Logo
শিরোনাম

নওগাঁয় নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ছাত্রকে পেটালেন এক শিক্ষক

প্রকাশিত:রবিবার ২১ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ মে ২০২৩ | ১৬৮জন দেখেছেন

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোটার :

নওগাঁয় নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ৮ম' শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রকে পিটিয়ে রাগ নিয়ন্ত্রণ করলেন এক শিক্ষক। পরে ছাত্র ও তার অভিভাবকের কাছে নিজের ভুল শিকার করে গোপনে ঘটনাটি মিমাংসা ও করেছেন মারপিটকারি শিক্ষক।

শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রকে মারপিট করার ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হাটচকগৌরী উচ্চ বিদ্যালয়ে। 

মারপিটের শিকার ছাত্র নাহিদ ইসলাম ওরফে অপু মহাদেবপুর উপজেলার পাতনা গ্রামের আমিনুল ইসলাম এর ছেলে ও হাটচকগৌরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই জন শিক্ষার্থী জানান, ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার দুপুরে ৮ম' শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্র নাহিদ ইসলাম ওরফে অপু (১৪) টিউওবয়েল পাড়ে গিয়ে পানি তুলে চোখমুখ ধোয়ার সময় পানি ছিটকে অপর শিক্ষার্থীদের শরীরে পরে। এসময় বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোকলেছুর রহমান পানি ছিটানোর অপরাধে ক্ষিপ্ত হয়ে রুম থেকে বেত এনে নাহিদ ইসলাম ওরফে অপুকে বেদম মারপিট করেন।

মারপিটের শিকার ছাত্র নাহিদ ইসলাম ওরফে অপু'র দুলাভাই প্রতিবেদক কে রবিবার মুঠোফোনে কলদিয়ে জানান, একজন শিক্ষক হলেন জাতি গড়ার কারিগড়। আর সেই জাতিগড়ার কারিগড় শিক্ষক নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কোন ছাত্রকেই অমানবিক ভাবে মারপিট করতে পারেন না। মারপিটের ঘটনাটি অমানবিক। তিনি আরো বলেন, কিভাবে মারপিট করা হয়েছে শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখলে যে কেউ হতবাক হবেন।


এব্যাপারে বক্তব্য নিতে হাটচকগৌরী উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক এনামুল হক এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রকে মারপিট করার ঘটনাটি তিনি জানেন না বলে জানান।

বক্তব্য নিতে সহকারি শিক্ষক মোকলেছুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, সহকারি শিক্ষক মোকলেছুর রহমান মারপিট করার কথা শিকার করে বলেন, আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মারপিট করেছি। মারপিট করা ঠিক হয়নি জন্যই ঘটনাটি পরের দিন বুধবার মিমাংসা করা হয়েছে। 

ছাত্রের অপরাধ কি ছিলো যে কারনে আপনি তাকে বেদম মারপিট করলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঐ ছাত্র শিক্ষার্থীদের শরীরে পানি ছিটাচ্ছিলেন এমন দৃশ্য দেখে আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মারপিট করেছি এবং পরে ভেবে দেখেছি মারাটা ঠিক হয়নি এজন্য মিটিয়ে ফেলেছি।

অপরদিকে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আতাউর রহমান প্রতিবেদক এর মুঠোফোনে কলদিয়ে জানান, মারপিট এর যে ঘটনা ঘটেছে তা ইতি মধ্যেই মিমাংসাও করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহতু ঘটনাটি মিমাংসা করা হয়েছে, এজন্য এবিষয়ে কোন সংবাদ প্রকাশ করার দরকার নেই। অপরদিকে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রকে মারপিট করার ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অপরদিকে রবিবার দুপুরে সরজমিনে হাটচকগৌরী উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে এসময় প্রধান শিক্ষক তার অফিস কক্ষে মারপিট এর শিকার শিক্ষার্থী ও মারপিটকারি শিক্ষককে ডেকে নিয়ে বলেন, আসলেই ঘটনাটি আমি আগে জানতাম না। এক পর্যায়ে প্রতিবেদক মারপিটের শিকার ছাত্রের বক্তব্য নিতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, কারো কোন অভিযোগ নেই। তারপর বক্তব্য নিলে এখানেই (অফিস রুমে নেন)। এসময় প্রধান শিক্ষক ও মারপিটকারি শিক্ষক এর সামনে কিছুটা বাধ্য হয়েই মারপিট এর শিকার ছাত্র প্রতিবেদক কে জানান, আমি হয়তটা দুষ্টুমি করেছি বলেই স্যার আমাকে মেরেছেন, পরে স্যার ডেকেনিলে আমি স্যারকে জড়িয়ে ধরি স্যারও আমাকে জড়িয়ে ধরেন। এসময় তার নির্যাতনের কয়েকটি ছবি দেখিয়ে তার ছবি কিনা ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, হাঁ মারপিট করার পর বাড়িতে গেলে আঘাতের ছবিগুলো ফোনে তুলেছিলো জানিয়ে তিনি বলেন আমি ও স্যার সব ভুলে মিমাংসা হয়েছি।


আরও খবর



ফুলবাড়িতে মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত

প্রকাশিত:সোমবার ০১ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | ৯৩জন দেখেছেন

Image

উত্তম কুমার মোহন্ত,ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম) :

"দুনিয়ার মজদুর এক হও,বাঁচার জন্য লড়াই করো"মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে,কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।উপজেলা প্রসাশন জাতীয় শ্রমিক লীগ, উপজেলা ইমারত শ্রমিক ইউনিয়ন, হোটেল ও রেস্তোরাঁ শ্রমিক ইউনিয়ন কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন, মটর শ্রমিক ইউনিয়ন সহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। সোমবার সকালে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের পর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক গুলি প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত হয়ে আয়োজনের সমাপ্তি করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সুমন দাস,উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী সরকার,ভাইস চেয়ারম্যান, আব্দুল লতিফ সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মজিবর রহমান, ফুলবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) সারত্তয়ার পারভেজ, উপজেলা একাডিমিক সুপার ভাইজার আব্দুস সালাম, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মুকুল মিয়া বিদ্যুৎ, উপজেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিকের সভাপতি আব্দুল মালেক লিচু, সাধারণ সম্পাদক, মোজাম্মেল হক,উপজেলা ড্রাইভার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নুর ইসলাম, হোটেল ও রেস্তোরাঁ সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাধারণ সম্পাদক, রুহুল আমিন সহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন। 


আরও খবর



চুপ থাকা অন্যায়-অবিচারকে প্রশ্রয় দেওয়া !

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | ১২১জন দেখেছেন

Image

অধ্যাপক ডমোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষাবিদ :

চুপ করে থাকা মানুষদের আমরা ভালো মানুষ হিসেবে বিবেচনা করছি | সমাজ তাদের নাম দিয়েছে অতিশয় ভদ্র মানুষ, যারা কারো সাথেও নেই, পাছেও নেই | সমাজের অন্য মানুষেরা কোথায় আছে না আছে এটা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ না হলেও তারা নিজেরা সেভ জোনে আছে ভেবে এই মানুষগুলো সব সময় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে |

কেউ কেউ চুপ থাকা এই সংস্কৃতিকে বাহবা দিয়ে এসব মানুষকে সারাজীবন বোবা মানুষ বানিয়ে রাখার মোটিভেশন দিচ্ছে | এই কৌশল অবলম্বন করে বিরাট একটা শ্রেণীকে যদি সমাজের মূল স্রোত থেকে বাইরে রাখা যায়, তবে মন্দ কি?

 

চুপ থেকে যদি ভালো মানুষের স্বীকৃতি খুব সহজে পাওয়া যায়, এই ভেবে সমাজের প্রায় বেশিরভাগ মানুষ মুখে তালা দিয়ে রেখেছে | অথচ এদের সমাজের সবচেয়ে দুর্বল শ্রেণী বলে কেউ কেউ ভাবলেও এরাই সমাজ ধ্বংসের মূল কারিগর হিসেবে কাজ করছে | এদের চুপ থাকা অন্যায়-অবিচারকে প্রশ্রয় দেওয়াতে ভূমিকা রাখছে, সমাজের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করছে | এদের এমন মনোভাবের কারণে মানুষের পক্ষে, সমাজের পক্ষে, দেশের পক্ষে একদিন কথা বলার কোনও মানুষ পাওয়া যাবেনা |

চুপ থাকা মানুষরা নিজেদের স্বার্থকেই বেশি প্রাধান্য দেয় | চুপ থেকে ভালো মানুষের সংজ্ঞায় নিজেদের ফেলে তারা এই সুবিধা নিতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়না |

 

এই শ্রেণীর বাইরে আরও দুটো শ্রেণী আছে, খুব সহজ করে বললে ১. উচিত কথা বলার মানুষ এবং ২. সুবিধাবাদী মানুষ | এর বাইরেও আগাছা, পরগাছা, পরজীবী মানুষ তো আছেই |

উচিত কথা বলার মানুষদের সংখ্যা আমাদের সমাজে ক্রমশ কমতে কমতে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে এসেছে |

চুপ থাকা মানুষদের নীরবতা সুবিধাবাদী মানুষদের অন্যায়কে আরও সহজ করে দিচ্ছে | এদের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভূমিকায় সুবিধাবাদী মানুষদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে |


চুপ থেকে দুপক্ষকেই খুশি রাখা মানুষদের ভালো মানুষ বলাটা কতটা যৌক্তিক, সেটাও ভাববার বিষয় | মনে রাখতে হবে, নিউট্রাল গেয়ারে কখনো গাড়ি চলেনা | চুপ থেকে নিরপেক্ষতার অভিনয় সুবিধাবাদিতার চেয়েও ভয়ংকর |

আর অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে দুজনই সমান অপরাধী |


নীরব থাকা অনেকটা নীরব ঘাতকের মতো | সুবিধাবাদী ও চুপথাকা মানুষের সংখ্যা একত্রে অনেক বেশি হওয়ায় উচিত কথা বলার মানুষেরা কোনঠাসা হয়ে আছে, সব জায়গায় তারা হারছে, মার্ খাচ্ছে | ঘুরে দাঁড়াতে চুপ থাকা মানুষদের তথাকথিত ভালো মানুষের মুখোশটা খুলে মুখটাকে বের করে আনা খুব বেশি প্রয়োজন | মনে রাখতে হবে, ভালো মানুষ সেজে ভালো থাকা আর প্রকৃত ভালো মানুষ হওয়া এক কথা নয় | নিজে ভালো থাকা মানে ভালো থাকা নয়, সবাইকে নিয়ে ভালো থাকাই ভালো থাকা |

 

আমাদের সমাজে মানুষদের মূল সমস্যা হচ্ছে তারা বাস্তবের নায়ক-ভিলেনদের চিনতে পারছেনা | ভিলেনকে ভাবছে নায়ক, নায়ককে ভাবছে ভিলেন | এটা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যত প্রজন্মকে এর বোঝা টানতে হবে | সমাজের সবাই সুবিধাবাদী হয়ে গেলে সমাজটাকেই একদিন নিলামে তুলে বিক্রি করার মতো অবস্থা তৈরী হতে পারে | সমাজ বিক্রি হলে মানুষ দাস হয়ে যায় আর দাসত্বের চেয়ে বড় কলংক আর কিছু নেই |


আরও খবর

রবীন্দ্র তীর্থস্থানে এক বিকেল

বুধবার ১৯ এপ্রিল ২০২৩




শ্রীনগরের পুরাতন লঞ্চ ঘাটটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে

প্রকাশিত:শনিবার ২০ মে ২০23 | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | ৭৬জন দেখেছেন

Image

ময়লা আবর্জনার ডাষ্টবিন হয়ে আছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার শ্রীনগরের পুরাতন লঞ্চ ঘাটটি। দীর্ঘ দিনের বাজারের ময়লা স্হান্তর না করার কারনে লঞ্চ ঘাটসহ আশেপাশে ময়লার স্তর দুই -তিন ফুট জমে আছে। এতে একদিকে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে এসব ময়লা আবর্জনায় তৈরি হচ্ছে এডিস মশা, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এই ময়লার দুর্গন্ধের কারনে খালপাড়ের দোকানদারদের প্রতিনিয়ত নানা রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। ১৯ মে শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গেলে জানা যায় যে, স্হানীয় লোকজন জানায় যে, আমরা ছোট বেলা থেকে দেখছি এখান দিয়ে লঞ্চ ঘাট ছিল। এই লঞ্চ ঘাট দিয়ে আমরা ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্হানে যাতায়াত করতাম। এই খালটি খনন না করার কারনে লঞ্চ ঘাট টি অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। স্হানীয় লোকজন আরও জানায় যে, এই লঞ্চ ঘাটটির অর্ধেকের বেশি বেদখলে চলে গেছে। স্হানীয় কর্তৃপক্ষ যদি এই লঞ্চ ঘাট টি ব্যাপারে সুদৃষ্টি দেয় তাহলে আমরা বাজারের দোকানদাররা সস্তি ফিরে পাব। এই লঞ্চ ঘাটটিতে লাকরী দিয়ে ঘাটে আসা যাওয়ার রাস্তাও আটকিয়ে রাখা হয়েছে।


আরও খবর



ঘূর্ণিঝড় মোখা সিডরের মতো ভয়ঙ্কর

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | ৭৯জন দেখেছেন

Image

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা দেশের দক্ষিণ উপকূলে ২০০৭ সালে আঘাত হানা সিডরের মতোই শক্তিশালী বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আসাদুর রহমান এ কথা জানান।

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলে মোখার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। এটি যখন তীরে আছড়ে পড়বে তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৬০ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রভাবে যে বৃষ্টি হবে, তাতে পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে। একটানা আট ঘণ্টার বেশি প্রবল বৃষ্টি হলে ভূমিধসের আশঙ্কা থাকে। প্রবল বৃষ্টির হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। সিলেটেও প্রভাব থাকবে তবে, ঢাকায় কম হবে।

আসাদুর রহমান বলেন, মোখার প্রভাব সিলেট পর্যন্ত থাকবে। বর্তমানে এর ডায়ামিটার ৫০০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার। ডায়ামিটার যদি ২৫০ কিলোমিটারও থাকে, তাও তো কম না। তীর থেকে ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে এলে এর গতি থাকবে ১৬০ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু এটা আরও গতি সঞ্চার করতে পারে। এই গতিতে এগিয়ে এলে আগামীকাল (রোববার) সকাল ১০টা থেকে ঝড়ো হাওয়ার পরিমাণ বাড়বে।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, প্রত্যেকটা সাইক্লোনের বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র। সিডরের সঙ্গে এর তুলনা হলো, যতক্ষণ পর্যন্ত এটা বঙ্গোপসাগরে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এর শক্তি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এটা শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। বর্তমানে সাগরে অবস্থানকালীন মোখার দমকা বাতাসের সঙ্গে যে ঝড়ো হাওয়া বইছে তার সঙ্গে সিডরের মিল রয়েছে। উপকূল অতিক্রম করার সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য, গতিবেগ, দমকা বাতাস বা ঝড়ো হাওয়ার ধরণ পরিবর্তন হয়। সে কারণে বাতাসের গতিবেগ কম বেশি হয়। তাই সিডরের মতো হবে এ রকম না বলে প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে মোখা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে।

ব্রিফিংয়ে যুগ্ম পরিচালক ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি তুলে ধরে বলেন, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ১৪ মে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। শনিবার (১৩ মে) রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

এদিকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত (পুনঃ) ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত (পুনঃ) ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অপরদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

কতটা শক্তিশালী মোখা : বিভিন্ন সময়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের দুটি মৌসুম রয়েছে। একটি বর্ষার আগে, অর্থাৎ এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসে। আরেকটি বর্ষার পরে, অর্থাৎ অক্টোবর-নভেম্বর মাসে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. সমরেন্দ্র কর্মকার বলছেন, এই দুই সময়ে সি সার্ফেসের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। বায়ুমণ্ডলের বিন্যাসও ফেভারেবল হয়। সূর্য যখন এক গোলার্ধ থেকে আরেক গোলার্ধে যায়, তখন এই সময়টায় বঙ্গোপসাগরের ওপরে থাকে। ফলে বঙ্গোপসাগর অতি উত্তপ্ত হয়ে যায়। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠে যে পানি আছে তা সুপ্ত তাপ নিয়ে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। এটা বায়ুমণ্ডলে যত প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড় তত শক্তিশালী হয়। মূলত এই কারণে এ সময় ঘূর্ণিঝড় বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে মধ্য ও উত্তর বঙ্গোপাসগরে কোনো নিম্নচাপ, লঘুচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। ফলে মোখাই হতে যাচ্ছে চলতি বছরে প্রথম ঘূর্ণিঝড়। সেকারণে পুরো মৌসুমটায় সূর্য থেকে আগত রশ্মি পুরোটাই বঙ্গোপসাগরের পানি উত্তপ্ত করেছে। এতে বঙ্গোপসাগরের পানিতে প্রচুর শক্তি সঞ্চিত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গেল কবছরের মধ্যে মোখা সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার পানিতে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। এখন বঙ্গোপসাগরের পানির তাপমাত্রার যে মানচিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে বুঝা যাচ্ছে, যত উত্তর দিকে ঘূর্ণিঝড়টি অগ্রসর হবে তত বেশি এটি উত্তপ্ত পানির সংস্পর্শে আসবে। এছাড়া শক্তি ধরে রাখতে যে তিনটি উপাদান প্রয়োজন তার সব কটিই রয়েছে মোখায়।

সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রির ওপরে এবং সমুদ্রে সঞ্চিত শক্তিযথেষ্ট পরিমাণে আছে, ফলে ঘূর্ণিঝড়টি আকারে বড় হবে। তারা আভাস দিয়েছেন, উপকূলীয় অঞ্চলে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছড়ে পড়তে পারে এটি।

২০০৭ সালের সিডরে যা হয়েছিল : ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর দেশের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিডর প্রায় ৬ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। যদিও রেডক্রিসেন্টের হিসাবমতে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।

সে সময় উত্তর ভারত মহাসাগরে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে সৃষ্ট ওই ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ২৬০ থেকে ৩০৫ কিলোমিটার। সিডর খুলনা ও বরিশাল এলাকায় তাণ্ডব চালায়। সমুদ্র থেকে উঠে আসা ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে সব কিছু ভেসে যায়। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩২টি জেলার ২০ লাখ মানুষ। উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ছয় লাখ টন ধান নষ্ট হয়ে যায়। সুন্দরবনের প্রাণীদের পাশাপাশি অসংখ্য গবাদিপশু ‍মারা যায়।

 


আরও খবর



ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষে পাকিস্তান

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ মে ২০২৩ | ১৩৪জন দেখেছেন

Image

ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেও ১০২ রানের বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান। এই জয়ে সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল দ্য গ্রিন ম্যানরা। একই সঙ্গে আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়েও প্রথমবারের মতো তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে বাবর আজমের দল।

শুক্রবার (৫ মে) টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক বাবর আজমের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৩৪ রান করে স্বাগতিকরা। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৩২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।

আর এই জয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে শীর্ষস্থানে জায়গা করে নিয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এতদিন ১১৩ দশমিক ২৮৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া। আর ১১২ রেটিং পয়েন্টে দুইয়ে ছিল ভারত।

কিন্তু কিউইদের সঙ্গে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে জয় তুলে নিয়ে ১১৩ দশমিক ৪৮৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে বাবর-রিজওয়ানরা। যদিও এই সিরিজের আগে তালিকার পাঁচে ছিল পাকিস্তান। কিন্তু পাঁচ ম্যাচের সিরিজে চারে চার জয় তুলে নিয়ে ২০০৫ সালে চালু হওয়া র‍্যাঙ্কিং প্রথায় প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠে এলো দলটি। তবে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ব্ল্যাক ক্যাপসদের সঙ্গে হেরে গেলে আবারও ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে তিনে নেমে যাবে পাকিস্তান।

এদিন করাচিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩৪ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় দ্য ম্যান ইন গ্রিনরা। ওপেনিংয়ে নেমে ১০ চারে ১১৭ বলে ১০৭ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দেন বাবর। আর এতে ব্যাটার হিসেবে দ্রুততম ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। এ ছাড়া ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৬ বলে ৫৮ রান করেন আঘা সালমান।

অন্যদের মধ্যে শান মাসুদ ৪৪, ইফতিখার ২৮, রিজওয়ান ২৪ রান করেন। এ ছাড়া ৭ বলে ২৩ রানের অপরাজিত এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

কিউইদের হয়ে ১০ ওভারে ৬৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন ম্যাট হেনরি। এ ছাড়া বেন লিস্টার ও ইশ সৌধির শিকার একটি করে উইকেট।

জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অধিনায়ক টম লাথামের অনবদ্য এক ইনিংসেও কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নিতে ব্যর্থ হয় সফরকারীরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন ল্যাথাম। এ ছাড়া মার্ক চ্যাপম্যান ৪৬ ও ড্যারিল মিচেল ৩৪ রান করেন। শেষদিকে মিডল-অর্ডারের ব্যর্থতায় মাত্র ৪৩ দশমিক ৪ ওভারে ২৩২ রানেই গুটিয়ে যায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা।

পাকিস্তানের হয়ে উসামা মীর চারটি, মোহাম্মদ ওয়াসিম তিনটি, হারিস রউফ দুটি ও শাহীন আফ্রিদি একটি করে উইকেট নিয়েছেন।


আরও খবর