Logo
শিরোনাম

রাজশাহীতে হত্যা মামলায় ৯ আসামির যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image
মোঃ শাকিল আহামাদ : জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী 


রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলায় একটি হত্যা মামলায় ৯ আসামি কে যাবজ্জীবন ও সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। 

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর ) দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা: মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। গোদাগাড়ীর উপজেলার কাঁকনহাট পৌরসভার বাসিন্দা আলতাফ হোসেনকে হত্যার দায়ে তাদের এ সাজা দেয়া হয়।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-  মোঃ  ইসাহাক আলী (৬৫), মোঃ হাসান (৫২), মনি খাতুন (২৬), মুক্তা খাতুন (৩২), জাহিদ হাসান (২২), নাহিদ হাসান (২৫), দামকুড়া গ্রামের আবুল হাসনাত (৪০), আবদুল হালিম (২৮) ও সেরাজুল ইসলাম মিয়া (৩০) তারা সবাই গোদাগাড়ী উপজেলার বাসিন্দা।


আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, সাজাপ্রাপ্ত ৯ আসামির মধ্যে দুজনকে যাবজ্জীবন  ও সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা  করেছেন আদালত। অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আর এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অন্য আরেকটি ধারায় আরও ৩ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, নিহত আলতাফ হোসেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তার ভাই ইসহাক আলীর সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে গত বছরের ৩ মে উভয়পক্ষের মীমাংসা বৈঠক বসেছিলো। কিন্তু পৌর মেয়র মীমাংসা করতে ব্যর্থ হন। সেদিন পৌরসভা কার্যালয় থেকে সবাই চলে আসার পর ইসহাক আলী তার ছেলে, মেয়ে ও ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে আলতাফ হোসেনের বাড়িতে হামলা করেন। এ সময় আলতাফ হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়।


এরপর আলতাফ হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়। পরে পুলিশ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলার মোট ১০ আসামির মধ্যে একজন আগেই মারা গেছেন। অন্য ৯ জনকে সাজা দিলেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় মামলার আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরও খবর

জয় বাংলা' এখন থেকে জাতীয় স্লোগান নয়

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

জামিন পেলেন এসপি বাবুল আক্তার

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪




প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের নিয়োগ দেওয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন। আগামীকাল বুধবার থেকে এই সাড়ে হাজার শিক্ষককে নিয়োগ পত্র দেওয়ার কথা ছিল।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুর মোহাম্মদ আজমী।

এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন হাজার ৫৩১ জন। 

গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। 


আরও খবর



দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে । দুই ধরনেই প্রতি লিটারে ৮ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে।

ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এ তথ্য জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।

এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন বিক্রি হবে ১৫৭ টাকা। আগে বোতলজাত তেল ১৬৭ টাকা ও খোলা তেল ১৪৯ টাকা ছিল।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে তেলের ঘাটতি রয়েছে, এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভোক্তারাও অস্বস্তিতে রয়েছেন। সেজন্য আমরা তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি বাজারে আর তেলের ঘাটতি হবে না।

তিনি বলেন, গত এপ্রিলে ১৬৭ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে দাম অনেকটাই বেড়েছে। যে কারণে দেশে স্থানীয় মজুতদারি বেড়েছে। তেলের পযাপ্ত মজুত রয়েছে। অনেকে কিনে মজুত করেছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা সেটা মনিটরিং করছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এখন একটি যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর সমস্যা হবে না।

এ সময় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিরগুলোর সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, কয়েকদিন থেকে আমারা কীভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করেছি। বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ১২০০ ডলারে উঠেছে।

গত এপ্রিলে সরকার যখন তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন তেলের দাম ছিল ১০৩৫ ডলার। এখন আমরা ১১০০ ডলার ধরে লিটারে ৮ টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

উপদেষ্টা বলেন, যদিও এখন আমাদের প্রতি টন তেল ১২০০ ডলারে খালাস হচ্ছে। আরও দাম বাড়তে পারে, সে উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে। কারণ বিশ্ববাজার এখনো স্থিতিশীল নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে আলুর দামে অস্থিরতা এখনো আছে। নতুন আলু উঠলে দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করছি।


আরও খবর



আমরা বসে ললিপপ খাবো না : মমতা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় শান্তিবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব আগেই দিয়েছেন। এবার জবাব দিলেন কলকাতা ও বাংলা দখল বিষয়ে বক্তব্যের।

এরআগে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সাবেক এক কর্মকর্তা চারদিনে কলকাতা দখল নিতে পারবেন বলেন মন্তব্য করেন। আবার বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী সম্প্রতি বাংলা- বিহার- উড়িষ্যা ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। আজ সোমবার বিধানসভায় দুটি বক্তব্যের জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা বসে ললিপপ খাব না।’

এদিন বিধানসভায় স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তর দিতে উঠে ওই কথা বলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক। যারা বলছেন, বাংলা-বিহার-উওড়িষ্যা দখল করবেন, তারা ভাল থাকবেন। তবে আপনার সেই ক্ষমতা নেই। আর ভাববার কোনো কারণ নেই যে, আমরা বসে ললিপপ খাব। আমরা যথেষ্ট সক্রিয় এবং ধৈর্যের পরীক্ষা দেই। আমরা সবাই সবাইকে রক্ষা করব।’

মমতা বলেন, ‘আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, 'গোটা বিষয়টা কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে এবং তারাই ব্যবস্থা নেবে। আমরা কোনো পক্ষে নেই। আমরা সব পক্ষে। আজ বিদেশ সচিব (বাংলাদেশে) গেছেন। দেখা যাক, কী হয়। আমাদের নীতি হল, আমরা বিদেশনীতি মেনে চলব।’

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় বিধায়কদের মন্তব্য করা থেকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘কোনো অতিরিক্ত মন্তব্য করবেন না, যাতে প্ররোচণার পরিস্থিতি তৈরি হয়। একই বার্তা রাজ্যবাসীকেও।’

পরোক্ষভাবে বিজেপিকে নিশানা করে এদিন মমতা বলেন, ‘কয়েকটা মিডিয়া যা করছে, তা যথাযথ নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে আপনাদের ব্যান করব। কিন্তু আবেদন করছি, যথাযথ থাকুন। আর কিছু ফেক ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল করছে।’

বাংলাদেশে অশান্তি বাড়লে শরণার্থী সমস্যা বাড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গে- বিজেপির এমন আশঙ্কার জবাবে মমতা এদিন আবার কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে এখানে আসতে চাইছেন ওপার থেকে। কিন্তু সেটা বিএসএফ দেখছে। আমরা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না।


আরও খবর

গাজায় প্রাণহানি সাড়ে ৪৪ হাজার ছাড়াল

শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪




ছোটবেলা থেকেই মেয়েকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলুন

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শামীমা নাছরিন, সিনিয়র সাংবাদিক :

সব মা-বাবাকে উদ্দেশ করে বলছি। ছোটবেলা থেকেই মেয়েকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলুন। কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ তা স্পষ্ট করে দিন। ওর কোনো কিছু খারাপ লাগলে সরাসরি না বলতে শিখান। এতে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ও বড় হবে। 'তুমি মেয়ে এটা পারবে না, তুমি মেয়ে ওটা পারবে না'-এমন কথা বলার কোনো সুযোগ কাউকে দেবেন না। এমনকি আপনারাও বলবেন না। শুধুমাত্র মেয়েকে মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। 


এজন্য আপনারা ঘরে-বাইরে সব জায়গায় মেয়েকে সময় দিন, সম্মান করুন। ছোট হলেও তারও আত্মমর্যাদা বোধ আছে। কারো সামনে তাকে কখনও হেয় করবেন না। কোনো কাজ করতে না পারলে তিরস্কার না করে বুঝিয়ে বলুন। মনে রাখবেন, ঘরের মানুষ সম্মান না দিলে বাইরের মানুষ কোনোদিনও ওকে মর্যাদা দেবে না। 

পাশাপাশি, মেয়েকে কেউ অযথা নেতিবাচক কথা বললে তার প্রতিবাদ করুন। বুঝিয়ে দিন মেয়ে কতো স্পেশাল! তাহলে আপনাদের প্রতি ওরও আস্থা বাড়বে। নিশ্চিন্তে ভালো লাগা, খারাপ লাগা বা ওর সমস্যাগুলো অনায়াসে আপনাদের জানাবে। কখনও বাইরের কারো সঙ্গে কোনো কিছু শেয়ার করবে না। 

মেয়েদের পরের বাড়ি চলে যেতেই হয়। এই ভেবে কখনোই তাকে পড়ালেখা থেকে দূরে রাখবেন না। কারণ, পরের বাড়ি গেলেও মেয়ে কিন্তু আপনাদেরই। আপনারা নিশ্চয় চাইবেন না ওই বাড়িতে অসম্মান নিয়ে থাকুক মেয়েটা। তাকে সবাই তাচ্ছিল্য করুক। সেখানে তৃতীয় শ্রেণির সদস্যের মতো থাকুক।

তাই মেয়েকে স্বনির্ভর ও যোগ্য করে গড়ে তুলুন। নিজের ভবিষ্যৎ নিজেকেই নির্ধারণ করতে দিন। আপনারা শুধু মানুষ হতে সহযোগিতা করুন। এতে দিনশেষে আপনারাই উপকৃত হবেন। একদিন এই মেয়েটার জন্যই গর্বে বুকটা ভরে উঠবে। 

গ্যারান্টি।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।


আরও খবর



স্বস্তি ফিরেছে তৈরি পোশাকশিল্পে

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক। সাম্প্রতিক সময়ে এই শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধসহ নানা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। এই অস্থিরতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। তবে এসব অস্থিরতার ধকল অনেকটা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের রপ্তানি খাত। এর ফলে বাড়ছে দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। 


বাংলাদেশ থেকে শুধু নভেম্বর মাসে ৩৩০ কোটি ৬১ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ৪৭ কোটি ডলার বেশি। আগের বছরের নভেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়ে ছিল ২৮৪ কোটি ৪০ ডলার। মাস হিসাবে চলতি বছরের নভেম্বরে এই রপ্তানি বেড়েছে ১৬.২৫ শতাংশ। তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য খাতের রপ্তানিও গত নভেম্বরে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। 

   

ইপিবি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত পাঁচ মাসে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানির ৮১ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় হয়েছেহাজার ৬১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলহাজার ৪৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে বেড়েছে ১২.৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু নভেম্বরেই ১৭৪ কোটি ডলারের নিট পোশাক রপ্তানি হয়। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত মাসে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৫৭ কোটি ডলারের। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ।


ইপিবি বলছে, গত পাঁচ মাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে ৩৫৭ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানিতে রপ্তানি হয়েছে ২১০ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের পণ্য। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ইত্যাদি দেশ।

জানা গেছে, দেশের তৈরি পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে চলেছে অস্থিরতা। এখনো এই অস্থিরতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন দাবিতে এখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরে চলছে শ্রমিক অসন্তোষ কর্মবিরতি। এসব সমস্যার পরও রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পোশাক খাত। 

পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ গত ১৯শে অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অন্তত ৪০ কোটি ডলারের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। 

ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, জুলাই-আগস্টে ব্যবসা-বাণিজ্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।


ভাইস চেয়ারম্যান আরো বলেন, পণ্য বহুমুখীকরণ নিয়ে কাজ হচ্ছে। তবে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। নীতি সহায়তা ব্যবসার কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে বিভিন্ন খাতের রপ্তানি বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে। নিয়ে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের মধ্যেও শ্রমিক-মালিকরা উৎপাদন চালু রেখেছেন। মূলত তাদের কঠোর পরিশ্রমে রপ্তানিতে ভালো ফল এসেছে। তা ছাড়া এখন রপ্তানিরপিক সিজন সামনে খ্রিষ্টানদের বড়দিনসহ বিভিন্ন উৎসব রয়েছে। ছাড়া বিগত সময়ের ক্রয়াদেশগুলোও সময় সম্পন্ন হয়েছে। সব কারণে রপ্তানি বেড়েছে। 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। শিল্প এলাকায় যৌথবাহিনী মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এসব উদ্যোগ রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে। যদিও কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। 

নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরপরও রপ্তানি আয় বাড়ায় আমরা খুশি। তবে আমাদের অর্ডার কিন্তু কমছে। জানি না আগামী মাসগুলোতে কী হবে। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। আমাদের হিসাবে জুলাই মাসের মধ্যে এক সপ্তাহেই পোশাক শিল্পে ক্ষতি হয়েছেবিলিয়ন ডলারের উপরে। আর ব্যাংক বন্ধ থাকায় তো রপ্তানির উপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই অস্থিরতা-অনিশ্চয়তা না থাকলে আমাদের রপ্তানি আরও বাড়তো। 

রিজার্ভ বাড়ছেরপ্তানি আয় রেমিট্যান্স বাড়ায় রিজার্ভও বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ১লা হাজার ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ (১১.১৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬.৪৪ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৮.৭৩ বিলিয়ন ডলার।গ্রসহিসাবে ছিল ২৪.৪৫ বিলিয়ন ডলার।

এক সপ্তাহ আগে ২০শে নভেম্বর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৮.৫০ বিলিয়ন ডলার।গ্রসহিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৪.২৭ বিলিয়ন ডলার। দুই সপ্তাহ আগে ১৪ নভেম্বর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৮.৪৪ বিলিয়ন ডলার।গ্রসহিসাবে ছিল ২৪.১৭ বিলিয়ন ডলার। হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়েছে ২৩ কোটি ডলার। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৩০ কোটি ডলার।

 


আরও খবর