Logo
শিরোনাম

অস্থির চালের বাজার

প্রকাশিত:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

শুল্কছাড়ের চাল আমদানি, আমনের ভরা মৌসুম বাজারে চালের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তাতেও দেশের মানুষের খাদ্যের প্রধান উপকরণ চালের দামের অস্থিরতা কমেনি। উল্টো ব্যবসায়ী ও মিলার সিন্ডিকেটের কারসাজিতে চালের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে সরু চাল সর্বোচ্চ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে মৌসুমেও চাল কিনতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ভোক্তা।

বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে সরু চালের কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। সরু চাল ছাড়াও মধ্যবিত্তের একমাত্র ভরসার মোটা জাতের চালের দামেও লেগেছে বাড়তি দামের হাওয়া। ব্যবসায়ীদের দাবি, যদিও বিগত বছরগুলোতে এ সময়ে চালের দাম কম ছিল। কিন্তু বাজারে চালের সংকট না থাকলেও মিলপর্যায়ে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা দাম বাড়িয়েছে মিলমালিকরা। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাবে চালের বাজারে দামের অস্থিরতা বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চালের দামের ব্যবধান গড়েছে অন্তত ৮ থেকে ১০ টাকা। ১০ থেকে ১৫ দিন আগে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ছিল ৭৫ টাকা, যা বর্তমানে ৮২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরু চালের পর সব থেকে বেশি দামের পরিবর্তন হয়েছে নাজিরশাইল চালের। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ছিল ৭০ থেকে ৭৮ টাকা। তবে গতকাল তা ৭৬ থেকে ৮৬ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ প্রতি কেজি নাজিরশাইলের দাম বেড়েছে ৬ থেকে ৮ টাকা।

চালের পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, কয়েকটি মাফিয়া কোম্পানির কবজায় দেশের চালের বাজার। গেল তিন মাসের কয়েক দফায় এসব গ্রুপের কারসাজিতে প্রতি বস্তা সরু জাতের চালের দাম বেছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারের চালের পাইকারি ব্যবসায়ী ও নোয়াখালী রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী শাওন আহমেদ বলেন, বর্তমানে বাজারে চালের কোনো সংকট নেই। একদিকে আমদানি করা চালের সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিকে কোম্পানিগুলোর মজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত। তবুও কেন চালের দাম বাড়ছে এর কোনো উত্তর নেই।

এদিকে আগে থেকেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মধ্যবিত্তের চাহিদার শীর্ষে থাকা মোটা জাতের চাল। ভরা মৌসুমে ব্রি-২৮, স্বর্ণা, ও পাইজাম জাতের চালের দাম কমার কথা থাকলেও এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, গুটি স্বর্ণা চাল কিনতে ক্রেতাদের খরচ করতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। এ ছাড়া বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি পুরনো আটাশ ৬৫, পাইজাম ৬০, কাটারিভোগ ৮৫, বাসমতী ৯৪ থেকে ৯৮, পোলাওর চাল ১২০ থেকে ১২৫ ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এর আগে গত বছর নভেম্বরে চাল আমদানির ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রেখে বাকি আমদানি শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে এনবিআর। তবুও আমদানি করা চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। আমদানি করা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকার ওপর।

শান্তিনগর বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা মাহবুব হোসেন জানান, বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮২-৮৫ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ৭৫ টাকা ছিল। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০-৮৬ টাকা, যা আগে খুচরা পর্যায়ে ৭০-৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা, যা আগে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি মাঝারি আকারের চালের মধ্যে বিআর ২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের সরকারি সংস্থাগুলো যে স্তরে অভিযান পরিচালনা করার কথা সে স্তরে তারা অভিযান পরিচালনা করছেন না। দায়সারাভাবে নামমাত্র খুচরা বাজারগুলোতে অভিযান চালায় সংস্থাগুলো। ফলে কারসাজি করা ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা লুটে ফুলেফেঁপে উঠছে। অন্যদিকে বরাবরই দেশের কৃষক ও ভোক্তা ঠকে আসছেন। দ্রুতই এ সংস্কৃতির প্রতিকার করা জরুরি।

এ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়ার দায়িত্ব মূলত প্রতিযোগিতা কমিশনের। কিন্তু তাদের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে তারা নিজেরাই বাজার থেকে হারিয়ে গেছে। সরকারের বাজার মনিটরিং সংস্থাগুলোর তদারকি নিয়ে সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকি করে। কিন্তু ভোক্তা এ থেকে কোনো সুফল পাচ্ছে না। পণ্যের দাম বাড়লেই কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু যে স্তরে কারসাজি হয়েছে, সেই স্তরে মনিটরিং হয় না। ফলে অসাধুরা এ সুযোগে ভোক্তাকে বেশি করে নাজেহাল করে তোলে। 


আরও খবর



হাসিনা-জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করেন। এর মধ্যে এক মামলায় ১২ জন ও অন্য মামলায় ১৭ জন আসামি। পরে আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ। শেষের দুইজন তদন্তপ্রাপ্ত আসামি।

জানা যায়, পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

প্রসঙ্গত, দেড় দশক দেশ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি।


আরও খবর



জ্যোতির প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ইতিহাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর বসছে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে, ভারতের মাটিতে। আট দলের এই বিশ্ব আসরে জায়গা করে নিতে বাছাই পর্ব খেলছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের লাহোরে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামে নিগার সুলতানার নেতৃত্বাধীন দল, প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। আগে ব্যাট করে অধিনায়ক জ্যোতির সেঞ্চুরিতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর করেছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৭১ রান। জিততে হলে এই রানের মধ্যেই থামাতে হবে থাইল্যান্ডকে।

লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন মাঠে টসে হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দলীয় ১৫ রানেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিম। এরপর শারমিনের সঙ্গে ১০৪ রানের জুটি গড়েন ফারজানা। দলীয় ১১৯ রানে ফারজানার বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ৮২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৫৩ রান তোলেন ফারজানা। এরপর জ্যোতির সঙ্গে ১৫২ রানের বড় জুটি গড়েন শারমিন। যেখানে জ্যোতি সেঞ্চুরি পেলেও ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন শারমিন। ৮০ বলে ১৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় জ্যোতি ফেরেন ১০১ রান করে। তার বিদায়ে বাংলাদেশ থামে ২৭১ রানে। থাইল্যান্ডের হয়ে মায়া, পুত্তাংয়ু ও কামছম্পু নেন একটি করে উইকেট।

থাইল্যান্ডকে পেয়ে জয় ছাড়া কিছু ভাবতে রাজি নয় বাংলাদেশ। ওয়ানডে ফরম্যাটে এবারই প্রথমবার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামল বাংলাদেশ। যদিও টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের দেখা হয়েছে সাতবার, যেখানে প্রতিবারই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শুভ সূচনা করতে চায় নিগার-ফারজানারা।


আরও খবর



ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে ফুলবাড়ীতে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

উত্তম কুমার মোহন্ত, ফুলবাড়ী :

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদ এবং বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজা বাসীদের সমর্থনে তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার ৭(এপ্রিল) যোহরের নামাজ শেষে উপজেলা কাচারী মাঠ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে তৌহিদী জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক গুলি প্রদক্ষিণ শেষে মাওলানা আমির হামজার সভাপতিত্বে, শহরের জিরো পয়েন্টে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন ফুলবাড়ী কাচারী মাঠ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মালেক, মাওলানা আতিকুর রহমান, মাওলানা মঈনুদ্দিন মিয়া,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতা নাইম ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা ইসরাইলি বাহিনীর দখলদারিত্ব ও গণহত্যার প্রতিবাদ জানায়। একই সাথে ফিলিস্তিন ও গাজা বাসীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলিম দেশগুলোকে এক হয়ে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান করেন। পরে মাওলানা জোবায়ের আলম ফিলিস্তিনিদের স্মরণে দোয়া পরিচালনা করেন।

পথসভা শেষে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ছবিতে জুতা নিক্ষেপ সহ পতাকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।


আরও খবর



ট্রাম্পের শুল্কে পোশাক খাতে শঙ্কা

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তবে ওই আদেশে পণ্যভিত্তিক শুল্ক হারের তালিকা বা কাস্টমস গাইডেন্স দেওয়া হয়নি। এতে বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি খাতে এক ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান শুল্কের বাইরে যদি ৩৭ শতাংশ শুল্ক যোগ করা হয়, তাহলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশের পোশাকের ওপর কার্যকর শুল্ক বর্তমান গড় ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৮ দশমিক ৫৬ শতাংশে দাঁড়াবে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে ১০০ ডলারের টি-শার্ট বা জিন্সের চালানে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে আমদানি শুল্ক বাবদ প্রায় ৪৯ ডলার দিতে হবে, যা বর্তমানে মাত্র ১১ দশমিক ৫৬ ডলার।

দেশের অন্যতম বৃহৎ ডেনিম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম তানভীর বলেন, 'আমরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ ট্রাম্পের আদেশে পরিষ্কারভাবে এটিকে 'অতিরিক্ত' শুল্ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ৯ এপ্রিলের আগে আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না।'

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আদেশের দ্বারা নির্ধারিত শুল্কের হারগুলো প্রযোজ্য অন্য কোনো শুল্ক, ফি, কর বা চার্জের অতিরিক্ত। তবে তারা দেশ বা পণ্য অনুসারে আর কিছু জানায়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, 'আমরা এখনো পরিষ্কার নই। এটি ৩৭ শতাংশ হতে পারে, কিংবা যদি বর্তমান মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) হারের সঙ্গে যোগ করা হয় তাহলে ৫২ শতাংশেরও বেশি হতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য ইতোমধ্যে অনেক পণ্যে ১৫ শতাংশের ওপরে আছে।'

অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির জানান, তার প্রতিষ্ঠান এখনো ক্রেতাদের কাছ থেকে হালনাগাদ ট্যারিফের তথ্য পায়নি।

'তবে বিভিন্ন সূত্র পরামর্শ দিয়েছে, বর্তমান হারকে প্রতিস্থাপন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে, অথবা বর্তমান হারের সঙ্গে যোগ হতে পারে।'

উচ্চ হারের সংকেত দিয়েছে ব্র্যান্ড

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির প্রশাসক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি পোশাক ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুন শুল্ক ৪৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হতে পারে।'

'সেই ধারণার ওপর ভিত্তি করেই আমরা কৌশল প্রণয়ন করছি। আর নির্বাহী আদেশে স্পষ্টভাবে এটাকে বাড়তি শুল্ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শুল্ক সমন্বয় হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এর মূলে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে বৃহত্তর উদ্বেগ।

তার ভাষ্য, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বাণিজ্য অর্থনীতি, যা আমদানির ওপর নির্ভর করে। এই পদক্ষেপ শুধু শুল্কের জন্য নয়, বরং তারা বাণিজ্য প্রবাহকে ওয়াশিংটনের অনুকূলে নিতে চায়।'

যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিটি অন্যান্য শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বৈশ্বিক সোর্সিং কীভাবে পরিবর্তিত হতে পারে তার একটি ধারণা দিয়েছেন।

চীনের পোশাকের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যেখানে ভিয়েতনামের শুল্ক ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। ভারতের ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কম্বোডিয়ায় ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ও পাকিস্তানের ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বাজারের ৯ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। এছাড়া বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ২৪ শতাংশই হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। ২০২৪ সালে দেশটিতে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এতে চীন ও ভিয়েতনামের পরে তৃতীয় পোশাক সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এ খাতে ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন এবং বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশেরও বেশি তৈরি পোশাক।

রপ্তানিকারক এবং নীতিনির্ধারকরা একমত যে, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়।

অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির বলেন, 'আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো অবস্থান রয়েছে। কিন্তু অন্য দেশগুলো যদি শুল্ক হার কমিয়ে দেয়, তাহলে আমরা দ্রুত বাজার হারাব।'

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং রপ্তানিকারকরা অবিলম্বে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম তানভীর বলেন, 'অন্যান্য দেশ এরই মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে। আমাদেরও একই কাজ করতে হবে এবং তা দ্রুত করতে হবে। এখনও একটি কার্যকর ফলাফল খুঁজে বের করার সুযোগ আছে।


আরও খবর



ডিম মুরগির ন্যায্য দাম না পাওয়ায়, বিপিএর উদ্বেগ প্রকাশ

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, দেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা অবহেলিত হচ্ছেন এবং বর্তমানে কর্পোরেট কোম্পানি ও সিন্ডিকেটের চক্রের কারণে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশের কৃষির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ পোল্ট্রি খাত, যেখানে লাখো প্রান্তিক খামারি তাদের কঠোর পরিশ্রম, বিনিয়োগ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন করছেন, কিন্তু তাদের অমূল্য পরিশ্রমের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না।

পোল্ট্রি খামারিরা এখন নানা সমস্যার মুখোমুখি। প্রথমত, অত্যধিক খরচ এবং কম দামে বিক্রি হচ্ছে তাদের পণ্য। অধিকাংশ খামারি তাদের উৎপাদিত মুরগি, ডিম, খাদ্য এবং অন্যান্য পণ্য সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না। এদিকে, কর্পোরেট কোম্পানি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারের মূল্যের ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে খামারিদের সঠিক দাম না পাওয়ার কারণে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছেন না।

দ্বিতীয়ত, খামারিদের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার অধিকার প্রতি পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। কর্পোরেট সিন্ডিকেট এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের মধ্যে লেনদেনের ফলে খামারি তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত লোকসানের শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া, প্রান্তিক খামারিরা খুবই সীমিত সম্পদ নিয়ে কাজ করেন এবং তারা তাদের পণ্যের যথাযথ মূল্য পেলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।

এছাড়া, খামারিদের কাছে যথাযথ তথ্যের অভাব, প্রযুক্তির অভাব, বাজার বিশ্লেষণ এবং দিকনির্দেশনার অভাব তাদের আরও বেশি অসহায় করে তুলেছে। প্রান্তিক খামারিরা জানেন না কখন এবং কীভাবে তাদের পণ্য বাজারে বিক্রি করা উচিত, এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সহায়তা পেতে তারা উপেক্ষিত হচ্ছেন।

এসব পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে এবং পোল্ট্রি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছে, খামারিদের জন্য একটি টেকসই নীতি বাস্তবায়ন করা হোক, যেখানে সিন্ডিকেটের অবৈধ প্রভাবকে প্রতিহত করা হবে এবং তারা সঠিক মূল্য পাবে।

এছাড়া, প্রযুক্তির উন্নয়ন, ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস, বাজার বিশ্লেষণ এবং নির্দেশনা প্রদান—এই সব কিছুই খামারিদের সহায়তায় প্রয়োগ করা জরুরি। সরকারের পাশাপাশি, আমাদের সকল ব্যবসায়ী, প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়ন সম্ভব।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সশব্দ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। খামারিরা যদি তাদের ন্যায্য মূল্য পায়, তবে তারা শুধু তাদের পরিবারের জন্য না, বরং পুরো দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের সমস্যাগুলি সমাধান করতে আমরা সবাই একসাথে কাজ করতে পারলে পোল্ট্রি খামারিরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে এবং পোল্ট্রি খাত একটি সুষ্ঠু এবং শক্তিশালী খাত হিসেবে গড়ে উঠবে।


আরও খবর