Logo
শিরোনাম

নাঈমের ঘূর্ণিতে ৩৯৭ রানে শেষ শ্রীলঙ্কার ইনিংস

প্রকাশিত:সোমবার ১৬ মে ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 |

Image

নাঈম ইসলামের ঘূর্ণিতে ৩৯৭ রানে শেষ হয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস। ১৯৯ রান করেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। আর নাঈম ইসলাম একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাথিউসের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫৮ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। সোমবার চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন আগের দিন অপরাজিত থাকা শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমাল।

তবে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৬৬ রানে বিদায় নেন চান্দিমাল। একই ওভারের পঞ্চম বলে ব্যাট করতে নামা নিরোশান ডিকওয়েলাকে ৩ রানে বিদায় করে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন নাঈম। ৩২৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করে শ্রীলঙ্কা।  

লাঞ্চ বিরতির পর মাঠে নেমেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান। ওভারের দ্বিতীয় বলে রামেশ মেন্ডিসকে (১) বোল্ড করার পরের বলেই ব্যাট করতে নামা লাসিথ এমবুলদেনিয়াকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পেলেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি শ্রীলঙ্কার।

পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে স্বস্তি ফেরালেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সাকিবদের। ব্যাট হাতে থিতু হয়ে শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে নিতে থাকেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তাকে সঙ্গ দিয়ে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বিশ্ব ফার্নান্দো। কিন্তু চা বিরতির আগে শরিফুল ইসলামের বলে মাথার হেলমেটে লেগে চোট পান তিনি। ফলে চার বিরতির পর এই ব্যাটারের বদলি হয়ে নামেন আসিথা ফার্নান্দো।

ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ কিছুক্ষণ ব্যাট করে গেলেও শেষ পর্যন্ত নাঈম ইসলামের পঞ্চম শিকার হন আসিথা। ২৭ বলে ১ রান করে বোল্ড হন তিনি। ডাবল সেঞ্চুরির আশায় একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হলো না ম্যাথিউসের। নাঈমের স্পিন ঘূর্ণিতে ডাবলের এক রান আগেই সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩৯৭ বলে ১৯৯ রান করে বিদায় নেন এই ব্যাটার। ৩৯৭ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস।

বাংলাদেশের হয়ে ১০৫ রান খরচায় একাই ৬ উইকেট শিকার করেন নাঈম। এটিই টেস্টে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। এছাড়া ৩৯ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। একটি উইকেট পান তাইজুল ইসলাম।


আরও খবর



বান্দরবানে থমথমে পরিস্থিতি

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বান্দরবানে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী কেএনএফের সন্ত্রাসী হামলা, ব্যাংক লুটের পর সেনা-পুলিশের যৌথ চেকপোস্টে আক্রমণের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জেলার রুমা ও থানচি উপজেলায় দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা অস্ত্র ও টাকা লুটের ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রুমায় তিনটি ও থানচিতে একটি। এ মামলাগুলোতে পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। থানচি বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দোকানপাট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সব বন্ধ রয়েছে। রুমার পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও জনমনে আতঙ্ক এখনো কাটছে না।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো: সৈকত শাহীন জানিয়েছেন, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পুলিশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি টহল বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রুমার সোনালী ব্যাংকে হামলা অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট, সেই সাথে ব্যাংক ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে অপহরণ এবং পরপর থানচি উপজেলায় আরো বেশ কয়েকটি হামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব-সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে রুমা উপজেলার ব্যাথেলপাড়া থেকে অপহৃত ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফের একটি সশস্ত্র দল রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে হামলা করে। সেখান থেকে ১৪টি অস্ত্র গোলাবারুদ লুটের পর ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন সকালে থানচি উপজেলায় হানা দিয়ে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের প্রায় ১৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় কেএনএফ। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে থানচি বাজারে ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় আবার হামলা করে কেএনএফ। এ সময় পুলিশ ও বিজিবির সাথে সন্ত্রাসীদের গুলিবিনিময় হয়। এছাড়া গভীর রাতে থানচি-আলীকদম ডিম পাহাড় সড়কে সেনা-পুলিশের একটি যৌথ চেকপোস্টে গুলিবর্ষণ করে তারা। তবে এসব হামলার ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আবার হামলা হতে পারে এ আশঙ্কায় অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় সরে গেছে।


যৌথ অভিযান শুরু : এদিকে গতকাল বেলা ১১টায় বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজামউদ্দিনের উদ্ধার নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে র্যাব। এ সময় পাহাড়ের নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার থেকেই যৌথ সাঁড়াশি অভিযান শুরুর কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের যৌথ এই অভিযান কেএনএফ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চলবে। সন্ত্রাসীদের দমনে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মতো সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হবে। সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, র্যাবের কৌশল ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানের কারণে অপহৃত ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে কেএনএফ আগামীতে আরো বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা অপহৃত ম্যানেজারের ল্যাপটপ ব্যবহার করে সাইবার হামলা চালাতে চেয়েছিল বলেও জানান তারা। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন র্যাবের এ কর্মকর্তা। এ সময় পরিচালক জানান, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের পর পাহাড় ও ঝিরি পথে দীর্ঘক্ষণ পায়ে হেঁটে তাদের আস্তানায় নিয়ে যায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় অভিযানে নামে র্যাব।

 

একটানা ৩০ ঘণ্টা অভিযানের পর কেএনএফ সন্ত্রাসীরা র্যাবের পাতা ফাঁদে পা দেয় এবং অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে মোটরসাইকেলে করে রুমার একটি জায়গায় রেখে চলে যায়। সেখান থেকে র্যাব তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এসময় তিনি আরো বলেন ব্যাংক ম্যানেজারকে জীবিত উদ্ধারের কারণে আমরা হার্ডলাইনে যাইনি তবে আজ থেকে আমরা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করব বিভিন্ন বাহিনীর সহযোগিতায়। কারণ কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যতে হয়তো তারা আরো বড় ধরনের হামলা করতে পারে। সন্ত্রাসীদের ছাড় দেয়া হবে না সিসিটিভি ফুটেজ শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।


যৌথ তল্লাশি চৌকিতে আক্রমণ, থানচিতে গোলাগুলি : আলীকদম থেকে আমাদের সংবাদদাতা মমতাজ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে আলীকদম-থানচি সড়কের ২৬ কিলোমিটার এলাকায় আলীকদম জোনের আওতাধীন একটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়েছে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রাত পৌনে ১টার দিকে ২৬ কিলোমিটার এলাকার এ যৌথ তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা গাড়িতে করে এসে চৌকি ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা গুলি চালায়। এ সময় চৌকিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলিবর্ষণ করেন। পরে হামলাকারীরা পিছু হটে।

এছাড়া যৌথ চেকপোস্টে হামলার আগে থানচি বাজার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির সাথে সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় থানচি বাজার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টার বেশি এ গোলাগুলি চলে। স্থানীয় সাংবাদিক অনুপম মার্মা ও শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা ভালো নেই। স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে অনেকটা গৃহবন্দীর মতো অবস্থায় রয়েছেন।


অস্ত্রধারীরা এখনো দেড় কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করছে : বান্দরবানের থানচি থানার এক থেকে দেড় কিলোমিটারে মধ্যে এখনো বিভিন্ন পাড়ায় কেনএনএফ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ কথা জানান থানচি থানার ওসি জসীম উদ্দিন।

গতকাল দুপুরে সরেজমিন থানচি থানা ঘুরে দেখা গেছে সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। থানার প্রবেশমুখে ভারী অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা। জানতে চাইলে ওসি জসীম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবারের হামলার পর সন্ত্রাসীরা থানার এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অবস্থান করছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। আমাদের ধারণা, পুলিশের ওপর হামলা করে তারা নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে ও অস্ত্র লুটের পরিকল্পনা করছে। থানার জন্য বাড়তি ফোর্স আনা হয়েছে এবং আরো ফোর্স আনা হচ্ছে। সবাই অস্ত্র নিয়ে থানায় চার পাশে সতর্ক অবস্থানে আছে।


আরও খবর



নেত্রকোনায় গণহত্যা দিবসে পালন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক দলিলপত্র এবং ছবি প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সোমবার(২৫ মার্চ) দুপুরে শহরের রাজুরবাজার এলাকায় রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুলের গেইটে এই প্রদর্শন করা হয়। 

স্কুলের প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আক্তার।

এসময় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। 

পরে উক্ত প্রদর্শনীর উপর দলীয় প্রতিবেদন তৈরি করায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে বই উপহার তুলে দেন।


স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, ১৭৫৭ সন থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ের যুদ্ধ সংক্রান্ত একশত ছবি সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়েছে। রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ছবি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই। 

কারণ ওই পরিস্থিতি যেহেতু তাদেরকে দেখানো যাবে না। 

সে জন্য ছবি দেখে যেন নতুন প্রজন্ম জানতে পারে এর জন্যই এই আয়োজন। এই দুর্লভ ছবি গুলো যেখানে সেখানে পাবে না। এগুলো দেখতে  জাতীয় যাদুঘরে যেতে হবে।  


এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, এ প্রদর্শনী মাধ্যমে আমরা স্বচক্ষে বিভিন্ন ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারলাম। এখানে পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের দলিল সহ মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন দুর্লভ ছবি, অবিভক্ত বাংলা মানচিত্রসহ ২৫ শে মার্চ কাল রাত্রির বিভিন্ন চিত্র উপস্থাপন করা হয়। 

চাইলেও এই চিত্রগুলো যেকোনো জায়গায় দেখা সম্ভব নয়, একমাত্র জাতীয় জাদুঘর ও সরকারি কোন উদ্যোগ ছাড়া। আমরা স্যারের এই উদ্যোগকে আমরা ধন্যবাদ জানাই, তিনি দুর্লভ কিছু জিনিস সংগ্রহ করে আমাদের মাঝে প্রদর্শন করেছেন। 


আরও খবর



নেশাগ্রস্ত স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 |

Image

পুলক ঘটক, সিনিয়র সাংবাদিক :

নেশাগ্রস্ত ও বিকৃত স্বভাবের স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে গতকাল (১৭ এপ্রিল বুধবার) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রিয়ন্তী সাহা নামে ১৯ বছর বয়সের এক তরুণী। অত্যাচারিত মেয়েটি স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। কিন্তু হিন্দু আইনে ডিভোর্স নেই। পরে “শ্বশুরবাড়িতে হামলা করার সময় চার বোতল ফেনসিডিলসহ” মেয়েটির স্বামী দীপকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আচ্ছা বলুন দেখি, দীপ “ফেনসিডিলসহ শশুরবাড়িতে হামলা”র ঘটনাটি না ঘটালে আর কোন আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত? হিন্দু আইনে প্রিয়ন্তী সাহা প্রতিকার পাবে কিভাবে? প্রকৃত আইনে প্রতিকারের সুযোগ না থাকলে বিকৃত পন্থায় কিভাবে কি করতে হয় সে বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষ সিদ্ধহস্ত। সবকিছুতেই বিকৃত পন্থার অনুশীলন!

শুরুতেই ঝরে গেছে মেয়েটির মধুময় দাম্পত্য জীবনের সকল সম্ভাবনা। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী মাত্র এক মাস আগে গরীবের মেয়ে প্রিয়ন্তীর বিয়ে হয়েছিল এক কোটিপতির নেশাগ্রস্ত ছেলে দীপের সাথে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ অনুযায়ী, দীপ তাকে জোর করে নেশা করাতো; এমনকি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের গোপন মুহুর্তগুলো ফিল্মিং করে ফেসবুকে দিত। 

মেয়েটি ঐ স্বামীর সাথে সংসার করতে রাজি নয়। ছেলের কাকাও নেশাগ্রস্ত দীপের দুরাচারের কথা স্বীকার করেছে। এ পর্যন্ত এই তথ্যগুলি মিডিয়ায় এসেছে। এরপর দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব যখন দীর্ঘায়িত হবে, তখন হয়তো ছেলের পক্ষ থেকে মেয়েটির চরিত্রের দোষ ছড়ানো হবে। এসব নিয়ে সমাজে খোশগল্প হবে। কিন্তু এর স্থায়ী আইনগত সমাধান এবং এধরনের অবস্থার শিকার হওয়া মেয়েদের সুস্থ্য স্বাভাবিক দাম্পত্য ভবিষ্যৎ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাববে না! 

আমরা যখন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও মেয়েদের পুনঃবিবাহের আইন চাচ্ছি তখন আমাদের দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত তথাকথিত প্রগতিশীল কিছু হিন্দু বলছে “হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।” হিন্দু বিয়ে ভাঙা সম্ভব নয়। মেয়েদের পুনরায় বিয়ে হতে পারে না। বাটপারদের এসব কথা বাস্তবসন্মত নয়, প্রিয়ন্তী ও দীপের ঘটনা তার প্রমাণ। এরকম প্রমাণ অসংখ্য। 

প্রিয়ন্তী নামক ১৯ বছরের এই মেয়েটির জন্য বাকি জীবন একাকি কাটানো কতটা ভাল এবং নিরাপদ? বর্তমান স্বামীর সাথে বৈধভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে অন্য কোনো ভাল যুবকের সাথে বিয়ে দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ দিলে কি অধর্ম হবে? অথচ বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিবাহের বিধান নেই। ভারতের হিন্দু আইনে আছে; হিন্দু শাস্ত্রেও বিধান আছে। 

বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ না থাকা সত্ত্বেও এখন আইনকে পাশ কাটিয়ে বহু দম্পত্তি অবৈধপন্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। অবৈধভাবে মেয়েদের নতুন করে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। জীবনের বাস্তবতায় যে বিষয়ের চাহিদা আছে বা অনিবার্যতা আছে, তাকে শুধু আইনগতভাবে বাঁধা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। 

হিন্দু বাটপাররা অবৈধ বিবাহ বিচ্ছেদ, মেয়েদের অবৈধভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া, অবৈধভাবে দাম্পত্য সম্পর্ক করা, অবৈধভাবে সন্তান উৎপাদন এবং সেই অবৈধ সন্তানের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি সব জিইয়ে রাখতে চায়। সব অবৈধকর্ম মানবে, কিন্তু বৈধ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইন প্রণয়ন মানবে না। ইংরেজদের ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করে হিংরেজদের রেখে যাওয়া আইন মানবে! 

হিন্দুদের বড় বড় সংগঠন আছে। অথচ বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ ছাড়া হিন্দুদের কোনো সংগঠনের দাবিনামায় প্রিয়ন্তীর মতো বিড়ম্বিত জীবনের মেয়েদের মুক্তির জন্য বা নারী অধিকারের পক্ষে একটিও দাবি নেই। সবচেয়ে বড় বাটপার সেইসব হিন্দু, যারা নিজেদেরকে শিক্ষিত ও প্রগতিশীল দাবি করে; ইসলামী মৌলবাদের বিপক্ষে কথা বলে অথচ হিন্দু সমাজের সমস্যাগুলোর বিষয়ে নিরব থাকে। শুধু নিরব নয়, এরা কেউ প্রকাশ্যে, কেউ নিরবে এবং কেউ কেউ ইনিয়েবিনিয়ে ”হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” গল্পই চালিয়ে যাচ্ছে। 

মন্ত্র পরে নাকি নারী ও পুরুষের দুই আত্মা এক করে দেয়া যায়! দুই আত্মার বন্ধন হলেও সেটা আবার পুরুষের জন্য নয়। পুরুষ বিয়ে করে এক বউকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই চাইলে এক ঘন্টার মধ্যে আবার আরেকটি বিয়ের জন্য দৌড় দিতে পারে। এক পিঁড়িতে বসেই একাধিক মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। আরও বহু নারীর সঙ্গে “জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” তৈরি করতে পারে। সবগুলো বিবাহবন্ধনে শুধু নারী আটকাবে, পুরুষ মুক্ত। হিন্দু আইনে পুরুষের জন্য যতখুশি বিয়ে করতে বাধা নেই। বিয়ে ছাড়াও যত্রতত্র গমণে পুরুষের বাধা নেই; কারণ পুরুষের জন্য “সতীত্ব” নয়। 

হিন্দু পুরুষের বহুবিবাহের সুযোগ বন্ধ করার কথা বললে জন্মজন্মান্তরের বন্ধনবাদী দাদারা হৈ হৈ করে বাধা দিতে আসে। বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের দাবি জানালেও প্রগতিশীলতার মুখোশে প্রতিক্রিয়াশীল শয়তনরা আপত্তি করে। আমরা বহুবার শাস্ত্রবিধি দেখিয়ে বলেছি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিয়ে দেয়া সনাতন ধর্মে বৈধ। শাস্ত্রগ্রন্থে এর সুস্পষ্ট বিধান আছে; পৌরাণিক আমলে বিবাহ বিচ্ছেদের নজিরও আছে। একজনেরও সামর্থ্য হয়নি শাস্ত্র দেখিয়ে আমাদের দাবি ভুল প্রমাণ করার। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক কায়েমি স্বার্থ ও হীনমন্যতার ঊর্দ্ধে তারা উঠবে না। 

এরা গরু-বাছুর ও পণ্যসামগ্রির মতো মেয়েকে দান করার পক্ষে। শুধু দান নয়, এর নাম আবার “সম্প্রদান”! অর্থাৎ কোনও প্রকার শর্ত ছাড়া, সম্পূর্ণভাবে স্বত্ত্ব ত্যাগ করে ধর্মার্থে কন্যাদান। মেয়ে নাকি দানের বস্তু! দানের মধ্য দিয়ে মেয়ের উপর বাবার আর কোনও স্বত্ব থাকবে না; কন্যা দান করে বাবা পুণ্য অর্জন করবে। বাবার গোত্রেও মেয়েটির আর পরিচয় থাকবে না। একদম গোত্রান্তর! 

অনেকবার বলেছি, তোমরা একটি প্র্যাকটিক্যাল দৃষ্টান্ত আমাকে দেখাও যেখানে, বিয়ের মন্ত্রের মাধ্যমে মেয়েটির গোত্র বদলে গেছে। মেয়েটির শরীরে আর বাবা-মায়ের ডিএনএ নেই –পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে বিয়ের পর মেয়েটির সঙ্গে তার স্বামীর অথবা তার শশুর- শাশুড়ির ডিএনএ মিলছে। একজনও ডিএনএ টেস্ট করে পরীক্ষা দিতে রাজি নয়। মেয়েকে দান করেছ, তার সাথে তোমার আর সম্পর্ক নেই! দান করে মেয়েকে কি পর করে দেয়া যায়? তুমি কি বিয়ে দেয়ার পর তোমার মেয়েকে ভিন্ন সম্পর্কে বউদি ডাকতে পারবে? তাহলে গোত্রান্তর কি আসলে মিথ্যা নয়? তোমার মেয়ের গোত্রান্তর হবে কেন বন্ধু? 

শাস্ত্রে কন্যাদানের বিধান আছে, আমরা তা অস্বীকার করছি না। যজ্ঞের পুরোহিতকে স্বালঙ্করা কন্যা দান করলে পুণ্য বেশি হয়। শাস্ত্রে তাই বলা আছে। কিন্তু উপযুক্ত ছেলের কাছে বিয়ে না দিয়ে পুরোহিতকে কন্যাদান করতে কেউ রাজি হয় না। শাস্ত্রে শিশু কন্যাদানকে আরও বেশি মহিমান্বিত করা হয়েছে। আট বছর বয়সী কন্যাদানে পুণ্য অনেক বেশি। অষ্টম বর্ষীয় কন্যার বুড়ো স্বামী মারা গেলে সেই বাচ্চা মেয়েটাকে স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারলে আরও বেশি পুণ্য অর্জন করা যায়। শাস্ত্রে এসব আছে। কিন্তু সরকার আইন করে সতীদাহ ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে পুরুষের বহুবিবহাও নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন কন্যাদানের মতো অসভ্যতা বন্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করার সময় এসেছে। মানুষকে উন্নত হতে হবে, আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের সমান্তরালে চলতে জানতে হবে। 

আমি বহুবার শাস্ত্র দেখিয়ে বলেছি, কন্যাদান ছাড়াও বিয়ের বিধান আছে। শাস্ত্রে আট প্রকার বিয়ের বিধান আছে। প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর পারস্পরিক পছন্দে ও সন্মতিতে বিয়ের স্বীকৃতি শাস্ত্রে আছে। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিশেষ একটি শাস্ত্রের নির্দিষ্ট কোনো বিধান অনুসরণ করার বাধ্যবাদকতা নেই। 

সনাতন ধর্মে উদ্ভট প্রাচীন কিছু প্রথার নজির যেমন আছে তেমনি প্রথার বাইরে গিয়ে উন্নত হওয়ার তাগিদও আছে। সনাতন ধর্ম প্রগতিশীল। পরিবর্তন ও যুগধর্ম অনুসরণ সনাতন শাস্ত্রে অনুমোদিত। যারা সনাতন শাস্ত্রকে প্রতিক্রিয়াশীলতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নারীর জীবনকে দুর্বিষহ করতে চায় এবং হিন্দু নারীদের দাসীর মতো ব্যবহার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই এবং জয় আমাদের প্রাপ্য।


আরও খবর



সদরঘাটে লঞ্চে ওঠা নামার দড়ি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 |

Image

রাজধানীর সদরঘাটে এক লঞ্চের সাথে অন্য লঞ্চের ধাক্কায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ২ জনকে সদরঘাট ফায়ার স্টেশনের অ্যাম্বুলেন্সযোগে মিটফোর্ড হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া হয়। মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ২টা ৫৪ মিনিটে সদরঘাট ১১ নম্বর পল্টুনের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে একজন নারী, ৩ জন পুরুষ এবং এক শিশু রয়েছে। নিহতরা হলেন, নবিউর (১৯), বেল্লাল (২৫), মাইশা (১৩), মুক্তা (২৬) এবং রিপন হাওলাদার (৩৮)।

 

জানা গেছে, ঘাটে ভেড়ার সময় দুই লঞ্চের ধাক্কায় ঘটে এই দুর্ঘটনা।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচ জন যাত্রী লঞ্চে উঠার সময় গুরুতর আহত হন।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিন করা হবে বলেও জানা গেছে। ইতোমধ্যে এমভি ফারহানের দুই মাস্টারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আটক করেছে বিআইডব্লিউটিএ।  


আরও খবর



ঢাবি মেধা তালিকায় ৭২তম হয়েও ভর্তি অনিশ্চতায় পূর্বধলার সাইফুল

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

নেত্রকোনা প্রতিনিধি: 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩—২৪ শিক্ষাবর্ষে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৭২তম হওয়ার পরও অর্থের অভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে মো. সাইফুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী। 

সাইফুল জেলার পূর্বধলা উপজেলার নিজহোগলা গ্রামের মো. জামাল উদ্দিন ও রিনা বেগম দম্পতির ছেলে। জামাল উদ্দিন ও রিনা বেগমের সাংসারিক জীবনে বনিবনা না হওয়ায় ১৮ বছর আগে ডিবোর্স হয়ে যায়। পূর্বভিকুনীয়া গ্রামের দিনমজুর মইজ উদ্দিনের মেয়ের ছেলে সাইফুল। সাইফুল তার নানার বাড়িতে মায়ের সাথে বসবাস করেন। সংসারের ব্যয়ভার মিটিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়ালেখার খরচ বহন করার সামর্থ নেই মা রিনা বেগমের। প্রাথমিক অবস্থায় ভর্তির জন্য যে টাকা লাগবে সেটাই এখনো জোগাড় করতে পারেননি তিনি।

সাইফুল ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় নেত্রকোনার পূর্বধলার সাধুপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ এবং ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় পূর্বধলা সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। 

সাইফুল ইসলামের মা মোছা. রিনা বেগম জানান, একমাত্র ছেলে ছাড়া তার আর কেউ নেই। স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হবার পর থেকে ছেলেকে নিয়ে বৃদ্ধ বাবার অভাব অনটনের সংসারে বসবাস করছেন তিনি। অভাবের কারনে ছেলেকে তেমন প্রাইভেট কোচিং এ পড়াশুনা করাতে পারেননি। কোন মতে তাদের সংসার চলে। সাইফুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে এখন খরচ আরও বেড়ে গেল। 

দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, তার বয়স যখন দুই বছর পাঁচ মাস তখন বাবা এবং মায়ের ডিভোর্স হলে মায়ের সঙ্গে নানার বাড়িতে থাকেন। তার বাবার বাড়ি নিজহোগলা এবং নানার বাড়ি পূর্বভিকুনীয়া। তার মায়ে ইচ্ছে ছিল যে কোনভাবে ছেলেকে পড়াশুনা করিয়ে মানুষের মত মানুষ করবে। তাই তাকে পূর্বভিকুনীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয়। নানার আর্থিক অবস্থা খুবই দুর্বল ছিল তাই তাকে পড়াশুনা করানোর জন্য তার মাকে অন্যের বাড়িতেও কাজ করতে হয়েছে। কিন্তু ভাগ্য ভাল যে তার নানা— নানু, মামাদের পাশাপাশি আশেপাশে অনেক ভাল মানুষ ছিল। সবাই তাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। তার যখন টাকার প্রয়োজন হয়েছে অথবা কোন সমস্যা হয়েছ তারা সমাধান করেছেন। শিক্ষকরা তাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। এলাকার বড় ভাই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্যামল চন্দ্র এবং আরেক বড় ভাই জসিম শেখ তারা তাকে খুব কাছ থেকে সাহায্য করেছেন। দিলরুবা হাবিব শিক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ওসমান গনি সুমন স্যার, সাংবাদিক মোস্তাক আহমেদ খান সম্পর্কে তার নানা হন। তারা তাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। এভাবেই সাইফুল পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন এবং পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করে নিজেও টাকা উপার্জন করেছেন।  তিনি স্বপ্ন দেখতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবেন। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ‘ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু মায়ের পক্ষে পড়াশুনার টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। ভর্তি সুযোগ পেয়ে খুশি হয়েছিল সাইফুল। কিন্তু ভর্তি ও পড়াশুনার টাকার চিন্তায় সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার স্বপ্ন মনে হয় তার পূরণ হবে না।’ 

 

ঢাবি’র পূর্বধলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রুকন উদ্দিন রানা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বধলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ (উটচঝডঅ) মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও সহায়তা প্রদান করে। এরই ধারাবাহিকতায় সাইফুল ইসলামকে সকল বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধ্য মত সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।

 

পূর্বধলা সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক আবু হানিফ তালুকদার রাসেল বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম খুব মেধাবী ছাত্র। আমরা যতটুকু পেরেছি তাকে সহযোগিতা করেছি। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে সে হয়তো মেধা তালিকায় প্রথম থেকে দশের মধ্যে স্থান পায়নি, তবে সে যে মেধাবী তার প্রমাণ সে দিয়েছে। সমাজের বিত্তবান, মহৎ ব্যক্তি, সরকারি বা বেসরকারি দাতা সংস্থা পাশে দাঁড়ালে সাইফুলের স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি বছর ‘গ’ ইউনিটে যে ৪ হাজার  ৫৮২জন মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তাদের মধ্যে ৭২তম সাইফুল ইসলাম। অদম্য মেধাবী সাইফুল ইসলামের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের লড়াইয়ে বিত্তবান মহৎ ব্যক্তি ও দাতা সংস্থা শরিক হলে লড়াইটা সহজ হবে। সাইফুল ইসলামের সাথে ০১৯৯০-৬২৬১৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে! 


আরও খবর