নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে সব স্তরের মানুষ ভোগান্তিতে
পড়লেও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। জীবনযাত্রার ব্যয়
সংকুলান করার কোনো পথ তারা খুঁজে না পেয়ে মধ্যবিত্তরা দিশেহারা। প্রতি ডজন ডিমের
দাম কয়েক মাসের ব্যবধানে ১২৫-১৩০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৫০-১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এখন ১২.৫০ টাকায় প্রতিটি ডিম পাওয়া গেলেও কদিন আগেই এটি ১৫ টাকা বা তারও বেশি দামে
বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলুর দাম ৩০-৩৫ টাকা থেকে এক মাসের ব্যবধানেই ৪৫-৫০
টাকায় উঠেছে।
দিনমজুর হিসেবে ঢাকায় কাজ
করেন ইব্রাহীম। তার একার রোজগারে চারজনের পরিবারের খরচ চলে। রান্নায় তার পরিবারে
সবজির মধ্যে আলুর ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশি। দাম প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার পর থেকেই
সপ্তাহে দুই কেজি আলুর জায়গায় এখন তিনি এক কেজি কিনছেন। তার বাড়িতে এখন আলু কম দিয়ে
ঝোল বাড়িয়ে দিয়ে ডিমের তরকারি রান্না হয়।
দ্রব্যমূল্যের
লাগামহীন দামে ইব্রাহীমের মতো সীমিত আয়ের অনেকেই এখন সংসারের ব্যয় কাটছাঁটের চাপে
পড়েছেন। কারণ ডিম, আলু, পাঙাশ মাছ, তেলাপিয়া,
ব্রয়লার মুরগির মতো সবচেয়ে সস্তার খাবারগুলোও এখন উচ্চমূল্যে কিনতে
গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরকে
পণ্যমূল্য
বৃদ্ধির উত্তাপ লেগেছে বেসরকারি চাকরিজীবী আফসার উদ্দিনের গায়েও। একটি সাবলেট
বাসায় স্কুলপড়ুয়া এক ছেলেসহ তিনজনের সংসার তার। ডিমের দাম যখন কম ছিল, তখন সকালে প্রায়
প্রতিদিন তিনজনে দুই-তিনটি ডিম সিদ্ধ করে খেতেন। এখন শুধু ছেলের জন্য একটি ডিমই
সিদ্ধ হয়। ক্রমবর্ধমান খরচ তার মতো পরিবারগুলোর জন্য মানসম্মত জীবন যাপন কঠিন করে
তুলেছে।
নিত্যপণ্যের
দামের ঊর্ধ্বগতিতে সব স্তরের মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য তা
অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় সংকুলান করার কোনো পথ তারা খুঁজে না
পেয়ে মধ্যবিত্তরা দিশেহারা।
প্রতি
ডজন ডিমের দাম কয়েক মাসের ব্যবধানে ১২৫-১৩০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৫০-১৫৫ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। এখন ১২.৫০ টাকায় প্রতিটি ডিম পাওয়া গেলেও কদিন আগেই এটি ১৫ টাকা বা
তারও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলুর দাম ৩০-৩৫ টাকা থেকে এক মাসের
ব্যবধানেই ৪৫-৫০ টাকায় উঠেছে।
প্রতি
পিস ডিমের দাম যখন ১৫ টাকার বেশি হয়, তখন ঢাকার ফুটপাতের দোকানগুলোতে ডিমের তরকারির দাম
২০-২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছিল। ডিমের দাম যখন কমে এবং আলুর দাম বেড়ে যায়,
তখন ডিমের তরকারি অনেক জায়গায়ই ৩৫ টাকা হয়ে গেছে।
আর
আলু ভর্তার দাম কোথাও কোথাও এখন ১০ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকায় উঠেছে। কিন্তু যেসব
বিক্রেতা দাম বাড়াননি,
তারা ভর্তায় পরিমাণ কমিয়েছেন।
ঢাকার
ফুটপাতের এই দোকানগুলোতে দিনে ও রাতে অসংখ্য দিনমজুর, গাড়িচালক,
চাকরিজীবী খাবার খান। কারণ এসব দোকানে কম খরচে খাবার খাওয়া যায়।
সরকার
এক সপ্তাহ আগে আলু, ডিম ও পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দিয়েছে। প্রতিটি ডিম ১২ টাকা,
আলু ৩৫-৩৬ টাকা কেজি এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৪-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির
নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
কিন্তু
ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। দাম বেঁধে দেওয়ার প্রায় সপ্তাহখানেক পার হতে চললেও একটি
পণ্যও নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না। ডিম এখনো প্রতিটি ১২.৫০ টাকা, আলু ৪৫-৫০ টাকা
এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।
এর
মধ্যে পেঁয়াজের দাম ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে এবং আলু কিছু জায়গায় ৫ টাকা পর্যন্ত
কমে মিলছে। আর ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার দুই দফায় ১০ কোটি পিস ডিম
আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
এসব
আমদানির ডিম আগামী সপ্তাহ থেকে দেশে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন টাইগার ট্রেডিংয়ের
স্বত্বাধিকারী সাইফুর রহমান। এসব ডিম দেশে এলে ৯-১০ টাকায় বিক্রি হবে বলেও জানান
তিনি।