
ঋতুরাজ বসন্তে প্রকৃতি সেজে উঠেছে আপন রূপ রং আর বৈচিত্রে। গাছে গাছে সোভা পাচ্ছে পলাশ আর শিমুল ফুল। সবই যেন জানান দিচ্ছে ঋতুর রাজ বসন্তের রাজত্বকে।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী আমুচিয়া গ্রামে পাহাড় ঘেঁষে বিল আর রাস্তার পাশে দেখা মিলছে বেশ কিছু গাছে ফুটে থাকা আবির রাঙা বাসন্তি ফুলের। মায়াবী এই সৌন্দর্য উপভোগ করে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি প্রেমিরা। রক্ত শিমুল আর তপ্ত পলাশের ফাগুন হাওয়ার পরশ লেগেছে প্রকৃতিতে। এই যেন সবুজের রাজ্য রক্তিম আবার শাসন। আগুন লাগা পলাশের কাছে বিদায়ের গল্প বলছে ঝড়া পাতা। পাখির কলতান আরো মধুর করে তুলেছে ঋতু রাজের অস্তিত্বকে। আমুচিয়া পাহাড় ঘেঁষে ঐ রাস্তায় নিরিবিলি পরিবেশে প্রকৃতি প্রেমিদের নয়া বিরাম সৌন্দর্য দেখার এক অপরূপ পরিবেশ। শহরের কোলাহল ছেড়ে জৈষ্ঠ্যপুরা পাহাড় ও আমুচিয়ার পাহাড় ঘেঁষে রাস্তায় নিরিবিলি হাঁটতে ছুটে আসে মানুষ। বসন্ত মৌসুমে এইসব জায়গায় ঘুরতে দেখা যায় প্রকৃতি প্রেমিদের।
ফাগুনের আলতো বাতাসের দোল লাগতেই গাছ থেকে ঝুর ঝুর করে ঝরে পড়ে রাশি রাশি শুকনো পাতা। হালকা দমকা হাওয়ায় কিছুটা ঘূর্ণিপাকে নিচে পড়ার দৃশ্য দেখে অনেকের মনই উদাস হয়। শীত শেষে ফাগুনের এই দিনে গাছের ঝরাপাতা এখনো ঝরছে। আর কিছুদিন পর এসব ডালে ডালে নতুন পত্র-পল্লবে ছেয়ে যাবে। ফাগুনের শেষ দিনে সুবিন্যাস্ত বৃক্ষরাজি বেষ্টিত মেঠো পথে এখনো ঝরাপাতা গড়াগড়ি খায়। হেঁটে যাওয়ার সময় মর্মর শব্দে তাদের উপস্থিতি এখনো জানান দেয়। আর তখনই পাতাকুড়ানিরা শলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে পাতাকুড়ানোর কাজে। গ্রামাঞ্চলে এ পাতা কুড়িয়ে সেই পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উপজেলার আমুচিয়া গ্রামের কৃষক কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘আমার বাড়িতে দুইটি শিমুলগাছ থেকে যে পরিমাণ তুলা পাই, তা বাজারে বিক্রি করে প্রতিবছর বেশ লাভবান হতে পেরেছি। প্রতিদিন গাছের লাল শিমুল ফুল ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে গাছতলায় আশপাশের মানুষ ভিড় করে।’
বোয়ালখালীর সারোয়াতলী, গোমদন্ডী, আমুচিয়া, কড়লডেঙ্গা, কানুনগোপাড়া, জৈষ্ঠ্যপুরা ইউনিয়নে গাঁয়ের পথের ধারে অযত্ন-অবহেলায় এখনো কিছু শিমুল ও পলাশগাছের দেখা মেলে। এসব গাছের কোলজুড়ে হেসে উঠেছে রক্তিম ফুল। তবে পরিমাণে খুবই কম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিমুল ও পলাশ গাছ আমাদের প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ। এই গাছগুলো একদিকে যেমন চারপাশের পরিবেশ সুন্দর করে তুলে। তেমনই অন্যদিকে আমাদের জীবনেও নানা ভাবে উপকার করে। বৃক্ষরোপন করা গেলে প্রকৃতির এই সৌন্দর্য বাড়ানো সম্ভব।