Logo
শিরোনাম

নওগাঁয় ''সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট'' এর সু-ফল পাচ্ছে কৃষি উদ্যোক্তারা

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর রাণীনগরের “সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট” একটি সমবায় ভিত্তিক একটি কৃষি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যই নতুন নতুন জাতের উচ্চ মূল্যের ফসল ফলিয়ে সমবায় ভিত্তিক এই কৃষি প্রতিষ্ঠানটি নিজ এলাকা সহ দেশের কৃষি জগতে অগ্রনী ভূমিকা রাখায় কৃষি উদ্যোক্তাদের কাছে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। 

''সুফলা নওগাঁ'' বর্তমানে দেশের নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের কাছে অনুপ্রেরণার বাতিঘর হিসেবে আলো ছড়িয়ে আসছে। 

উত্তরবঙ্গের মধ্যে প্রথম বারের মতো এই প্রজেক্টে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে চাষ করা হচ্ছে টিস্যুকালচারের জি-৯ জাতের উচ্চ ফলনশীল কলা। দেশের সাধারণ কলার চেয়ে অধিক লাভজনক হিসেবে জি-৯ জাতের কলা বর্তমানে এই অঞ্চলের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে চলেছে। এই কলার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে জি-৯ জাতের কলা পাঁকার এক সপ্তাহ যাবত সংরক্ষণ করা সম্ভব। এছাড়াও সাধারণ কলার চাইতে এই কলার পুষ্টিগুনও অনেক বেশি বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। 

প্রজেক্টের পরিচালক হাবিব রতন বলেন তরুন বেকার এবং প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে ২০১৯ সালে সম্মিলিত ভাবে গড়ে তোলেন “সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট” নামের ব্যতিক্রমী কৃষি প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় ৬ মাস অর্থ সংগ্রহের পর উপজেলার চকাদিন গ্রামে দুই একর জমি ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে শুরু হয় মিশ্র ফল বাগান সৃজনের কাজ। বর্তমানে তা সম্প্রসারিত হয়ে চার একর জমিতে বিস্তার লাভ করেছে। করোনাকালীন সময়ে বীজ-বিহীন চায়না-৩ লেবু চাষে সবচেয়ে বেশি পরিচিত করে তোলে সুফলা নওগাঁকে। এরপর থেকে আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি। বর্তমানে প্রজেক্টটি সম্প্রসারিত করে অন্যান্য স্থানে চাষ করা হচ্ছে নানা জাতের উচ্চ মূল্যের ফসল। বর্তমানে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে উচ্চ ফলনশীল দীগন্ত জি-৯ জাতের কলা ও বানানা ম্যাংগো আম চাষ।  


জি-৯ জাতের কলা চাষ নিয়ে হাবিব রতন আরো জানান, উত্তরবঙ্গের মধ্যে এই প্রথম নওগাঁ জেলায় টিস্যুকালচারের জি-৯ জাতের কলার বাণিজ্যিক বাগান সুফলা নওগাঁর হাত ধরেই সূচিত হয়েছে। রোগ-বালাই প্রতিরোধী ও রপ্তানী যোগ্য জি-৯ জাতের কলার চাষ দারুন লাভজনক। প্রচলিত কলার গাছে প্রতিটি কাঁদিতে কলা পাওয়া যায় ৬০-১২০টি আর জি-৯জাতের কলার প্রতিটি কাঁদিতে ২০০-২৪০টি কলা পাওয়া যায়। সম্ভাবনাময় জি-৯কলা চাষ সম্প্রসারণে আগ্রহী কৃষকদের নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। আলট্রা হাইড্রেনসিটিতে ব্যানানা ম্যাংগো আম বাগানও সৃজন হয়েছে। তারা এই অঞ্চলের কৃষিকে আরো আধুনিক ও লাভজনক করতে আধুনিক প্রযুক্তিতে উচ্চ মূল্যের সবজিও চাষ করছেন এবং সেগুলো বিস্তারের আশায় আশেপাশের অঞ্চলের আগ্রহী কৃষকদের মাঝেও চারা সহজেই পৌছে দিচ্ছেন। বর্তমানে তাদের প্রজেক্টে আধুনিক ফল যেমন মাল্টা, কমলা, ড্রাগন ও অন্যান্য ফলের আধুনিক জাত চাষ করা হচ্ছে। ফলে এই প্রজেক্টে ১২-১৫ জন স্থানীয় বেকার মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে। প্রতিদিনই এই অঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষি উদ্যোক্তারা তাদের প্রজেক্ট পরিদর্শন করছেন। তাদের এই প্রজেক্ট দেখে অনেকেই আধুনিক লাভ জনক কৃষির প্রতি ঝুঁকছেন আর তাদের সহযোগিতা নিয়ে গড়ে তুলছেন নতুন নতুন কৃষি প্রজেক্ট। 

সিলেট থেকে এই প্রজেক্ট পরিদর্শন করতে আসেন কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল মোমিন। তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় জানান দেশের কৃষিকে আরো আধুনিক ও কৃষকদের অল্প পরিশ্রমে এবং কম খরচে অধিক লাভবান করতে সুফলা নওগাঁ প্রজেক্টের অবদান অনেক। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তাদের মাঝে কম মূল্যে বিভিন্ন ফসলের চারা সরবরাহ করাসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়। নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ও জি-৯ জাতের কলার চাষসহ উচ্চ মূল্যের বিভিন্ন ফল চাষে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে সুফলা নওগাঁ। আমিও তাদের কাছ থেকে অনেক উচ্চ ফলনশীল জাতের চারা সংগ্রহ করেছি।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা হক বলেন, সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট কৃষির জগতে এক ব্যতিক্রমী নাম। আধুনিক কৃষির অনুপ্রেরণা হচ্ছে সমবায় ভিত্তিক এই প্রজেক্টটি। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সুফলা নওগাঁকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছি। পড়ালেখা শেষ করে চাকরীর পেছনে না ছুটে সুযোগ থাকলে সুফলা নওগাঁর মতো কৃষি প্রজেক্ট গড়ে তোলা সম্ভব। ডিজিটাল যুগে এখন সবকিছুই হাতে মুঠোয়। এছাড়া নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের সহযোগিতাও প্রদান করা হচ্ছে। তাই সুফলা নওগাঁর মতো এমন কৃষি প্রজেক্ট গড়ে তোলা সম্ভব হলে একদিকে যেমন দেশের কৃষি ও কৃষকরা আধুনিক হবে তেমনি ভাবে কৃষকরাও ফসল চাষে অধিক লাভবান হতে পারবেন। 


আরও খবর



এখন পর্যন্ত ২৫ ফ্যাক্টরিতে ভাঙচুর, ১৩০টি বন্ধ

প্রকাশিত:রবিবার ১২ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ |

Image

বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ২৫টি ফ্যাক্টরিতে ভাঙচুরের ঘটনা এবং ১৩০টি ফ্যাক্টরি বন্ধ আছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। তবে বেতন বৈষম্য নাকি হরতাল-অবরোধের কারণে এমন হচ্ছে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি সংগঠনটি।

১২ নভেম্বর দুপুরের উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান।

ফারুক হাসান বলেন, আমরা যখন বৈশ্বিক ও আর্থিক চাপের মধ্যে থেকেই টিকে থাকার সংগ্রাম করছি, ঠিক তখন শিল্পকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা অপতৎপরতা। বিশেষ করে আমাদের শান্ত শ্রমিক গোষ্ঠীকে উসকানি দিয়ে অশান্ত করা হচ্ছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে সে লক্ষ্য করছি, মজুরি বৃদ্ধির পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করা হচ্ছে। মজুরি ঘোষণার পর থেকে বেশ কিছু কারখানায় অজ্ঞাতপরিচয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তাদের মারধর করেছে, কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলো এ ব্যাপারে আমাদেরকে ভিডিও ফুটেজ দিয়েছে, মামলার কপিও আমাদেরকে দিয়েছে।

তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আশুলিয়া, কাশিমপুর, মিরপুর ও কোনাবাড়ি এলাকার প্রায় ১৩০টি পোশাক কারখানা কারখানা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেসব কারখানা শ্রমিকরা কাজ করতে আগ্রহী, সেগুলোতে কাজ চলছে। তাদের কাজ চলমান থাকবে। দুঃখের বিষয় যে, যখন মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে সরকার গঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ড কাজ করছিল, তখনও কারখানা ভাঙচুর, কারখানায় অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, উদ্যোক্তারা কিন্তু অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই অনেক ঝুঁকি নিয়ে এই শিল্প পরিচালনা করছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন, অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। এমন অনেক উদ্যোক্তা আছেন, যারা লোকসান দিয়েও কারখানা সচল রেখেছেন, শুধুমাত্র ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য। শ্রমিকদেরকে বেতন দিচ্ছেন ঋণের বোঝা মাথায় রেখে।

তিনি বলেন, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ৮৮৫টি পোশাক কারখানা বিজিএমইএ এর সদস্যপদ গ্রহণ করলেও কালের পরিক্রমায় ৩ হাজার ৯৬৪টি সদস্য কারখানা বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ২ হাজার ৯২১টি সদস্য কারখানার মধ্যে ২ হাজার ৩৩৯টি কারখানা বিজিএমইএ-তে তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেছে। এই ২ হাজার ৩৩৯টি সদস্য কারখানার মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৬০০টি সদস্য কারখানা ক্রেতাদের কাছ থেকে সরাসরি অর্ডার এনে কাজ করছে। অর্থাৎ আমাদের এ মুহূর্তে সরাসরি রপ্তানিকারক কারখানার সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৬০০টি।

তিনি আরও বলেন, সদস্যপদ নবায়ন করা ২ হাজার ৩৩৯টি কারখানার মধ্যে ১ হাজার ৬০০ কারখানা বাদে বাকি কারখানাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কারখানা বিভিন্ন ব্যাংক দেনা ও দায়ের কারণে সরাসরি ব্যাক-টু-ব্যাক খুলতে পারছে না। ফলে তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে সরাসরি অর্ডার নিতে পারছে না। এই সদস্য কারখানাগুলো মূলত সাব-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে। অবশিষ্ট কারখানাগুলো ব্যাংক দেনা ও আর্থিক সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে তারা আগামীতে দেনা পরিশোধ করে ব্যবসায় ফিরে আসতে ইচ্ছুক।

এ পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, শিল্পের উত্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বন্ধ কারখানার সংখ্যাও বাড়ছে। শুধু করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ সালে বন্ধ হওয়া কারখানার সংখ্যা ৩১৭টি এবং পরবর্তীতে অন্যান্য কারণে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে না পারার কারণে ২৬০টি কারখানা বন্ধ হয়েছে, বলেও জানান বিজিএমইএ সভাপতি।


আরও খবর

উত্তাপ ভোগ্যপণ্যের বাজারে

মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

আবারও কমলো রেমিটেন্স

সোমবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩




৯৫ শতাংশ বুকিং বাতিল ছাঁটাই শুরু

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ |

Image

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা :  প্রকৃতিতে শীতের আমেজ ও বছরের শেষ সময় পর্যটন মৌসুমের শুরু হিসেবে ধরা হলেও কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের আগমন নেই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায়। গত মাসের মধ্যবর্তী সময়ও জেলার যেসব পর্যটন কেন্দ্র সকাল-সন্ধ্যা কোলাহল মুখর ছিল, সেসব স্থান এখন নীরব।

গত অক্টোবরের ২৮ তারিখ থেকে অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বাতিল হয়েছে। অলস সময় পার করছেন জেলার দেড় শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউস, মোটেল, রিসোর্টের কর্মীরা। এতে প্রতিদিন কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ। এতে মৌসুমের শুরুতেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

জেলার অন্যতম পর্যটন স্পটগুলো হলো কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর স্মৃতিসৌধ, মণিপুরী পাড়া, হামহাম জল প্রপাত, ছয়সিঁড়ি দীঘি, ক্যামেলিয়া লেক, পাত্রখোলা লেক, পদ্মছড়া লেক, বামবুতল লেক, হরিনারায়ন দিঘি, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে সবুজ চা বাগান, রাবার বাগান, বধ্যভূমি একাত্তর চত্বর, হাইল হাওর, বাইক্কা বিল, হাকালুকি হাওর, মুন ব্যারেজ।

সাধারণত বন্ধের দিন ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি ভিড় থাকে। গতকাল শুক্রবার ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জেলার বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট কোনো পর্যটক শূন্য দেখা গেছে। পর্যটন নগরীর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান খালি, দেশী- বিদেশি কোনো পর্যটক নেই। অথচ গত এক মাস আগেও পর্যটন কেন্দ্রগুলো মুখরিত ছিল।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মৌলভীবাজারের প্রায় দেড় শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টাহাউসে শতভাগ অগ্রিম বুকিং থাকত। চলতি বছরেও অগ্রিম বুকিং হয়েছিল। তবে অক্টোবরের ২৮ তারিখ থেকে অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বাতিল হয়েছে। দ্রুত এ অবস্থা থেকে উত্তরণ না হলে পর্যটনশিল্পে আবারও বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা করছেন তারা।

শ্রীমঙ্গল হোটেল প্যারাডাইজের স্বত্বাধিকারী হাজী আবুজার বাবলা জানান, নভেম্বর পর্যটনের ভরা মৌসুম। প্রতি বছর এ সময়ে পর্যটন স্পটগুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকে। কিন্তু হরতাল ও অবরোধের কারণে চলতি মৌসুমের তুলনায় ১০ ভাগ ট্যুরিস্টও নাই।

আবুজার বাবলা বলেন, এখন ক্ষতির মুখে আমরা। এই ক্ষতি কিভাবে পোষাব, বুঝতে পারছি না। কর্মচারী ও বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংকের লোন, বাসা ভাড়া সব কিছু দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। এভাবে যদি চলে তাহলে হোটেল রিসোর্ট গুটিয়ে নিতে হবে।

কমলগঞ্জ অরণ্য বিলাস ইকো রিসোর্টের মালিক এহসান কবির সবুজ বলেন, করোনাভাইরাস, বন্যাসহ নানা কারণে কয়েক বছরে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার অতীতের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার আশায় ছিলাম। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে পর্যটক বলতেই নাই। এ অবস্থা চলতে থাকলে কর্মচারী ছাঁটাই করতে হবে, সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাশের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, লাউয়াছড়ায় ডাব বিক্রি করে সংসার চলে। এক মাস ধরে এ উদ্যানে কোনো ট্যুরিস্ট নাই। বেচা-বিকি নাই। দুরবস্থায় আছি। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। একই ধরনের কথা জানান কসমেটিক ও চা-পাতা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন।

পর্যটন সেবা সংস্থার সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট রয়েছে। সবগুলোই এখন ফাঁকা। প্রতিদিন প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান ছাঁটাই শুরু করেছে। অনেকের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই সমস্যা থাকে, তাহলে ধ্বংসের মুখে পড়বে হোটেল রিসোর্ট।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ম্যানাজার শাহিন আহমেদ বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেশি-বিদেশি পর্যটক বছরের এই সময়ে প্রতিদিন ৫০০-৭০০ ট্যুরিস্ট আসতেন, তখন টিকিট বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব আয় হত ৩৫-৪০ হাজার টাকা। এখন গড়ে ৮০-১২০ জন পর্যটক আসছেন সরকারের রাজস্ব আসছে ৩-৫ হাজার টাকা।

লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, এই মৌসুমে হাজার হাজার পর্যটক দেখা যেত। বর্তমানে হরতাল ও অবরোধের কারণে দেখা নাই। মানুষ নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে না, যানবাহন চলে না, তাই ভ্রমণে আসে না। প্রতি বছর যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো তা এখন হচ্ছে না।

ট্যুরিস্ট পুলিশ মৌলভীবাজার জোনের উপ-পরিদর্শক প্রবাণ সিনহা বলেন, নানা কারণে তুলনামূলকভাবে এবার পর্যটক অনেক কম। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে সোচ্চার। পর্যটকরা যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সে লক্ষ্যে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 


আরও খবর

তিন শতাধিক পর্যটক আটকা সেন্টমার্টিনে

শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩




বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনও পক্ষ নেবে না

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ |

Image

বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ দেশের জনগণের মাধ্যমেই নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনও পক্ষ নেবে না বলেও জানিয়েছে দেশটি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। উত্তর আমেরিকার এই দেশটি বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি সমর্থন করে বলেও জানিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয় সময় (১৩ নভেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এছাড়া সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গটিও ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে।

এদিকে ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, আপনি জানেন- বাংলাদেশ এবং ঢাকা গাজার মতো আরেকটি উত্তপ্ত স্থান। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে খুব শিগগিরই এটি গাজা উপত্যকায় পরিণত হবে। বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ এবং এখানে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ মানুষ গণতন্ত্র এবং অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পক্ষে। আমেরিকা মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে ভূমিকা পালন শুরু করার পর বাংলাদেশের নাগরিকরা খুব আশাবাদী হয়ে ওঠেছেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল প্রধান রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং অন্যান্য দেশের কূটনীতিকদের সাথে কাজ করছে। কেন মার্কিন সরকারকে বাংলাদেশের ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি অনেকবার যা বলেছি এবারও সেটিই বলতে চাই, আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ তার জনগণের মাধ্যমেই নির্ধারিত হওয়া উচিত।

পরে ওই সাংবাদিক বলেন, সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু বিরোধী দলের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা কারাগারে থাকা অবস্থায় সংলাপ কীভাবে হবে? এবং সরকার ক্র্যাকডাউন চালিয়ে যাওয়ায় বিরোধীদের কারা সেই চিঠি পেয়েছেন, সেটাও ভাবছি। গার্মেন্ট কর্মীও নিহত হয়েছেন কমপক্ষে পাঁচজন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? এই অবস্থার মধ্যে সংলাপ কীভাবে হতে পারে?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমাকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাংবাদিকের প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই, তবে তেমন কিছু করা থেকে আমি বিরত থাকব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনও পক্ষ নেবে না। আমরা একটি রাজনৈতিক দলের বিপরীতে অন্য কোনও দলকে সমর্থন করি না। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি।

 


আরও খবর



নারায়ণগঞ্জে নাশকতার চেষ্টাকালে ১৬ জামায়াত নেতাকর্মী আটক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ |

Image

নারায়ণগঞ্জে হরতাল সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোট নগরের বঙ্গবন্ধু সড়কে একটি বিক্ষোভ বিক্ষোভ মিছিলে বের করে। এসময় পুলিশ তাদের বাঁধা দিলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় তারা।  একপর্যায়ে  পুলিশ তাদের লাঠি চার্জ করলে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় জেলা সিপিবি'র সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, বাসদ জেলা ফোরামের সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লবসহ অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন বাম নেতারা।

অপরদিকে একই সময়ে নগরের নাগিনা জোহান সড়কে ছাত্রদল ও যুবদল সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ভোরে  আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় মশাল মিছিল করেছে বিএনপি।

৮টার দিকেসিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরী বাড়ি এলাকায় জামায়াতে ইসলাম অবরোধের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। একই সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ অবরোধ বিরোধী মিছিল করে তাদের ধাওয়া করে। পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জামায়াতে ইসলামের ১৬ নেতাকর্মীকে আটক করে। পুলিশ জানায় নাশকতা করার চেষ্টা কালে তাদের আটক করা হয়।


আরও খবর

১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করবে না আওয়ামী লীগ

মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩




হামাস নির্মূলের ধারেকাছে নেই ইসরায়েল

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ |

Image

দুই মাস আগে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। পরে কাতারের মধ্যস্থতায় বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এরপর পৃথিবীর বুক থেকে হামাসকে নির্মূলের করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

তবে যুদ্ধের ৬০ দিন পেরিয়ে গেলেও হামাস নির্মূলের ইসরায়েলি সেনারা ধারে কাছেও যেতে পারেনি বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডসের ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত যুদ্ধে ৫ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

পরিচয় গোপন রাখা ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বরাতে ওয়াশিংটন পোস্ট আরো জানিয়েছে, হামাস এখনো গাজার উত্তরাঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। হামাসকে সরিয়ে দিতে গাজার উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এখন ছোট্ট এ উপত্যকার দক্ষিণ দিকে আগ্রাসন চালাচ্ছে তারা।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গাজার বেশিরভাগ অঞ্চলকে বিমান হামলা চালিয়ে ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের স্থল সেনারা এখনো হামাসের শক্তিশালী কয়েকটি ঘাঁটিতে প্রবেশ করতে পারেনি।

হামাসকে নির্মূল করতে না পারলেও গাজার সাধারণ মানুষের ওপর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত গাজায় ১৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৫ হাজার শিশু। যারা নিহত হয়েছেন তাদের ৭০ শতাংশই হলেন নারী ও শিশু।


আরও খবর

গাজায় গণহত্যা অব্যাহত

মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩