শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :
নওগাঁর মহাদেবপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান ও মহাদেবপুর থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাশমত আলী পৃথক ভাবে মতবিনিময় করেছেন। সোমবার বিকেল ৩টায় মহাদেবপুর থানা ভবনে আর গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ইউএনও তার সভাকক্ষ শাপলায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় থানার অফিসার ইনচার্জ হাশমত আলী বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি মহাদেবপুরে যোগদান করেন। এর আগে তিনি নওগাঁয় জেলা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০০৫ সালে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ ট্রেনিং একাডেমিতে যোগদান করে সাফল্যের সাথে ট্রেনিং সম্পন্ন করেন। এরপর সিরাজগঞ্জে শিক্ষানবীশ সাব ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেন। সেখান থেকে বিভিন্ন সময় একই পদে ঠাকুরগাঁও, পীরগঞ্জ, হরিপুর এবং ইন্সপেক্টর (তদন্ত) পদে রাজশাহীর পবা, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া প্রভৃতি থানায় দায়িত্ব পালন করেন। দুর্গাপুর থানায় তিনি অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের আগষ্টে তিনি নওগাঁয় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ পদে যোগ দেন। তিনি দেশের পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সর্বোচ্চ শ্রম দিবেন বলে জানান।
অপর মতবিনিময় সভায় ইউএনও আরিফুজ্জামান বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি মহাদেবপুর উপজেলায় যোগদান করেন। এরআগে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টরেট আরডিসি পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ৩৪ তম বিসিএস ক্যাডার। তার দেশের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। তিনি বলেন, গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের দর্পণ। দর্পণের সামনে আমি যেভাবে দাঁড়াবো, সেভাবেই আমাকে দেখা যাবে। সুতরাং যে, যে রকম, সংবাদপত্রে তাকে যেন সেরকম ভাবেই প্রকাশ করা হয়। আমি নিজেও যদি কোন অন্যায় করি তাহলেও আপনারা নির্ভয়ে সেটা লেখবেন।
তিনি আরো বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছে। এরা রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কার করছেন। আপনারাও আপনাদের লেখনির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করবেন। আপনারা যে কোন সময় যে কোন বিষয়ে আমার কাছে বলবেন। আমি অবশ্যই আপনাদেরকে সহযোগীতা করবো।তিনি বলেন, কলেজে পড়ার সময় আমরা একটি বিষয়ে আন্দোলন করছিলাম। কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরদিন খবরের কাগজে ছাপা হলো আমরা নাকি গাড়ি ভাংচুর করেছি। কিন্তু সেরকম কোন ঘটনাই আমরা ঘটাইনি। এরকম ভূল সংবাদ লেখা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
ইউএনও আরো বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমি আপনাদের পরামর্শ চাই। আমারও ভূল হতে পারে। সেটা আমাকে ধরিয়ে দিলে সংশোধন করতে পারবো। আমার উপজেলা পরিষদের কেউ অন্যায় করলে আমাকে জানাবেন। আমি সমাধান করে দিবো। যদি সমাধান না হয়, তখন অবশ্যই লিখবেন। কোন কোন ঘটনা না লিখেও সমাধান করা যায়। আর কোন ক্রমেই যেন কারো বিরুদ্ধে ভূল কিছু লেখা না হয়। কোন অনিয়মের খবর পেলে তা ভালো করে যাচাই করে লিখবেন। আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন আমার পক্ষ থেকে কখনো কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। যেখানে যা কিছু ঘটছে, আপনারা আমাকে বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করবেন। আমি সবার সহযোগীতা কামনা করছি। এখানকার পরিবেশ যেন ভালো থাকে, আইনশৃঙ্খলা যাতে ভালো থাকে, সেব্যাপারে আমাকে সর্বতো সহযোগীতা করবেন। এসময় মহাদেবপুর এর
সিনিয়র সাংবাদিক কিউ এম সাঈদ টিটো ৩টি সুপারিশমালা পেশ করেন। পেশাদার সাংবাদিকদের সহযোগীতা করতে হবে। যারা খবর না লিখেই নিজেদের সাংবাদিক দাবি করেন তাদেরকে সহযোগীতা করা যাবেনা। গত ১৬ বছর যেসব সাংবাদিক বঞ্চিত থেকেছেন, তাদেরকে সহযোগীতা করতে হবে। যারা সুবিধা পেয়েছে, তাদেরকে কম সুবিধা দিতে হবে এবং ছাত্র জনতার আন্দোলনে যেসব সাংবাদিক বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, বাধা দিয়েছে, তারা যেন কোন সহযোগীতা না পায়, আর যেসব সাংবাদিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন, পালিয়ে থেকেছেন, হামলার শিকার হয়েছেন, মামলা ও জেল খেটেছেন তারা যেন সব রকম সুবিধা পান। এসময় সাংবাদিক ইউসুফ আলী সুমন দাবি করেন যে, ফ্যাসিবাদের যারা দোসর আছে এদের কঠোর হাতে প্রতিরোধ করতে হবে।
অন্যদের মধ্যে কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, কাজী রওশন জাহান,
লিয়াকত আলী বাবলু, সাজ্জাদ হোসেন, আজাদুল ইসলাম, এস, এম, আজাদ হোসেন মুরাদ, গোলাম রসুল বাবু, সাখাওয়াত হোসেন, বরুণ মজুমদার, আইনুল,
সুইট হোসেন, আককাস আলী, সোহেল রানা, অহিদুল ইসলাম,
মিজানুর রহমান মানিক, মাহবুব আলী, রশিদুল আলম রশিদ, আমিনুর রহমান খোকন, সুমন কুমার বুলেট, অসিত দাস, মোঃ আব্দুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, মোখলেছুর রহমান, আব্দুল আজিজ, ওয়াসিম আলী, সুজন, এস এম শামীম হাসান, চন্দন কুমার প্রমুখ এতে অংশ নেন