Logo
শিরোনাম

রাসূল সা: ও সাহাবিরা আমাদের প্রেরণার উৎস

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ মার্চ 20২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা: এবং তাঁর সাহাবিরা আমাদের প্রেরণার উৎস। প্রিয় নবীজী সারা জীবন মানবতার কল্যাণে নিজের আরাম-আয়েশ ও ভোগবিলাস ত্যাগ করেছেন। আয়েশা রা: বলেন, রাসূল সা: এই দুনিয়া থেকে চলে গেছেন কিন্তু কখনো দুই বেলা পেট ভরে আহার করেননি। ইসলামের ত্রাণকর্তা আবুবকর রা: তার সব সম্পদ ইসলামের জন্য বিলিয়ে দেন। ইসলাম গ্রহণের সময় তার কাছে ৪০ হাজার দিরহাম ছিল। তা তিনি আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দেন।

একটি বর্ণনায় এসেছে আবুবকর রা: ৪০ হাজার দিনার থেকে ১০ হাজার দিনে, ১০ হাজার রাতে, ১০ হাজার গোপনে এবং ১০ হাজার প্রকাশ্যে দান করেছিলেন। খায়বারের বিজিত ভূমি মুজাহিদদের মধ্যে বণ্টন করা হলো। উমর রা: তার অংশটুকু আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করে দিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এটাই প্রথম ওয়াকফ। তাবুক অভিযানে তিনি অর্ধেক সম্পদ রাসূল সা:-এর হাতে তুলে দেন। উসমান রা: আজীবন স্বীয় মাল ও সহায়সম্পদ মুসলমানদের কল্যাণে ব্যয় করেছিলেন। তাবুক অভিযানে এক-তৃতীয়াংশ সৈন্যের যাবতীয় ব্যয়ভার তিনি নিজ হাতে তুলে নেন। তিনি সাড়ে ৯০০ উট ও ৫০টি ঘোড়া সরববরাহ করেন। খলিফা হওয়ার পরও আলী রা:কে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সাথে লড়তে হয়েছে। তবে তার অন্তরটি ছিল অত্যন্ত প্রশস্ত। কোনো অভাবীকে তিনি ফিরাতেন না। 

 জন্য তাকে অনেক সময় সপরিবারে অভুক্ত থাকতে হয়েছে। তিনি চার দিনার থেকে এক দিনার দিনে এক দিনার রাতে, এক দিনার গোপনে এবং এক দিনার প্রকাশ্যে দান করেছিলেন।

যুবাইর ইবনে আওয়াম রা:-এর এক হাজার দাস ছিল। তিনি এগুলোর ভাড়া খাটিয়ে সবই বিলিয়ে দিতেন। তাবুক অভিযানে আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা: আট হাজার দিনার রাসূলুল্লাহর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ওমর রা: উপঢৌকন হিসেবে ৪০০ দিনার ও চার হাজার দিরহাম আবু ওবায়দার কাছে পাঠালে তিনি সব অর্থই সৈনিকদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর খাদিজা রা: তার সব সম্পদ তাবলিগে দ্বীনের লক্ষ্যে ওয়াক্ফ করে দেন। পাপিষ্ঠ লোকেরা কিয়ামতের দিন দোজখ থেকে মুক্তির জন্য তাদের পরমপ্রিয় স্বজন, এমনকি স্ত্রী, পুত্র, পরিবার-পরিজন, ভাই-বন্ধু সবাইকে, সম্ভব হলে সমগ্র বিশ্ববাসীকেও মুক্তিপণে দিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করবে না। কিন্তু সে দিন কোনো মুক্তিপণই কোনো কাজে আসবে না।মুসলিম শরিফের একটি হাদিসে এসেছে একজন মানুষ যখন মারা যায় তখন তার তিনটি আমল ছাড়া অন্য সব আমল বন্ধ হয়ে যায় ১. সাদকায়ে জারিয়া; ২. উপকারী জ্ঞান ও ৩. সৎ সন্তান যে তার মা-বাবার জন্য দোয়া করে। যে মক্কাবাসী রাসূলুল্লাহকে মদিনায়ও শান্তিতে থাকতে দেয়নি সেই মক্কাবাসীর দুর্ভিক্ষের সময় তিনি তাদের জন্য খাদ্যশস্য ও ৫০০ স্বর্ণমুদ্রা নগদ পাঠিয়েছিলেন। মানবতার মহান এই আদর্শ তাঁর মৃত্যুর সময় দিনার, দিরহাম এ-ও গোলাম-বাঁদী কিছুই রেখে যাননি বরং রেখে গেছেন শুধু একটি সাদা খচ্চর। এ খচ্চরটিতে তিনি আরোহণ করতেন। আর রেখে গেছেন তাঁর যুদ্ধাস্ত্র এবং একখণ্ড জমি। সে জমিও তিনি জীবদ্দশায় মুসাফিরদের জন্য সাদকা হিসেবে ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন।’ (সহিহ আল-বুখারি)

যুগে যুগে ইসলাম ও মানবতার কল্যাণে নবী-রাসূলরা থেকে আরম্ভ করে আজ পর্যন্ত দানবীর মুসলমানরা সর্বোচ্চ আর্থিক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাই তো আল্লাহর নবী দাউদ আ: উপার্জিত সম্পদকে তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য রাখতেন, এক ভাগ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে দান করতেন এবং অবশিষ্ট এক ভাগ ভবিষ্যতে দান করার জন্য রেখে দিতেন। মহান আল্লাহ সূরা জারিয়ার ১৯ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘ধনীদের সম্পদে রয়েছে প্রার্থনাকারী ও বঞ্চিতদের অধিকার’। তাই আমাদের সমাজে যারা বিত্তশালী আছেন তাদের কর্তব্য সঠিকভাবে জাকাত প্রদানপূর্বক সমাজের অসহায় জনগোষ্ঠীর সাহায্যে এগিয়ে আসা।

আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় দানের শর্ত তিনটিÑ পবিত্র ও হালাল ধনসম্পদ থেকে ব্যয় করতে হবে। সৎ উদ্দেশ্য ও সচ্চরিত্রবান হতে হবে। যাকে দেয়া হবে তাকে তা গ্রহণ করার উপযুক্ত হতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের পবিত্র সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার তাওফিক দান করুন।



আরও খবর



ইসরায়েলি হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে : তেহরান

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৩ জুন ২০২৫ |

Image

ইরানজুড়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত ইরানের আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি ও দুই পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।হামলার পর তেহরানে ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইসরায়েলের আকাশসীমা।

এমন পরিস্থিতিতে ইরানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যতক্ষণ প্রয়োজন হবে ততক্ষণ এই হামলা অব্যাহত থাকবে। হামলার খবর প্রকাশের পর ইরানি কর্তৃপক্ষ তেহরানের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলায় জড়িত নয়, তিনি ইরানকে এই অঞ্চলে আমেরিকান ঘাঁটিতে হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরপরই ইরানে এই হামলা চালানো হয়েছে।


আরও খবর



ডিসিপ্লিন মেনে চললে যানজট নিয়ন্ত্রণে থাকবে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২০ জুন ২০25 |

Image

সবাই ডিসিপ্লিন মেনে চললে ও ধৈর্য ধরে কাজ করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও যানজট উভয়ই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। উপদেষ্টা রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, সবাই মিলে সহযোগিতা করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং যানজটও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই আমি সবাইকে অনুরোধ করবো- গাড়ি চালানো, কোরবানির পশুর ট্রাক আনা-নেয়া, পথচারীদের রাস্তা পারাপার সবক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলবেন। এবং অন্যদেরকেও নিয়ম মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করবেন। তবে সড়কে যেমন শৃঙ্খলা বজায় থাকবে, একইভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, এবার সব পরিবহণ চার্ট অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত রেটে ভাড়া আদায় করছে। এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত তেমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে অনেক গরুর গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করছে এবং বৃষ্টিও হচ্ছে। তাই ঢাকার প্রবেশ ও বহির্গমন পয়েন্টগুলোতে কিছুটা যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমাদের ট্রাফিক বিভাগ এ বিষয়ে সজাগ ও সক্রিয় রয়েছে। খুব শীঘ্রই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

উপদেষ্টা বাস টার্মিনালে উপস্থিত যাত্রীদের সাথে কথা বলেন, তাদের খোঁজখবর নেন ও অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়েছে কিনা- তা যাচাই করেন। যাত্রীরা বিদ্যমান ভাড়ার হার ও ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

পরে উপদেষ্টা রাজধানীর গাবতলী কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শন করেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, এবার কোরবানির পশুর হাট ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো। কোরবানির পশুর দামও তুলনামূলক যৌক্তিক। আমি বলবো, অন্যান্য বারের তুলনায় দাম একটু কম রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভোক্তা বা ক্রেতারা সুবিধা পাচ্ছে। তিনি বলেন, ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে কোনো নিরাপত্তার ঘাটতি নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। এটাকে অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আরও উন্নতি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। গরুর কোনো সংকট নেই। কোরবানির পশু কিনতে কারো কোনো সমস্যা হবে না।

এছাড়াও উপদেষ্টা রাজধানীর মিরপুর ও কাফরুল থানা এবং মিরপুরে অবস্থিত পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পরিদর্শন করেন।


আরও খবর

ভাতা পাবেন চব্বিশের আহতরা

মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫




চোখের যত্নে পেশাদার শিক্ষা

অপটোমেট্রি কোর্স ও আমাদের চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২০ জুন ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষাব্যবস্থায় ‘অপটোমেট্রি’ একটি অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা। অপটোমেট্রি মূলত চক্ষু ও দৃষ্টির যত্ন, রোগ নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য পেশা। চিকিৎসা ব্যবস্থার অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বের বহু দেশে অপটোমেট্রিস্টরা স্বীকৃত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু বাংলাদেশে এই পেশাটি এখনও অবহেলিত ও সুশৃঙ্খল কাঠামোবদ্ধ অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি।

বর্তমানে বাংলাদেশে অপটোমেট্রি শিক্ষা খুবই সীমিত আকারে পরিচালিত হচ্ছে। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটে ‘বিএসসি ইন অপটোমেট্রি’ এবং কিছু ক্ষেত্রে ‘ডিপ্লোমা’ কোর্স চালু থাকলেও, এদের অধিকাংশ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে না। চক্ষু চিকিৎসা বলতে এখনও অনেকেই শুধু চক্ষু বিশেষজ্ঞ (অফথালমোলজিস্ট) বা চশমার দোকানদার (অপটিশিয়ান)-কে বোঝে, অথচ এ দুটির মাঝখানে রয়েছে অপটোমেট্রিস্ট—যিনি একজন প্রশিক্ষিত চক্ষু পেশাজীবী।


অপটোমেট্রিস্টরা চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা, রিফ্রাকশন, কন্ট্যাক্ট লেন্স ফিটিং, লো ভিশন রিহ্যাবিলিটেশন, বায়োমাইক্রোস্কপি, টোনোমেট্রি, ফান্ডাস্কপি, কর্নিয়াল টপোগ্রাফি এবং অপটিক্যাল কেরাটোমেট্রি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ক্লিনিক্যাল কাজ দক্ষতার সাথে সম্পাদন করেন। কিন্তু বাংলাদেশে অপটোমেট্রিস্টদের যথাযথ কর্মপরিধি, স্বীকৃতি ও পেশাগত অধিকার এখনো অনুপস্থিত।

বাংলাদেশের একটি সরকারি মেডিকেল  বিশ্ববিদ্যালইয়ে বিএসসি ইন অপটোমেট্রি কোর্স চালু থাকলেও এই কোর্স এর অ্যাকাডেমিক কাঠামো ও কারিকুলাম আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে দুর্বল। ভারতের AIIMS, আমেরিকার ASCO (Association of Schools and Colleges of Optometry), এবং ব্রিটেনের GOC (General Optical Council) তাদের দেশে অপটোমেট্রি কোর্সকে সর্বোচ্চ মানদণ্ডে নিয়ে গেছে। সেখানে চার বছর ব্যাচেলর প্রোগ্রামের সঙ্গে এক বছর ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক, সাথে রয়েছে নিয়মিত লাইসেন্সিং পরীক্ষা।

বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় অপটোমেট্রি কোর্সকে স্বাধীন একটি শাখা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপটোমেট্রিস্টদের ‘চক্ষু সহকারী’ বা ‘চশমা পরীক্ষক’ হিসেবে দেখানো হয়, যা পেশার মর্যাদাকে অবমূল্যায়ন করে।

অপটোমেট্রি একটি লাইসেন্সভিত্তিক পেশা হওয়া উচিত। উন্নত দেশগুলোতে অপটোমেট্রিস্ট হিসেবে কাজ করতে হলে জাতীয় বা আঞ্চলিক লাইসেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। যেমন, আমেরিকায় NBEO (National Board of Examiners in Optometry), কানাডায় CACO, অস্ট্রেলিয়ায় OCANZ এবং ভারতে Optometry Council of India (OCI) দ্বারা নিবন্ধন পেতে হয়।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অপটোমেট্রিস্টদের কোনো স্বতন্ত্র রেজিস্ট্রেশন কাউন্সিল বা বোর্ড নেই। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (BMDC) বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে অপটোমেট্রিস্টদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে দক্ষ পেশাজীবীদের কর্মপরিধি অনিশ্চিত থেকে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ, অনেক অপটোমেট্রি গ্র্যাজুয়েট প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পেয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষা বা কর্মসংস্থানের জন্য দেশ ত্যাগ করছেন।


বিশ্বের উন্নত দেশে অপটোমেট্রি একটি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন পেশা। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে অপটোমেট্রিস্টরা ডাক্তার উপাধি (Doctor of Optometry) পান এবং স্বাধীনভাবে চক্ষু পরীক্ষা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার অধিকার রাখেন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বাংলাদেশ থেকে পাশ করা অনেক অপটোমেট্রি শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষায় গিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে দেশে ফিরে আসেন অথবা বিদেশেই সেবা প্রদান করছেন। কিন্তু দেশে তাদের সনদের মূল্যায়ন ও কর্মপরিধি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেই বললেই চলে।

সরকারি ও বেসরকারি খাতে অপটোমেট্রিস্টদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো নেই। অনেক সময় অপটোমেট্রি পেশাজীবীরা মাত্র ৮,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা মাসিক বেতনে কাজ করতে বাধ্য হন। যেখানে একজন দক্ষ অপটোমেট্রিস্ট চিকিৎসা পেশায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন, সেখানে তার আর্থিক সম্মান ও নিরাপত্তা থাকা উচিত। উন্নত দেশে একজন লাইসেন্সধারী অপটোমেট্রিস্ট বার্ষিক ৫০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ মার্কিন ডলার আয় করেন। ভারতেও অভিজ্ঞ অপটোমেট্রিস্টরা মাসে ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ রুপি পর্যন্ত আয় করে থাকেন।

প্রস্তাবিত উদ্যোগ ও করণীয়

১. স্বতন্ত্র অপটোমেট্রি কাউন্সিল গঠন: বাংলাদেশে ‘বাংলাদেশ অপটোমেট্রি কাউন্সিল’ নামে একটি স্বতন্ত্র নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা গঠন করা অত্যন্ত জরুরি। এতে পেশাজীবীদের রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স প্রদান ও পেশাগত অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত হবে।

২. আন্তর্জাতিক মানের কারিকুলাম চালু: বিএসসি ইন অপটোমেট্রি কোর্সকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। এর মধ্যে থাকবে গবেষণা, প্র্যাকটিক্যাল ক্লিনিক্যাল রোটেশন, কমিউনিটি অপটোমেট্রি, এবং পেডিয়াট্রিক আই কেয়ার।

৩. পেশাগত স্বীকৃতি ও বেতন কাঠামো নির্ধারণ: সরকারিভাবে অপটোমেট্রিস্টদের জন্য পেশাগত পদ ও বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে। স্বাস্থ্য ক্যাডারে অপটোমেট্রিস্ট পদ অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি।

৪. উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা সুযোগ: দেশে অপটোমেট্রিতে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ের উচ্চশিক্ষা চালু করতে হবে, যাতে করে দেশীয়ভাবে গবেষণায় অবদান রাখা যায়।

৫. সচেতনতামূলক কার্যক্রম: সাধারণ জনগণের পাশাপাশি চিকিৎসক ও প্রশাসনিক মহলে অপটোমেট্রিস্টদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো জরুরি।

চোখের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অপটোমেট্রিস্টরা একটি অপরিহার্য অংশ। বাংলাদেশে এই পেশার সম্ভাবনা বিপুল, তবে সঠিক কাঠামো, স্বীকৃতি ও সরকারি উদ্যোগের অভাবে তা পূর্ণতা পাচ্ছে না। যদি এখনই জাতীয় পর্যায়ে অপটোমেট্রিস্টদের স্বীকৃতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে এই পেশার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে এবং দেশ অভিজ্ঞ মানবসম্পদ হারাবে।

চোখের সুরক্ষা, দৃষ্টির পরিচর্যা এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে অপটোমেট্রি শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে একটি সুদৃঢ় কাঠামোর মধ্যে আনা এখন সময়ের দাবি।


লেখক : ডক্টর মহাম্মদ মিজানুর রহমান 

অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, ম্যানেজমেন্ট এন্ড সাইন্স ইউনিভার্সিটি , মালয়শিয়া


আরও খবর



ভারতে ফের যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৭

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

ভারতের উত্তরাখণ্ডে একটি যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে সাতজন নিহত হয়েছেন। কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশীর দিকে যাওয়ার পথে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।

মূলত কেদারনাথ থেকে যাত্রীদের নিয়ে গুপ্তকাশী যাচ্ছিল হেলিকপ্টারটি। একপর্যায়ে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা গৌরীকুণ্ডের জঙ্গলে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। রবিবার (১৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশী ফেরার পথে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন পাইলট ও ছয়জন তীর্থযাত্রী— যাদের মধ্যে এক শিশুও রয়েছে।

আর্যন এভিয়েশন কোম্পানির এই হেলিকপ্টারটি মাত্র ১০ মিনিটের যাত্রাপথে, গৌরিকুণ্ড ও সোনপ্রয়াগের মাঝখানে একটি জঙ্গলে ভেঙে পড়ে। ভোর ৫টা ২০ মিনিটে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে উত্তরাখণ্ড সিভিল এভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি।

এনডিটিভি বলছে, নিহত তীর্থযাত্রীরা উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে এসেছিলেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও খারাপ আবহাওয়া এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

মূলত হেলিকপ্টারটি নিখোঁজ হওয়ার পর স্থানীয় কিছু লোক যারা গবাদি পশুর জন্য ঘাস সংগ্রহে বেরিয়েছিলেন তারা দুর্ঘটনাস্থলে ধোঁয়া দেখে খবর দেন। পরে এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ এর উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এই দুর্ঘটনার কথা এক্সে (পূর্বের টুইটার) জানিয়ে লেখেন, রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার অত্যন্ত বেদনাদায়ক খবর পাওয়া গেছে। এসডিআরএফ, স্থানীয় প্রশাসন ও অন্যান্য উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে। আমি সকল যাত্রীর নিরাপদ উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করছি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ মে হিমালয়ের কেদারনাথ মন্দিরের দরজা খোলার পর গত ৬ সপ্তাহের মধ্যে এটা হেলিকপ্টার সংক্রান্ত পঞ্চম দুর্ঘটনা। এর আগে গত ৭ জুন আরেকটি হেলিকপ্টার কেদারনাথের দিকে যাত্রাকালে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিলে একটি সড়কে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।

অবতরণের সময় সেটির পেছনের রটার একটি পার্ক করা গাড়ির ওপর পড়ে যায়। সেই ঘটনায় যাত্রীরা অক্ষত থাকলেও পাইলট সামান্য আহত হন।

মূলত কেদারনাথ হিমালয়ের দুর্গম এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় সেখানে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার পরিষেবা জনপ্রিয়। তবে সম্প্রতি একের পর এক দুর্ঘটনায় এসব পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।


আরও খবর



ইরানের হামলার ভয়ে খাবার মজুত করছে ইসরায়েলিরা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৩ জুন ২০২৫ |

Image

তেহরানে হামলার জবাবে ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে জেরুজালেমের সুপারশপগুলোয় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে খাদ্য ও পানি। মজুত করার জন্য মানুষ এখন এগুলো হুমড়ি খেয়ে কিনছে।

গত রাত ৩টার দিকে সাইরেনের শব্দ ও মোবাইলের সতর্কবার্তায় ঘুম ভাঙে ইসরায়েলের জনগণের। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে মানুষকে জানানো হয়, তাদের সামনে একটি গুরুতর হুমকি রয়েছে। তাই, সবাই যেন আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সারা দেশে রক্ত সংগ্রহের কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে এবং যেসব রোগী বাড়ি ফিরে যাওয়ার মতো কিছুটা সুস্থ, তাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের হাসপাতালগুলো।

অন্যদিকে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পশ্চিম তীরে সব ফিলিস্তিনি শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

এইসব প্রস্তুতির মূল কারণ পাল্টা হামলার আশঙ্কা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে প্রায় ১০০টি ড্রোন ইতোমধ্যে ইসরায়েলের নিক্ষেপ করা হয়েছে। 

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বাধা দিতে ইরানে অপারেশন রাইজিং লায়ন নাম দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরাযেল। রাতভর চলা এই হামলায় ইরানের একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এই হামলার মাত্রা, ব্যাপকতা ও সময়কাল এমনভাবে পরিকল্পিত যে এটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের ইঙ্গিত বলেই মন্তব্য করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। শতাধিক যুদ্ধড্রোন দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো তালিকা পাওয়া যায়নি। 


আরও খবর