রোকসানা মনোয়ার : ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ।
আমদানি না থাকায় হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত দুদিনে পেঁয়াজের দাম
বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা
দরে, যা ছিল ১০০ টাকা। আর গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৪০ টাকা। তার আগের সপ্তাহে কেজি
ছিল ৮০ টাকার মধ্যে।
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম
শেষ। বেশির ভাগ এলাকার কৃষকরা ওই পেঁয়াজ তুলে ফেলেছেন। আর হালি পেঁয়াজের ভরপুর
মৌসুম শুরু হতে কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এ সময়ে চলছে সরবরাহ ঘাটতি। যে কারণে
বাজারে দাম বাড়ছে।
এদিকে আমদানির সবচেয়ে বড় বাজার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ।
আমদানি না থাকায় কয়েক মাস ধরে আগাম জাতের এ পেঁয়াজ দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। ফলে
দেশীয় এ পেঁয়াজের সরবরাহ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
অন্যান্য বছরের এ সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এখন পেঁয়াজের দর থাকার
কথা ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। কিন্তু সে চিত্র এখন আর নেই। এত চড়া দামে পেঁয়াজ
কিনতে বিরক্ত ক্রেতারা। তাদের বেশির ভাগ পেঁয়াজের এ বাড়তি দামে উষ্মা জানিয়েছেন।
কারওয়ান বাজারে পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী গফুর মন্ডল বলেন, গত শুক্রবার রাতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮২ টাকা। বৃহস্পতিবার
সকালেই কেজিতে ১৫ টাকার মতো দর বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৯৩ থেকে ৯৭ টাকা পর্যন্ত।
মূলত পাইকারি বাজারে দর বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কিছু কিছু পাড়া মহল্লার দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরেও বিক্রি করতে
দেখা গেছে।
এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতের রপ্তানি পুরোপুরি
বন্ধ থাকলেও গত দুই মাসে চীন ও পাকিস্তান থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যা
চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগন্য। ফলে তাতে বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।
শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ
জানান, ডলারের বাড়তি দামের কারণে অন্য দেশ থেকে আমদানি করলে প্রতি কেজিতে
পেঁয়াজের দাম পড়ে যায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ ও মুনাফা হিসাব
করলে ১০০ টাকার কাছাকাছি খরচ পড়ে যায়। তাই আমদানিকারকদের বড় লোকসানের মুখে পড়তে
হবে। এ জন্য ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে চান না।
তিনি বলেন, হালি পেঁয়াজ উঠতে আরও এক থেকে দেড় মাস লাগতে পারে।
সেজন্য সরকারের উচিত ভারত থেকে পেঁয়াজ আনার উদ্যোগ নেওয়া। কারণ প্রতিবেশী দেশ
হওয়ায় ভারত থেকে দুই-তিন দিনেই পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব।
এদিকে শনিবার রাজধানীর বাজার ঘুরে আরও দেখা গেছে, দীর্ঘদিন চড়া
থাকার সবজির দাম কিছুটা কমেছে। বিশেষ করে শিম, মুলা, শালগম, ফুলকপি ও টমেটোর মতো
শীতের সবজিগুলোর দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি প্রতি কমে বিক্রি
হতে দেখা গেছে। তবে গ্রীষ্মের করলা-বেগুনের মতো সবজি আগের মতো ৮০ থেকে ১০০ টাকার
মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে বাজারে কমেনি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। যা দুই সপ্তাহ আগে আরও ১০-১৫ টাকা কম ছিল। একই ভাবে কিছুটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।