Logo
শিরোনাম

নওগাঁয় আবাদপুকুর হাটের ইজারা প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত:সোমবার ২৪ জুন 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর বৃহত্তম ধান ও পশুর হাট হচ্ছে রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর হাট। চলতি সনে এই হাটটির খাস আদায়ের ইজারা প্রদানে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। চলতি বাংলা সনের বৈশাখ মাসে অবৈধ ভাবে গোপনে খোলা ডাকের মাধ্যমে হাটের নতুন ইজারা প্রদান করা হলেও বিষয়টি জানেন না হাটের খাস আদায় কমিটির কোন সদস্যরা। যদি প্রকাশ্যে খোলা ডাকের মাধ্যমে হাটের ইজারা প্রদান করা হতো তা হলে সরকার আরো দ্বিগুন পরিমাণ রাজস্ব পেতো বলে মনে করছেন সচেতন মহল। সূত্রে জানা সর্বশেষ গত ১৪২৯সনে (২০২২খ্রি:) প্রকাশ্যে খোলা ডাকের মাধ্যমে হাটটি ভ্যাট-ট্রাক্স ছাড়া ৮০ লাখ টাকায় ইজারা প্রদান করা হয়েছিলো। এরপর ২০২৩খ্রি: হাটটি খাস আদায়ের আওতায় আনতে একটি মহলের নির্দেশনা মোতাবেক ঐ বছর আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের স্কুল মাঠে পশুর হাট বসতে দিবে না মর্মে একটি মামলা দায়ের করলে পরবর্তিতে হাটটি মামলার যাতাকলে খাস আদায়ের আওতায় চলে যায়। অপরদিকে খাস আদায়ে বাৎসরিক ইজারা প্রদানের কোন নিয়ম না থাকলেও উপজেলা প্রশাসন তা করে আসছে। আর খাস আদায়ের নামে প্রশাসনের সহযোগিতায় গত দু' বছর যাবত নামে হাটের টাকা হরিলুট করছে কতিপয় একটি সিন্ডিকেট।  

সরকারী নিয়মানুসারে উপজেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রনাধীন হাট-বাজারের ক্ষেত্রে খাস আদায়ের জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে যে কমিটির মাধ্যমে খাস আদায় হবে। কমিটিতে সভাপতি পদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদস্য পদে চেয়ারম্যান (উপজেলা পরিষদ কর্তৃক মনোনীত পরিষদের একজন সদস্য), সংশ্লিষ্ট হাটের নিকটবর্তি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য, ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের ইউপি মহিলা সদস্য, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকবেন। যদি সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূন্য থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমিটির সদস্য এমন একজন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব মনোনীত করতে পারবেন। 

সরকারের এমন নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে হাট কমিটির সভাপতি অবৈধ ভাবে গোপনে খোলা ডাকের নামে দীর্ঘদিনের একটি সিন্ডিকেটকে খাস আদায়ের দায়িত্ব প্রদান করেছেন। অথচ কমিটির অধিকাংশ সদস্যরা হাটের খাস আদায় ইজারার বিষয়টি জানেন না। অপরদিকে হাটের সাপ্তাহিক খাস আদায়ের কাজটি সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব হলেও ঝামেলার কারণে ভূমি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানালে খোলা ডাকের মাধ্যমে গত দু' বছর যাবত বাৎসরিক হিসেবে ইজারা প্রদানের মাধ্যমে খাস আদায় করে আসছে উপজেলা প্রশাসন। এতে করে প্রতি হাটেই খাজনা আদায়ের নামে ক্রেতা-বিক্রেতাদের গলা কাটা হচ্ছে। প্রতিটি পণ্যের বিশেষ করে গরু, ছাগল ও ভেড়ার খাজনা সরকারী নির্ধারিত হারের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি হারে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। এমন অনিয়মকে শুদ্ধ করতে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দায়সারানো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও পরিচালনা করা হয়। 

চলতি বাংলা ১৪৩১সনের (২০২৪খ্রি:) জন্য গত বৈশাখ মাসে আবাদপুকুর হাটটি জেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে খাস আদায় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতি ছাড়াই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কমিটির সভাপতি উম্মে তাবাসসুম অবৈধ ভাবে গোপনে নামমাত্র খোলা ডাকের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করেছেন। দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট হেলু মেম্বার গংদের কাছে প্রতি সপ্তাহে ভ্যাট-ট্যাক্স সহ ৩ লাখ (৫২ সপ্তাহ) টাকার বিনিময়ে হাটের খাস আদায়ের ইজারা প্রদান করা হয়েছে। যে সিন্ডিকেটটি কৌশল করে বছরের পর বছর রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্র-ছাঁয়ায় আবাদপুকুর হাটের ইজারা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিটি পণ্যের নির্ধারিত হারের চেয়ে দ্বিগুন টাকা খাজনা হিসেবে আদায় করে আসছে।

আবাদুপুকর হাটের খাজনা আদায়কারী টিমের প্রধান হেলু মেম্বার মোবাইল ফোনে জানান, তারা নিয়মানুসারে হাটের খাস আদায়ের ইজারার দায়িত্ব পেয়ে খাজনা আদায় করছেন। আমি একটু ব্যস্ত আছি আপনি পরে ফোন দিয়েন বলে হেলু মেম্বার সাংবাদিক এর মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন। 

কালীগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মোঃ কৌশিক আহমেদ মোবাইল ফোনে জানান, খাস আদায় একটি ঝামেলা পূর্ণ কাজ তাই গত বছরও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাটের খাস আদায় খোলা ডাকের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করেছিলেন। চলতি বছর হাটের খাস আদায় বিষয়ে একটি নোটিশ পেয়েছিলাম। আর চলতি বছর খাস আদায়ের ইজারার খোলা ডাকের দিন আমাকে বলা হয়নি বিধায় বিষয়টি আমার জানা নেই। 

আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান মোবাইল ফোনে জানান, চলতি বছর আবাদপুকুর হাটের খাস আদায়ের ইজারা বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই। আমি কমিটির একজন সদস্য হলেও কিভাবে হাটটির খাস আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে কিছুই জানানো হয়নি। তবে যেভাবেই হাটের খাস আদায়ের ব্যবস্থা করা হোক না কেন খোলা ডাকের দিন কমিটির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতেই ইজারা প্রদানের ব্যবস্থা করা উচিত ছিলো। তাহলে কমিটির সদস্যদের মাঝে এই বিষয়ে আর কোন সন্দেহ থাকতো না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাহার মোবাইল ফোনে জানান, তিনি খাস আদায় কমিটির সদস্য হলেও হাটের ইজারার বিষয়ে কোন কিছুই জানেন না। অবৈধ ভাবে গোপনে হাটের ইজারা প্রদান করার কারণে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা সহ আমরা স্থানীয়রা।  

কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব চাঁন মোবাইল ফোনে জানান, আমার ইউনিয়নের মধ্যে থাকা বৃহত্তম আবাদপুকুর হাটের খাস আদায়ের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কবে কিভাবে কখন খোলা ডাকের মাধ্যমে হাটের খাস আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বারবার জানতে চাইলেও আমাকে বিষয়গুলো জানানো হয়নি। অনেক পরে বিষয়টি জানতে চাইলে ইউএনও জানান, যে জেলা প্রশাসক স্যার ও স্থানীয় এমপির নির্দেশনা মোতাবেক সিন্ডিকেট হেলু মেম্বার গংদের কাছে হাটের খাস আদায়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। শুধু তাই নয় আমি ঐ হাটের প্রতি সপ্তাহের ইজারা মূল্য ৪লাখ দিতে চাইলেও হাটের খাস আদায়ের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট হেলু মেম্বার গং এর সঙ্গে আঁতাত করে হাটের টাকা হরিলুট করছে। হাটের খাস আদায়ের ক্ষেত্রে কোন নিয়মই মানা হয়নি এবং মানা হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাটের খাস আদায় কমিটির সভাপতি উম্মে তাবাসসুম মোবাইল ফোনে বলেন, ১৪৩০ সনের (২০২৩খ্রি:) চেয়ে প্রায় দ্বিগুন টাকায় ১৪৩১সনের (২০২৪খ্রি:) জন্য খোলা ডাকের মাধ্যমে আবাদপুকুর হাটের খাস আদায়ের ইজারা প্রদান করা হয়েছে। যারা হাটের ইজারা মূল্য সবচেয়ে বেশি দিয়েছেন তাদেরকেই খাস আদায়ের ইজারার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারও জানেন। এক কথায় সকল নিয়ম মেনেই আবাদপুকুর হাটের খাস আদায়ের ইজারা প্রদান করা হয়েছে।


আরও খবর



ভিয়েতনাম থেকে এলো ২৯ হাজার টন চাল

প্রকাশিত:রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

ভিয়েতনাম থেকে ২৯ হাজার টন চাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। চাল নিয়ে এমভি ওবিই জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি জি টু জি (সরকারের সঙ্গে সরকার) চুক্তির আওতায় এসব চাল কেনা হয়েছে। এটি ভিয়েতনাম থেকে কেনা তৃতীয় চালান।

ভিয়েতনাম থেকে জি টু জি ভিত্তিতে মোট এক লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুই চালানে মোট ৩০ হাজার ৩০০ টন চাল এরই মধ্যে দেশে পৌঁছেছে।

জাহাজে আনা চালের নমুনা পরীক্ষা শেষে খালাসের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।


আরও খবর

হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা

শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫




ইয়াশ-তটিনীর সঙ্গে তাহসিন

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন লাক্স সুন্দরী সিফাত তাহসিন। দেশে ফিরেই অংশ নেন ঈদের নাটকে। অভিনয় করেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের অগ্নিশিখায়। এতে তাহসিনের দুই সহশিল্পী ইয়াশ রোহান ও তানজিম সাইয়ারা তটিনী। গল্পের প্রধান তিনটি চরিত্রে থাকছেন তারা।

দীর্ঘ সাত বছর পর দেশের নাটকে কাজ করা প্রসঙ্গে সিফাত তাহসিন বলেন, আমাদের শুরুর সময় শুটিং হতো এক ভাবে। এখন কাজ করে মনে হলো পিকনিকে মেজাজে ছিলাম! পুরান ঢাকার মতো অতি জনাকীর্ণ জায়গায় কাজ করলেও সেই আবহ টের পাইনি! মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ইউনিটের সবকিছুই দারুণ গোছানো ছিল। তিনি প্রযোজক হিসেবে সবার যত্ন নেন। এতে আমি মুগ্ধ। পরিচালক রানা ফুরফুরে মানুষ। আর অগ্নিশিখা চমৎকার একটি গল্প। সব মিলিয়ে মনের মতো একটি কাজ করেছি।

২০০৯ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে বিনোদন অঙ্গনে পরিচিতি পান সিফাত তাহসিন। সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন তিনি। একটা সময় অভিনয়ে নিয়মিত ছিলেন। তবে ২০১৮ সালে বিয়ে করে বিদেশে পাড়ি জমান তাহসিন। আর ২০১৯ সালে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয় তার সর্বশেষ নাটক।

সিফাত তাহসিন স্বামী ও চার বছর বয়সী কন্যাসন্তান নিয়ে কানাডার টরন্টোতে থাকেন। গত জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের বিভিন্ন স্থানে একটি নাটকের শুটিং করেছেন তিনি। এবার দেশে এসে অভিনয় করলেন।

এদিকে, অগ্নিশিখা রচনা ও পরিচালনা করেছেন কেএম সোহাগ রানা। তাহসিনের অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিফাত তাহসিন মানুষ হিসেবে দারুণ। আমাদের মনেই হয়নি প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করছি। কানাডার ফ্লাইটে ওঠার আগের দুই দিন অগ্নিশিখার শুটিং করেছেন তিনি। শুটিংয়ের ফাঁকে তার মুখে ইউনিট নিয়ে প্রশংসা শুনেছি। এমনকি বিমানে উঠে মেসেজ দিয়ে নিজের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন তিনি।

ইয়াশ-তটিনী ও তাহসিনের পাশাপাশি এতে আরও অভিনয় করেছেন শিল্পী সরকার অপু, ফখরুল বাশার, মিলি বাশার, বড়দা মিঠু, এমএনইউ রাজু। পুরান ঢাকার সূত্রাপুর ও বুড়িগঙ্গায় এর শুটিং হয়েছে। চিত্রগ্রহণে ফুয়াদ বিন আলমগীর। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নাটকটি উন্মুক্ত হবে সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে। 


আরও খবর



নওগাঁয় গ্রামীণ মেঠো রাস্তার উন্নয়ন কাজে বাধাঁ

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর রাণীনগরের সীমান্তবর্তি অবহেলিত একটি গ্রাম হচ্ছে একডালা ইউনিয়নের নিচ তালিমপুর। এই গ্রামটির সঙ্গে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানার বিষ্ণুপুর নামক আরেকটি গ্রাম সংযুক্ত রয়েছে। গ্রাম দুটি উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় তেমন একটা আধুনিকতার ছোঁয়া স্পর্শ করেনি। সম্প্রতি গ্রামের চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ মেঠোপথের পাঁকাকরণ কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজে বালি দেওয়াকে কেন্দ্র করে কতিপয় ব্যক্তিরা বাঁধা দিতে গেলে গ্রামবাসীরা সেই বাঁধাকে প্রতিহত করে। ফলে বহুবছর পর অবহেলিত গ্রামের বাসিন্দাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। অপরদিকে বালু উত্তোলনের চাঁদা না দেওয়ায় ভেকু মেশিনে হামলা করে ভাংচুর করাসহ মারপিট করার ঘটনাও ঘটেছে।  

নিচ তালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত-ওয়াজেদ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান জানান গ্রাম দুটি উপজেলার শেষ প্রান্তে হওয়ার কারণে চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ রাস্তায় আধুনিকতার ছোঁয়া স্পর্শ করেনি। একসময় রাস্তাটি জমির আইলের মতো ছিলো। এরপর গত ২০০৬ সালে একটি বরাদ্দের মাধ্যমে মাটি কেটে একটু প্রশস্ত করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে কোন মতে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে এক হাটু কাঁদা ভেঙ্গে চলাচল করতে হয়। এতে করে গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থীসহ পুরো গ্রামবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে গত ২০১৯ সালে আমরা গ্রামবাসীরা নিজেদের অর্থ দিয়ে ভ্যান চলাচল করা যায় এমন ভাবে মাটি কেটে প্রশস্তকরন করা হয়। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছর পৌনে দুই কিলোমিটার রাস্তার এক কিলোমিটার অংশ পাকাকরণ কাজ শুরু হয়েছে। সেই রাস্তার জন্য বালি দিতে আমরা গ্রামবাসীরা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বগুড়ার নাগরনদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে অনুমতি প্রদান করি। সেই বালু উত্তোলন করতে গেলে গত ২৫ফেব্রুয়ারী দিবাগত মধ্যরাতে অন্য দূরবর্তি দামুয়া গ্রামের ধান ব্যবসায়ী সবুজ, রিপন, গুয়াতা গ্রামের আম্মাদ হাজীর ছেলে লিটন বাধা প্রদান করে। ওই দিন রাতে খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্যার আমাদের রাস্তার পরিস্থিতি দেখে নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করে যান। এসিল্যান্ড স্যার আসার আগে সবুজ বাহিনী ভেকুর চালককে বেদম মারপিট করে এবং ভেকু মেশিনের বাটারিসহ বিভিন্ন উপকরণ লুট করে নিয়ে যায়। এতে ভেকু মেশিনের ঠিকাদার সবুজ বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পালিয়ে যায়। সবুজ বাহিনী ও এসিল্যান্ড চলে যাবার পর পাশের ঘাটাগন গ্রামের অছির উদ্দিনের ছেলে দুলাল, একই গ্রামের হামিদুল, স্বপন ও লাদুর ছেলে আকরাম মোটরসাইকেল নিয়ে পুনরায় এসে ভয়ভীতি দেখালে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা সবুজ বাহিনী ও ঘাটাগন গ্রামের কয়েক জনের তান্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অবহেলিত এই গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য রাস্তাটির অবশিষ্ট অংশও পাঁকাকরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

রাস্তায় বালি সরবরাহকারী উপজেলার নারায়নপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী আকন্দের ছেলে ফারুক হোসেন জানান তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে বালি সরবরাহের কাজ করে আসছেন। নিচ তালিমপুর গ্রামের মেঠো রাস্তার বেহাল দশা দেখে সেখানে বালি দেওয়ার চুক্তি হওয়ার পর থেকে সবুজ বাহিনী ও ঘাটাগন গ্রামের স্বপন বাহিনীকে চাঁদা না দেওয়ায় বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকী দিতে থাকে। গ্রামবাসীদের অনুমতিতে নাগরনদীর বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার অংশ থেকে বালি উত্তোলন করে রাস্তায় সরবরাহের কাজ চলছিলো। তাহলে নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার অন্য গ্রামের বিএনপি সমর্থিত সুবজ বাহিনী ও দুলাল বাহিনীকে চাঁদা দিতে হবে কেন? চাঁদা না দেওয়ার কারণে তারা মধ্যরাতে ভেকু মেশিনে হামলা করে ভাংচুর করেছে। এতে করে ভেকু মেশিনের কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভেকুর চালককে বেদম মারপিট করে আহত করা হয়েছে। তাকেও হুমকি-ধামকী প্রদান করা হয়েছে। অথচ ম্যানেজ করে আবাদপুকুর এলাকার অন্যান্য স্থানে আ’লীগের লোকেরা ভেকু দিয়ে অবৈধ ভাবে মাটি খনন করলেও তাতে কোন সমস্যা নেই।

দামুয়া গ্রামের ধান ব্যবসায়ী সবুজ মুঠোফোনে জানান, ঐ রাতে তারা কয়েকজন পাশের গ্রাম থেকে মাহফিল শেষ করে ফিরছিলেন। পথেমধ্যে এসিল্যান্ড স্যার তাদের সহযোগিতা নিয়ে নিচ তালিমপুর গ্রামের নাগর নদীর বালু উত্তোলনের স্থানে যান। তারা আবার এসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে ফিরে আসেন। তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যে। তারা চাঁদা চাওয়া কিংবা ভেকু মেশিন ভাংচুরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান মুঠোফোনে জানান ঐ রাতে সবুজ ফোনে বালু উত্তোলনের বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য সবুজরা তাকে চয়েনের মোড় থেকে রিসিভ করে নিয়ে যান। গ্রামের মেঠো রাস্তার বেহাল দশা দেখে তিনি নদী থেকে বালু উত্তোলন করে রাস্তায় দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে চলে আসেন। এসময় সবুজরা কারো কাছ থেকে চাঁদা দাবী কিংবা ভয়ভীতি প্রদান করেননি। তবে তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর কি হয়েছে সেটা তার অজানা বলে জানান এই কর্মকর্তা। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুঠোফোনে জানান নিচ তালিমপুর গ্রামবাসীরা চরম ভাবে অবহেলিত হয়ে আসছে। তিনি যখন একডালা ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ওই গ্রামের অভ্যন্তরীণ রাস্তায় ইট বিছিয়ে দিয়েছেন। তাই ওই গ্রামের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির পুরো অংশ পাঁকা হওয়া খুবই জরুরী। এমন বিষয়টি না বুঝে সবুজরা অন্যায় করেছে। তাদের দ্বারা এই ধরণের কর্মকান্ড আর কখনোই হবে না বলে অঙ্গিকার করেছে। পরবর্তিতে যদি সবুজসহ অন্যরা উপজেলার কোন স্থানে এমন অনৈতিক কর্মকান্ড করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



নওগাঁয় অবৈধভাবে ২শ' ৩৮ টন ধান ও চাল মজুত করায় গুদাম সিলগালা

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

সিনিয়র রিপোর্টার নওগাঁ :

নওগাঁয় অবৈধ ভাবে ২৩৮ টন ধান ও চাল মজুত করার অভিযোগে সুফিয়া অটোমেটিক রাইস মিলের মালিক শফিকুল ইসলাম নাথুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে মজুতকৃত ২০৩ মেট্রিক টন ধান ও ৩৫ মেট্রিক টন চালসহ গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সরকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কুরশিয়া আক্তার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ নির্দেশনা দেন।

এ সময় অভিযানে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব বিন জামান প্রত্যয়, নওগাঁ জেলা খাদ্য বিভাগের সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল্লাহ আল ইমরানসহ জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল্লাহ আল ইমরান জানান, অবৈধ মজুতের কারণে মিলার এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চালের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে শহরের পার নওগাঁ সুফিয়া অটোমেটিক রাইস মিলে বিধি বহির্ভূতভাবে ধান ও চাল মজুত করা অবস্থায় পাওয়া যায়। এর পর ওই মিলের মালিক শফিকুল ইসলাম নাথুর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পাশাপাশি মজুত করা চাল ও ধানের গুদামে সিলগালা করা হয়।


আরও খবর



ইসির অধীনেই থাকছে এনআইডি সেবা

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

জাতীয় পরিচপত্র (এনআইডি) সেবা আপাতত নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ১২ মার্চ আইসিটি ভবনে “এনআইডির ওনারশিপ” শীর্ষক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন তিনি।

ফয়েজ আহমদ বলেন, কমিশনের অধীনে ৩৫ ধরনের তথ্য আছে। তারও বেশি আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভোটের অধিকার ইমপ্লিমেন্টেশন করার জন্য ৩৫ ধরনের তথ্যের প্রয়োজন আছে কি? এই প্রশ্নটি যৌক্তিকভাবে এবং কারিগরিভাবে উপস্থাপন হয়েছে। আমরা যেটা বলছি আমরা ডেটা অথরিটির কথা বলছি।

আমরা বলছি না যে নির্বাচন কমিশনের যে আইটি সেল আছে সেটাকে বন্ধ করে দেব। তার যে সফটওয়্যার হার্ডওয়্যার এবং কারিগরি ক্ষমতা আছে সেটাকে আমরা নিয়ে নেব? আমরা যেটা বলছি ডাটা অথরিটির মাধ্যমে রেগুলেটেড হবে যার কাছে যেটা আছে সেটা আপাতত সেখানেই থাকবে।

একটা পর্যায়ে এসে যখন এই সফটওয়্যারগুলোকে রূপান্তর করা দরকার যখন এগুলো পুরোনো হবে। ওই সময় ওই সময় যেটাকে একটা কেন্দ্রীয় অথরিটির আন্ডারে নিয়ে আসব। আপাতত যে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে।


আরও খবর