রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।
★২৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আল্লাহ পাক হযরত ঈসা (আ:)-কে বলেছেন,ওহে ঈসা! মহানবী (ﷺ)-এঁর প্রতি ঈমান আনো এবং তোমার উম্মতকেও তা করতে বলো।রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-না হলে আঁমি আদমকে সৃষ্টি করতাম না,বেহেশত বা দোযখও সৃষ্টি করতাম না।”
📚*দলিল
*১. আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭
*২.আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২
*৩. ইমাম ইবনে সাদ : তানাকাতুল কোবরা
*৪.ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী : ‘শিফাউস্ সিকাম ৪৫
*৫. শায়খুল ইসলাম আল-বুলকিনী : ফতোওয়ায়ে সিরাজিয়া ১/১৪০
*৬.ইবনে হাজর রচিত ‘আফদালুল কোরা
*৭.আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,
*৮. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী :
জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪ ও ৪/১৬০
*৯. ইবনে কাসীর : কাসাসুল আম্বিয়া : ১/২৯ পৃ:
*১০.ইবনে কাসীর : সিরাতে নববিয়্যাহ : ১/৩২০
*১১. ইবনে কাসীর :মুজিযাতুন্নবী (দরুদ ) : ১/৪৪১
*১২. ইবনে হাজর আসকালানি : লিসানুল মিযান : ৪/৩৫৪,রাবী, ১০৪০।
*১৩.ইবনে হাজর আসকালানী রচিত ‘আফদাল আল-কুরআন’; ১/১৮৯।
ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া; ১/১৮
ইবনে হাজার হাইসামী : শরহে শামায়েল, ১/১৪২।
*১৩. ইমাম যাহাবী : মিজানুল ইতিদাল : ৫/২৯৯, রাবী নং ৬৩৩৬
*১৪. ইবনে হাজর হায়সামী : শরহে শামায়েল : ১/৪২
*১৫. ইমাম যুরকানী :শরহে মাওয়াহিব : ১/১২/২২০
*১৬. আবু সাদ ইব্রাহীম নিশাপুরী : শরহে মোস্তফা : ১/১৬৫
*১৭. খাসায়েসুল কুবরা : ১/১৪ : হাদিস ২১
*২৮. ইমাম ইবনে হাইয়্যান : ‘তাবকাত আল-ইসফাহানী : ৩/২৮৭
*২৯. কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২
*৩০.মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১
*৩১. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১/২৯৫, হাদিস : ৩৮৫
*৩২. ইবনে শামী সালেহ : সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ : ১২/৪০৩
✅হাদিসের মান পর্যালোচনা✅
*১.ইমাম হাকিম তাঁর ‘মোসতাদরেক’ গ্রন্থে তাঁর তাহকিকে হাদিসটিকে সহিহ্ সাব্যস্থ করেছেন।
আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭
*২.ইমাম দায়লামী : হাদিসটির মান সনদের দিক থেকে হাসান।
আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২
*৩.অারও অসংখ্য ইমাম, ইমাম হাকিম রহ. এঁর রায়কে গ্রহণ করেছেন।অপরদিকে, কেবলমাত্র ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রায়ের বিপরীত বলেছেন।তিনি বিপরীত বলার কারন স্বরুপ বলেন :উক্ত হাদিসের একজন রাবী ‘আমর ইবনূ আউস আল আনসারী’ ‘অপরিচিত’।
একজন রাবী অপরিচিত হওয়াতে একটি হাদিস জাল কোনভাবেই হতে পারে না।উক্ত রাবী ইমাম যাহাবী (রহ:)এর দৃষ্টিতে অপরিচিত।অথচ তাঁর চেয়ে উঁচু স্তরের ইমামগণ উক্ত হাদিসকে সহিহ্ ও উক্ত রাবী (আমর ইবনূ আউস) কে সিকাহ্ বলেছেন।
*৪.বিশ্ববিখ্যাত রিযাল গ্রন্থ ‘তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল’ এ বলা হয়েছে, উক্ত রাবী সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ।
*৫. ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম বুখারি, ইমাম আবু নুআইম (রহ:)ও তাঁকে সিকাহ্ বলেছে।
[ইমাম মিযযী : তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল; ১৪/১৭৭, রাবী নং : ৪৯১৩]
*৬. তদুপরি,আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) উক্ত রাবীকে সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ বলেছেন।
[ইবনু হাজর আসকালানী : তাকরীবুত তাহযীব; ১/৪৩৬]
বুঝা গেল ইমাম যাহাবী (রহ:) এর নিকট উক্ত রাবী অপরিচিত হলেও আর কারো নিকট পরিচিত হবেন না এমন নয়।আর ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রাবীকে মিথ্যাবাদী বলেন নি; বলেছেন,অপরিচিত।
✌সুতরাং হাদিসটি নি:সন্দেহে সহিহ্ এর মান রাখে। আর হাদিসটি যেহেতু আমল ও আহকাম সম্পর্কিত নয়, সেহেতু ‘হাসান’ বলে মানতে ও বিশ্বাস করতে সমস্যা নেই।
★৩০. এবার আমি তাবলীগ জামাতের ‘ফাজায়েলে আমল’ গ্রন্থ থেকে একটি প্রমান দিব।সেখানে একটি শিরোনাম দেওয়া হয়েছে কোন ‘আমালে আদাম (আ:)-এঁর তাওবাহ কবূল হলোঃ
“হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ﷺ) বলেন, যখন হযরত আদম (আঃ) হইতে কিছুটা পদস্খলন হইয়া গেল যাহার দরুণ তিনি বেহেশত হইতে দুনিয়াতে প্রেরিত হইলেন,তখন তিঁনি সব সময় কান্নাকাটি ও এস্তেগফার করিতে থাকেন।একদিন তিঁনি আসমানের দিকে মুখ উঠাইয়া আরজ করিলেন হে আল্লাহ! মোহাম্মাদ (ﷺ)-এঁর উছিলায় আঁমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।ওহী নাজিল হইল, মোহাম্মদ (ﷺ) কে? যাহার উছিলায় তুমি ক্ষমা চাহিতেছ? হযরত আদম (আঃ) বলিলেন- যখন আঁপনি আমাকে সৃষ্টি করেন তখন আমি আরশের উপর লিখিত দেখিয়াছিলাম ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ’, তখনই আমি বুঝিতে পারিয়াছিলাম মোহাম্মদ(ﷺ) হইতে অধিক মর্যাদাশীল আর কেহই হইবে না,যেহেতু আঁপনি তাহার নাম নিঁজের নামের সঙ্গে রাখিয়াছেন।ওহী হইল হে আদম! তিঁনি আখেরী নবী এবং তিঁনি তোমার আওলাদভূক্ত হইবেন অথচ তিনি না হইলে তোমাকেও পায়দা করতাম না”-।
📚দলিল
মৌ:মোহম্মদ জাকারিয়া,ফাজায়েলে আমল; খণ্ড ‘ফাজায়েলে জিকির’, পৃষ্ঠা ৩১৫ (বাংলা), পরিবেশনায় তাবলিগী কুতুবখানা / ফাউণ্ডেশন।
তাবারানী; সাগীর,২/৮২,২০৭।
★৩১. ইবনে আসাকির (রহ:) উদ্ধৃত করেন হযরত সালমান ফারিসী (রা:)-কে, যিনি বলেন: “হযূর পূর নূর (ﷺ)-এঁর কাছে জিবরীল আমীন (আ:) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী, ‘(হে রাসূল) আঁপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আঁমি সৃষ্টি করিনি।আঁমি বিশ্বজগতও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আঁপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে। আঁমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আঁপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”
📚দলিল
*১.ইবনে আসাকির : তারিখে দামেস্ক : ৩/৫১৭
*২. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১
৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১৮২
৪. ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/২৮৯
*৫.কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ২/১০৫
★৩২.তাবেয়ী হযরত কাবুল আহবার (রা) থেকে বর্নিত,(বিশাল বর্ননার পর)…. যদি তিঁনি [রাসুল (ﷺ)] না হতেন তাহলে আঁমি না তোমাকে [আদম (আ:)] সৃষ্টি করতাম, না আসমান,জমীন সৃষ্টি করতাম।
📚দলিল
*১.ইমাম কুস্তালানী : আল মাওয়াহেব : ১/৩৩
*২.ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ৩/৩৫২
*৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/৭৮
*৪. আল্লামা শফী উকারবী : যিকরে হাসীন : ৩১
*৫.ইমাম তুগরিব : আল মাওলুদ শরীফ : ১৪২
★৩৩. হাদিস শরীফে অপর একটি বর্ননায় এসেছে।
عن ابن اباس رضي الله عنهما انه قال قال رسول الله صلي عليه و سلم اتاني جبريل عليه السلام فقال يا رسول الله صلي عليه و سلم لولاك ما خلقت الجنة ولولاك ما خلقت النار
অর্থ : হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্নিত, নিশ্চয়ই হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম আঁমার নিকট আগমন করে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহ পাক তিঁনি আমাকে এই বলে পাঠিয়েছেন যে, আঁপনি যদি না হতেন তবে আঁমি জান্নাতও জাহান্নাম কিছুই সৃষ্টি করতাম না। ”
📚দলিল
*১.কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২
*২.ইমাম দায়লামী: ‘মুসনাদ আল- ফিরদাউস, ২/২৪২
*৩. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী : যাওয়াহিরুল বিহার; ৪/১৬০।
*৪.আল আসরারুল মারফুআহ- ১/২৯৫।
🌹সনদের মান যাচাই🌹
*(ক.) ইমাম দায়লামী বলেন, হাদিসটি সনদের দিক থেকে ‘হাসান’।
[দায়লামী; মুসনাদ আল ফিরদাউস, ২/২৪২]
*(খ.) বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস মোল্লা আলী ক্বারী বলেন,একথাটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ।
[আল আসরারুল মারফুআহ- ১/২৯৫]
★৩৪. ইবনে আসাকির উদ্ধৃত করেন হযরত সালমান ফারিসী (রা:) থেকে।তিনি বলেন : “হযূর পূর নূর প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর কাছে জিবরীল আমীন (আ:) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী : ‘আঁমি যদিও ইব্রাহিম (আঃ) কে খলিল বানিয়েছি, কিন্তু আঁপনাকে বানিয়েছি ‘হাবীব’।আঁমি যদিও মূসা (আঃ) এঁর সাথে দুনিয়াতে কথা বলেছি, আঁপনার সাথে কথা বলেছি আসমানে।আঁমি ঈসা (আঃ) কে রুহুল কুদ্দুস থেকে সৃষ্টি করলেও আঁপনাকে করেছি সমগ্র সৃষ্টিজগতের ২০০০ হাজার বছর পূর্বে।আঁপনার কদম এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে আঁপনার পূর্বে কারো কদম পৌঁছেনি, ভবিষ্যতেও পৌঁছবে না।আঁমি আদম (আঃ) কে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করলেও আঁপনার মাধ্যমে ঘটিয়েছি নাবুয়্যাত ক্রমধারার পরিসমাপ্তি।(হে রাসূল) আঁপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আঁমি সৃষ্টি করি নি।
ক্বিয়ামাত দিবসে আঁমার আরশের ছায়া আঁপনার উপর প্রসারিত হবে। প্রশংসার জয়মুকুট আঁপনার নূরানী মস্তকে শোভা পাবে। আঁমি আঁপনার নাম আঁমার নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছি।আঁমি বিশ্বজগতও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আঁপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে।আঁমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না,যদি আঁপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”
📚দলিল
*১. ইবনূ আসাকির : তারীখে দামেস্ক; ৩/৫১৭।
*২. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী : মওদ্বুআতুল কবীর; পৃষ্ঠা ১০১।
*৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব; ১/১৮২।
*৪. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী : যাওয়াহিরুল বিহার; ১/২৮৯।
*৫. ইমাম কাজী আয়াজ : শিফা শরিফ; ২/১০৫।