Logo
শিরোনাম

নির্বাচন ও রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ

প্রকাশিত:রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ |

Image

গোলাম মাওলা রনি, সাবেক সংসদ সদস্য:

জামাত ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে । ইতিমধ্যে ১০০ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে যারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী মহড়া দিচ্ছেন ।

উল্লেখিত কাজটি বিএনপির করা উচিত ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ! প্রার্থী ঘোষণা করে সংসদীয় আসনের সকল কমিটি বিলুপ্ত করে তা প্রার্থীর অধীন করে দিয়ে নিজ নিজ এলাকার সকল দায় দায়িত্ব প্রার্থীর উপর ছেড়ে দিলে আজকের অবস্থা তৈরি হতোনা । বিএনপি সময় মত সিদ্ধান্ত নিতে পারলে এখন তাদেরকে নির্বাচনের পিছে ঘুরতে হতোনা , উল্টো নির্বাচনই তাদের পিছনে ঘুরতো ! চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক অনেক কম হতো । সারা বাংলাদেশের প্রশাসন তাদের হাতে থাকতো । উল্লেখিত বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের পতনের দলিল ! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় লিখেছিলাম ২০২৪ সালের ১৬ই অগাস্ট তারিখে ! সেখানে বিএনপিকে নিয়ে যেসব আশংকা করেছিলাম তার চেয়েও ভয়াবহ অবস্থায় পড়েছে দলটি ! যারা লিখাটি পড়তে চান তাদের জন্য - আ’লীগের পতনের দলিল! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৬ই অগাস্ট, ২০২৪ আওয়ামী লীগের পতন কেন হলো- এমন প্রশ্ন করা হলে আমার মতো মোটা মাথার লোকজন গড়গড় করে কয়েক শ’ কারণ বলে দিতে পারি যা হয়তো তেলাপোকা-টিকটিকিরাও বলতে পারবে। কিন্তু দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে আওয়ামী লীগের পতনের নেপথ্য কারণ বিশ্লেষণ করার জন্য যে জ্ঞান-গরিমা দরকার তা আমার নেই। আমি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাদা চোখে যা দেখি বা শুনি তা বলি কিংবা লিখি। কিন্তু দার্শনিক হতে হলে কনফুসিয়াস-প্লেটো-এরিস্টটল-সক্রেটিস-ইবনে খালদুনের মতো প্রজ্ঞা থাকতে হবে। আর সেই প্রজ্ঞাবান যেহেতু দেশে নেই; সুতরাং আমি আমার সীমিত জ্ঞান নিয়ে আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে কিছু বলার চেষ্টা করব। আওয়ামী লীগের পতনের একনম্বর কারণ হলো, দলটি তার রাজনৈতিক দর্শন এবং রাজনৈতিক পথ ও মত ত্যাগ করে আমলা-কামলা-ব্যবসায়ী, দেশী-বিদেশী গোয়েন্দাদের কবলে পড়ে নিজের রাজনীতি থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল। যেসব পদ-পদবি রাজনৈতিক ইংরেজিতে যার নাম পলিটিক্যাল অফিস, সেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব না দিয়ে কথিত জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিত-সফল ব্যবসায়ী-আমলা প্রমুখদের নিয়োগ দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেছে। ফলে পলিটিক্যাল অফিসগুলো প্রাণশূন্য হয়ে পড়েছিল এবং জনগণের সাথে অফিসের কর্তাদের কোনো সংযোগ ছিল না। এইচ টি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রমুখের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে চমক দেখানোর চেষ্টা করেছে তা বুমেরাং হয়ে ধীরে ধীরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিণতিতে নিয়ে এসেছে। দ্বিতীয় ধাপে এসে আওয়ামী লীগ অসৎ ব্যবসায়ী-অসৎ আমলা, তেলবাজ ও ধড়িবাজ সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের জালে আটকা পড়ে যায়। এদের কারণে আওয়ামী লীগের হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেতে থাকে- তাদের হেদায়েতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ভালো-মন্দের পার্থক্য করা, সঠিক পথ অনুসরণ করা, ভালো মানুষদের সম্মান করে যোগ্য পদে পদায়ন করার প্রয়োজন অনুভব করতে পারেনি। মন্দ লোকের আধিক্য এবং মন্দদের দাপটের কারণে ভালোরা ব্যাকফুটে চলে যায়। ফলে আওয়ামী লীগের কাছে মন্দ কাজ-মন্দ চিন্তা-গুনাহ-ব্যাভিচার-অবিচার ও অনাচার ক্রমেই আকর্ষণীয় মনে হতে থাকে। তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা-জুলুম-অত্যাচারের মাধ্যমে আনন্দ লাভ, অহমিকা বোধ, দাম্ভিকতা প্রদর্শন এবং দুষ্টের লালন-শিষ্টের দমন-ফ্যাশন বা স্টাইল হয়ে দাঁড়ায়। চোরাকারবারি-লুটেরা-মদ্যপ এবং চরিত্রহীনরা রাষ্ট্রের সম্মান ও মর্যাদাজনক স্থানগুলো দখল করে ফেলে। ফলে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর মানুষের অভক্তি ও অশ্রদ্ধা দেখা দেয়। রাষ্ট্র পরিচালকরা দিন-দুপুরে লাখ লাখ মানুষের সামনে মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জনগণের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না পেয়ে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে অন্যায়-অনিয়ম সরকারি অফিস-আদালত এবং রাষ্ট্র পরিচালক আমলা-কামলাদের ব্যক্তিগত-পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের অলঙ্কারে পরিণত হয়। চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং এই দু’টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল শুরু করে এবং ব্যাপক সফলতা লাভের পর নিজেদের ঘরের শ্রেণীশত্রু চিহ্নিত করে তাদের দুর্বল-অসহায় ও অকার্যকর বানানোর মিশন হাতে নেয়। নিজ দলের যোগ্যতম রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক জোটের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার লোকদের নিজেদের শ্রেণীশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে নানা উপায়ে তাদের অপমানিত, লাঞ্ছিত ও পদদলিত করে তাদের বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা ও ভালো কাজের সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। পঞ্চম ধাপে এসে তারা সবাই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের মানবিক গুণাবলি রহিত হয়ে যায়। নিলর্জ্জতা, বেহায়াপনা ও অহেতুক রঙ্গরস এবং ভয়ানক রাজনৈতিক খেলাধুলা নিত্যদিনের বিনোদনে পরিণত হয়। মধ্যযুগের রক্তপিপাসু জুলুমবাজদের মতো ক্ষমতার চেয়ারগুলো রক্তপিপাসু হয়ে পড়ে। মানুষের মৃত্যু দেখলে তাদের হৃদয় বিগলিত না হয়ে বরং উল্লসিত হতে শুরু করে। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক অভিশাপ তাদের জন্য অনিবার্য হয়ে পড়ে এবং সারা বিশ্বকে অবাক করে বাংলার জমিনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়। আওয়ামী লীগের পতনের উল্লিখিত সাদামাটা কারণগুলো পর্যালোচনা করে আগামী দিনের কর্মপন্থা অবলম্বন করতে না পারলে বিএনপির কপালে আওয়ামী লীগের চেয়েও বড় দুর্ভোগ-দুর্দশা অনিবার্য হয়ে পড়বে। বিএনপি যদি সতর্ক না হয় এবং অতি দ্রুত ও জরুরিভাবে কার্যকর কিছু উদ্যোগ না নেয় তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ফসল ঘরে তোলা তো দূরের কথা, উল্টো ৫ আগস্ট তাদের কাছে বিগত ওয়ান-ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ আজাব হিসেবে হাজির হতে পারে। এ জন্যই শিরোনামে আমি আওয়ামী লীগের পতনের দলিলকে বিএনপির জন্য ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ হিসেবে উল্লেখ করেছি। চলমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে এক মুহূর্ত সময় ব্যয় না করে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে : ১. বিএনপির সব পর্যায়ে রাজনৈতিক বিরোধ, অন্তর্দ্বন্দ্ব-হানাহানি তুঙ্গে। বেশির ভাগ নির্বাচনী এলাকায় দুই-তিনটি কমিটি রয়েছে। গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গত পাঁচ বছরে এলাকায় যেতে পারেননি প্রথমত, আওয়ামী লীগের মামলা-হামলার কারণে। দ্বিতীয়ত, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ যে, এক পক্ষ তার প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের ভাড়া করে অনেক জাতীয় নেতাকে সস্ত্রীক রক্তাক্ত করেছে। চলমান পরিস্থিতিতে অতীতের সেই বিরোধ কয়েক শ’গুণ বেড়েছে। বিশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা যা শুরু করেছে, তা যদি আর দুই সপ্তাহ চলে তবে জনগণ বলা শুরু করবে যে, আগের জমানা ভালো ছিল। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী অপারেশন ক্লিনহার্টের মতো অভিযান শুরু করলে বিএনপি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে এবং আরেকটি মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। উল্লিখিত অবস্থা মোকাবেলার জন্য বিএনপির উচিত কালবিলম্ব না করে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা। জেলা কমিটিতে জেলার প্রার্থীরা উপদেষ্টা থাকবেন এবং জেলা কমিটি উপদেষ্টাদের পরামর্শে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাবেন। নির্বাচনী এলাকার সব কমিটি প্রার্থীর নিয়ন্ত্রণে চলবে। কোনো কমিটি প্রার্থীর কথা না শুনলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করবেন এবং সেভাবেই নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। ২. যেসব আমলা-কামলা এবং ব্যবসায়ীর কারণে বিএনপির পতন হয়েছিল এবং যেসব নেতার আর্থিক দুর্নীতি সর্বজনবিদিত, যেসব লোক যেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলীয় অফিসগুলোতে ভিড় জমাতে না পারে তা শতভাগ নিশ্চিত না করা গেলে মাইনাস টু থিওরি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে, ২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার আমলা-কামলা যারা বিএনপি জমানায় রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছিল তারা এক দিনের জন্যও নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বিএনপিকে পরিহার করেছে, না চেনার ভান করেছে- আর কেউ কেউ আওয়ামী আমলাদের চেয়েও বেশি মাত্রায় বিএনপিকে নির্যাতন করেছে। তারা সবাই চাকরি বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগকে সকাল-বিকাল আব্বা ডেকেছে। সুতরাং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেসব পুরোনো দলবাজদের তাড়াতে হবে এবং প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার শপথ নিতে হবে। ৩. বিএনপির মূল শক্তি তার কর্মী-সমর্থক এবং ভোটার, যারা কি না সংসদ সদস্য প্রার্থীর মাধ্যমে দলের নিউক্লিয়াসে যুক্ত থাকে। সুতরাং সংসদীয় পদ্ধতি মেনে সব দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্র্থীকে সম্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের মর্যাদা সমপর্যায়ের- এই বিশ্বাস ও আস্থা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে ধারণ করতে হবে এবং সেভাবেই নিজ দলের প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হলে তৃণমূল বিএনপিতে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। ৪. দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কিছু পদে দ্রুত পরিবর্তন আনা জরুরি। চাটুকার, দুর্নীতিবাজ এবং ইয়েস বস বলা লোকজন দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। ৫. আগামীতে দু’টি সম্ভাবনা মাথায় রেখে এগোতে হবে। প্রথমত আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট, মাইনাস টু থিওরি বাস্তবায়ন, বিএনপিকে নতুন ফাঁদে ফেলে ক্র্যাকডাউন ইত্যাদির মতো পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হতে পারে। দ্বিতীয়ত, যদি নির্বাচন হয় তবে আওয়ামী লীগসহ, কিংস পার্টি এবং কিংস পার্টির অনুগত ছোট পার্টির যন্ত্রণা মোকাবেলা করতে হবে। দলের ভেতরে-বাইরে যারা বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছে ও তাদের টাকা নিয়ে রাজপথে সরকারবিরোধী লম্ফঝম্প করেছে এবং এখনো সব দরবারে বাতি জ্বালানোর চেষ্টা করছে, এদের কাছ থেকে দলকে ১৩৩ মাইল নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

জামাত ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে । ইতিমধ্যে ১০০ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে যারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী মহড়া দিচ্ছেন । 

উল্লেখিত কাজটি বিএনপির করা উচিত ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ! প্রার্থী ঘোষণা করে সংসদীয় আসনের সকল কমিটি বিলুপ্ত করে তা প্রার্থীর অধীন করে দিয়ে নিজ নিজ এলাকার সকল দায় দায়িত্ব প্রার্থীর উপর ছেড়ে দিলে আজকের অবস্থা তৈরি হতোনা । 

বিএনপি সময় মত সিদ্ধান্ত নিতে পারলে এখন তাদেরকে নির্বাচনের পিছে ঘুরতে হতোনা , উল্টো নির্বাচনই তাদের পিছনে ঘুরতো ! চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক অনেক কম হতো । সারা বাংলাদেশের প্রশাসন তাদের হাতে থাকতো । 

উল্লেখিত বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের পতনের দলিল ! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় লিখেছিলাম ২০২৪ সালের ১৬ই অগাস্ট তারিখে ! সেখানে বিএনপিকে নিয়ে যেসব আশংকা করেছিলাম তার চেয়েও ভয়াবহ অবস্থায় পড়েছে দলটি !

যারা লিখাটি পড়তে চান তাদের জন্য - 

আ’লীগের পতনের দলিল! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা

দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৬ই অগাস্ট, ২০২৪ 

আওয়ামী লীগের পতন কেন হলো- এমন প্রশ্ন করা হলে আমার মতো মোটা মাথার লোকজন গড়গড় করে কয়েক শ’ কারণ বলে দিতে পারি যা হয়তো তেলাপোকা-টিকটিকিরাও বলতে পারবে। কিন্তু দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে আওয়ামী লীগের পতনের নেপথ্য কারণ বিশ্লেষণ করার জন্য যে জ্ঞান-গরিমা দরকার তা আমার নেই। আমি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাদা চোখে যা দেখি বা শুনি তা বলি কিংবা লিখি। কিন্তু দার্শনিক হতে হলে কনফুসিয়াস-প্লেটো-এরিস্টটল-সক্রেটিস-ইবনে খালদুনের মতো প্রজ্ঞা থাকতে হবে। আর সেই প্রজ্ঞাবান যেহেতু দেশে নেই; সুতরাং আমি আমার সীমিত জ্ঞান নিয়ে আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে কিছু বলার চেষ্টা করব।


আওয়ামী লীগের পতনের একনম্বর কারণ হলো, দলটি তার রাজনৈতিক দর্শন এবং রাজনৈতিক পথ ও মত ত্যাগ করে আমলা-কামলা-ব্যবসায়ী, দেশী-বিদেশী গোয়েন্দাদের কবলে পড়ে নিজের রাজনীতি থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল। যেসব পদ-পদবি রাজনৈতিক ইংরেজিতে যার নাম পলিটিক্যাল অফিস, সেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব না দিয়ে কথিত জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিত-সফল ব্যবসায়ী-আমলা প্রমুখদের নিয়োগ দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেছে। ফলে পলিটিক্যাল অফিসগুলো প্রাণশূন্য হয়ে পড়েছিল এবং জনগণের সাথে অফিসের কর্তাদের কোনো সংযোগ ছিল না। এইচ টি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রমুখের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে চমক দেখানোর চেষ্টা করেছে তা বুমেরাং হয়ে ধীরে ধীরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিণতিতে নিয়ে এসেছে।


দ্বিতীয় ধাপে এসে আওয়ামী লীগ অসৎ ব্যবসায়ী-অসৎ আমলা, তেলবাজ ও ধড়িবাজ সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের জালে আটকা পড়ে যায়। এদের কারণে আওয়ামী লীগের হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেতে থাকে- তাদের হেদায়েতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ভালো-মন্দের পার্থক্য করা, সঠিক পথ অনুসরণ করা, ভালো মানুষদের সম্মান করে যোগ্য পদে পদায়ন করার প্রয়োজন অনুভব করতে পারেনি। মন্দ লোকের আধিক্য এবং মন্দদের দাপটের কারণে ভালোরা ব্যাকফুটে চলে যায়। ফলে আওয়ামী লীগের কাছে মন্দ কাজ-মন্দ চিন্তা-গুনাহ-ব্যাভিচার-অবিচার ও অনাচার ক্রমেই আকর্ষণীয় মনে হতে থাকে।


তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা-জুলুম-অত্যাচারের মাধ্যমে আনন্দ লাভ, অহমিকা বোধ, দাম্ভিকতা প্রদর্শন এবং দুষ্টের লালন-শিষ্টের দমন-ফ্যাশন বা স্টাইল হয়ে দাঁড়ায়। চোরাকারবারি-লুটেরা-মদ্যপ এবং চরিত্রহীনরা রাষ্ট্রের সম্মান ও মর্যাদাজনক স্থানগুলো দখল করে ফেলে। ফলে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর মানুষের অভক্তি ও অশ্রদ্ধা দেখা দেয়। রাষ্ট্র পরিচালকরা দিন-দুপুরে লাখ লাখ মানুষের সামনে মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জনগণের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না পেয়ে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে অন্যায়-অনিয়ম সরকারি অফিস-আদালত এবং রাষ্ট্র পরিচালক আমলা-কামলাদের ব্যক্তিগত-পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের অলঙ্কারে পরিণত হয়।


চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং এই দু’টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল শুরু করে এবং ব্যাপক সফলতা লাভের পর নিজেদের ঘরের শ্রেণীশত্রু চিহ্নিত করে তাদের দুর্বল-অসহায় ও অকার্যকর বানানোর মিশন হাতে নেয়। নিজ দলের যোগ্যতম রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক জোটের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার লোকদের নিজেদের শ্রেণীশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে নানা উপায়ে তাদের অপমানিত, লাঞ্ছিত ও পদদলিত করে তাদের বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা ও ভালো কাজের সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।


পঞ্চম ধাপে এসে তারা সবাই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের মানবিক গুণাবলি রহিত হয়ে যায়। নিলর্জ্জতা, বেহায়াপনা ও অহেতুক রঙ্গরস এবং ভয়ানক রাজনৈতিক খেলাধুলা নিত্যদিনের বিনোদনে পরিণত হয়। মধ্যযুগের রক্তপিপাসু জুলুমবাজদের মতো ক্ষমতার চেয়ারগুলো রক্তপিপাসু হয়ে পড়ে। মানুষের মৃত্যু দেখলে তাদের হৃদয় বিগলিত না হয়ে বরং উল্লসিত হতে শুরু করে। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক অভিশাপ তাদের জন্য অনিবার্য হয়ে পড়ে এবং সারা বিশ্বকে অবাক করে বাংলার জমিনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।


আওয়ামী লীগের পতনের উল্লিখিত সাদামাটা কারণগুলো পর্যালোচনা করে আগামী দিনের কর্মপন্থা অবলম্বন করতে না পারলে বিএনপির কপালে আওয়ামী লীগের চেয়েও বড় দুর্ভোগ-দুর্দশা অনিবার্য হয়ে পড়বে। বিএনপি যদি সতর্ক না হয় এবং অতি দ্রুত ও জরুরিভাবে কার্যকর কিছু উদ্যোগ না নেয় তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ফসল ঘরে তোলা তো দূরের কথা, উল্টো ৫ আগস্ট তাদের কাছে বিগত ওয়ান-ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ আজাব হিসেবে হাজির হতে পারে। এ জন্যই শিরোনামে আমি আওয়ামী লীগের পতনের দলিলকে বিএনপির জন্য ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ হিসেবে উল্লেখ করেছি। চলমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে এক মুহূর্ত সময় ব্যয় না করে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে :


১. বিএনপির সব পর্যায়ে রাজনৈতিক বিরোধ, অন্তর্দ্বন্দ্ব-হানাহানি তুঙ্গে। বেশির ভাগ নির্বাচনী এলাকায় দুই-তিনটি কমিটি রয়েছে। গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গত পাঁচ বছরে এলাকায় যেতে পারেননি প্রথমত, আওয়ামী লীগের মামলা-হামলার কারণে। দ্বিতীয়ত, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ যে, এক পক্ষ তার প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের ভাড়া করে অনেক জাতীয় নেতাকে সস্ত্রীক রক্তাক্ত করেছে। চলমান পরিস্থিতিতে অতীতের সেই বিরোধ কয়েক শ’গুণ বেড়েছে। বিশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা যা শুরু করেছে, তা যদি আর দুই সপ্তাহ চলে তবে জনগণ বলা শুরু করবে যে, আগের জমানা ভালো ছিল। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী অপারেশন ক্লিনহার্টের মতো অভিযান শুরু করলে বিএনপি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে এবং আরেকটি মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন হয়ে যাবে।

উল্লিখিত অবস্থা মোকাবেলার জন্য বিএনপির উচিত কালবিলম্ব না করে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা। জেলা কমিটিতে জেলার প্রার্থীরা উপদেষ্টা থাকবেন এবং জেলা কমিটি উপদেষ্টাদের পরামর্শে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাবেন। নির্বাচনী এলাকার সব কমিটি প্রার্থীর নিয়ন্ত্রণে চলবে। কোনো কমিটি প্রার্থীর কথা না শুনলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করবেন এবং সেভাবেই নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই।


২. যেসব আমলা-কামলা এবং ব্যবসায়ীর কারণে বিএনপির পতন হয়েছিল এবং যেসব নেতার আর্থিক দুর্নীতি সর্বজনবিদিত, যেসব লোক যেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলীয় অফিসগুলোতে ভিড় জমাতে না পারে তা শতভাগ নিশ্চিত না করা গেলে মাইনাস টু থিওরি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে, ২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার আমলা-কামলা যারা বিএনপি জমানায় রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছিল তারা এক দিনের জন্যও নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বিএনপিকে পরিহার করেছে, না চেনার ভান করেছে- আর কেউ কেউ আওয়ামী আমলাদের চেয়েও বেশি মাত্রায় বিএনপিকে নির্যাতন করেছে। তারা সবাই চাকরি বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগকে সকাল-বিকাল আব্বা ডেকেছে। সুতরাং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেসব পুরোনো দলবাজদের তাড়াতে হবে এবং প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার শপথ নিতে হবে।


৩. বিএনপির মূল শক্তি তার কর্মী-সমর্থক এবং ভোটার, যারা কি না সংসদ সদস্য প্রার্থীর মাধ্যমে দলের নিউক্লিয়াসে যুক্ত থাকে। সুতরাং সংসদীয় পদ্ধতি মেনে সব দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্র্থীকে সম্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের মর্যাদা সমপর্যায়ের- এই বিশ্বাস ও আস্থা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে ধারণ করতে হবে এবং সেভাবেই নিজ দলের প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হলে তৃণমূল বিএনপিতে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।


৪. দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কিছু পদে দ্রুত পরিবর্তন আনা জরুরি। চাটুকার, দুর্নীতিবাজ এবং ইয়েস বস বলা লোকজন দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না।


৫. আগামীতে দু’টি সম্ভাবনা মাথায় রেখে এগোতে হবে। প্রথমত আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট, মাইনাস টু থিওরি বাস্তবায়ন, বিএনপিকে নতুন ফাঁদে ফেলে ক্র্যাকডাউন ইত্যাদির মতো পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হতে পারে। দ্বিতীয়ত, যদি নির্বাচন হয় তবে আওয়ামী লীগসহ, কিংস পার্টি এবং কিংস পার্টির অনুগত ছোট পার্টির যন্ত্রণা মোকাবেলা করতে হবে। দলের ভেতরে-বাইরে যারা বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছে ও তাদের টাকা নিয়ে রাজপথে সরকারবিরোধী লম্ফঝম্প করেছে এবং এখনো সব দরবারে বাতি জ্বালানোর চেষ্টা করছে, এদের কাছ থেকে দলকে ১৩৩ মাইল নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরও খবর

আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫




রোজায় শরীর সুস্থ ও ফিট রাখতে যা মানা জরুরি

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

রমজান মাস শুরু হয়েছে। সারাদিন রোজা রাখার পর রোজাদাররা রোজা ভাঙেন ইফতারের মাধ্যমে। তবে তারা সারাদিনের কাজকর্ম স্বাভাবিক নিয়মেই করতে থাকেন। এই সময় অনেকে শরীরচর্চাও করেন। তাই এসময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ শরীর সুস্থ রাখা।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন: রমজান মাস শুরু হওয়ার পরই খাদ্যাভাস ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উপর বিশেষ নজর রাখবেন। ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা-কফি খাওয়া যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। তা না হলে শরীরে পানিশূন্যতা হতে পারে। রোজার দিনে সেহরি ও ইফতার অনুসারে খাওয়া-দাওয়া সময় পরিবর্তন করতে হয়। তাই রোজা ভাঙার পর হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন, এতে শরীর খুব সুস্থ থাকবে। 

প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান: রমজান মাসে স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন। এতে শরীরের শক্তি পাবেন। ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেহরিতে প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। পনির, ডাল, বাদাম খেতে পারেন। এতে আপনার হজম ভালো হবে। ভাজা খাবারের চেয়ে ভাপানো খাবার খাওয়া বেশি ভালো হবে, তবে মিষ্টি যুক্ত খাবার কম খাবেন। অতিরিক্ত লবণ যুক্ত খাবার এই সময় না খাওয়াই ভালো। এতে শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। 

শরীর হাইড্রেট রাখবেন: এই সময় শরীরকে হাইড্রেট রাখতে হয়। রোজা রাখার সময় সঠিক হাইড্রেট রাখা খুবই জরুরি। সেহরি ও ইফতারের সময় ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাবেন। তাছাড়াও ডাবের পানি , ঠান্ডা পানি, ফলের রস খাবেন। চিনিযুক্ত কোনও পানীয় এই সময় খাবেন না। এসময় প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন। খাবারের তালিকায় শশা,  তরমুজ, কমলালেবু রাখুন। এসব ফল আপনার শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। 

মেনে চলুন কিছু ঘরোয়া টিপস


১. ইফতারের সময় অতিরিক্ত ভারি খাবার এড়িয়ে চলুন। তা না হলে হজমের সমস্যা হতে পারে। 

২. রোজা ভাঙার সময় খেজুর ও পানি দিয়ে শুরু করুন।  কিছুক্ষণ পর হালকা ও সুষম খাবার খাওয়া ভালো। তাহলে পেটের উপর খুব চাপ পড়বে না। তবে খাদ্য তালিকায় ভাজা ছোলা, ড্রাই ফুটস, দইয়ের মতন স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন। 

৩. রোজা রেখে ভারী ব্যয়াম করবেন না। এই সময় যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। শরীরকে সচল রাখতে হাঁটাহাটি করুন । ইফতারের পর হালকা স্ট্রেচিং বা কার্ডিও করতে পারেন। 


আরও খবর



বুধবার থেকে ৬৪ জেলায় ট্রাকে মিলবে টিসিবির পণ্য

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সুবিধা নিশ্চিত করতে বুধবার (৫ মার্চ) থেকে ৬৪ জেলায় ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রয় সংক্রান্ত এক ভার্চুয়াল সভায় জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

ইতোমধ্যে এ কার্যক্রম ছয় জেলায় চলমান আছে। নতুন করে ৫৬ জেলায় কার্যক্রম যুক্ত হবে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এক কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে টিসিবির পণ্য পৌঁছে দিতে চায় সরকার। সে ক্ষেত্রে প্রকৃত উপকারভোগী বাছাইয়ে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা রাখতে হবে। আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে সব উপকারভোগীকে স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ৫৭ লাখ উপকারভোগী স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য পাবে। যাদের এখনো স্মার্টকার্ডের কার্যক্রম শেষ হয়নি, কিন্তু তালিকায় নাম আছে তারাও পণ্য পাবে। এছাড়া ৬৪ জেলায় ট্রাকসেলের মাধ্যমে সর্বসাধারণের মাঝে আগামী ৫ মার্চ থেকে পণ্য বিক্রি করা হবে।

তিনি বলেন, রমজানে কেউ যেন মজুতদারি করতে না পারে জেলা প্রশাসকদের সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একই সঙ্গে ভোক্তারা যেন পুরো মাসের বাজার একসঙ্গে না করে সে বিষয়েও অনুপ্রাণিত করতে হবে। পুরো মাস বা সাতদিনের পণ্য একসঙ্গে কিনলে সরবারহ সংকটে কেউ কেউ দাম বাড়িয়ে নেয়।

তিনি বলেন, আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চাই। কারো প্রতি জুলুম করা হবে না, তবে কেউ জুলুম করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এ সময় অন্যায় প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকদের সর্বশক্তি নিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একদম প্রাথমিক ধাপ টিসিবির মতো সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপকারভোগী নির্বাচন করা। এটি নিশ্চিত করতে পারলে মানুষের মধ্যে আপনাদের (জেলা প্রশাসকদের) গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। মানুষ আপনাদের সম্মান দেবে।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান, টিসিবি চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক ভার্চুয়ালি অংশ নেন।


আরও খবর

ফল আমদানিতে কমল শুল্ক-কর

মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫




যৌথ বাহিনীর অভিযানে আক্তারুজ্জামান আটক

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খান মো. আক্তারুজ্জামানকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। তিনি অনলাইন প্রপার্টিজ নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বাবর রোডের একটি বাসা থেকে তাকে আটকের পর ক্যান্টনমেন্ট থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।

আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা, জবর দখল, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের শতকোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে সাবেক এক সেনা কর্মকর্তাকে মালিক করে অনিয়মের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা কামিয়ে অবৈধভাবে পাচার করেছেন তিনি। এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। দুদক অভিযোগ আমালে নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।

ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ জানায়, রাজধানীর মাটিকাটা এলাকায় অনলাইন প্রপার্টিজ নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক আক্তারুজ্জামান। তার বিরুদ্ধে ওই এলাকায় জমি দখলের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন মামলায় সাধারণ মানুষকে আসামি হিসাবে নাম ঢুকিয়ে দিয়ে চাঁদাবাজি করতেন তিনি। আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

র‌্যাব-২ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) খান আসিফ অপু জানান, খান মো. আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বাবর রোডের একটি বাসায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে ক্যান্টনমেন্ট থানায় হস্তান্তর করে। সেখানে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলছে।


আরও খবর



রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। মূলত রোহিঙ্গা বিষয় নিয়েই তাঁর সফর। তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করবেন। শুক্রবার সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন আন্তোনিও গুতেরেস ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

জাতিসংঘ মহাসচিবের চার দিনব্যাপী সফরসূচি তুলে ধরেন উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, আন্তোনিও গুতেরেস আগামীকাল বিকেল পাঁচটায় ঢাকায় আসবেন। ১৬ মার্চ তিনি ফিরে যাবেন। এই চার দিনের মধ্যে মূলত শুক্র ও শনিবার তাঁর মূল কর্মসূচিগুলো আছে। শুক্রবার সকালে হোটেলে মহাসচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব একটি বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজারে যাবেন। সেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শনে যাবেন।  আর জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার থেকে সরাসরি রোহিঙ্গাশিবিরে চলে যাবেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তাঁর কর্মসূচিগুলো শেষ হওয়ার পর তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন। আর প্রধান উপদেষ্টা তাঁর কক্সবাজারের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করে এই ইফতারে অংশ নেবেন।  রাতেই ঢাকায় ফিরে আসবেন তারা।

আজাদ মজুমদার বলেন, আমরা আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে এক লাখ রোহিঙ্গা ইফতারে যোগ দেবেন। এই ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্যে।

উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, শনিবারও জাতিসংঘের মহাসচিব একটি কর্মব্যস্ত দিন কাটাবেন। তিনি জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। তারপর দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি সেদিন সংবাদ সম্মেলনেও বক্তব্য দেবেন। সেদিনই জাতিসংঘের মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও রাতের খাবারের আয়োজন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব যোগ দেবেন। পরদিন তিনি বাংলাদেশ ছাড়বেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সফর। বাংলাদেশে এটি তাঁর দ্বিতীয় সফর হবে। ২০১৮ সালে তিনি একবার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকার বিশ্বাস করে, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে। সরকার আশা করে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব একটি ভালো বার্তা দেবেন।


আরও খবর

ঈদ ঘিরে সক্রিয় জাল নোট চক্র

সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫




‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫ |

Image

বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৬ নগরের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। আজ রবিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে আইকিউ এয়ারের মানসূচকে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ১৬৫। বায়ুর এই মানকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার নিয়মিত বায়ুদূষণ পরিস্থিতি তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।

সকাল ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে বায়ুর মান ২০৩ নিয়ে বায়ুদূষণে শীর্ষে ছিল মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন। ১৮৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর। ১৮০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল উজবেকিস্তানের তাসখন্দ। আর ১৭১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে ছিল চীনের চকিং।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। তবে স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ থাকলে তা সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (অসুস্থ বা শিশু-বৃদ্ধ) জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। 

স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত থাকলে সে বাতাস অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।


আরও খবর

বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা

মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫

তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী

সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫