Logo
শিরোনাম

নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপি-জামায়াত মতভেদ বাড়ছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ |

Image

২০২৪ সালে রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে এ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ছিল অন্যতম সহসংগ্রামী।

গত ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসন হটাতে জেল-জুলাম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এ দুদলের নেতাকর্মীরা। এ দুদলের ছাত্র-তরুণরা বিপুল ত্যাগ শিকার করেছেন হাসিনা সরকারকে গদিছাড়া করতে। তারা হয়েছেন হত্যা ও গুমের শিকার। তাদের ও দেশবাসীর আশা ছিল আন্দোলনের শক্তিগুলো ঐকমত্য থেকে দেশকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথে এগিয়ে নেবে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে আইনের শাসন পরিপন্থি কাজ এবং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জেঁকে বসা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এখন বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। জাতীয় নির্বাচন আগে নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে—এই প্রশ্নে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রবল দ্বিমত। এ প্রশ্নে দল দুটির নেতারা কার্যত বিপরীতমুখী অবস্থান নিচ্ছে ক্রমেই। যা এখন দেশবাসীর সামনে পরিষ্কার।

ভোটবর্জনের ঘোষণা দিতে পারে বিএনপি

জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন চায় না বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের পেছনে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর কূটকৌশল রয়েছে। এতে সুবিধা পাবে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিলে ভোটবর্জনের মতো সিদ্ধান্তও নিতে পারে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো।

এদিকে এলজিআরডি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা গেছে, নির্বাচন নিয়ে সরকারের এমন অবস্থানের পক্ষে নয় বিএনপি। নীতিনির্ধারণী ফোরামে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনাও করেছে দলটি। সিদ্ধান্ত হয়েছে শেষ পর্যন্ত সরকার স্থানীয় নির্বাচন করলে সমর্থন দেবে না বিএনপি। এমনকি আসতে পারে ভোটবর্জনের মতো ঘোষণাও। বিষয়টি নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় নির্বাচনকে আমরা মেনে নেব না। জনগণের প্রথম দাবি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সরকার।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনির্বাচিত এরশাদ সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের খারাপ নজির রয়েছে। সেই উদাহরণ টেনে বিএনপি নেতারা বলছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামে অহেতুক সময়ক্ষেপণ করা হবে। এর পেছনে রয়েছে সমন্বয়কদের নতুন রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী করার কূটকৌশলও।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বলেন, এদের (সরকার) মূল লক্ষ্য নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া। অন্যদিকে, ছাত্রদের সমন্বয়ে যে দল হচ্ছে তাদের সময় দেওয়া; যাতে তারা গুছিয়ে নিতে পারে। তাদের তো কোনো ক্যাডার নেই। তারা ভাবছে, একবার স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে দিলে চেয়ারম্যান, মেম্বার এরাই তাদের ক্যাডার হবে। এরাই তাদের দলকে ধরে রাখবে। এই উদ্দেশেই তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলে। এর বাইরে কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই। ক্ষমতা যতদিন পারা যায় বিলম্বিত রাখা যায়, সেই উদ্দেশেই এমন কথা বলছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। একটি নির্বাচন করতে তিন চার মাস সময় লাগে। উপজেলা, পৌসভা বা সিটি করপোরেশনে আরো সময় লাগে। এক্ষেত্রে এই নির্বাচনের জন্য এত দীর্ঘসময় তো নেই।

বিএনপি জোটের শরিক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাও স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এরশাদ আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করাই ছিল পার্টি বানানোর ধান্দা। এরকম সন্দেহ তো সবার ভেতরে ভেতরে। সরকারকে এই প্রশ্নে পড়তে হবে কেন? যদি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন (জাতীয় নির্বাচন) করা যায়, তাহলে সেটি (স্থানীয় নির্বাচন) পরে হবে। এই বিবেচনায় আমি মনে করি, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন দরকার নেই।

যদিও মাহমুদুর রহমান দাবি করেন, জনগণের সেবার জন্য স্থানীয় সরকার প্রয়োজন। তবে রাজনৈতিক সরকারের অধীনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে তিনি। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।

সংস্কার শেষে নির্বাচন চায় জামায়াত

এক যুগ পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে ‘জরুরি সংস্কার’ সেরে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পূর্ণ করে, নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে যেটুকু সংস্কার লাগে সেটুকুই করুক সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনে সমর্থন রয়েছে জামায়াতের। তিনি বলেন, কমিশনকে আমরা পরামর্শ দিয়েছি, জনগণের আকাঙ্ক্ষা, জনগণ চায় স্থানীয় নির্বাচন আগে হোক। আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন ও সম্মান জানাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে জামায়াত সেক্রেটারি ছাড়াও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, প্রকাশনা ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মজলিসে শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসূফ আলী, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পূর্বের তিনটি নির্বাচনে জনগণ যে ভোট দিতে পারেনি, সেই নির্বাচনেরই পুনরাবৃত্তি ঘটবে যদি সংস্কার সঠিকভাবে না হয়। এ দেশের জনগণ ২ হাজার ছাত্র-জনতার জীবন, ৩০ হাজার আহত জনতার রক্ত বৃথা যেতে দেবে না। এ জন্য আমরা বলেছি, সংস্কার সম্পূর্ণ করে, নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে যেটুকু সংস্কার লাগে সেটুকু করুক। আমরা পুরো রাষ্ট্রের সংস্কারের কথা বলিনি। অনেকে এটা নিয়ে ভুল বোঝার চেষ্টা করেন। এটা (সংস্কার) করতে গেলে সময় লাগে, এটা সরকারের দায়িত্ব বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে গেলে যে সংস্কারটুকু ন্যূনতম প্রয়োজন, তার জন্য যতটুকু সময় যৌক্তিক প্রয়োজন, জমায়াতে ইসলামী সে সময় দিতে প্রস্তুত। আমরা কোনো দিন, মাস, ক্ষণ বেঁধে দিইনি। সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য ‘যৌক্তিক সময়’ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বরাবরই আগের অবস্থানে রয়েছে বলে জানান সেক্রেটারি জেনারেল।

ডিসেম্বর ধরে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, গভর্মেন্ট একটি টেনটেটিভ আইডিয়া দিয়েছে। তারা যদি তাদের ঘোষিত সময়ে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ শেষ করে নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার করতে পারেন তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। মাস আমাদের কাছে ফ্যাক্টর নয়। সংস্কারটা পূর্ণ করে নির্বাচন ফেয়ার হবে কিনা, সেটার জন্য যে মাস লাগে তাতে আমরা প্রস্তুত আছি।

সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১(এ) অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল দাবি করা হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশে এ ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল।’

‘প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, সরকারি চাকরি থেকে অবসরের তিন বছর পূর্ণ না হলে নির্বাচন নয়- এমন বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে।’

ডিসেম্বর ধরে ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা বলেছি, সরকার একটি টেনটেটিভ আইডিয়া দিয়েছে। তারা যদি তাদের ঘোষিত সময়ে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ শেষ করে নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার করতে পারেন, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। মাস আমাদের কাছে ফ্যাক্টর নয়। সংস্কারটা পূর্ণ করে নির্বাচন ফেয়ার হবে কিনা, সেটা জন্য যত মাস লাগে আমরা প্রস্তুত আছি।’

এ জামায়াত নেতা জানান, প্রস্তাবনার মধ্যে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর); আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হারের নির্বাচনব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্বের ৬০টি দেশে এ ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

‘পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত রেখে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এ ব্যবস্থা দরকার বলে আমরা সুপারিশ করেছি।’

অনিয়মের জন্য ভোট আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ বাতিলের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও সুপারিশ রয়েছে জামায়াতের।

তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ৯১(এ) অনুচ্ছে পুনর্বহাল দাবি করা হযেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশে এ ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল।’

প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, সরকারি চাকরি থেকে অবসরের তিন বছর পূর্ণ না হলে নির্বাচন নয়- এমন বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে।

শর্ত পূরণ না হওয়ার যুক্তি দিয়ে এক রিট মামলার রায়ে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্ট। তাদের জন্য বরাদ্দ মার্কা দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের তালিকা থেকে বাদ দেয় নির্বাচন কমিশন।

জামায়াত আপিল বিভাগে গেলেও ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে দলটির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই আপিল পুনরুজ্জীবনের আবেদন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে। গত ২০ অক্টোবর তা পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। ফলে দলটির নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আশা তৈরি হয়।

সেই প্রসঙ্গ ধরে এক প্রশ্নে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, নিবন্ধনের বিষয়ে তারা আদালতে ‘ন্যয়বিচার’ পাবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন আইনে এত কঠিন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এ কঠিন শর্ত পূরণ করে (নিবন্ধন করা) রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এ আইনটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা বাতিল করতে হবে। দল ও রাজনীতি করার অধিকার সবার।’ এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, ‘নিবন্ধনের কোনো প্রয়োজনই নেই। দল হলেই নির্বাচন (করবে)। ২০০৮ সালের আগে নিবন্ধন আইনই ছিল না। এসব করে রাজনৈতিকভাবে দল ও রাজনীতি করার অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। এ আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।


আরও খবর



সয়াবিন তেল লাপাত্তা, ক্রেতার ধরনা দোকানে দোকানে

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে বাজারে ক্রেতার চাপ বেড়েছে। রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন সবাই। কিন্তু রাজধানীর বাজারে সব পণ্যের দেখা মিললেও পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেলের বোতল। রান্নায় দরকারি পণ্যটির খোঁজে তাই ক্রেতাদের ঘুরতে হচ্ছে দোকানে দোকানে। রোজার শুরুতেই ভোজ্যতেলে এমন বিড়ম্বনায় বেজায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারা।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অবস্থাও তথৈবচ। বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না বাজারে। দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলেরও। এর মধ্যে সরিষার তেলের দামও বাড়তির দিকে। রোজা শুরুর দুই সপ্তাহ আগে ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে বলেছিলেন, সরবরাহ খুবই ভালো। তাই এবার একটি পণ্যের দামও বাড়বে না। এ ছাড়া বাড়তি দাম রাখার কারণে প্রতিদিনই জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন দোকান ও বাজারকে জরিমানা করে চলেছেন। কিন্তু কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।

রাজধানীর কদমতলী এলাকার বাসিন্দা মো. এনামুল হক গতকাল বাজারে গিয়ে অন্তত পাঁচটি দোকান ঘুরেও পাঁচ লিটারের বোতলের সন্ধান পাননি। যে দোকানেই যাচ্ছেন, বলা হচ্ছে বোতল নেই। কথা হলে এনামুল বলেন, রোজার মাস এলেই বাজারে বিভিন্ন পণ্যমূল্যের নাটক-সিনেমা চলে। এবার বাজারে অনেক পণ্যের দাম বাড়েনি। কিন্তু সয়াবিন তেল নিয়ে এখনও খেলাধুলা চলছে। রোজার সময় যেখানে পণ্যের সরবরাহ বাড়ার কথা, সেখানে সয়াবিনের বোতল পাওয়াই যাচ্ছে না। সুপারশপে গিয়েও পাচ্ছি না। এগুলো দেখার কি কেউ নেই? আক্ষেপের সঙ্গে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

পাড়ার মুদি দোকান ঘুরে না পেয়ে সয়াবিনের বোতলের খোঁজে একটি সুপারশপে এসেছেন আশকোনা এলাকার বাসিন্দা মো. আলতাফ হোসেন। সেখানে বোতলের দেখা পেলেও আরেক বিপত্তিতে পড়তে হয় তাকে। তিনি বলেন, এখানে ৫ লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও শর্ত দেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা সমপরিমাণ অন্য পণ্যও কিনতে হবে। তা না হলে বোতল বিক্রি করবে না। এটা কেমন কথা? কোথায় আছি আমরা?

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, রোজা শুরু হলেও সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়েনি। আগের মতোই কম তেল সরবরাহ করছে ডিলাররা। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটেও গতকাল বোতলজাত সয়াবিন তেলের খোঁজে দোকানে দোকানে ঘুরতে দেখা গেছে অসংখ্য ক্রেতাকে। সেখানেও বিক্রেতাদের একই জবাব- সরবরাহ নেই। ডিলাররা যতটুকু দিচ্ছেন তা মুহূর্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

কথা হলে কিচেন মার্কেটের বিউটি স্টোরের ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসাইন বলেন, বাজারে কোনো সয়াবিনের বোতল নেই। ডিলাররা সরবরাহ করছে না। কোম্পানির কাছে চাহিদা দিচ্ছি ২০-২৫ কার্টন, কিন্তু পাচ্ছি ২-৩ কার্টন। এগুলো অল্প সময়েই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। রোজায় চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে এ সময়ে সরবরাহ বাড়ার কথা।

বাজারে সয়াবিনের বোতল সরবরাহে ঘাটতির প্রসঙ্গে একাধিক ডিলারের সঙ্গে কথা বললেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। অপরদিকে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও সারা পাওয়া যায়নি।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম এক দফা বাড়ানো হলেও আরও বাড়াতে চাইছে কোম্পানিগুলো। সে জন্য পুরনো কায়দায় সংকট তৈরি করা হচ্ছে।

খোলা সয়াবিন তেলের মোকাম রাজধানীর মৌলভীবাজারেও তেলের বাজার চড়া যাচ্ছে। আগের মতো সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়তি রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।

এদিকে চট্টগ্রামে তেলেই শুধু তেলেসমাতি চলছে না, এক বছরের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়ে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। দুদিন ধরে আলুর সরবরাহে সংকট দেখিয়ে প্রতি কেজি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায় উঠে গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক বছর আগে যে ছোলা প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো, এবার তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দুদিন আলুর সরবরাহে ঘাটতি দেখা যাওয়ায় ২০ টাকার আলুর কেজি ৩০ টাকায় উঠেছে। ক্ষীরার কেজি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকায়, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকায়, বেগুন ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় উঠে গেছে দাম। দেশে ব্যাপক আমদানি সত্ত্বেও সয়াবিন তেল বিশেষ করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে সংকট রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দামি ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ না থাকার সুযোগে রাতারাতি অখ্যাত কোম্পানিগুলো খোলাবাজারের সয়াবিন তেল বোতলজাত করে বাজারে সরবরাহ করছে।

গতকাল চট্টগ্রাম নগরীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংকট চলছে বলে জানান বিক্রেতারা। তারা বলেন, চাহিদার বিপরীতে বোতলজাত তেলের সরবরাহ খুব কম। কিন্তু এই মুহূর্তে চাহিদা অনেক। কারণ হিসেবে মোমিন রোডের ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, রমজানে ভাজাভোজির ব্যাপার বেশি। সক্ষম ক্রেতারা ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল নিতে চান। দাম তাদের কাছে ব্যাপার নয়। কিন্তু আমরা তো দিতে পারছি না।

আন্তর্জাতিক বাজারের চিত্র বলছে, সয়াবিন তেলের দর গত তিন মাসে নিম্নমুখী রয়েছে। বিশ্ব বাজারে পণ্যমূল্যের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে গত নভেম্বর মাসে প্রতিটন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১১৪৫ ডলার। ডিসেম্বরে যা কমে হয় ১০৬৪ ডলার এবং গত জানুয়ারিতে তা আরও কমে ১০৬১ ডলারে নেমেছে। অথচ দেশে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আরও বাড়ানোর পাঁয়তারাও চলছে।

এদিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। রমজানে চাহিদা বেশি থাকে। এ মাসে চাহিদা ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টন।

বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট ও সরবরাহ নিয়ে চলতি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, সয়াবিন তেলের আমদানি বেড়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, কোনো ঘাটতি নেই। যেটি হয়েছে তা কৃত্রিম এবং প্রকৃত তথ্যের ঘাটতি থেকে সৃষ্ট। সভায় উৎপাদনকারীরাও জানান, সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে ভোজ্যতেলের বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অধিক পরিমাণ ভোজ্যতেল সরবরাহ করছে। ভোজ্যতেল সরবরাহের পরিমাণ বিবেচনায় সংকটের কোনো সুযোগ নেই। বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় কিছু ব্যবসায়ীর মজুদের প্রবণতা থেকে যদি সংকট হয়ে থাকে, তা অচিরেই কেটে যাবে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যা ৭ থেকে ১০ দিনের ভেতরে বাজারে প্রবেশ করবে। পাইপলাইনে আছে দেড় লাখ মেট্রিক টন।

এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বসির উদ্দিনও আশ্বস্ত করেছিলেন, সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের বাজার স্থিতিশীল থেকে নিম্নমুখী হয়ে যাবে এবং সরবরাহের ঘাটতি দূর হবে। কিন্তু বাজারের চিত্র বলছে, বোতলের তেলের সংকট রয়েই গেছে। খোলা তেলের দামও চড়া। নেপথ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। সরকারি সংস্থার তদারকি অভিযানেও বেরিয়ে আসছে কারসাজির তথ্য।

গত বৃহস্পতিবার কারওয়ানবাজারে অভিযান চালিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দেখতে পায়, সেখানকার অনেক দোকানে আড়ালে ভোজ্যতেল লুকিয়ে রেখে ক্রেতাকে তেল নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তল্লাশি করে গোপন জায়গায় ৫ লিটারের বোতলের ২০০টিরও অধিক কার্টনের মজুদ খুঁজে পায় সংস্থাটি। আরও দেখা যায়, কিছু খুচরা ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল গোপনে বিক্রি করছেন। ৫ লিটারের বোতলে এমআরপি ৮১৮ টাকা লেখা থাকলেও বিক্রি করা হচ্ছে ৮৫০-৮৫২ টাকায়। এর আগে আরেক অভিযানে দেখা গেছে, বেশি লাভের আশায় খুচরা বিক্রেতারা বোতল কেটে ড্রামে ঢেলে খোলা হিসেবে বিক্রি করছেন।

বারবার একই কায়দায় বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও এ থেকে ভোক্তারা পরিত্রাণ পাচ্ছেন না। এর পেছনে ট্যারিফ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাই দায়ী বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, বিটিটিসির বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানালেন, সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু সংকট কেন, তা তারা জানেন না। তারা তো এভাবে দায় এড়াতে পারেন না। ডিস্ট্রিবিউটররা তেল নিয়ে কি করেছে, সেটা দেখার দায়িত্বও তাদেরই। এভাবেই কোম্পানি-ডিস্ট্রিবিউটর মিলে ভোক্তার পকেট কাটে। ট্যারিফ কমিশন কিভাবে মূল্য সমন্বয় করছে তা জানা নেই। এর মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনে ও বাজার মনিটরিংয়ে দুর্বলতা রয়েছে। যদিও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর প্রতিদিন কয়েকটি বাজারে তদারকি করছে, জরিমানা করছে। কিন্তু তাদের জনবল কম। মনিটরিংয়ে এমন দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে অসাধুরা।

 


আরও খবর

ঈদ ঘিরে সক্রিয় জাল নোট চক্র

সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫




একটি দল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। অথচ তারা দেশটাকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোমবার (৩ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমার কোনো চিন্তাভাবনা ছিল না হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হবো। এবং সেই দেশ এমন যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে। আমার প্রথম চেষ্টা ছিল সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা।

তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। দেশের মানুষেরও আমাদের ওপর আস্থা আছে। আমাদের মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমিতো অস্বীকার করছি না।

ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, নতুন দলকে সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি আমাদের সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। এখনও ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারবো না।

তিনি বলেন, মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।

ড. ইউনূস বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে। তারা এখানে আসছে, আমাদের লোকজন সেখানে যাচ্ছে। প্রাইম মিনিস্টার মোদির সঙ্গে আমার প্রথম সপ্তাহেই কথাবার্তা হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবাই মিলে যা ঠিক করবে আমরা তাই করবো। তবে, আমরা সব ভাই ভাই। আমাদেরকে এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিৎ, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।


আরও খবর

ঈদ ঘিরে সক্রিয় জাল নোট চক্র

সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫




জীবিত আছিয়াদের নিরাপত্তা দিবে কে.? নওগাঁয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

জীবিত আছিয়াদের নিরাপত্তা দিবে কে? এ স্লোগানকে সামনে রেখে নওগাঁয় ফাতেমা ছোঁয়া নামের এক শিক্ষার্থী অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিশু ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবিতে নওগাঁ জেলা শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থী ফাতেমা ছোঁয়া মুখে কালো কাপড় বেধে, হাতে প্রতিবাদী পোস্টার নিয়ে ঘন্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

প্রতিবাদী ফাতেমা ছোঁয়া'র বাবা দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড "যাযাবর" এর সঙ্গীত শিল্পী ক্যাপ্টেন জানান, বর্তমান সময়ে আমার আপনার বাচ্চা নিরাপদ নয়। প্রতিনিয়ত ভঁয় কাজ করে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে আমরা দেখেছি সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় অজস্র শিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আর কতো? আমরা আর কতো প্রান হারাতে দেখবো?  আর কবেই বা আমার আপনার সন্তানরা ভঁয় মুক্ত সত্যিকারের স্বাধীন দেশ পাবে। স্বাধীন বাংলায় কোন ধর্ষকের স্থান নাই।  আমরা আছিয়ার কাছে ক্ষমা প্রার্থী, জীবিত আর কোন আছিয়াকে আমরা হারাতে চাইনা। মৃত আছিয়াসহ সকল ধর্ষণের ও নির্যাতনের শিকারে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক। এব্যাপারে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি এনাম হক বলেন, মাগুরায়  ধর্ষনের শিকার হওয়া ৮ বছরের শিশু আছিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। সম্প্রতি সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন যেভাবে বেড়ে চলছে তার প্রতিবাদ হিসেবে আজকের এই অবস্থান কর্মসূচি সত্যিই প্রসংশার দাবিদার।  দেশব্যাপী এমন অপকর্মের ধিক্কার জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনে জড়িত সকল অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।  ধর্ষকদের চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করার জোর দাবী জানান তিনি।


আরও খবর



ফেব্রুয়ারিতে এসেছে রেকর্ড রেমিট্যান্স

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

সদ্য গত হওয়া ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে এসেছে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৯৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)।

এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে ফেব্রুয়ারিতে এত পরিমাণ প্রবাসী আয় আসেনি। এছাড়া এবারের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স তার আগের বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক গড়ে ৯ কো‌টি ডলার বা ১ হাজার ১১০ কো‌টি টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়া‌রি পর্যন্ত ৮ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি মার্কিন ডলার; যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়া‌রিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পা‌ঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

অর্থাৎ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দা‌য়িত্ব নেয়ার পর টানা সাত মাস দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।


আরও খবর

ফল আমদানিতে কমল শুল্ক-কর

মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫




ইসলামপন্থীদের কাছে টানতে তৎপর বিএনপি-জামায়াত

প্রকাশিত:সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় সে মাঠ এখন বিএনপি ও জামায়াতের দখলে। বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলোকে নিয়ে মৈত্রী গড়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিএনপিও নির্বাচনী যাত্রায় ইসলামপন্থীদের পাশে রাখকে তৎপরতা শুরু করেছে।

আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে চরমোনাই পীরের বরিশালের বাড়ি পর্যন্ত গেছেন জামায়াত আমীর। আর রাজধানীতে দলটির প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব।

নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতায় ইসলামী দলগুলোর মধ্যে দোটানা ভাব দেখা দিয়েছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন অতীতের তিক্ততা মিটিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। তারা ইসলামপন্থীদের ভোট ‘এক বাক্সে’ দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ইসলামী শক্তির অভিন্ন বাক্স আমরা নির্বাচনে দিতে চাই। তবে, জামায়াত এবং আমরা আদর্শিক, নীতিগত বা রাজনৈতিকভাবে এক হয়ে গেছি, তা কিন্তু নয়। আমাদের মধ্যে কিছু বিষয় মতপার্থক্য আছে বলেই আমরা আলাদা রাজনীতি করি। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী ঐক্যের সম্ভাবনা বেড়েছে। আমরা সব ইসলামিক দলগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমরা মনে করি ইসলামি রাজনৈতিক এলায়েন্স এখন সময়ের ব্যপার মাত্র।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী যেকোনো দলের সাথেই ঐক্য হতে পারে। আর ইসলামী দলগুলোর জন্য যেকোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত তারা।

তবে, নির্বাচনী রাজনীতির সরল অঙ্কের গরল ফলাফল এখনই মেলানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারা।


আরও খবর