Logo
শিরোনাম

নওগাঁয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতাদের উপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় কিশোর গ্যাং এর হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আরমান হোসেন (২২) ও মেহেদী হাসান (২২) নামে দু'জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টারদিকে নওগাঁ শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে রাত সারে ৮ টার দিকে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৩ জন সদস্যকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী। আহত আরমান হোসেন ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে ২৫০শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এডমিশনের প্রস্তুতিতে নওগাঁয় অবস্থান করছিলেন তিনি এবং মেহেদী হাসান নওগাঁ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৈনন্দিন কর্মসূচি শেষে নওগাঁ শহরের বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নওগাঁয় নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীরা। ঐ মুহূর্তে হঠাৎ করেই কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এরপর আরমান হোসেনকে অতর্কিত ভাবে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আরমান। তাৎক্ষণিক তাকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। ঐ মুহূর্তে মেহেদী হাসানকে মারপিট করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়ে তারা। আহত অবস্থায় আরমান ও মেহেদিকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নেয় শিক্ষার্থীরা। দু'জনের মধ্যে মেহেদীকে জরুরী বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হলেও অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় আরমানকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জাহানে মোতায়েন যুক্ত বলেন, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকার পতনের পর চাঁদাবাজিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমর্থন চেয়ে আসছিলো কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দেশীয় অস্ত্র ও অগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আকস্মিক এ হামলা চালায় তারা। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। হামলার শিকার ছাত্রনেতা আরমান হোসেন বলেন, কোন কিছু বুঝে উঠবার আগেই ওরা (কিশোর গ্যাং) আমাকে মারপিট শুরু করেছিলো। তারা আমার মাথাসহ পুরো শরীরে আঘাত করেছে। এক পর্যায়ে স্কুলের পেছনে অন্ধকার একটা জায়গায় টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। এতে বাধা দিলে পকেট থেকে ছুরি বের করে আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরলেও অভিযুক্তদের গডফাদাররা প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকির উপরে রেখেছে। বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের অবদানের কথা মাথায় রেখে হলেও প্রশাসনের উচিত সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়ানো। অন্যায়কে সমর্থন না দেওয়ায় আমাদের সহযোদ্ধা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখলেও থানা পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে থানায় বসে সমঝোতা করতেই ব্যস্ত। যে যতই চেষ্টা করুক, হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারী প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে না পারলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) আব্দুল আজিজ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে সান্নিধ্য, হাসান ও আলামিন নামে ৩জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


আরও খবর



লন্ডনে তারেক রহমান ও ফখরুলের বৈঠক

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

দশ দিনের সফরে শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন এবং এরই মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেরেছেন প্রাথমিক আলাপ। সাক্ষাৎকালে ফখরুল দেশের সার্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, অর্ন্তর্বতী সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনী রোডম্যাপ আদায়ের কৌশল নির্ধারণ করা, বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার অধিকতর প্রচারণা ও কার্যকর করা, দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও গতিশীল করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ও তারেক রহমানের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। কারণ, এসব ইস্যু নিয়েই মির্জা ফখরুল লন্ডনে গেছেন।

এদিকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার চান বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা।

তাদের ভাষ্য, দেশের জনগণের কাছে মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব যেমন অন্তর্বর্তী সরকারের, ঠিক তেমনি মানুষকে সেবা প্রদানের দায়িত্ব নির্বাচিত সরকারের।

তারা আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের ভোটে যে-ই সরকার গঠন করুক না কেন, মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করাটাই বিএনপির টার্গেট।

এ বিষয়ে কথা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, দেশ পরিচালনায় আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি। প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষে নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছি। তারাও এ বিষয়ে সম্মত। বলেছে সংস্কার শেষে নির্বাচন দেওয়া হবে। এখন আমরা দেখব তারা কী সিদ্ধান্ত নেয়। যদি ডিসেম্বরের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা না করে, তবে নির্বাচনের জন্য আন্দোলনে নামতে পারি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দলীয়ভাবে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। এখন দুই নেতার বৈঠকের পর কী সিদ্ধান্ত আসে, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বিএনপি মনে করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচিত সরকারের হাতে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। এজন্য বিএনপির পক্ষ থেকে কয়েক ধরনের কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এরপরও যদি প্রয়োজন হয়, তখন আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। পরে ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

এরপর সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিএনপির নেতারা। আর এই পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করতে লন্ডনে গেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।


আরও খবর



মূল্যস্ফীতির অভিঘাত খাদ্যে, ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চলতি বছরের নভেম্বরে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে এই মূল্যস্ফীতি হয়েছে বেশি। এর মারাত্মক অভিঘাত পড়েছে গরিবের ওপর। এতে সংসার চালাতে হিমমিশ খাচ্ছেন কম আয়ের মানুষ। এই উচ্চ দামের অভিঘাতে তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। ক্রয় ক্ষমতা পেয়েছে হ্রাস। বাজার বিশ্লেষক দেশি-বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত যাচাই এবং অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ মাসে খাদ্য পণ্যে মূল্যস্ফীতি ১ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে যা প্রায় ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, গত মাসে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক পদক্ষেপ ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ের কারণে আগামী বছরের মে-জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নভেম্বরে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত বছরের অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

দেউলিয়াত্ত থেকে ফিরে আসা দ্বীপদেশ শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতি প্রায় তিন মাস ধরে ঋণাত্মক পর্যায়ে। কিন্তু বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য সংকোচন না হওয়ায় মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। গত বছরের একই সময়ে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৮৯ শতাংশ। এছাড়া, নভেম্বরে মজুরির হার কিছুটা বেড়েছে ৮.১০ শতাংশ হয়েছে যা অক্টোবরে ছিল ৮.০৭ শতাংশ।

নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, অক্টোবরে যা ছিল ১১ দশমিক ২৬ ভাগ। গত বছরের একই সময়ে অর্থাৎ নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। নভেম্বরে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৪১ ও ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। চলতি বছরের অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৭৫ ও ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং গত বছরের নভেম্বরে যা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮৬ ও ৮ শতাংশ। নভেম্বরে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ; অক্টোবরে যা ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। নভেম্বরে শহরাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৬৩ ও ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০২৪ সালের অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৫৩ ও ৯ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের নভেম্বরে যা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৫৮ ও ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।

দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের কাছাকাছি। বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের গড় চলন্ত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।

বাজার তদারকি করা হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাফল্য আসছে না। প্রতিনিয়ত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। উৎপাদন ও আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে একটি বড় সরবরাহ চেইন রয়েছে। সেখানেও সংকট কাজ করছে। সবমিলিয়ে দ্রুত এসব পরিস্থিতির উন্নতি না হলে মূল্যস্ফীতি টেনে ধরা যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক শফিকুজ্জামান এ বিষয়ে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাজারে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এটাই মূল্যস্ফীতি। এতে খালি হয়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের পকেট। তাদের প্রকৃত আয় কমেছে। এই মূল্যস্ফীতির মারাত্মক অভিঘাতে সংসারের খাবার জোগাতেই সর্বশান্ত হয়েছে বড় আয়তনের পরিবারগুলো। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। আমার সুদিনের আশা করছি।’

সর্বশেষ গত অক্টোবরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ আর অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার কয়েক দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। তাতে বেড়েছে ঋণ ও আমানতের সুদও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, অনেক দিন ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে আইএমএফ মিশন উদ্বেগ জানিয়েছে। আইএমএফের পরামর্শে সুদহার বাড়ানো হলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আবার বাড়তে শুরু করে। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, অনেক আগেই মুদ্রানীতি আধুনিকায়নের পরামর্শ দেওয়া হলেও যথাসময়ে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিনিধি দলটি দ্রুত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি ও মুদ্রাবিনিময় হারের স্থিতিশীলতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এ ছাড়াও ব্যাংকে বেনামে শেয়ার ধারণ বন্ধ ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিনিধি দল।

আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এরপর তিন কিস্তিতে সংস্থাটি থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল নাগাদ পুরো অর্থ পাওয়ার কথা রয়েছে। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে প্রতিটি কিস্তি পেতে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির জন্য গত জুনভিত্তিক দেওয়া বিভিন্ন শর্তের মধ্যে কর-রাজস্ব সংগ্রহ ছাড়া সব শর্ত পূরণ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক পদক্ষেপ ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ের কারণে আগামী বছরের মে-জুনে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে। মূল্যস্ফীতি কমলে সংকোচনমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসব, তখন সুদহার কমবে। গত মে থেকে বাংলাদেশে মুদ্রানীতির সংকোচন শুরু হয়। আর বর্তমানে যে অর্থনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে, সে আলোকে বলতে পারি, আগামী মে-জুনে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে। তারপর কয়েক মাসের মধ্যে তা ৬ শতাংশের নিচে নামতে পারে। সেটি হলে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি থেকে সরে আসব।

আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমার লক্ষণ দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, দেশে খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে টানা তৃতীয় মাসের মতো কমেছে। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো বেশি। এর কারণ এই সময়ের মধ্যে আমাদের দেশে দুটি বন্যা হয়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি ছিল। ফলে শীতকালীন সবজি ও অন্যান্য স্থানীয় খাদ্যপণ্য বাজারে আসতে দেরি হয়েছে। গভর্নর জানান, দেশে শ্রমিক বিক্ষোভসহ বিভিন্ন অস্থিরতার মধ্যেও রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গত চার মাসে ১০ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে। আর জুলাই থেকে নভেম্বরে প্রবাসী আয় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।


আরও খবর



সরকারি চাকরিতে বড় নিয়োগ আসছে

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

ক্যাডার ও নন–ক্যাডার মিলে ২২ হাজার নতুন নিয়োগ আসছে। রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেয়া হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ২২ হাজার নতুন নিয়োগ আসছে। এখানে সব কটিই কর্মকর্তা পদ। বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ হবে, নাকি বিশেষ বিসিএস হবে, বিষয়টি দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেয়া হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোকলেসুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে সিভিল সার্ভিস নিয়োগ নিয়ে কথা বলবেন। নিয়োগের ব্যাপারে তিনিই বিস্তারিত জানাবেন।


আরও খবর



সবজির বাজারে শীতের আমেজ

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি ও মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে। এছাড়া শীতের সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কমেছে দাম। একই সঙ্গে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। তবে এখনও চড়া আলু ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আলুর দাম চড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে আলুর দাম বাড়তি। হিমাগার থেকেই এখনও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পণ্যটি। ফলে আলুর দাম কমছে না। অন্যদিকে, কৃষকের ছোট পেঁয়াজসহ পেঁয়াজপাতা বাজারে আসতে শুরু করেছে। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজের দাম।

এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানীকৃত পেঁয়াজ পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমে মানভেদে ৮৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়।

খুচরা বাজারে মানভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। সেই হিসাবে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

কৃষকের শীতকালীন সবজি বাজারে আসায় সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দামও কমতে শুরু করেছে। তিন সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি শিম ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আজ ১০০-১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৪০-১৬০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, শালগম ১০০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা ও লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য সবজি ও শাক আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে

বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেল। খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা ও খোলা পাম তেল ১৬২-১৬৩ টাকায় বিক্রি হয়। এক মাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ১৬-১৭ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বেড়েছে।

এসব বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮৫ টাকায়। বেশ কিছুদিন ধরেই পণ্যটি ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম।

ডিমের ডজন চড়া দাম ১৫০ টাকায় স্থির থাকলেও কোথাও কোথাও পাঁচ টাকা কমে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




বকশীগঞ্জে চা বিক্রেতাকে নাশকতা মামলায় ফাসাঁনোর অভিযোগ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

জামালপুর প্রতিনিধি :

জামালপুরের বকশীগঞ্জে দুই লাখ টাকা চাদাঁ না দেওয়ায় সেলিম মিয়া (৪৫) নামে এক চা বিক্রেতাকে নাশকতা মামলায় ফাসাঁনোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আবুল কাসেম বিলেরপাড় গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে ও সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।  বুধবার বিকালে বিলেরপাড় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী চা বিক্রেতা সেলিম মিয়ার স্ত্রী খোদেঁজা বেগম। সেলিম মিয়া একই এলাকার নুরুল হকের ছেলে। তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন আবুল কাসেম।  

সেলিম মিয়ার স্ত্রী খোদেঁজা বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন,সাধুরপাড়ার গাজীরপাড়া বাজারে তাদের ছোট্ট একটি চায়ের দোকান রয়েছে। স্বামী সেলিম মিয়ার সাথে চা দোকান করে সংসার চালান তারা। দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশী আসাদুল্লাহ গংদের সাথে বসতভিটার আড়াই শতক জমি নিয়ে তাদের বিরোধ চলে আসছে। গত দুই সপ্তাহ আগে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তির কথা বলে সেলিম মিয়ার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম। কাসেম বলেন প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা হচ্ছে। সাধুরপাড়া ইউনিয়নেও মামলা হবে। টাকা না দিলে মামলায় আসামী হবে সেলিম এবং জমির দ্বন্ধ কোনদিন নিরসন হবে না। আবুল কাসেম এর কথামত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন সেলিম মিয়া। টাকা না দেওয়ায় সেলিমের উপর ক্ষিপ্ত হন বিএনপি নেতা আবুল কাসেম। গত ১০ নভেম্বর রাত আনুমানিক দুইটার দিকে নিজ বাড়ি থেকে সেলিম মিয়াকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। স্ত্রীর অভিযোগ পুলিশের সাথে আবুল কাসেমও ছিল। পরেরদিন সকালে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শাহা আলমের দায়েরকৃত নাশকতা মামলায় অজ্ঞাতানামা আসামী হিসেবে সেলিম মিয়াকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার দাবি সেলিম মিয়া কোন রাজনীতি করে না। চায়ের দোকান করে সংসার চালায়।  টাকা না দেওয়ার কারনেই তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ন্যায় বিচারের জন্য জামালপুর-১ আসনের সাবেক এমপি কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামানের মিল্লাতের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সেলিম মিয়ার ভাই মজিবুর রহমান,মেয়ে সোনিয়া আক্তার,সুমাইয়া আক্তার সহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম বলেন,সেলিম মিয়া ও তার পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সাধুরপাড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য সে। কিন্তু  সেলিম মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমি কথাই বলিনা,তাহলে চাদাঁ চাইবো কিভাবে। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতেই একটি পক্ষের ইন্দনে সেলিম মিয়ার পরিবার আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার করছে। তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব মানিক সওদাগর বলেন,এ বিষয়ে আমি অবগত নই। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।


আরও খবর