শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টার :
নওগাঁর মহাদেবপুরে বাঁশদিয়ে আসবাব পত্র তৈরী ও বিক্রি করে সংসারে সফলতা এনেছেন উজ্জ্বল ও পুষ্প তরনী দম্পতি।
কুটির শিল্পের কারিগর এই দম্পতি বাড়িতে বাঁশের তৈরী বিভিন্ন রকম ডালা, চালুন, কুলা, ডালি, হাতপাখা, ঝাড়ুসহ নানা রকম সাংসারিক সামগ্রী তৈরী করে এসব হাটেবিক্রি করে সংসারে খরচ করেন। সংসারে স্বামীকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি স্ত্রী নিজেই এখন বড় ব্যবসায়ী। তার দোকানে সাজানো আছে বাঁশ দিয়ে হাতের তৈরি বিভিন্ন রংয়ের কুলা, চালন, ডালি, হাতপাখা, ঝাড়ু সহ অনেক বাঁশের তৈরী আরো অনেক আসবাব পত্র। মহাদেবপুর উপজেলা সদরের সারপট্রি এলাকায় বসে এই শিল্পের ব্যবসায়ীরা বাঁশের তৈরী এসব আসবাব পত্র বিক্রিও করে থাকেন।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় উজ্জ্বল তরনী দম্পতির সঙ্গে। তারা বলেন, আমরা থাকি উপজেলা সদরের কালিতলা মন্দিরের কাছে সুলতানপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘরে। তিনি আরো বলেন, আমরা স্বামী স্ত্রী দুজনেই বাঁশদিয়ে নিজেরাই এসব আসবাব পত্র তৈরী করি, এছাড়াও কিছু জিনিস আমরা কিনে নিয়ে আসি।
এসময় দেখা যায়, রঙিন গোমাই। সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। হাঁস মুরগী ঢাকা টোপা বিক্রি হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে। এছাড়া বিভিন্ন দামের বিভিন্ন শিল্প আছে এদম্পতির দোকানে।
পুষ্প তরনী বলেন, ডালি, হাতপাখা, চালন, কুলা সহ অনেক কিছু আমরা নিজেই তৈরি করি। দিনে মাঝারি ডালি ৬-৭টা, কুলা ২০টি তৈরি করা যায়। কুলার দাম ৫০-৭০ টাকা। এগুলো হাতের তৈরি আদীয় শিল্প। সারা বছর এই ব্যবসা চলে। সপ্তাহে শনি ও বুধবার হাট হলেও আমরা প্রতিদিন এখানে নিয়ে এসে বিক্রি করি। এছাড়া বাড়ি থেকেও অনেকে কিনে নিয়ে যায়। প্রকারভেদে এবং মানঅনুযায়ী ৫০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত ঝাড়ু বিক্রি হয়।
পাশাপাশি পাইকারি নিয়ে এসে বিক্রি করছে অনেক কিছু। এদম্পতি টিকিয়ে রেখেছে বাঁশের তৈরি আদীয় শিল্পকে। তারা দু'জনেই বলেন, ৪ মেয়েকে নিয়ে ভালোই আছি। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। আরেক মেয়ের বিয়ের কথা চলছে। অন্য মেয়েরা পড়াশোনা করছে।
এব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু হাসান মুঠোফোনে গনমাধ্যমকে বলেন, স্বামী-স্ত্রী দম্পতি হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে এটা অবশ্যই সবার জন্য একটা অনুপ্রেরণা মূলক কাজ।
এটা আগে ছিল নিত্য প্রয়োজনীয়। তবে এখন এই শিল্পগুলো অনেক জায়গায় সৌখিন হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। তিনি বলেন, তারা যদি কোন সহযোগিতার জন্য আসে আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।