লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
শ্লীলতা হানির অভিযোগ উঠেছে বালিকা বিদ্যা নিকেতনের সহকারী প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে। এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও অপসারণের দাবিতে জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রশাসকের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াছমিন ।
এছাড়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে ইতিপূর্বেও ওই বিদ্যালয়ের আয়া নিগার সুলতান কে জড়িয়ে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে শ্লীলতা হানি ঘটায়। পরে প্রতিষ্ঠানটির আয়া কাঁদতে কাঁদতে বিদ্যালয় থেকে বেড়িয়ে স্থানীয়দের ঘটনা খুলে বলেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, লিটন চন্দ্র দেবনাথ দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ফরিদা ইয়াসমিনকে বিভিন্ন ধরনের কু প্রস্তাব দিয়ে আসছে। এতে রাজি না হওয়ায় শিক্ষক হাজিরা খাতায় তাকে স্বাক্ষর না দিয়ে অনুপস্থিতি দেখান। গত ১৯ নভেম্বর তিনি শ্রেণি কার্যক্রমে উপস্থিত থাকার পরেও তাকে অনুপস্থিত দেখিয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মাকসুদুল আলম বিষয়টি অবগত আছেন বলে জানান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ তার নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ে সুদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এছাড়া তার এলাকার লোকজন প্রতিনিয়ত হাতে স্টাম ও চেকের কাগজপত্র নিয়ে তিন থেকে ৫ লাখ টাকা সুদের টাকা গ্রহনে গৃহিতাদের বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ভিড় করতে দেখা যায়। লেনদেন নিয়ে গৃহীতাদের সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলতে শুনা যায়। এতে শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার বিঘ্নঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতিকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে এ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে লিটন চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে।
তার অসদাচণে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মীচারীরা রয়েছেন চরম অতিষ্ট। এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। শিক্ষার্থীদের নামাজের ঘরে তালাদিয়ে নামাজ পড়তে বাধাগ্রস্থ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানান,সহকারী প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ বিদ্যালয়ের বিরতির সময়ে প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য করেন এবং তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্নসময়ে খারাপ আচারণ করেন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের বাধাঁ ও প্রতিবাদ করায় তিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগসাজসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনকে বিগত সরকারের আমলে মিথ্যা অভিযোগ এনে চাকুরীচ্যুত করার চেষ্ঠা করেন। তিনি কু্যঁ করে প্রধান শিক্ষক হওয়ার পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের আয়া নিগার সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, তিনি ১৪ নভেম্বর বিদ্যালয়ের নামাজ ঘরে একা নামাজ পড়ছিলেন। এসময় সহকারী প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ তার গায়ে হাতদেয় এবং তার অনৈতিক কাজের উদ্ধেশ্যে ধস্তাধস্তি করেন। তিনি বিদ্যালয়ে চাকুরী করতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুকছেন। এ সব ঘটনায় স্থানীয়ভাবে জানানোর পর তাকে চাকুরীচ্যুত করার হুমকি দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বিষয়টি সমাধানে রয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে হলে খোলা সময়ে বিদ্যালয় এসে কথা জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার সাংবাদিকদের জানান,শিক্ষক ও কর্মচারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। বিষয় তদন্তকরে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
শ্লীলতা হানির অভিযোগ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি, উন্নয়ন ও মানব সম্পদ) সম্রাট খীসা বলেন,এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।