতি করার সুযোগ দিয়েছে। 

অথচ ঘটনার তিন দিনে কোন মামলা হল না। পরে চালক ও তার সহকারিদের জামিন দেওয়ার পর একজন যাত্রীকে মামলা করার জন্য থানায় ডাকা হল। দেখা গেল থানায় অভিযুক্ত চালক আর তার সহকারিরাও গেছেন আরেকটি মামলা করতে...! 

এটা অসৎ, দূর্নীতিবাজ পরিবহন নেতাদের নোংরা খেলা। তারা শুরু থেকেই মামলাটি দুর্বল করতে চাচ্ছেন। সে কারনে তারা প্রশাসনকেও ব্যবহার করছেন। 

বাংলাদেশে অভ্যুত্থান হয়, সরকার বদল হয়, আগের সরকারের প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা বদলায়, কিন্তু পরিবহন খাত ঘিরে সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ অটুট থাকে। বিগত সরকারের আমলে পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করা নেতা নামধারী সন্ত্রাসীদের কেউ জেলে, কেউ পালিয়ে, কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখুন আগের সরকারের সেই নেতাদের বন্ধুরাই এখন বিপ্লবী সেজে পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক, গডফাদারের পদ অলংকৃত করে আছেন।

আমার প্রায় ৩০ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় দেখেছি পরিবহন খাতে রাজনৈতিক দলে ছড়িয়ে থাকা সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটের সদস্যদরা দৃশ্যত প্রতিপক্ষ হলেও পর্দার আড়ালে তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু।  এ কারনেই সরকার বদলায়, কিন্তু পরিবহনের সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট আর তাদের নোংরা খেলা অটুট থাকে।


আরও খবর

ঈদ ঘিরে সক্রিয় জাল নোট চক্র

সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫




নির্বাচনের জন্য দোয়া চাইলেন শাজাহান খান

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

কারাজীবন থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় এবং আগামী নির্বাচনে কিভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন এজন্য দোয়া চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান। কারাগারে থেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপদে আছেন বলেও মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক এই প্রভাবশালী মন্ত্রী।

বুধবার (৫ মার্চ) সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীক যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির আগে আদালতে তোলার আগে একথা বলেন তিনি।

এদিন সকাল ১০টা ৬ মিনিটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় আনিসুল হক, শাহজাহান খান, কামাল মজুমদার, আতিকুল ইসলাম, সোলায়মান সেলিমসহ অন্য আসামিদের। এসময় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও পিছনে হাত রেখে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে হাজতখানা থেকে বের করা হয় তাদের।

এসময় শাজাহান খানের কাছে কেমন আছেন জানতে চান এক সাংবাদিক। উত্তরে তিনি বলেন, আছি তোমাদের দোয়ায়। দোয়া করবা আমার জন্য।

তখন ওই সাংবাদিক বলেন, কী দোয়া করবো?

উত্তরে শাজাহান খান বলেন, দোয়া করবা যেন তাড়াতাড়ি মুক্তি পেয়ে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা কিভাবে ফিরিয়ে আনা এবং আগামী নির্বাচনে কিভাবে অংশগ্রহণ করতে পারি.. এ সমস্ত বিষয়ে দোয়া করবা। তখন ওই সাংবাদিক আবার বলেন, সবাই বলছে আপনারা দেশের বারোটা বাজিয়েছেন। তখন শাহজাহান খান বলেন, আমরা বারোটা বাজিয়েছি না কারা বারোটা বাজিয়েছে এটা সামনে প্রমাণিত হবে।

পরে তাদের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়। এসময় তাদের হাতে হ্যান্ডকাফ, মাথার হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর ১০টা ১৫ মিনিটে বিচারক এজলাসে উঠলে তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হয়। পরে আদালত এক এক করে তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

এরপর তাদের আদালত থেকে নামিয়ে সিএমএম আদালতের হাজতখানার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়। এসময় আরেক সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, আপনি এত হাসেন কেন। তখন শাহজাহান খান বলেন, আমি সবসময় হাসি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাসতে থাকবো। কারাগারে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করলে বলেন, খুব ভালো আছি। কারাগারে থেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপদে আছি। এরপর তাকে এজলাস থেকে অন্যান্য আসামির সাথে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।


আরও খবর



মাজারে হামলা করে মুসলমানদের ভেতরে বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

ইসলামকে উগ্রবাদী ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।

দেশের দূর দূরান্ত থেকে আসা হাজারো ভক্ত  জনতার অংশগ্রহণে চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের সাজ্জাদানশীন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি বিএসপি'র চেয়ারম্যান  হযরত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভাণ্ডারীর  (ম.জি.আ.) ৫৮তম খোশরোজ শরিফ পালিত হয়েছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ,হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট ও মইনীয়া যুব ফোরামের যৌথ ব্যবস্থাপনায় বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্যে বাদে ফজর  থেকে খতমে কোরআন,খতমে গাউছিয়া, শাইখুল ইসলাম হযরত সৈয়দ  মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীসহ  মাইজভাণ্ডারী মহাত্মা সাধকদের রওজা শরিফ জিয়ারত, জিকির, দোয়া কালাম পাঠসহ সেমা মাহফিল ও তবারুক বিতরণ। রাতে  আয়োজিত মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হযরত শাহসুফি সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী   বলেন, বিশ্ব মুসলিম বিভিন্নভাবে আজ অত্যাচার,নিপীড়ন,নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের শিকার। শান্তির ধর্ম ইসলামের বিজয়ের পথ সুগম করতে মুসলমানদের বিশ্বব্যাপী ঐক্যের বিকল্প নেই। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে হলে প্রিয় নবী (দ:) প্রণীত মদিনা সনদের আলোকেই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। তিনি বলেন উপমহাদেশে ইসলামের বিজয় নিশান উড়িয়েছেন আউলিয়ায়ে কেরামগণ। আজ পরিকল্পিতভাবে তৌহিদী জনতার ব্যানারে  আউলিয়ায়ে কেরামের  মাজার খানকাহ ও দরবারসমুহে হামলা করে মুসলমানদের ভেতরে বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। তৌহিদী জনতার ব্যানারে এই ধরনের উগ্র কার্যক্রম কোনভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। এক শ্রেণীর লোক ইসলামের শান্তি ও সম্প্রীতির পথ ছেড়ে অস্ত্রবাজির মাধ্যমে ইসলাম কায়েমের স্বপ্ন দেখছে। যা একটা ভুল পদক্ষেপ ও ইসলামকে উগ্রবাদী ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার গভীর ষড়যন্ত্র। তাছাড়া মাজারে হামলার মাধ্যমে উগ্রবাদীরা তরিকত পন্থী সুন্নি সুফিবাদি জনতাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।  

তাই দেশের সকল পীর মাশায়েখ হাক্কানী আলেম-ওলামাকে  ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও আর্মির উপস্থিতিতে মাজারে নৃশংস  হামলা করা হচ্ছে। আমি এই গর্হিত অপরাধের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই উগ্রবাদীদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চিত করতে হবে । এ সময় মাহফিলে থাকা হাজার হাজার নবী-অলি প্রেমিক জনতা নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার,  নারেয়ে রিসালাতের গগনবিধারী স্লোগানের মাধ্যমে হুজুর কেবলাকে সমর্থন জানায়। খোশরোজ  শরীফ মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মইনীয়া যুব ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা শাহজাদা সৈয়দ মইনুদ্দীন ফয়সাল।বিশেষ অতিথি ছিলেন মইনীয়া যুব ফোরামের কেন্দ্রীয়  সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন।  আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, আন্জুমান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খলিফা আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহা সচিব কাজী মহসীন চৌধুরী, আন্জুমান কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আলহাজ্ব কবির চৌধুরী, বিএসপি ভাইস চেয়ারম্যান  মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া মাইজভাণ্ডারী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আসলাম হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: নুরুল আনোয়ার হিরণ,বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ঢালী কামরুজ্জামান হারুন, মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ জাহিদুল আলম,কাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ,  মইনীয়া যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকবর হোসেন রুবেল,  মাইজভাণ্ডার রহমানিয়া মইনিয়া দরসে নেজামী  মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ খান সিরাজী, মাওলানা বাকের আনসারী,মুফতি মাওলানা এইচ এম মাকসুদুর রহমান, হাফেজ মোহাম্মদ নাজের হোসাইন, হাফেজ মাওলানা কেরামত আলী প্রমুখ। মাহফিল শেষে হাজরো ভক্ত আশেকানের আমিন আমিন  ধ্বনীতে  দেশ জাতি, মুসলিম উম্মাহ ও সর্বমানবতার কল্যাণ কামনা করে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ম.জি.আ.)।


আরও খবর



বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই আলুচাষীদের

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ |

Image

এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম কমে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। এক একর জমিতে আলু চাষে কৃষকের খরচ হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। আলুর বাজারদর অনুসারে কৃষক এখন দেড় লাখ টাকাও উঠাতে পারছেন না। ফলে বর্তমান সময়ে প্রতি একর জমিতে কৃষকের ক্ষতির মুখে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৭-৮ টাকা।

কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে আলুর উৎপাদনে আলুবীজের তীব্র সংকট ছিল। সেই সংকটের কারণে বেশি দামে বীজ কিনতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

এ ছাড়া হিমাগারের খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু আলুর দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার রায়গঞ্জের কৃষক আব্দুল করিম বলেন, এবার সাড়ে ছয় একর জমিতে আলু আবাদ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে তার কপালে চিন্তার ভাঁজ। লাভ তো দূরের কথা, কীভাবে লোকসান কমানো যায় তা নিয়ে ভাবছি। প্রতি কেজিতে লোকসান সাত-আট টাকা।

এবারে বীজের খরচ বেশি হয়েছে জানিয়ে একই অঞ্চলের কৃষক সুকারু চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রতি কেজি আলুর বীজ কিনছি ১১০-১১৫ টাকায়। গতবারের চেয়ে অনেক বেশি। এক একর জমি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে আলু আবাদ করছি। বেশি দাম দিয়ে সার কেনা লাগছে। কেজির হিসাবে আলু রাখতে বস্তাপ্রতি আমাদের খরচ বেড়েছে ১০০ টাকা করে। কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখার জায়গা নেই। সব দিক দিয়েই কৃষকের বিপদ। সরকার কোল্ড স্টোরের দর ঠিক করি দেয়। আলুর দরও ঠিক করি দেউক। আমরা আলুর ন্যায্যমূল্য চাই।’

ঠাকুরগাঁওয়ের আলু চাষি আহসানুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ফলন ভালো হওয়ায় আমাদের খুশি হওয়ার কথা ছিল, অথচ তার বদলে এখন আহাজারি করতে হচ্ছে। আলু চাষ করে এমন লসের মুখে পড়ছি।’ তিনি বলেন, ‘বীজ, সার, লেবার কস্টিং মিলায়ে বিঘাপ্রতি আমার খরচ পড়েছে লাখের ওপরে। আর এখন আলু বিক্রি করে পাচ্ছি গড়ে ৬৫ হাজার। বিঘায় ৩৫ হাজার টাকা লস।’

বাম্পার ফলন হওয়ার পরও হাবিবের মতো হাজারো মানুষ এ বছর আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন। অথচ মাত্র কয়েক মাস আগেই দেশের বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হতে দেখা গেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো হিমসিম খাওয়ার একপর্যায়ে ভারত থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছে সরকারকে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতিবছর পর্যাপ্ত উৎপাদন হওয়ার পরও সংরক্ষণের অভাবে দেশের আলুর বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।

গত মৌসুমে প্রতি কেজি আলুর দাম উঠেছিল ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। এতে লাভবান হওয়ায় এবার বেশি জমিতে আবাদ করেছেন তারা। এবার মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাকায়। সেই আলু এখন মাঠে বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, চাষিরা যদি ন্যায্যমূল্য না পান, তাহলে লোকসান গুনতে হবে। সে ক্ষেত্রে আলু চাষে আগ্রহ হারাবেন তারা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল এক কোটি চার লাখ ৩২ হাজার টন, যা গত অর্থবছরে ছিল এক কোটি ছয় লাখ এক হাজার ১৮২ টন। ফলে এক বছরের ব্যবধানে আলুর উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ১.৬২ শতাংশ। চলতি বছরে আলুর ফলন এখনো পর্যন্ত বেশ ভালো। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এখন রপ্তানি বাজারে সম্ভাবনা থাকলেও রোগবালাইয়ের কারণে সেখানেও উপেক্ষিত বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। আলুতে ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে আলু রপ্তানিতে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আলু ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

এদিকে কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাবর কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ম্যানেজার শামীম আল মাসুদ বলেন, ‘আমাদের কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১১ হাজার টন, যা পুরোপুরি বুকড। গত বছর এই সময়ে আমাদের কাছে আলু এসেছিল ৩০ হাজার টন। এ বছর এসেছে ৮০ হাজার টন। গতবারের তুলনায় এ বছর আলুর চাপ অনেক বেশি।

হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও সম্প্রতি একই দাবি করা হয়।

সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, হিমাগারের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের খরচ দিতেই তো সাত টাকা চলে যায়। এ পরিস্থিতিতে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান হিমাগার মালিকরা।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মো. আবু আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতিবছর আমরা লস দিবো, সেটা তো হয় না। যাদের কথা ভেবে আমরা এতদিন লস দিয়েছি, তারাই তো কয়েক মাস আগে ৮০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে মোটা টাকা আয় করেছে। তাহলে কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া দিতে অসুবিধিা কোথায়?

তবে কৃষকদের দাবির মুখে সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি হিমাগারের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী, এখন থেকে হিমাগারে আলু রাখতে প্রতি কেজিতে চাষিদের ছয় টাকা ৭৫ পয়সা করে গুনতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, এবার আলুর ভালো ফলন হয়েছে। এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আলুর উৎপাদন বেশি হবে। উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম কম থাকায় কৃষকের মধ্যে উদ্বেগ আছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।


আরও খবর

ঈদ ঘিরে সক্রিয় জাল নোট চক্র

সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫




৩ দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে জাপান

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে জাপান।আজ সোমবার দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাপানের তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আগুন নেভাতে প্রায় ১ হাজার ৭০০ অগ্নিনির্বাপক কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলীয় ইওয়াতে অঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডে একজনের মৃত্যু হয়। অগ্নিনির্বাপণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সোমবার জানিয়েছে, ওফুনাতো শহরের কাছে বৃহস্পতিবার থেকে আগুন প্রায় ২ দুই হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে।

টোকিওর ইউনিট সহ জাপানের ১৪টি অঞ্চলের দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছেন। সেনাবাহিনীসহ ১৬টি হেলিকপ্টার আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গতকাল রবিবার পর্যন্ত ৮৪টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও বিস্তারিত এখনও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ২ হাজার বন্ধু বা আত্মীয়দের কাছে থাকার জন্য এলাকা ছেড়ে চলে গেছে, এবং ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে-র ওফুনাটো থেকে তোলা ভোরের এক ফুটেজে ভবনের কাছে কমলা রঙের আগুনের শিখা এবং বাতাসে সাদা ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।

সরকারি তথ্য অনুসারে, ১৯৭০-এর দশকের পর থেকে দাবানলের সংখ্যা কমেছে। ২০২৩ সালে জাপান জুড়ে প্রায় ১ হাজার ৩০০টি দাবানল ঘটেছিল, যা ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঘনীভূত ছিল। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় এবং প্রবল বাতাস বইতে থাকে। 


আরও খবর