Logo
শিরোনাম

রাজশাহী জেলা পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image
মোঃ শাকিল আহামাদ - জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী ::

রাজশাহীতে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা  জেলা পুলিশের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ০৪ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ১২ টার সময় রাজশাহী জেলা পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। 

উক্ত সভার সভাপতি ছিলেন রাজশাহী পুলিশ সুপার জনাব মো: আনিসুজ্জামান । সাধারণ জনগণ যাতে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই তাৎক্ষণিক তাদের প্রত্যাশিত সেবা পায়, তা নিশ্চিতকরণের নির্দেশ এ সভায় দেওয়া হয়। বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা ও জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। 

এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ যাতে না বৃদ্ধি পায়, সেদিকের প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। মাদক, অস্ত্র ও চোরাচালানের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারকরণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করার বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়। সকলকে দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও সততার সাথে নিজ নিজ কর্তব্য পালনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জনের বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করা হয়।

আরও খবর



শানে রিসালাত রাসূল (ﷺ) সর্বপ্রথম সৃষ্টি”

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।


★২৭. অনাদিরূপে এক আল্লাহ তা’আলাই ছিলেন। অন্য কিছু বলিতে আর কিছুই ছিল না। আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই নাই। এই শূন্যতার সমাপ্তি ঘটাইতে ইচ্ছা করিলেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। যেমন, ওলীকুল শিরোমণি শায়েখ আকবর (রঃ) কর্তৃক এলহাম প্রাপ্ত এবং পূর্বাপর ওলী ও সূফী তথা আধ্যাত্মিকতায় ধন্য মহানগণ কর্তৃক গৃহীত আল্লাহ তাআলার একটি বাণীতে উলেখ আছে- “আঁমার সত্তা (জানিবার কেহ না থাকায়) অজানা ছিল; আঁমার ইচ্ছা হইল (আঁমার গুণাবলীর মাধ্যমে আঁমাকে প্রকাশ করা)-আঁমাকে জানান। সেমতে আঁমি সৃষ্টি করি জগত।”

[তথ্য সূত্র:তাফসীরে রুহুল মাআনী, পৃষ্ঠা: ১৪-২১;বুখারী শরীফ,৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ)]

* এই বাণীর মর্ম কোরআনের একটি আয়াত দ্বারাও সমর্থিত। আল্লাহ তাআলা বলিয়াছেন-“জিন এবং মানুষ এই দুইটি জাতিকে আঁমি একমাত্র আঁমার এবাদত বা গোলামী করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিয়াছি।”

[সূত্র: আল কোরআন,সূরা যারিয়াত, আয়াত নং ৫৬,সূরা নং: ৫১]


✌আল্লাহ তায়ালার এই ইচ্ছার বাস্তবায়নে জগত সৃষ্টির শুভ প্রারম্ভেই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করিলেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর সৃষ্টির মূল নূরকে। এই নূরকেই পরিভাষায় বলা হইয়া থাকে “হাকীকতে মুহাম্মদিয়া”।এই নূর বা হাকীকতে মুহাম্মদীয়া বলিতে কাহারও মতে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এঁর পবিত্র রূহ বা আত্মা উদ্দেশ্য। আর কাহারও মতে অন্য কোন বাস্তব বস্তুবিশেষ উদ্দেশ্য। অথবা ঐ পবিত্র রূহ বা আত্মারই বাহন,কিন্তু পদার্থীয় দেহ নহে, বরং হয়ত এক বিশেষ জ্যোতির্বিম্ব, যাহার প্রতিবিম্বের বিকাশ ছিল হযরত মুহাম্মদ(ﷺ)-এঁর নশ্বর দেহ।

[তথ্য সূত্র:যোরকানী,১-৩৭; বোখারী শরীফ,৫ম খন্ড,পৃষ্ঠা: ২, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌উপরোল্লিখিত আল্লাহ প্রদত্ত এলহামী বাণী ও তাহার সমর্থনে আয়াতের মর্ম ইহাই ছিল যে, “আল্লাহকে জানিবে, আল্লাহর গোলামী করিবে এই উদ্দেশেই সৃষ্ট জগতের সৃষ্টি।” সুতরাং সাধারণ নিয়ম মতেই আল্লাহ তাআলা তাঁহার প্রথম সৃষ্টি হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-কে ঐ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের যোগ্যতায় সকলের ঊর্ধ্বে শীর্ষস্থানের অধিকারীরূপে সৃষ্টি করিয়াছেন। বোখারী শরীফের এক হাদীস আছে, নবী (ﷺ)-ফরমাইয়াছেন- “আল্লাহকে ভয় করায় এবং আল্লাহকে জানায় আঁমি তোমাদের তথা নিখিল সৃষ্টির সকলের ঊর্ধ্বে।” আল্লাহকে যে যত বেশী ভয় করিবে,সে তাঁহার তত বেশী গোলামী করিবে।

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌মাওলানা আশরাফ আলী থানভী তাহার সীরাত সস্কলন ‘নশরুত্তীব’ কিতাবে নিজ সংযোজিত টীকায় নূরে মুহাম্মদীকে রূহে মুহাম্মদী সাব্যস্ত করিয়াছেন।

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃঃ ২, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌এই হাকীকতে মুহাম্মদীয়া হইল নিখিল সৃষ্টিজগতের সর্বপ্রথম সৃষ্টি। লৌহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন, চন্দ্র -সূর্য, ফেরেশতা এবং মানব-দানব সব কিছুই ঐ হাকীকতে মুহাম্মদিয়া বা নূরে মুহাম্মদীর পরে সৃষ্টি হইয়াছে। এই তথ্য সুস্পষ্টরূপে বিশিষ্ট সাহাবী জাবের (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে উল্লেখ রহিয়াছে। জাবের (রাঃ) বলিয়াছেন, আমি একদা আরজ করিলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আঁপনার চরণে উৎসর্গ হউক; সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালা কোন জিনিসটি সৃষ্টি করিয়াছেন? রাসূল (ﷺ) বলিলেন, হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম তোমাদের নবীর নূর সৃষ্টি করিয়াছেন (যাহা) আল্লাহ (বিশেষ কুদরতে সৃষ্ট) নূর হইতে। অতঃপর সেই নূর আল্লাহর কুদরতে আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রণাধীনে চলমান ছিল।ঐ সময় লওহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব-দানব এবং ফেরেশতা কিছুই ছিল না।”

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ; যোরকানী, ১-৪৬]


✌এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলতে চাই যে, কোন শিল্পী নিজ দক্ষতায় সুন্দর গঠনের একটি জিনিস তৈয়ার করে; তাহা এতই সুন্দর হয় যে, স্বয়ং গঠনকারী শিল্পী তাহারই হাতে গঠিত জিনিসটির প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়ে, সে তাহাকে আদর করে, ভালবাসে। শিল্পীর নিজ হাতে গড়া বস্তু তাহার দক্ষতায় এতই সুন্দর ও মনোরম হয় যে, স্বয়ং শিল্পী তাহার ভালবাসায় মুগ্ধ হয়। এমনকি শিল্পী প্রদর্শনী করিয়া তাহার গুণ গরিমারি প্রচার করে। আল্লাহ তাআলাও হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর ক্ষেত্রে তাহাই করিয়াছেন।


✌নবী (ﷺ) নূরী,তাঁর উপর যে হাদীসটি আছে যেমন: জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা আমি রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেসা করি,হে আল্লাহর রাসূল! আঁপনার প্রতি আমার বাবা–মা কুরবান হোক, আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর আগে কী সৃষ্টি করেন? নবী (ﷺ) বলেনঃ হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সমস্ত বস্তুর পূর্বে তাঁর নূর দ্বারা তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেন। তারপর সেই নূর নিঁজ ক্ষমতায় আল্লাহর আদেশে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। সেই সময় লউহ, কলম, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, আসমান-যমীন, সূর্য-চন্দ্র, জিন, মানুষ কোন কিছুই ছিলনা।” এই হাদীসটি বিংশ শতাব্দীর কথিত শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী বাতিল বলে আখ্যা দিয়েছেন।তিনি বলেন সৃষ্টির প্রথম বস্তু হচ্ছে কলম, নবীর নূর নয়। প্রথম সৃষ্টি নবীর নূর বলে যে হাদীস প্রচার করা হয় তা জাল কথা,হাদীস নয়।

[সূত্র: সিল সিলাতুল আহাদীছ আস স্বহীহা (সহীহ হাদীস সিরিজ), হাদীস: ৪৫৮; গ্রন্থস্বত্ত: নাবী (ﷺ) কি নূরের তৈরী, পৃষ্ঠা: ৩২, প্রণেতা: আবদুর রাকীব (মাদানী), মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ,সউদী আরব]


✌সর্বপ্রথম নাসিরুদ্দীন আলবানীর একটু পরিচয় করিয়ে দেই, তিনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি সউদী বংশের শাসকদের প্রস্তাব করেছেন মহানবীর পবিত্র রওযার সবুজ গম্বুজটি ভেঙ্গে ফেলার।সে বলেছে, ‘এটি আফসোসের বিষয় যে,দীর্ঘদিন হল রাসূলের কবরের উপর একটি গম্বুজ প্রস্তুত হয়েছে…আমার বিশ্বাস সউদী সরকারের একত্ববাদের দাবী যদি সত্য হয়ে থাকে তবে তাদের উচিত তা চূর্ণ করে মসজিদে নববীকে তার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

[সূত্র: তাহযীরুল মাসাজিদি মিন ইত্তিখাযিল কুবুর মাসাজিদা, আলবানী, পৃষ্ঠা: ৬৮-৬৯; ওয়াহাবীদের সৃষ্ট সংশয়ের অপনোদন (ইসলামী সেবা দপ্তর, কোম, ইরান)]


✌আমার কথা হচ্ছে,আমরা রাসূল (ﷺ) -কে দেখিনি কিন্তু তাঁর স্মৃতি নিয়ে তাঁকে ভালোবাসি,মনেপ্রানে বিশ্বাস করি। তাঁর প্রতি গভীর ভালোবাসার মারফতে তাঁর দর্শন লাভ করি।রাসূল (ﷺ)-আজ আমাদের মধ্যে প্রকাশ্যে নেই কিন্ত তাঁর রওযা শরীফ আছে আর এটাই আমাদের জন্যে আল্লাহকে পাওয়া ও সারা জাহানের মাখলুকাতকে প্রমান দেওয়ার একটি নিদর্শন।যারা রাসূল (ﷺ)-কে ভালোবাসে তাদের জন্যে রাসূলের রওজার গম্বুজতো দূরের কথা তাঁর ছায়াও একটি যিয়ারতের উৎস। তাহলে যে ব্যক্তি তার নিজের চোখে দেখা এই নিদর্শনটিকে মিটিয়ে ফেলতে চায়,তার কাছে রাসূল (ﷺ)-এঁর নূর তো অবিশ্বাসযোগ্য হবেই। আর তারা ‘রাসূল (ﷺ)-এঁর নূর সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়েছে’ সেটা মানতে রাজি না কিন্তু ‘কলম’ ঠিকই মানতে রাজি আছেন।


👏পাঠকবৃন্দের কাছে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) অসংখ্য নাম সমূহের গুণাবলী থেকে শুধুমাত্র কয়েকটি নামের অর্থ তুলে ধরতে চাই।যেমন,নবীজী(ﷺ)-এঁর এই নামটি ‘সাইয়্যেদ’ অর্থ সর্দার বা প্রধান,নবীজী নিখিল সৃষ্টির প্রধান, নবী ও রাসূলগণের প্রধান। ‘মোকাফফা’ অর্থ সর্বশেষে প্রেরিত। হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) সর্বশেষ পয়গম্বর। ‘সিরাজুম মুনীর’ অর্থ দীপ্ত সূর্য। নবী (ﷺ) দীপ্ত সূর্য অপেক্ষা অধিক ভাস্কর ছিলেন।

[সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৪৭, হাঃ ১৬৬২, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


🌹নবীকরিম (ﷺ)-এঁর নূর মোবারক মাখলুকাতের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্ঠি করা হইয়াছে। যেমন হাদীস শরীফে আছে নবী করীম (ﷺ) বলেন হে জাবের আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম তোমাদের নবীর নূর পয়দা করিয়াছেন।

[তথ্য সূত্র: শানে মাহবুব (সঃ), পৃষ্ঠা ৩৮,তাবলীগী কুতুবখানা,চক বাজার ঢাকা]


✌কাজেই চাঁদ সূরুজের অস্তিত্ব, রৌশনী সবকিছুই নূর নবী হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) ফয়েজের কারণেই বিদ্যমান।নবী করিম (ﷺ) যদিও কবর শায়িত রহিয়াছেন কিন্তু তাঁহার অস্তিত্ব হইতেই চাঁদ সূরুজ আলোক লাভ করিতেছে। সমগ্র বিশ্বজগতের অস্তিত্ব তাঁহার মাধ্যমে লাভ হইয়াছে ইহা যেমন সত্য তেমন বিশ্বজগতের সচল থাকার মূলেও নবী করিম (ﷺ)-এঁর অস্তিত্ব কাজ করিতেছে। আধ্যাত্মিক সাধনা এবং রিয়াজতের মাধ্যমে যে ব্যক্তি নিজের অন্ত:করনকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করিয়া লয় সেই ব্যক্তি ফেরেশতার বৈশিষ্ঠ অর্জন করে।

[তথ্যসূত্র: শানে মাহবুব (সঃ),পৃষ্ঠা ৭১,তাবলীগী কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা)]


✌ইসলাম মাওলানা মোহাম্মদ কাসেম নানুতবী লিখিত কাছিদায়ে বাহরিয়া গ্রন্থের কয়েকটি কবিতার অর্থ নীচে উলেখ করা যাইতেছে। তিনি লিখিয়াছেন,আঁপনি(রাসূল (ﷺ) যমিনের সকল সৃষ্টির গৌরব। আঁপনি সকল পায়গাম্বারের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ। অন্যান্য নবী যদি ফুল হন তবে আপনি ফুলের ঘ্রান। অন্যান্য নবী সূর্যের কিরণ হইলে আপনি হইলেন সূর্য। আঁপনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের প্রানস্বরূপ। আঁপনি দৃশ্যমান নূর। বিশ্বজগত আঁপনার উছিলায় সৃষ্টি হইয়াছে। আঁপনার নূরের বদৌলতে অস্তিত্ব হীনতা হইতে সকল কিছু অস্তিত্ব লাভ করিয়াছে। বিশ্বজগতের সকল প্রকার পূর্ণতার সমাবেশ আপনার মধ্যে রহিয়াছে। আঁপনার মতো কামালাত ও বৈশিষ্ট অন্য কাহারো মধ্যে নাই। আঁপনার মর্তবায় অন্য কোন নবী পৌছিতে পারে নাই। মোজেযার অধিকারী নবীগণও আঁপনার তুলনায় নিশপ্রাণ। আঁপনার পূর্ববতী নবীগণ আঁপনার উম্মত হওয়ার আগ্রহ ও আকাঙ্খা ব্যক্ত করিয়াছেন। আঁপনার নূর প্রকাশ না পাইলে আল্লাহ পাক সৃষ্টির কাজে হাত দিতেন না। হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহ পাকের দীদার পাইতে চান অথচ স্বয়ং আল্লাহ পাক আঁপনার সাক্ষাত চাহিয়াছেন। জমিন ও আসমান কখনো এক সমান হইতে পারেনা।

[তথ্য সূত্র: প্রিয় নবী (সঃ) এর আদর্শ জীবন, পৃষ্ঠা ৮৬, তাবলীগী কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা]


✌রাসূলুলাহ (ﷺ) বলিয়াছেন- আঁমি একটি কথা বলিতেছি; ফখর বা গর্ব করা উদ্দেশ্য নহে। ইব্রাহীম (আঃ) খলীলুলাহ (অর্থাৎ তিঁনি আলাহকে দোস্ত বানাইয়া ছিলেন), মুসা (আঃ) সফিউলাহ (অর্থাৎ তিঁনি আল্লাহ কর্তৃক বৈশিষ্ট প্রদত্ত), আর আমি হাবিবুলাহ (অর্থাৎ আমাকে স্বয়ং আল্লাহ তাঁহার দোস্ত বানাইয়াছেন ভালবাসিয়াছেন)।

[তথ্য সূত্র: মেশকাত শরীফ; বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা:৪, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌কোরআন মাজীদে উদ্ধৃত হয়েছে “ওয়ামা খালাকনাস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্ব” এই তাফসীরটি হযরত জাবেরের বর্ণনার অনুকুলে। তিনি বলেছেন, আল্লাহতায়ালা সর্বপ্রথমে আহমাদ মোস্তফার (ﷺ) রূহ সৃষ্টি করেছেন। সেই রূহ থেকে সৃষ্টি করেছেন আরশ, কুরসি, আকাশ, পৃথিবী এবং সমগ্র সৃষ্টি।

[তথ্য সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩, শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ), সেরহিন্দ প্রকাশন, সন-জুন ১৯৯৯ ইংরেজী]


✌আল্লাহ তায়ালার একটি নাম নূর। নূর শব্দটির রয়েছে বিভিন্নরকম অর্থ। যেমন, নূর বহনকারী, নূরের স্রষ্টা. আকাশ ও পৃথিবীকে নূরের মাধ্যমে আলোকিতকারী, আরেফগণের অন্তরে হেদায়েতে ও রহস্যের আলো প্রজ্জ্বলকারী ইত্যাদী। আল্লাহ পাক মোস্তফা (ﷺ)-কেও নূর নামে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন তিনি এরশাদ করেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট -আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব।” অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, “ওয়া সিরাজাম মুনিরা” অর্থাৎ তিঁনি উজ্জ্বলকারী আলোকবর্তিকা। রাসূল পাক (ﷺ) যে নূর তার কারণ হচ্ছে তিঁনি আল্লাহতায়ালার আহবানকে প্রোজ্জ্বল করেছেন,জ্বালিয়েছেন নবুয়তের নূর এবং সত্য ধর্ম ইসলামের মাধ্যমে আরেফগণের হৃদয়কে করেছেন আলোকিত।

[তথ্য সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩, শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ), সেরহিন্দ প্রকাশন]


✌রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা আঁমার উপর যখন তাঁর নেয়ামতের বহিঃপ্রকাশ চাইলেন,তখন এরশাদ করলেন,হে মুহাম্মদ (ﷺ) আঁপনি যখন ভূত চতুষ্টয়ের মধ্যে ছিলেন তখন আঁমি আঁপনার নূরকে ডাক দিয়েছিলাম আর আঁপনার উম্মতকেও ডাক দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো, আঁপনার উম্মতের কথা মুসা (আঃ)-কে শোনাবো।

[সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৮, সেরহিন্দ প্রকাশন, সন-ডিসেম্বার ১৯৯৯]


✌রমযান মাস, অমাবস্যা-পূর্ব অন্ধকার, রজনী গভীর, লোকালয় হইতে বহু দূরে হেরা পর্বতের উচ্চ শৃঙ্গে নিভৃতি প্রকোষ্ঠে নবীজী (ﷺ) ধ্যানমগ্ন। এমন সময় হঠাৎ মহাসত্যের আগমন হইল। ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ) ঐ প্রকোষ্ঠে তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন এবং সালাম করিলেন। ফেরেশতারা নূরের তৈয়ারী; বহন করিয়া আনিয়াছেন আল্লাহ তায়ালার কালাম, তাঁহার নূর; এইসব নূরের আকর্ষণে নবীজী(ﷺ)-এঁর জড় দেহের আবেষ্টনে লুক্কায়িত মহানূরও পৃতিভাত হইয়াছে অসাধারণভাবে।অতএব হেরা গুহায় এখন নূর! নূর! সবই নূর।নবীজী (ﷺ)-এঁর ভিতরে বাহিরে নূরের জৌলুসে নূরই নূর হইয়া গিয়াছে। এই মহা মহূর্তে তাঁহার দেহ-মনের অবস্থা একমাত্র তাঁহারই অনুভব করার কথা। ব্যক্ত বা বর্ণনা করার আয়ত্ত বহির্ভূত। নিভৃত গিরিগহবরের এই অভূতপূর্ব মুহুর্তটি মোস্তফার হৃদয়ে কি রেখাপাত করিয়াছিল তাহা কি কোন মানুষ নির্ণয় করিতে পারে?(স:)!

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ,৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৩, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ; ৬৫,চক সারকুলার রোড,ঢাকা- ১২১১ যোরকানী, ১-২০৭] [সংগ্রহকৃত]


♦রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।[১০ম পর্ব দেখুন]

★২৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আল্লাহ পাক হযরত ঈসা (আ:)-কে বলেছেন,ওহে ঈসা! মহানবী (ﷺ)-এঁর প্রতি ঈমান আনো এবং তোমার উম্মতকেও তা করতে বলো।রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-না হলে আঁমি আদমকে সৃষ্টি করতাম না,বেহেশত বা দোযখও সৃষ্টি করতাম না।”

📚দলিল

*১. আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭

*২.আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২

*৩. ইমাম ইবনে সাদ : তানাকাতুল কোবরা

*৪.ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী : ‘শিফাউস্ সিকাম ৪৫

*৫. শায়খুল ইসলাম আল-বুলকিনী : ফতোওয়ায়ে সিরাজিয়া ১/১৪০

*৬.ইবনে হাজর রচিত ‘আফদালুল কোরা

*৭.আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,

*৮. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী :

জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪ ও ৪/১৬০

*৯. ইবনে কাসীর : কাসাসুল আম্বিয়া : ১/২৯ পৃ:

*১০.ইবনে কাসীর : সিরাতে নববিয়্যাহ : ১/৩২০

*১১. ইবনে কাসীর :মুজিযাতুন্নবী (দরুদ ) : ১/৪৪১

*১২. ইবনে হাজর আসকালানি : লিসানুল মিযান : ৪/৩৫৪,রাবী, ১০৪০।

*১৩.ইবনে হাজর আসকালানী রচিত ‘আফদাল আল-কুরআন’; ১/১৮৯।

ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া; ১/১৮

ইবনে হাজার হাইসামী : শরহে শামায়েল, ১/১৪২।

*১৩. ইমাম যাহাবী : মিজানুল ইতিদাল : ৫/২৯৯, রাবী নং ৬৩৩৬

*১৪. ইবনে হাজর হায়সামী : শরহে শামায়েল : ১/৪২

*১৫. ইমাম যুরকানী :শরহে মাওয়াহিব : ১/১২/২২০

*১৬. আবু সাদ ইব্রাহীম নিশাপুরী : শরহে মোস্তফা : ১/১৬৫

*১৭. খাসায়েসুল কুবরা : ১/১৪ : হাদিস ২১

*২৮. ইমাম ইবনে হাইয়্যান : ‘তাবকাত আল-ইসফাহানী : ৩/২৮৭

*২৯. কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২

*৩০.মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১

*৩১. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১/২৯৫, হাদিস : ৩৮৫

*৩২. ইবনে শামী সালেহ : সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ : ১২/৪০৩

💟হাদিসের মান পর্যালোচনা💟


*১.ইমাম হাকিম তাঁর ‘মোসতাদরেক’ গ্রন্থে তাঁর তাহকিকে হাদিসটিকে সহিহ্ সাব্যস্থ করেছেন।

আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭


*২.ইমাম দায়লামী : হাদিসটির মান সনদের দিক থেকে হাসান।

আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২


*৩.আরও অসংখ্য ইমাম, ইমাম হাকিম রহ. এঁর রায়কে গ্রহণ করেছেন।অপরদিকে, কেবলমাত্র ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রায়ের বিপরীত বলেছেন।তিনি বিপরীত বলার কারন স্বরুপ বলেন :উক্ত হাদিসের একজন রাবী ‘আমর ইবনূ আউস আল আনসারী’ ‘অপরিচিত’।

একজন রাবী অপরিচিত হওয়াতে একটি হাদিস জাল কোনভাবেই হতে পারে না।উক্ত রাবী ইমাম যাহাবী (রহ:)এর দৃষ্টিতে অপরিচিত।অথচ তাঁর চেয়ে উঁচু স্তরের ইমামগণ উক্ত হাদিসকে সহিহ্ ও উক্ত রাবী (আমর ইবনূ আউস) কে সিকাহ্ বলেছেন।


*৪.বিশ্ববিখ্যাত রিযাল গ্রন্থ ‘তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল’ এ বলা হয়েছে, উক্ত রাবী সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ।


*৫. ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম বুখারি, ইমাম আবু নুআইম (রহ:)ও তাঁকে সিকাহ্ বলেছে।

[ইমাম মিযযী : তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল; ১৪/১৭৭, রাবী নং : ৪৯১৩]


*৬. তদুপরি,আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) উক্ত রাবীকে সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ বলেছেন।

[ইবনু হাজর আসকালানী : তাকরীবুত তাহযীব; ১/৪৩৬]

বুঝা গেল ইমাম যাহাবী (রহ:) এর নিকট উক্ত রাবী অপরিচিত হলেও আর কারো নিকট পরিচিত হবেন না এমন নয়।আর ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রাবীকে মিথ্যাবাদী বলেন নি; বলেছেন,অপরিচিত।


✌সুতরাং হাদিসটি নি:সন্দেহে সহিহ্ এর মান রাখে। আর হাদিসটি যেহেতু আমল ও আহকাম সম্পর্কিত নয়, সেহেতু ‘হাসান’ বলে মানতে ও বিশ্বাস করতে সমস্যা নেই।


★৩০. এবার আমি তাবলীগ জামাতের ‘ফাজায়েলে আমল’ গ্রন্থ থেকে একটি প্রমান দিব।সেখানে একটি শিরোনাম দেওয়া হয়েছে কোন ‘আমালে আদাম (আ:)-এঁর তাওবাহ কবূল হলোঃ

“হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ﷺ) বলেন, যখন হযরত আদম (আঃ) হইতে কিছুটা পদস্খলন হইয়া গেল যাহার দরুণ তিনি বেহেশত হইতে দুনিয়াতে প্রেরিত হইলেন,তখন তিঁনি সব সময় কান্নাকাটি ও এস্তেগফার করিতে থাকেন।একদিন তিঁনি আসমানের দিকে মুখ উঠাইয়া আরজ করিলেন হে আল্লাহ! মোহাম্মাদ (ﷺ)-এঁর উছিলায় আঁমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।ওহী নাজিল হইল, মোহাম্মদ (ﷺ) কে? যাহার উছিলায় তুমি ক্ষমা চাহিতেছ? হযরত আদম (আঃ) বলিলেন- যখন আঁপনি আমাকে সৃষ্টি করেন তখন আমি আরশের উপর লিখিত দেখিয়াছিলাম ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ’, তখনই আমি বুঝিতে পারিয়াছিলাম মোহাম্মদ(ﷺ) হইতে অধিক মর্যাদাশীল আর কেহই হইবে না,যেহেতু আঁপনি তাহার নাম নিঁজের নামের সঙ্গে রাখিয়াছেন।ওহী হইল হে আদম! তিঁনি আখেরী নবী এবং তিঁনি তোমার আওলাদভূক্ত হইবেন অথচ তিনি না হইলে তোমাকেও পায়দা করতাম না”-।

📚দলিল

মৌ:মোহম্মদ জাকারিয়া,ফাজায়েলে আমল; খণ্ড ‘ফাজায়েলে জিকির’, পৃষ্ঠা ৩১৫ (বাংলা), পরিবেশনায় তাবলিগী কুতুবখানা / ফাউণ্ডেশন।

তাবারানী; সাগীর,২/৮২,২০৭।


★৩১. ইবনে আসাকির (রহ:) উদ্ধৃত করেন হযরত সালমান ফারিসী (রা:)-কে, যিনি বলেন: “হযূর পূর নূর (ﷺ)-এঁর কাছে জিবরীল আমীন (আ:) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী, ‘(হে রাসূল) আঁপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আঁমি সৃষ্টি করিনি।আঁমি বিশ্বজগতও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আঁপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে। আঁমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আঁপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”

📚দলিল

*১.ইবনে আসাকির : তারিখে দামেস্ক : ৩/৫১৭

*২. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১

৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১৮২

৪. ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/২৮৯

*৫.কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ২/১০৫

★৩২.তাবেয়ী হযরত কাবুল আহবার (রা) থেকে বর্নিত,(বিশাল বর্ননার পর)…


আরও খবর



৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত:বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

অবরোধে দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। ঢাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর আরও শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে অংশ নিতে ওই এলাকায় জড়ো হচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অবরোধ আর যানজটের কারণে সড়কে চলাচলকারী মানুষ পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে। অবরোধের কারণে সৃষ্ট যানজট ইতোমধ্যে মহাখালী পর্যন্ত চলে গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সড়কের অবস্থা খারাপ। যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। চারদিকের সড়ক বন্ধ। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। শিক্ষার্থীরা উঠে গেলেই কেবল সচল হবে সড়ক।

তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর সাতরাস্তায় সড়ক অবরোধ করেছে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আমরা বলেছি, তোমাদের মধ্য থেকে কয়েকজন চলো সচিবালয়ে, শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে তোমাদের দাবিগুলো পৌঁছে দিই। তারা রাজি হয়নি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরা আগেও একাধিকবার একই দাবি উত্থাপন করেছি, কেউ কর্ণপাত করেনি। এখন আমরা রাস্তা অবরোধ করেছি। দাবির ব্যাপারে কথা বলতে হলে আমাদের কাছে আসতে হবে। সচিবালয়ে কেউ যাবে না।

তাদের অবরোধের কারণে তেজগাঁও-মগবাজার সড়কে যানজট সীমাহীন আকার ধারণ করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।


আরও খবর



পরিশুদ্ধ ক্বলব ব্যতিত্ব আল্লাহর দরবারে কোন ইবাদত কবুল হয়না

প্রকাশিত:শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

-শাহসূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী :

ক্বলব সম্পর্কিত কোরআনের ১২৪ টি আয়াত

(১) হেদায়াতের কেন্দ্র হল ক্বলবঃ

যে আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনবে আল্লাহ্‌ তাঁর ক্বলবকে হেদায়াত দান করবেন ।

— সূরা তাগাবুন –আয়াত ১১


(২) ঈমানের নির্ধারিত জায়গা হল ক্বলবঃ

আল্লাহ্‌ তাঁদের ক্বলবসমূহের মধ্যে ঈমানকে নির্ধারন করে দিয়েছেন ।

— সূরা মুজদালাহ, আয়াত ২২


(৩) ইমানদার হবার জন্য ক্বলবের ভিতরে ঈমানকে প্রবেশ করাতে হয়ঃ

এখনো তোমাদের ক্বলবের মধ্যে ঈমান প্রবেশ করেনি। (সুতরাং তোমরা ইমানদার নও)।

— সূরা হুজুরাত, আয়াত ১৩


(৪) ঈমানকে সুসজ্জিত করার জায়গা হল ক্বলবঃ

কিন্তু আল্লাহ্‌ তোমাদের কাছে ঈমানকে পছন্দনীয় করেছেন এবং একে (ঈমানকে) তোমাদের ক্বলবের মধ্যে সুসজ্জিত করেছেন।

— সূরা হুজুরাত, আয়াত ৭


(৫) ক্বলবই ঈমান আনেঃ

হে রাসূল ! আপনি তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না, যারা দৌড়ে গিয়ে কুফরে পতিত হয়; যারা মুখে বলেঃ আমরা ঈমান এনেছি, অথচ তাদের ‘ক্বলব’ ঈমান আনেনি

— সূরা মায়েদাহ্‌ আয়াত ৪১


(৬) ‘ক্বলব’কে ঈমানের সাথে অবিচল রাখতে হয়ঃ

কেউ তাঁর ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরীর জন্য উন্মুক্ত রাখলে তাঁর ওপর পতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তাঁর জন্য আছে মহাশাস্তি; তবে তাঁর জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য জবরদস্তি করা হয় কিন্তু তাঁর ‘ক্বলব’ ঈমানে অবিচল থাকে ।

— সূরা নহল, আয়াত ১০৬


(৭) আল্লাহর মাহাত্ন্যের ভয়ে ক্বলবের কেঁপে উঠাই খাঁটি ঈমানের পরিচয়ঃ

(একমাত্র খাঁটি) মুমিন তো তারাই যাদের সামনে আল্লাহর কথা উল্লেখ করা হলে তাদের ‘ক্বলব’সমূহ কেঁপে উঠে; তথা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে ।

— সূরা আনফাল, আয়াত ২


(৮) আলাহর মাহাত্ন্যের ভয়ে ক্বলব কেঁপে উঠলেই (ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেই) সুসংবাদঃ

(হে নবী !) সুসংবাদ দিয়ে দিন সে সমস্ত বিনয়ী কোমল-প্রাণ লোকদেরকে, যাদের সামনে আল্লাহর কথা উল্লেখ করা হলে তাদের ক্বলব (আল্লাহর মাহাত্ন্যের) ভয়ে কেঁপে উঠে ।

— সূরা হাজ্জ, আয়াত ৩৪-৩৫


(৯-১০) তাকয়ার কেন্দ্র হল ক্বলবঃ

নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নিচু করে আল্লাহ তাদের ‘ক্বলব’কে তাকওয়ার জন্য পরিক্ষা করেছেন ।

— সূরা হুজুরাত, আয়াত ৩


কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তাঁর ক্বলবের তাকওয়ার লক্ষন ।

— সূরা হাজ্জ, আয়াত ৩২


(১১) ‘ক্বলব’ই আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি পায়ঃ

যারা ঈমান আনে এবং তাদের ক্বলব আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই ক্বলবসমূহ শান্তি পায় ।

— সূরা রা’দ, আয়াত ২৮


(১২) কোরআন শরীফ নাযিল হয়েছে রাসূল (সঃ) এর ক্বলবের মধ্যেঃ

অতঃপর নিশ্চয়ই তিনি (জিব্রাঈল ফেরেশতা) আল্লাহর আদেশে এ কালাম (কোরআন শরীফ) আপনার ক্বলবের মধ্যে অবতীর্ণ করেছেন ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ৯৭


(১৩) ঈমানদারদের ‘ক্বলব’ আল্লাহর স্মরণে বিগলিত হয়ে যায়ঃ

যারা ঈমানদার তাদের ‘ক্বলব’ আল্লাহর যিকিরে বিগলিত হওয়ার সময় কি আসে নি ?

— সূরা হাদীস, আয়াত ১৬


(১৪) ‘ক্বলব’ই গুনাহগার হয়ঃ

যে কেউ তা গোপন করবে, তাহলে অবশ্যই তাঁর ক্বলব গুনাহ্‌গার হবে ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৩


(১৫) গুনাহ্‌ দ্বারা মরিচা পড়ার জায়গা হলো ক্বলবঃ

কখনও না, বরং তারা যা কিছু (গুনাহ্‌) উপার্জন করে তাই তাদের ক্বলবের উপর মরিচা ধরিয়ে দিচ্ছে ।

— সূরা মুতাফফিফিন, আয়াত ১৩


(১৬) ক্বলবের উপর ছাপ পড়ে যায়ঃ

আল্লাহ এদের ক্বলবসমূহের উপর ছাপ মেরে দিয়েছেন ।

— সূরা মোহাম্মদ, আয়াত ১৬


(১৭) সীমালঙ্ঘনকারীদের ক্বলবের উপর ছাপ পড়েঃ

এভাবেই আমি সীমালঙ্ঘনকারীদের ক্বলবের উপর ছাপ মেরে দেই ।

— সূরা ইউনুস, আয়াত ৭৪


(১৮) অহঙ্কারী-উৎপীড়ক ব্যক্তির ক্বলবের মধ্যে ছাপ পড়েঃ

এমনিভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহঙ্কারী-উৎপীড়ক ব্যক্তির ক্বলবের মধ্যে ছাপ মেরে দেন ।

— সূরা আরাফ, আয়াত ৩৫


(১৯-২০) কাফেরদের ক্বলবের মধ্যে ছাপ পড়েঃ

এভাবেই আল্লাহ কাফেরদের ক্বলবের উপর ছাপ মেরে দেন ।

— সূরা আ’রাফ, আয়াত ১০১


কুফরীর কারণে আল্লাহ তাদের ক্বলবের উপর ছাপ মেরে দিয়েছেন । ফলে তারা ঈমান আনে না কিন্তু অতি অল্পসংখ্যক ।

— সূরা নিসা, আয়াত ১৫৫


(২১) জ্ঞানহীনদের ক্বলবের মধ্যে ছাপ পড়েঃ

এভাবেই আল্লাহ জ্ঞানহীনদের ক্বলবের উপর ছাপ মেরে দেন ।

— সূরা রুম, আয়াত ৫৯


(২২) ক্বলবের মধ্যে ছাপ পড়লে অবুঝ হয়ে যায়ঃ

তাদের ক্বলবসমূহের উপর ছাপ পড়ে গেছে । ফলে তারা বুঝে না ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ৮৭


(২৩) ক্বলবের মধ্যে ছাপ পড়লে জ্ঞানহীন হয়ে যায়ঃ

আর আল্লাহ তাদের ক্বলবের উপর ছাপ মেরে দিয়েছেন । ফলে তারা জানে না ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ৯৩


(২৪) ক্বলবের মধ্যে ছাপ পড়লে আর শুনতে পায় নাঃ

আমি তাদের ক্বলবসমূহের ওপর ছাপ মেরে দিয়েছে । কাজেই তারা শুনতে পায় না ।

— সূরা আ’রাফ, আয়াত ১০০


(২৫) ক্বলব অন্ধ হয়ে যায়ঃ

বস্তুত চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু ঐ ক্বলবই অন্ধ হয় যেই ক্বলব হলো বুকের মধ্যে ।

— সূরা হজ্জ, আয়াত ৪৬


(২৬) ক্বলবের মধ্যে তালা লেগে যায়ঃ

তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না, না তাদের ক্বলব তালাবদ্ধ ?

— সূরা মোহাম্মদ, আয়াত ২৪


(২৭-২৯) ক্বলবের মধ্যে আবরণ পড়েঃ

এটা বুঝতে আমি তাদের ক্বলবের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি ।

— সূরা আন’আম, আয়াত ২৫


আমি তাদের ক্বলবের উপর আবরণ রেখে দেই, যাতে তারা একে উপলব্ধি করতে না পারে এবং তাদের কর্ণকুহরে বোঝা চাপিয়ে দেই।

— সূরা বনী ঈসরাঈল, আয়াত ৪৭


আর তারা বলে, আপনি যে বিষয়ের দিকে আমাদেরকে দাওয়াত দেন, সে বিষয়ে আমাদের ক্বলবের উপর আবরন রেখে দিয়েছি ।

— সূরা হা-মীম সেজদাহ্‌, আয়াত ৫


(৩০-৩১) ক্বলব আচ্ছন্ন হয়ে যায়ঃ

এবং তারা বলে, আমাদের ক্বলবসমূহ আচ্ছন্ন; বরং আল্লাহ তাদের কুফরের কারণে অভিসম্পাত করেছেন ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ৮৮


এবং তাদের এই উক্তির দরুন, “আমাদের ক্বলব আচ্ছন্ন” ।

— সূরা নিসা, আয়াত ১৫৫


(৩২-৩৩) ক্বলব দ্বারাই বুঝতে হয়ঃ

আর আমি ছেড়ে দিয়েছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষকে । তাদের ক্বলব আছে, তাঁর দ্বারা বুঝে না, তাদের চোখ আছে, তাঁর দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান আছে, তার দ্বারা শুনে না । তারা চতুষ্পদ জন্তুর মতো; বরং তাঁর চেয়েও নিকৃষ্ট । তারাই হলো গাফেল ।

— সূরা আরাফ, আয়াত ১৭৯


তারা কি দেশ ভ্রমন করে নি, যাতে তাদের জন্য এমন ক্বলব হয়ে যায়, যার দ্বারা তারা বুঝতে পারে ।

— সূরা হাজ্জ, আয়াত ৪৬


(৩৪-৩৫) সন্দেহ থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ

একমাত্র তারাই আপনার কাছে অব্যাহতি চায়, যারা আল্লাহ ও আখিরাতের দিনের প্রতি ঈমান রাখে না এবং তাদের ক্বলব সন্দেহগ্রস্ত হয়ে পড়েছে সুতরাং তাদের সন্দেহের আবর্তে তারা ঘুরপাক খেয়ে চলেছে ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ৪৫


তাদের নির্মিত গৃহটি তাদের ক্বলবে সদা সন্দেহের উদ্রেক করে যাবে যে পর্যন্ত না তাদের ক্বলবগুলো চৌচির হয়ে যায়।

— সূরা তাওবা, আয়াত ১১০


(৩৬) রাগ থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ

এবং তাদের ক্বলবের রাগ দূর করবেন ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ১৫


(৩৭) মঙ্গল চিন্তার জায়গা হলো ক্বলবঃ

আল্লাহ যদি তোমাদের ক্বলবের মধ্যে কোন রকম মঙ্গলচিন্তা (ঈমান ও নিষ্ঠা) রয়েছে বলে জানেন, তবে তোমাদেরকে তাঁর চেয়ে বহুগুন বেশী দান করবেন, যা তোমাদের কাছ থেকে বিনিয়ময়ে নেয়া হয়েছে ।

— সূরা আনফাল, আয়াত ৭০


(৩৮) ক্বলব নরম হয়ে আল্লাহর জিকিরে ঝুঁকে পড়েঃ

অতঃপর তাদের ক্বলব এবং চামড়া নরম হয়ে আল্লাহর জিকিরে ঝুঁকে পড়ে । এটাই আল্লাহর পথনির্দেশ (হেদায়াত); এর মাধ্যমে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন ।

— সূরা যুমার, আয়াত ২৩


(৩৯) অবিশ্বাস থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ

এমনিভাবে আমি গুনাহ্‌গারদের ক্বলব ক্বলবের মধ্যে এটা (অবিশ্বাস) সঞ্চার করেছি ।

— সূরা শু’আরা, আয়াত ২০০


(৪০) ঠাট্টা বিদ্রুপ থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ

ওদের (কাফেরদের) কাছে এমন কোণ রাসূল আসেন নি, যাদের সাথে ওরা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে থাকে নি । এমনিভাবে আমি পাপীদের ক্বলবের মধ্যে একে (ঠাট্টা বিদ্রুপ আচরনকে) সঞ্চার করি ।

— সূরা হিজর, আয়াত ১২


(৪১) মুনাফেকী থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ

তারপর এরই পরিনতিতে তিনি তাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে মুনাফেকী সংযোজিত করলেন সেদিন পর্যন্ত; যেদিন তারা তাঁর সাথে গিয়ে মিলবে ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ৭৭


(৪২) মুনাফেকী ক্বলবের মধ্যে গোপন থাকেঃ

মুনাফিকেরা এ ব্যাপারে ভয় করে, মুসলমানদের উপর না জানি এমন কোন সূরা নাযিল হয়, যা তাদের ক্বলবসমূহের গোপন বিষয় সংবাদ দিয়ে দিবে ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ৬৪


(৪৩-৪৪) মুনাফেকী থেকে মুক্ত থাকতে হলে মুখের সাথে ক্বলবকে মিল রাখতে হয়ঃ

তারা (মুনাফিকেরা) নিজেদের মুখে এমন কথা বলে, যা তাদের ক্বলবের মধ্যে নেই ।

— সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৬৭


তারা (মুনাফিকেরা) নিজেদের মুখে এমন কথা বলে, যা তাদের ক্বলবের মধ্যে নেই ।

— সূরা ফাতাহ, আয়াত ১১


(৪৫-৪৮) ক্বলবের মধ্যে মোহর মারা হয়ঃ

আল্লাহ তাদের ক্বলবসমূহের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন । (অর্থাৎ ক্বলব বন্ধ করে দিয়েছেন) ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ৭


আর যদি আল্লাহ তোমাদের ক্বলবের উপর মোহর মেরে দেন তবে আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে, যে তোমাদেরকে এগুলো এনে দিবে ?

— সূরা আন'আম আয়াত ৪৬


তিনি তাঁর ক্বলব এবং শ্রবণশক্তির উপর মোহর মেরে দিয়েছেন । সূরা জাছিয়াহ, আয়াত ২৩


আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে (হে নবী !) আপনার ক্বলবের উপর আপন রহমত ও হিফাযতের মোহর মেরে দিতেন ।

— সূরা শু’আরা, আয়াত ২৪


(৪৯-৫০) প্রশান্তি নাযিল হওয়ার জায়গা হলো ক্বলবঃ

তিনি মুমিনদের ক্বলবসমূহের মধ্যে প্রশান্তি নাযিল করলেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায় ।

— সূরা ফাতাহ্‌, আয়াত ৪


আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নিচে আপনার কাছে শপথ করল । আর আল্লাহ জানেন যা কিছু তাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে আছে । অতঃপর তিনি তাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করলেন ।

— সূরা ফাতাহ্‌, আয়াত ১৮


(৫১) মুশরিকদের আচরণ হতে বাঁচতে হলে মুখের সাথে ক্বলবের মিল রাখতে হয়ঃ

তারা (মুশরিকেরা) মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে, কিন্তু তাদের ক্বলবসমূহ তা অস্বীকার করে ।

— সূরা তাওবা, আয়াত 8


(৫২) মানুষের ভিতরে ক্বলব একটিইঃ

আল্লাহ কোন মানুষের ভিতরে দুটি ক্বলব স্থাপন করেন নি ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ৪


(৫৩) আল্লাহ তা’আলা ক্বলবের ইচ্ছা ও সংকল্পকেই ধরে থাকেনঃ


এ ব্যাপারে তোমাদের কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গুনাহ নেই, কিন্তু তোমাদের ক্বলব যা ইচ্ছা সংকল্প করবে সে বিষয়ে গুনাহ্‌ হবে ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ৫


(৫৪) ক্বলব খেলায় মত্ত হয়ে পড়েঃ


যখনই তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নতুন উপদেশ আসে, তারা তা খেলার ছলে শ্রবণ করে । তাদের ক্বলব থাকে খেলায় মত্ত ।

— সূরা আম্বিয়া, আয়াত ২-৩


(৫৫) ক্বলব বিনয়ী হয়ঃ


এবং এই কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, তারা যেন জানতে পারে, এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য; অতঃপর তারা যেন বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের ক্বলব যেন এর প্রতি বিনয়ী হয় ।

— সূরা হাজ্জ, আয়াত ৫৪


(৫৬) ক্বলব অগ্রগামী হবার জন্য এবং এবাদত দ্রুত সম্পাদন করার জন্য ভীত-কম্পিত ক্বলব তৈরী করা প্রয়োজনঃ


এবং যা দান করার তা যারা দান করে ভী-কম্পিত ক্বলব নিয়ে, এ কারণে যে, তারা তাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করবে । তারাই সৎ কাজ দ্রুত সম্পাদন করে এবং তাদে তারা অগ্রগামী হয় ।

— সূরা মুমিনুন, আয়াত ৬০-৬১


(৫৭) ক্বলব অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়ঃ

বরং তাদের ক্বলব এ বিষয়ে অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন ।

— সূরা মুমিনুন, আয়াত ৬৩


(৫৮-৬০) ক্বলব বক্র হয়ে যায়ঃ


অতঃপর তারা যখন বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের ক্বলবকে বক্র করে দিলেন ।

— সূরা ছাফ, আয়াত ৫


হে আমাদের পালনকর্তা ! আমাদেরকে হেদায়াত করার পর আমাদের ক্বলবকে বক্র করে দিবেন না ।

— সূরা আল ইমরান, আয়াত ৮


আল্লাহ অনুগ্রহ পরায়ণ হলেন নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি যারা তাঁর অনুসরণ করেছিল সঙ্কটকালে, তাদের একদলের ক্বলব বক্র হয়ে যাবার উপক্রম হবার পর । পরে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করলেন ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ১১৭


(৬১) বক্রতা থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ


যাদের ক্বলবের মধ্যে বক্রতা আছে তারা ফিতনা ও অপব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা মুতাশাবেহ্‌ (রুপক) আয়াত সেগুলোর অনুসরণ করে থাকে ।

— সূরা আল ইমরান, আয়াত ৭


(৬২) বিদ্বেষ থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ


ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের ক্বলবের মধ্যে কোণ বিদ্বেষ রেখো না ।

— সূরা হাশর, আয়াত ১০


(৬৩) ঐক্যবদ্ধ হবার জন্য ক্বলবের মিল থাকতে হয়ঃ


আপনি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করেন, অথচ তাদের ক্বলবসমূহ শতধাবিচ্ছিন্ন ।

— সূরা হাশর, আয়াত ১৩


(৬৪) আগের যুগের কাফের এবং পরের যুগের কাফেরদের মিল থাকার মাধ্যম হলো ক্বলবঃ


এমনিভাবে তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও তাদেরই অনুরুপ কথা বলেছে । তাদের ক্বলবসমূহ একই রকম সাদৃশ্যপূর্ন ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ১১৮


(৬৫) ক্বলব সংকোচিত হয়ে যায়ঃ


যখন এক আল্লাহর কথা উচ্চারণ করা হয়, তখন যারা পরজীবনে বিশ্বাস করে না, তাদের ক্বলব সংকোচিত হয় যায় ।

— সূরা যুমার, আয়াত ৪৫


(৬৬-৬৭) ক্বলবের মধ্যে ভাল-মন্দ যা কিছু আছে সবই আল্লাহ তা’আলার জানাঃ


ওরা হলো সে সমস্ত লোক যাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে যা কিছু (গোপন বিষয়) আছে সবই আল্লাহ জানেন ।

— সূরা নিসা, আয়াত ৫১


তোমাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে যা আহচে তা আল্লাহ জানেন ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ৫১


(৬৮) ক্বলবকে পরিষ্কার করার পন্থা অবলম্বণ করা দরকারঃ


এবং যাতে করে তিনি তোমাদের ক্বলবের মধ্যে যা কিছু রয়েছে তা পরিষ্কার করে দিতে পারেন ।

— সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৫৪


(৬৯) অনুতাপ থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ


যাতে আল্লাহ এক তাদের ক্বলবের মধ্যে অনুতাপে পরিনত করে দিতে পারেন ।

— সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৫৬


(৭০-৭১) মোহাব্বত থাকার জায়গা হল ক্বলবঃ


অতঃপর আল্লাহ তোমাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে মোহাব্বত সঞ্চার করেছেন । 

--(সূরা আল ইমরান, আয়াত ১০৩


এবং তিনি তাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন । পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করলেও আপনি তাদের ক্বলবসমূহে মোহাব্বত স্থাপন করতে পারতেন না; কিন্তু আল্লাহই তাদের মধ্যে মোহাব্বাত স্থাপন করেছেন ।

— সূরা আনফাল, আয়াত ৬৩


(৭২) নম্রতা ও দয়া থাকার জায়গা হল ক্বলবঃ

আর আমি তাঁর অনুসারীদের ক্বলবসমূহে নম্রতা ও দয়া স্থাপন করেছি ।

— সূরা হাদীস, আয়াত ১২৭


(৭৩) আল্লাহ তায়ালা (শপথের ব্যাপারে) 

ক্বলবের কাজকেই ধরেনঃ


কিন্তু (শপথের ব্যাপারে) আল্লাহ তোমাদেরকে ধরবেন সেসব বিষয়ে যা তোমাদের ক্বলব উপার্জন করেছেন ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ২২৫


(৭৪) গোবৎস প্রীতি পান করানোর জায়গা হল ক্বলবঃ


তাদের কুফরীর কারণ তাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে গোবৎসপ্রীতি পান করানো হয়েছে ।

— সূরা বাকারা, আয়াত ৯৩


(৭৫-৭৮) ক্বলব ভয় পায়ঃ

তোমাদের ক্বলবসমূহ (ভয়ে) কন্ঠাগত হয়ে পড়েছিল ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ১০


আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন ক্বলবসমূহ (ভয়ে) কন্ঠাগত হওয়ার উপক্রম হবে ।

— সূরা মুমিন, আয়াত ১৮


সেদিন ক্বলবসমূহ ভীত-সন্ত্রস্ত হবে ।

— সূরা নাযিআত, আয়াত ৮


তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন ক্বলবসমূহ ও দৃষ্টিসমূহ (ভয়ে) উল্টে যাবে ।

— সূরা নূর, আয়াত ৩৭


(৭৯-৮৩) ভয়-ভীতি থাকার জায়গা হলো ক্বলবঃ


যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তাঁর জন্য ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না । 

যখন তাদের ক্বলবসমূহ থেক ভয়-ভীতি দূর হয়ে যাবে, তখন তারা পরস্পরে বলবে, তোমাদের পালনকর্তা কি বললেন? তদুত্তরে তারা বলবে, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন ।

— সূরা সাবা, আয়াত ২৩


শীঘ্রই আমি কাফেরদের ক্বলবসমূহের মধ্যে ভয় ঢেলে দিব ।

— সূরা আনফাল, আয়াত ১২


খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের ক্বলবসমূহের মধ্যে ভয় ঢেলে দিব ।

— সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৫১


তিনি তাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে ভয় ঢেলে দিলেন ।

— সূরা হাশর, আয়াত ২


তিনি ক্বলবসমূহের মধ্যে ভয় ঢেলে দিলেন ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ২৬


(৮৪-৯৫) ক্বলবের মধ্যে রোগ থাকেঃ

যাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে রোগ আছে, তারা কি মনে করে যে, আল্লহ তাদের অন্তরের বিদ্বেষ প্রকাশ করে দিবেন না ?

— সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ২৯


অতঃপর যখন কোন (মুহ্‌কামাত) দ্ব্যর্থহীন সূরা নাযিল হয় এবং তাতে যুদ্ধ-জিহাদের উল্লেখ করা হয়, তখন যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে, আপনি তাদেরকে মৃত্যুভয়ে মূর্ছাপ্রাপ্ত মানুষের মত আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখবেন ।

— সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ২০


বস্তুতঃ যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে আপনি তাদেরকে দেখবেন দৌড়ে গিয়ে তাদেরই (কাফেরদের) মধ্যে প্রবেশ করে ।

— সূরা মায়িদাহ্‌, আয়াত ৫২


এবং যাতে যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে, তারা এবং কাফেররা বলে যে, আল্লাহ এর দ্বারা কী বুঝাতে চেয়েছেন ।

— সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত ৩১


এবং যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে এটি তাদের কলুষের সাথে আরো কলুষ বৃদ্ধি করেছে ।

— সূরা তাওবা, আয়াত ১২৫


এবং যখন মুনাফিক ও যাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে রোগ আছে তারা বলছিল, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল আমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলেন তা প্রতারণা ব্যতীত কিছুই নয় ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ১২


তাদের ক্বলবসমূহের মধ্যে কি রোগ আছে, না তারা সন্দেহ পোষণ করে ?

— সূরা নূর, আয়াত ৫০


মুনাফেকরা এবং যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে এবং নগরে গুজব রটনাকারীরা যদি বিরত না হয়, তবে আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আপনাকে প্রবল করবো ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ৬০


হে নবীর স্ত্রীগণ ! তোমরা অন্য স্ত্রীগণের মতো নয়; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে এমনভাবে কথা বলিও না, যাতে যার ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে, সে কুবাসনা করে ।

— সূরা আহ্‌যাব, আয়াত ৩২


স্মরণ করুন, মুনাফেকরা এবং যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে তারা বলে, এদেরকে তাদের ধর্ম বিভ্রান্ত করেছে ।

— সূরা আনফাল, আয়াত ৪৯


এটা এ জন্য যে, শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে, যাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে এবং যাদের ক্বলব পাষাণ ।

— সূরা হাজ্জ, আয়াত ৫৩

তাদের ক্বলবের মধ্যে রোগ আছে এবং আল্লাহ তাদের রোগকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন ।

— সূরা বাকারা, ১০


আরও খবর



ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪৯

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা দায়েরসহ জড়িত কমপক্ষে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সোমবার বেশ কয়েকটি শহরে গাজায় সহিংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় সংঘটিত সহিংস ও বেআইনি ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা জননিরাপত্তা এবং আইনের শাসনের অবমাননা। এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কমপক্ষে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরো তদন্ত চলছে এবং এই নিন্দনীয় কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আরো মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রেস সচিব আরো বলেন, দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দৃঢ় প্রয়াসে পুলিশ গত রাতে অপরাধীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে। আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য বিক্ষোভের সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে পর্যালোচনা করছে। এই সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী সবাইকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিবৃতিতে‌ বলা হয়, তদন্তে সহায়তা করতে পারে এমন তথ্য থাকা যে কাউকে এগিয়ে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, যারা আমাদের সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, তাদের জবাবদিহি করা হবে।


আরও খবর



ঢাকায় ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি, কিউলেক্সের যন্ত্রণা

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

শুকনো মৌসুমেও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ি, স্থাপনায় পাওয়া যাচ্ছে এইডিস মশার লার্ভা, মিলছে পূর্ণ বয়স্ক মশাও।এ বছর প্রথম তিন মাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা মাথায় রেখে বর্ষার আগেই এইডিস মশার এই উপস্থিতিকে আশঙ্কাজনক বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এজন্য মশা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ঢাকার মিরপুরের লালকুঠি এলাকায় ২৪ মার্চ গিয়ে দেখা যায়, মশার ওষুধ ছিটাতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছিল তিনজনের একটি দল। তাদের দুজন বিভিন্ন জায়গায় মশার লার্ভা খুঁজছিলেন, একজন ছিটাচ্ছিলেন ওষুধ।

তাদের মধ্যে যে দুজন লার্ভা খুঁজছিলেন তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণাগারের কর্মী। অন্যজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের মশক নিয়ন্ত্রণকর্মী।

মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার এই নগর সংস্থাটি নিয়মিত বিভিন্ন এলাকা পর্যবেক্ষণে রেখেছে, এজন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সঙ্গে একটি চুক্তি আছে তাদের।

দলটির সঙ্গে লালকুঠির প্রথম কলোনির ১৫টি বাসায় গিয়ে ফেলে রাখা কলসি, পানি জমিয়ে রাখার ড্রাম এবং পানির মিটারে এইডিস মশার লার্ভা দেখা গেছে। ওইসব বাড়ির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, বেশিরভাগ পাত্রেই লার্ভা জমেছে তাদের অসচেতনতায়।

কলোনির একটি টিনশেড বাসায় থাকা বটগাছের নিচে একটি কলসি রাখা। দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় ওই কলসিতে পানি জমে আছে। আর তাতে জমে জন্মেছে এইডিস মশার লার্ভা।

সে বাসার একজন ভাড়াটিয়া বলেন, বাড়িওয়ালা বটগাছের নিচে ওই কলসি রেখেছেন। পরিষ্কার করা হয়নি হয়তো, এ কারণে মশা ডিম পাড়ছে হয়তো।

ওই কলোনির আরেকটি বাড়িতে পানি রাখার দুইটি ড্রামে এইডিস মশার লার্ভা পান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে আসা এই কর্মীরা। ওই বাড়ির মালিকের মেয়ে ডায়না আক্তার বলছিলেন, এলাকার লাইনে ঠিকমত পানি আসে না। এজন্য পানি জমিয়ে রাখতে হয়।

রাত ৩টা-৪টার দিকে পানি আাসে। প্রতিদিন বালতিতে পানি ভরি, থালাবাসন ধোয়ার কাজে তা ব্যবহার করি। পানি তো ঢাকনা দিয়ে রাখি। এরপরও মশা সেখানে ডিম পাড়ল কীভাবে বুঝতে পারছি না। ঢাকনা দিয়ে রাখলেও লার্ভা পাওয়া যায়

প্রথম কলোনির ২২৭/ডি নম্বর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির উঠানে রাখা একটি বড় বালতিতে পানি জমানো। পানি জমে আছে আরেকটি ছোট বালতিতেও। পরীক্ষা করে দুটি বালতিতেই এইডিস মশার লার্ভা পান জরিপে আসা কর্মীরা।

যাদের ঘরের বালতিতে লার্ভা পাওয়া গেছে তারা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি।

ওই বাড়ির আরেকটি বাসার বাসিন্দা হেনা বেগম বলেন, আমাদের বাসায় কোনো মোটর নাই, এজন্য টেনে পানি আনা যায় না। সাপ্লাইয়ের যে পানি আসে তা বালতিতে জমাইয়া রাখতে হয়। এ কারণে মনে হয় মশা ডিম পাড়ছে।

ওই এলাকায় মশার উপস্থিতি কেমন জানতে চাইলে মো. তরিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন, বাসায় প্রচুর মশা। রাতে ঘুমাতে কষ্ট হয়। মশার কয়েল জ্বালাই, মশারি টানাই, তাও কামড়ায়, বেশি কামড়ায় বাচ্চাদের।

মশার গতিপ্রকৃতি, প্রজাতি বৈচিত্র, মৌসুমী অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে ডিএনসিসি। মশা ধরার জন্য পাঁচটি অঞ্চলে ফাঁদ পাতা হয়েছে, যাকে ডিএনসিসি বলছে সেনটিনাল সাইট। একটি সাইটে লাইট ট্র্যাপ,এইডিস এক্স স্মার্ট ট্র্যাপ ও গ্র্যাভিড ট্র্যাপ- এই তিন ধরনের ফাঁদ থাকে।

লাইট ট্র্যাপে সব ধরনের পূর্ণবয়স্ক মশা ধরা হয়। এইডিস স্মার্ট ট্র্যাপে পূর্ণবয়স্ক এইডিস মশা এবং গ্র্যাভিড ট্র্যাপে এইডিস মশা ডিম পাড়ে, সেখান থেকে লার্ভা হয়।

প্রতি সাতদিন পর পর এসব ফাঁদ পরীক্ষা করা হয়। ফাঁদে পাওয়া মশার সংখ্যা গণনা করে ওই এলাকায় মশার উপস্থিতির একটি ধারণা নেওয়া হয়।

মিরপুরের লালকুঠি এলাকায় ডিএনসিসির ১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারেও এই ফাঁদ বসানো হয়েছে।

২৪ মার্চ কমিউনিটি সেন্টারের ওই ফাঁদে মশা দেখতে যান মশক নিয়ন্ত্রণকর্মীরা। লাইট ট্র্যাপে শত শত মশা মরে আছে। আর এইডিস স্মার্ট ট্র্যাপে দুটি পূর্ণ বয়স্ক মশা পাওয়া গেছে। তবে গ্র্যাভিড ট্র্যাপে কোনো লার্ভা পাওয়া যায়নি। ফাঁদে কতগুলো মশা পাওয়া গেছে সে বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি তারা। তবে তারা জানান, সংখ্যাটি অনেক।

পরিস্থিতি কেমন

সোমবার লালকুঠি এলাকার প্রথম কলোনির ১৫টি বাড়ি পরিদর্শন করে পাঁচটি বাড়িতে ছয়টি পাত্রে মশার লার্ভা পান ডিএনসিসির কর্মীরা। হিসাব করে দেখা গেছে, এতে ওই এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ ও হাউজ ইনডেক্স ৩৩ দাঁড়ায়।

কোনো এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ২০ ও হাউজ ইনডেক্স ১০ এর বেশি হলে সেখানে মশার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি আছে বলে ধরে নেন কীটতত্ত্ববিদরা।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর আহমেদ বলেন, এটা খুবই হাইলি উপস্থিতি। সামনে বর্ষায় মশা আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে। গত বছর চিকুনগুনিয়ায় অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এবারও ডেঙ্গুর পাশাপাশি চিকুনগুনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ডিএনসিসির সঙ্গে চুক্তির থাকায় তারা জরিপের কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। তথ্যের জন্য ডিএনসিসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

তবে কবিরুল বাশার বলেন, এখন বৃষ্টি নাই, এখন যদি ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ হয় বৃষ্টির সময় সেটা ৮০ হয়ে যাবে। মানে মশার উপস্থিতি থাকবে আশঙ্কাজনক।

এ কারণে বছরের শুরুতে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই যদি আমরা এইডিস মশার প্রজননস্থল নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তাহলে বর্ষা মৌসুমে মশার উপদ্রব কম হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী দাবি করেন, গত দেড় মাস ধরে এইডিস এবং কিউলেক্স- দুই ধরনের মশার উপস্থিতিই কমেছে। এ কারণে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কমেছে।

কিছু কিছু পকেট এলাকায় বিশেষ করে উত্তরার কিছু এলাকায় কিউলেক্স মশা কিছুটা পাওয়া যাচ্ছে। মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছি। নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তারপরও মানুষের অসচেতনতায় কিছু এলাকায় মশা জন্মাচ্ছে। অনেক বাড়িতে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের কর্মীদের ঢুকতেই দেওয়া হয় না, সেখানে ওষুধ দিবে কীভাবে?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, শনিবার পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হওয়া রোগীসহ চার মাসে সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০২। তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০২৪ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের।

যন্ত্রণা দিচ্ছে কিউলেক্স মশা

ঢাকায় শীতের পর থেকে শুরু হয়েছে কিউলেক্স মশার উপদ্রব। বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তারা অভিযোগ করেছেন, এই মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ তারা।

ডোবা-নালা পরিষ্কার না করা এবং মশার ওষুধ না ছিটানোর কারণে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

ঢাকার ভাসানটেক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ভাসানটেক বস্তির মাঝখানের ঝিলটি কচুরিপানায় ভর্তি। এই জলাধার পরিষ্কার করা হয় না। তাই বদ্ধ পানিতে কিউলেক্স মশার বংশ বিস্তার হচ্ছে।

ভাসানটেক বস্তির বাসিন্দা আহমেদ আলী বলেন, বিকাল থাইকা মশার অত্যাচার শুরু হয়। কোনো জায়গায় দাঁড়ানোর উপায় থাকে না। সারাক্ষণ কানের কাছে ভনভন করে।

মিরপুর ১৪ নম্বর এলাকার গৃহিনী জেমমিন আক্তার বলেন, বিকেলেই বাসায় মশার কয়েল জ্বালিয়ে দিই। রাতে ঘুমানোর আগে কয়েল নিভিয়ে মশার টানিয়ে নিই। কিন্তু তারপরও মশার হাত থেকে বাঁচার উপায় থাকে না। কোনো কারণে বাইরে বের হলেই ভেতরে মশা ঢুকে যায়। বাচ্চাটাকে কামড়ায় বেশি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মশার উপস্থিতি নিয়ে কোনো জরিপ করছে না। এ কারণে ওই এলাকায় বর্তমানে মশার পরিস্থিতি কী তা বোঝার উপায় নেই।

তবে গত বছরের নভেম্বর মাসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় জরিপের ফলে দক্ষিণ সিটিতে মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে।

সে জরিপ অনুযায়ী, তখন দুই সিটি করপোরেশনের ৯৯টি ওয়ার্ডের ৫৬টি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ওয়ার্ড ছিল ৩৫টি; বাকি ২১টি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)।

আসছে বর্ষায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী প্রস্তুতি জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন বলেন, কিউলেক্স মশার উপদ্রব কমে এসেছে। আর সামনে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। আমরা সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছি। মশার ওষুধ ছিটানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি আমরা মানুষকে সচেতন করব।


আরও খবর