Logo
শিরোনাম

নওগাঁয় বালতির পানিতে পড়ে দু' বছর বয়সি শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত:রবিবার ২১ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন :

নওগাঁয় গোসল খানায় রাখা বালতির পানিতে পড়ে দু' বছর বয়সী শিশু কন্যা ওয়াসিফা আক্তারের মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকালে তাদের নিজ বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নাটশাল গ্রাম এমর্মান্তিক শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।

ওয়াসিফা আক্তার মহাদেবপুর উপজেলা সদরের নাটশাল গ্রামের মাওলানা জয়নাল আবেদীন এর মেয়ে।

নিহত ওয়াসিফ এর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১ টার দিকে তার মেয়ে ওয়াসিফকে পরিবারের লোকজন খুঁজে পাচ্ছিলেন না । খোঁজা খুঁজির পর্যায়ে গোসল খানার রাখা পানির বালটিতে ডুবে থাকা অবস্থায় ওয়াসিফকে দেখতে পা‌ওয়া যায় । স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে সকালে বাড়ির লোকজন গোসল করার জন্য গোসল খানায় একটি বড় বালতিতে পানি ভর্তি করে রাখেন। পরিবারের লোকজনের অজান্তে বালতির ভিতরে মাথা ডুবে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে শিশুটি। 

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফ্ফর হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি মর্মান্তিক, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোন সাধারণ ডায়েরি বা অভিযোগ দায়ের করেননি।


আরও খবর



রাণীনগরে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত : পানিবন্দি দেড় হাজার পরিবার

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ)  :

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর বেড়িবাঁধের দুইটি এবং আত্রাই উপজেলার আত্রাই নদীর একটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এতে দুই উপজেলার ৮/১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পরেছে প্রায় দেড় হাজার পরিবার। এছাড়া পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে আমন ধান,ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। বুধবার গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত এই বাঁধগুলো ভাঙ্গার ঘটনা ঘটে।খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।দ্রুতই পানিবন্দি পরিবারগুলোকে খাদ্যসহায়তাসহ সার্বিক সহায়তা করা হবে।

রাণীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ী গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন,গত দুই/তিন থেকে হঠা’ করেই ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বুধবার গভীর রাতে নান্দাইবাড়ী হাফেজিয়া মাদ্রাসা এলাকায় নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে পানির তোরে মাদ্রাসার একটি কক্ষের ইটের দেয়ালও ভেঙ্গে যায়।এছাড়া আধা কিলোমিটার দুরেই দক্ষিন নান্দাই বাড়ীর বেরিবাধ ভেঙ্গে যায়।এতে ওই এলাকার কিষ্টপুর,মালঞ্চি,নান্দাইবাড়ীসহ কয়েকটি গ্রামের মধ্যে পানি ঢুকে পরে। এতে প্রায় ৪/৫শত পরিবার পানি বন্দি হয়ে পরেছে। এছাড়া ওই এলাকার পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া জমির ধান,সবজি পানিতে তলে গেছে।

রাণীগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান,বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় দেড়/দুইশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছে। কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক বলেন,বন্যার পানিতে ওই এলাকার প্রায় ২০ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। ডুবে গেছ সবজি ক্ষেত। ম’স্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় জানান,২৩টি পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ২৬লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।

আত্রাউ উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বলেন,বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ আত্রাই নদীর নন্দনালী বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এতে ওই এলাকার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া আত্রাই-বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের নন্দনালী সরদারপাড়া তালতলা এলাকায় পাকা সড়ক পানির তোরে ভেঙ্গে গেছে।

আত্রাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়া উদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন,বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে প্রায় একহাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছে। কৃষি কর্মকর্তা জানান,বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ১০ হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন,সকাল থেকেই আমরা দূর্গত এলাকায় রয়েছি এবং ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করছি। এছাড়া দূর্গতদের জন্য খাদ্যসহায়তা থেকে সার্বিক সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। আসা করছি খুব দ্রæতই আমরা সহযোগিতা করতে পারবো।


আরও খবর



নওগাঁয় ৪ বছরেও মেরামত হয়নি রিং কালভার্ট' দূর্ভোগে ২০ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ন একটি গ্রামীণ রাস্তা হচ্ছে লোহাচূড়িয়া টু ঝিনা রাস্তা। রক্তদহ বিল থেকে আসা রতনডারী ডারার তীর দিয়ে এই গ্রামীণ রাস্তাটি চলে গেছে। এই রাস্তার পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে ছিন্নমূল, ভূমিহীন, গৃহহীন, গরীব ও অসহায় মানুষদের বসতি। প্রায় ৪ বছর আগে বন্যার পানিতে গহেলাপুর, ঝিনা ও লোহাচূড়িয়া রাস্তার সংযোগ স্থলের রিং কালভার্ট টি ভেঙ্গে গেলেও এখন পর্যন্ত তা মেরামত কিংবা সংস্কার না করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা সহ লোকজনদের। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে রিং কালভার্টটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে এই ভাঙ্গা অংশ পায়ে হেটে কিংবা বাইসাইকেল দিয়ে কোন মতে পার হওয়া গেলেও ভ্যান সহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে প্রতিনিয়তই আকনা, বাঁশবাড়িয়া, ঝিনা, বিজয়কান্দি, বড়বড়িয়া সহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষদের ঐতিহ্যবাহী লোহাচূড়িয়া ধানের হাটে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই অঞ্চলের কৃষকদের ধানের হাটে ধান নিয়ে যেতে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বর্তমানে ২০-২৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। অথচ এই রিং কালভার্টটি মেরামত করা হলে মাত্র ৫ কিলোমিটার রাস্তা পারি দিয়ে ধানের হাটে চলাচল করা সম্ভব। এতে করে কৃষিপণ্য বিপনন করতে লোকসান হিসেবে অতিরিক্ত খরচও গুনতে হবে না ২০টি গ্রামের কৃষকদের।

ঝিনা গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, শহরের সুবিধা এখনোও গ্রামের মানুষরা পাচ্ছে না। ৪ বছর আগে এই সামান্য রিং কালভার্টটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মেরামত না করায় এই রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিনের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে কোন মতে চলাচল করলেও রাতের আধাঁরে এই ভাঙ্গা স্থানটি পারাপার হতে অনেক মানুষই নিচে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। 

এলাকার বাসিন্দা নারী আছমা খাতুন বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের এই রাস্তা দিয়ে গহেলাপুর স্কুলে যেতে হয়। এই ভাঙ্গা অংশটি ৪ বছরেও মেরামত না করায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। আবার বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটির ইটের উপর শেওলা জমে যাওয়ার কারণে হাটার সময় পিছলে পড়েও অনেক দূর্ঘটনা ঘটে। তাই এই ভাঙ্গা রিং কালভার্টটি দ্রুত মেরামত সহ পুরো রাস্তাটি ইটের পরিবর্তে পাঁকাকরণ করার জন্য উন্নয়নবান্ধব সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইসমাইল হোসেন মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি স্থানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত ঐ স্থানে আরেকটি রিং কালভার্ট কিংবা অন্য কোন কালভার্ট নির্মাণ করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানাবো।


আরও খবর



আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শুক্রবার

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক : সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। আগামীকাল শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

বৃস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মুন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনা করবেন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন বলেও জানান তিনি।


আরও খবর



কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০23 | হালনাগাদ:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 |

Image

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ইউএনজিএর ৭৮তম অধিবেশনের সাইডলাইনে শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অব কমিউনিটি ক্লিনিক : ইনোভেটিভ অ্যাপ্রোচ অ্যাচিভিং ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি শীর্ষক উচ্চ-স্তরের সাইড-ইভেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের চাবিকাঠি। সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর এ প্রচেষ্টাকে সহায়তার জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বহুপাক্ষিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোসহ আমাদের উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি-ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবায় তাদের সহায়তার হাত প্রসারিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। টেকসই উন্নয়ন ও সার্বজনীন স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমাদের সম্মিলিত কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য এ বছর শপথ নেওয়ার সময় আমরা আপনাদের উপস্থিতিতে উৎসাহিত বোধ করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসেবে বাংলাদেশ অর্থপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের সম্ভাব্য উপায় হিসেবে ইস্যুটিতে চ্যাম্পিয়ন হবে। আমাদের দিক থেকে, বাংলাদেশ আগ্রহীদের সঙ্গে উপলব্ধি এবং দক্ষতা বিনিময় করতে প্রস্তুত। সব সুখের মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চারদিকে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা আশা করি, এ সাইড ইভেন্ট স্বাস্থ্য এবং আমাদের সব জনগণ ও কমিউনিটির কল্যাণে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের আরেকটি নিদর্শন হয়ে থাকবে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, তারা বুঝতে পেরেছেন যে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আবার চালু করা ও এগুলোর টেকসইয়ত্ব শুধুমাত্র এগুলোর মালিক ও রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী স্থানীয় জনগণের ওপর নির্ভর করে। কেন ৯০ শতাংশ সেবাপ্রার্থী কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতি তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে- তা এ চিত্রটিই বলে দেয়।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে তাদের পার্লামেন্ট কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্ট অ্যাক্ট পাশ করেছে। যাতে এর কার্যক্রম ও ফান্ডিং পদ্ধতি আরো সহজতর করা যায়।

স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূলে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা ভাবেন। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় রোধ করতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করার জন্য পাঁচটি অগ্রাধিকার অন্তর্ভুক্ত করা, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে বিশেষত এনসিডিগুলোর জন্য উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও ডায়াগনস্টিক পরিষেবা দিতে সক্ষম করে তোলা এবং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মতো ক্রমবর্ধমান জলবায়ু-জনিত স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সক্ষমতা আরও উন্নত করা।

অবশিষ্ট দুটি হলো- মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়ুবিক ব্যাধির জন্য স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা সেবা উন্নত করা, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে সেবা দেওয়াসহ একটি শক্তিশালী ডেটা-চালিত স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের জন্য প্রাথমিক বিল্ডিং ব্লক হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ব্যবহার করা যায়।

এ সময় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সিনিয়র পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক একটি ধারণা- যা বাংলাদেশে সময়ের পরীক্ষায় দাঁড়িয়ে গেছে। এটি এখন আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এ মডেলটিকে বাকি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি সর্বোত্তম অনুশীলন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা আমাদের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমার পিতা, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই, জাতির পিতা সমগ্র জনগণের জন্য চিকিৎসা সহায়তার ন্যূনতম সুযোগ দেওয়ার জন্য গ্রামীণ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করতে চেয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো তার স্বপ্ন এবং প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। এখন প্রায় ১৪ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে, যা স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা এবং পুষ্টি-সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোর জন্য ওয়ান-স্টপ সেন্টার হিসেবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, যা এখন সারা দেশে কাজ করছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নবজাতক, শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রায় ৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক জন্মদানের জন্য দক্ষতাপূর্ণ সেবার সুবিধা দিচ্ছে। এতে গড়ে প্রতি মাসে ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন লোক ক্লিনিকে সেবা নিতে আসেন এবং এ সেবাপ্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ নারী ও শিশু। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সর্বজনীন টিকাদানের স্থানীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এবং তারা কোভিড-১৯ টিকার কভারেজ সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসংক্রামক রোগের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্নায়বিক ব্যাধিও পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে। আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এবং যেখানে সম্ভব মানসিক স্বাস্থ্যের সহায়তা প্রসারিত করতে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছি। এ জন্য কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কফোর্সের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা আপডেট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ২৭টি প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং তিনটি পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী বিনামূল্যে দিয়ে আসছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অ্যান্টিবায়োটিকগুলোকে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এবং অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ এজেন্ট দিয়ে প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো জরুরি ও জটিল ক্ষেত্রে উচ্চতর চিকিৎসা সুবিধার জন্য রেফারেল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, সেবা প্রদানকারীরা স্বাস্থ্য ডেটা রেকর্ড করার জন্য ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত। তারা স্বাস্থ্য এবং বিকলতা-সম্পর্কিত বিষয়গুলোর জন্য সামাজিক এবং আচরণগত পরিবর্তনের বিষয়গুলোতেও তারা সম্পৃক্ত।

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর প্রতিটি ৬ হাজার জন লোককে সেবার আওতায় আনবে বলে আশা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্লিনিকগুলো সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের একটি অনন্য মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, স্থানীয় লোকেরা এর জন্য জমি সরবরাহ করে এবং সরকার পরিচালনার খরচ বহন করে। নারীদের বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণসহ সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে নেওয়া এবং স্থানীয় প্রতিনিধিদের দ্বারা এগুলো পরিচালিত হয়।

তিনি আরো বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় আসার পর, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রায় সাত বছর ধরে অবহেলিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)-এর বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে, সিন্ট মার্টেনের প্রধানমন্ত্রী সিলভেরিয়া এলফ্রিডা জ্যাকবস জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা কভারেজ অর্জনকারী বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

মালদ্বীপের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সাফিয়া মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, এত শক্তিশালী নারী নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে পেরে তিনি অভিভূত। তিনি সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার উপায়গুলো সহজ করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভূমিকা নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও দেখানো হয়।

সূত্র : বাসস

 


আরও খবর



আট মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৩১৭

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত (৮ মাসে) ৩ হাজার ৫৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ১৭২ জন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল রুমে রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। কোয়ালিশনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর হিসেবে, দেশে ৩ হাজার ৫৬২টি দুর্ঘটনা হয়েছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১৭ জন। আর আহত হয়েছেন ৫ হাজার ১৭২ জন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ স্বীকৃত সেইফ সিস্টেম এপ্রোচ (নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী, এবং রোডক্র্যাশ পরবর্তী কার্যকর ব্যবস্থাপনা) এর সমন্বয়ে একটি পৃথক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সেইফ সিস্টেম এপ্রোচ ব্যবহার করে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানসম্মত কোনো গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ না করায় আমাদের দেশে সরকারি দুটি সংস্থার হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যার অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশে ৫০৮৯টি রোডক্র্যাশে ৫৬৩৬ জন নিহত এবং ৪৪৪৪ জন আহত হয়। আর ২০২১ সালে ৫৪৭২টি রোডক্র্যাশে ৫০৮৪ জন নিহত এবং ৪৭১৩ জন আহত হয়। নিসচা-এর তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশে ৭০২৪টি দুর্ঘটনায় ৮১০৪ জন নিহত এবং ৯৭৮৩ জন আহত হয়। আর ২০২১ সালে ৪৯৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮৯ জন নিহত এবং ৫৮০৫ জন আহত হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরেও রোডক্র্যাশের সার্বিক হার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। অথচ এই সকল অনাকাঙ্খিত মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য, কিন্তু এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলে কতটা আন্তরিক প্রশ্ন থেকে যায়।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)র চেয়ারম্যান বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য উন্নত দেশগুলো সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিজেদের আইনি ও নীতি কাঠামো প্রণয়ন ও এর যথাযথ বাস্তবায়নে সুফল পেয়েছে। তারপরও আমাদের বর্তমান আইনি ও নীতি কাঠামোতে এই দর্শন সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। তবে আশার কথা হলো, বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় গৃহীত বাংলাদেশ রোড সেইফটি প্রকল্পে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের কিছু ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমরা এই বিজ্ঞানভিত্তিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি, সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ সড়কের জন্য আলাদা আইনি কাঠামোর জোর দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত সড়কে পরিবহনের জন্য আইন এবং সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধিমালা। তাই পরিবহন ব্যবস্থাপনার জন্য তৈরি এই আইনে সাম্প্রতিক সংশোধনীর সময়ে গতি নিয়ন্ত্রণ, হেলমেট ও সিটবেল্টের মতো কিছু বিষয় সংযোজন করা হলেও তা সড়কে রোডক্র্যাশের কারণে মানুষের মৃত্যু ও বড় ধরনের আঘাত থেকে রক্ষার করার জন্য পর্যাপ্ত নয়।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সুতরাং সড়কে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত আলাদা আইন প্রণয়ন ও এর যথাযথ বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই নীতি নির্ধারণ পর্যায়ের সকলের আশু পদক্ষেপ কামনা করছি।


আরও খবর