
রাজধানীর
বিভিন্ন এলাকায় এখনো তীব্র পানির সংকট রয়েছে। এ নিয়ে ওয়াসার কাছে বারবার অভিযোগ
করেও কোন সমাধান মিলছে না।
উত্তর বাড্ডার
বেশকিছু এলাকাজুড়ে প্রায় একমাসজুড়ে তীব্র পানির সংকট রয়েছে। সারাদিন পানির
অপেক্ষায় থেকেও, অধিকাংশ সময় হতাশ হতে হয় বাসিন্দাদের। মধ্যরাতে কিছু সময়ের জন্য পানি
আসলেও,তা অপ্রতুল।
পানির সংকটের
কারণে গোসল, পানিপান, দৈনন্দিন সকল কাজ ব্যহত হচ্ছে। যাদের পানি
সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই, তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
যদিও ঢাকা
ওয়াসার তথ্য বলছে, রাজধানীতে দৈনিক সর্বোচ্চ ২৬৫ কোটি লিটারের চাহিদার বিপরীতে ২৭৫ কোটি
লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাড্ডার বাসিন্দারা বেশ কিছু দিন ধরে দূষিত পানি
ব্যবহার করে ভয়াবহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার কবলে রয়েছে বলে মৌখিক অভিযোগ
করেছেন স্থানীয়রা।
দূষিত পানি পানের
কারণে মানুষ ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, কিডনি, লিভারসহ নানা জটিল ও প্রাণঘাতী
সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ধাবিত হচ্ছে।
বাড্ডার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওয়াসার পানিতে মাত্রাতিরিক্ত
দুর্গন্ধ ও ময়লা পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময় ফোটানোর পরেও কিছু কিছু এলাকার পানি থেকে
দুর্গন্ধ দূর হয় না। ওই পানি পুরোপুরি পানের অযোগ্য।গোসলে পানি ব্যবহার করে
ইতিমধ্যে অনেকে চুলকানি চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকদের দারস্ত হচ্ছেন। বিশুদ্ধ
পানির সংকট দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
২০১০ সালের মধ্যে
সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করার বিষয়ে সরকার ঘোষণা
দিয়েছিল। কিন্তু আজও বাস্তবায়ন হয়নি। দূষিত পানি পান করে লাখ লাখ মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা অধিক হারে
পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন ১০ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি
রয়েছে। রাজধানীতে প্রতিদিন ২২০ থেকে ৩০০ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন।
গত তিন দশকে ভূগর্ভস্থ পানির জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা
ব্যয় করা হলেও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়নি। বর্তমানে সারাদেশে বছরে
প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ পানি সংকটে ভুগছে।
কেবল বিশুদ্ধ ও
পরিচ্ছন্ন পানি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পানিবাহিত রোগ এবং এ কারণে মৃত্যুঝুঁকি
প্রায় ২১ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যেতে পারে বলে মত দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা আরো বলছে, উন্নয়নশীল
ও অনুন্নত দেশগুলোতে প্রতি ৫ জনে ৩ জন নিরাপদ খাবার পানি পায় না। স্বল্পমাত্রায়
পানি সরবরাহ ও অপ্রতুল স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এসব দেশে ৮০ শতাংশ রোগব্যাধি হয়ে
থাকে।
একটি বিশেষ মাধ্যমে
সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে
মানুষের প্রতিদিন সুপেয় পানির যে চাহিদা রয়েছে, ভূগর্ভস্থ পানি থেকে সেই চাহিদা পুরোপুরি মেটানো সম্ভব
নয়। অপরিকল্পিতভাবে পানি উত্তোলনের কারণে প্রতি বছরই ভূর্ভস্থ পানির স্তর নিচে
নামছে।
বিশেষ করে এই গরমের মৌসুমে তীব্র ভোগান্তি হয় পানি
নিয়ে।যেমন এই বছর মাঘ মাসের শেষ দিক থেকে শুরু হয়েছে দুর্গন্ধযুক্ত পানি। যাও
মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করে পানি সংগ্রহ করি তাও অত্যন্ত ব্যবহার অনুপযোগী।
কিন্তু
কি করার পানির তো দৈনন্দিন প্রয়োজন রয়েছে।অপর এক বাড়িওয়ালা বলছেন গত কয়েক মাস
ধরে এসব দূষিত পানি ব্যবহার করে পরিবারের সবাই অতিষ্ঠ হয়ে গেছে ।
তার উপরে সুপেয় পানি
সরবরাহের দামে গত কয়েক মাস ধরে দূর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহার করে সুপেয় পানির বিল
দিতে হচ্ছে এ ভাবে কতো দিন আমরা ভোগান্তিতে ভুগবো।