
শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :
পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে দরপত্রে বিশেষ শর্ত যুক্ত করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে হাসপাতাল চত্বরে এ মানবববন্ধন কর্মসূচি পালিত। নওগাঁ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ হায়দার টিপুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ছাত্র প্রতিনিধি রিয়াদুল সালেহীন, হাসপাতালের তালিকাভুক্ত এমএসআর সামগ্রী সরবরাহকারী ঠিকাদার আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত সরদার, তৌফিক ইমাম, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি নওগাঁ সদর হাসপাতালে ওষুধ ও সার্জিক্যাল সামগ্রী কেনার জন্য অনলাইনে এমএসআর দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ জাহিদ নজরুল চৌধুরী বিশেষ শর্ত যুক্ত করেছেন। শর্তের বেড়াজালে অংশ নিতে পারছে না অনেক ঠিকাদার। দরপত্রে বিভিন্ন শর্তাবলীর একটি অংশে বলা হয়েছে দরপত্রের জন্য ঠিকাদার বাছাইয়ের আগেই কাজ পেতে ইচ্ছুক ঠিকাদারকে ওষুধ ও সার্জিক্যাল সামগ্রীর নমুনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। অথচ এই শর্ত বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালে দেওয়া হয় না। পছন্দের ঠিকাদারকে বাছাই করার জন্য এই শর্ত যুক্ত করেছে তত্ত্বাবধায়ক। এছাড়া হাসপাতালে রোগীদের খাবার সরবরাহ, হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ করা ওষুধ বাইরে বিক্রি করে দেওয়া সহ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, প্রধান সহকারী স ম ওমর ফারুক ও স্টোর কিপার সাজ্জাদ হোসেনের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁদেরকে অপসারণসহ তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, দরপত্র আহ্বানসহ নিয়ম মেনেই হাসপাতালে সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। গত ৫ জানুয়ারী হাসপাতালে বিভিন্ন সামগ্রী কেনার জন্য সারে ৪ কোটি টাকার এমএসআর সামগ্রী দরপত্র অনলাইনে আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় দেওয়া হয়েছে আগামী ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। নওগাঁ ড্রাগ এন্ড কেমিস্ট সমিতির সভাপতি বলেন, এমএসআর সামগ্রী কেনার জন্য যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে তাতে তত্ত্বাবধায়ক স্বেচ্ছাচারীভাবে কিছু শর্ত যুক্ত করেছেন। দরপত্র পাওয়ার আগেই নাকি এমএসআর সামগ্রীর নমুনা জমা দিতে হবে। এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। নিয়ম বর্হিভূতভাবে দেওয়া শর্তগুলো সংশোধন করে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে হবে। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক জাহিদ নজরুল চৌধুরী, প্রধান সহকারী স ম ওমর ফারুক ও স্টোর কিপার সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাদেরকে অপসারণসহ তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানাতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জাহিদ নজরুল ও স্টোর কিপার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অনলাইনে নির্বাচিত ঠিকাদারের নাম প্রকাশ করবেন। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করার কিছু নেই। এছাড়া আমাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি থাকলে সেটা তদন্ত করুক। তদন্ত হলেই সত্যতা বের হয়ে আসবে।