Logo
শিরোনাম

রিজার্ভ বাড়াতে ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর . আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ডেফিনেশন অনুযায়ী বর্তমানে আমাদের প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার

বৃহস্পতিবার ( সেপ্টেম্বর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক বাংলা গণমাধ্যমে ঠিকানাতে প্রচারিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন

. আহসান এইচ মনসুর বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময় রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল, কথাটি সত্য নয়

তিনি বলেন, এতদিন নিট রিজার্ভের হিসাব গোপন করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সেই হিসাব প্রকাশ না করলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) সেটি দেওয়া হতো

গভর্নর বলেন, গত এক সপ্তাহে ৩০০ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ বেড়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ডলারও বাজারে বিক্রি করে নাই। বরং আমরা ডলার কিনছি রিজার্ভ বাড়াতে, এখন প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন ডলার করে বাজার থেকে কিনছি

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতিকে আগামী মাসের মধ্যে একটা পর্যায়ে নিয়ে আসার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। যেমন, থেকে শতাংশের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে। পরবর্তী এক বছরের মধ্যে সেটা থেকে শতাংশে নিয়ে আসা


আরও খবর

কমেছে ডিম-পেঁয়াজ-আলুর দাম

শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪




নওগাঁয় স্বামীর লাঠির আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় স্বামীর লাঠির আঘাতে আইলা (৪৯) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এমৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ি এলাকাধীন পাতনা গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার দিনগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে রাগের বশীভূত হয়ে স্বামী নাছির উদ্দীন লাঠি দিয়ে তার স্ত্রীকে আঘাত করেন। একটি আঘাতেই তার স্ত্রী মাটিতে লুটিয়ে পরে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর ঘটনাটি থানা পুলিশে জানানো হলে, থানা ও ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। 

গৃহবধূ মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসমত আলী বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহতের শরীরে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এরপর ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনার নিহতের বড় ভাই বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।


আরও খবর



ফুলবাড়িতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

উত্তম কুমার মোহন্ত, ফুলবাড়ী (ফুলবাড়ী) :

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে বৈষম্য দূরীকরণে, মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ।

মঙ্গলবার ২৪(সেপ্টেম্বর)উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দের আয়োজনে,সকালে বাজারের জিরো পয়েন্টে আধাঘণ্টা ব্যাপি বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী সম্মিলিত শিক্ষক সমাজে প্রতিষ্ঠান প্রধান ফুলবাড়ী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোঃ মোরশেদ আলম, বৈষম্য বিরোধী সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের সমন্বয়ক, সহকারী শিক্ষক মোঃ জয়নাল আবেদীন, প্রধান শিক্ষক পরিষদের সভাপতি,বড়ভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শরীফ উদ্দিন সহ আরো অনেকে। পরে উপজেলা নিবার্হী অফিসার রেহনুমা তারান্নুম এর মাধ্যমে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের বরাবরে স্মারকলিপি প্রেরণ করেন।

এসময় বক্তারা জানান,সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে দ্রুততম সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে জাতীয়করণ করার আহ্বান জানান।


আরও খবর



গুদামে পচছে পেঁয়াজ, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

সারা দেশের মতো দিনাজপুরের হিলিতে গত কয়েকদিন ধরেই লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেকটা বেড়েছে। দিনে ও রাতে সমানতালে চলছে লোডশেডিং। এ ছাড়া গত কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র গরমের মাত্রা বাড়ায় গুদামে পচে নষ্ট হচ্ছে আমদানি করা পেঁয়াজ। বাছাই করা কিছু পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি করলেও কিছু কিছু পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার যেগুলো পচে যাচ্ছে সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে করে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

হিলিতে পেঁয়াজ কিনতে আসা নুর ইসলাম বলেন ,আমরা হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকদের গুদাম থেকে পেঁয়াজ কিনে স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করে থাকি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই অতিরিক্ত গরমের কারণে পেঁয়াজের মান খারাপ হচ্ছে। আমরা গুদাম থেকে বাছাই করে পেঁয়াজভর্তি বস্তা কিনে করে নিয়ে যাই। বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রতিবস্তা থেকে ২ থেকে ৩ কেজি করে পচা পেঁয়াজ বের হচ্ছে। এতে করে আমাদের তো ব্যবসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, লাভের আশায় পেঁয়াজ কিনে বস্তাপ্রতি যদি ২-৩ কেজি করে পচা পেঁয়াজ ফেলে দিতে হচ্ছে। যেখানে গচ্চা যাচ্ছে দুশ থেকে আড়াইশ। এতে করে বর্তমানে পেঁয়াজ কেনাবেচা করতে গিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে

অপর পেঁয়াজ ক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, ঘর থেকে আমরা ভালো পেঁয়াজ দেখে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছি কিন্তু গরমের কারণে অনেক পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে আমরা যে দামে কিনছি সে দামে আর বিক্রি করতে পারছি না। আবার অনেক পেঁয়াজ বাজারজাত করাও যাচ্ছে না। ফেলে দিতে হয়। এতে আমাদের পেঁয়াজের ব্যবসার পুঁজি হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুস ছালাম বলেন,   দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু আমদানি করে এখন আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। ভারতের মোকাম থেকে পেঁয়াজ বন্দরে আসা পর্যন্ত ৪-৫ দিন সময় লাগে। এতে করে গরমের মধ্যে গাড়িতে ত্রিপলবন্দি অবস্থায় থাকায় পেঁয়াজের কিছুটা মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে। দেশে আসার পর গরমে অন্য এক অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই গরমের তীব্রতা অনেক বেশিতার ওপর বিদ্যুৎ ঠিকমতো থাকছে না। সারা দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। পেঁয়াজ তো পচনশীল পণ্য গরমে দ্রুত পচে নষ্ট হয়ে যায়। গুদামঘরে ফ্যান লাগিয়ে কিছুটা বাঁচানোর চেষ্টা চলছে কিন্তু ঠিকমতো বিদ্যুৎ না থাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন,   এসব কারণে এখন পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। কিছু পেঁয়াজ ৮৪ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা গেলেও অন্যগুলো ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। বাকি যেগুলো পচে যাচ্ছে সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে। বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানি করে কম দামে বিক্রির ফলে দিন দিন লোকসানের পাল্লা ভারী হয়ে উঠছে।

দিনাজপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২-এর হিলি সাব-জোনাল অফিসের এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার বলেন,   পিক আওয়ারে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে আমরা বরাদ্দ পাচ্ছি মাত্র ৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। অফপিক আওয়ারে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৫ দশমিক ৫ মেগাওয়াট, বিদ্যুৎ পাচ্ছি ওই একই বরাদ্দ ৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। মূলত বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে   

 


আরও খবর

কমেছে ডিম-পেঁয়াজ-আলুর দাম

শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪




একজন মানুষকে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছানোর কাজটি অনেক কঠিন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

শরিফুল হাসান, অভিভাষণ বিশ্লেষক :

এ যেন নাটক-সিনেমার কোন দৃশ্য! দীর্ঘ ২৫ বছর পর বাবার সঙ্গে সন্তানদের দেখা। সন্তানের সঙ্গে বাবার। ওপরওয়ালার কাছে কৃতজ্ঞতা। কৃতজ্ঞতা গণমাধ্যমসহ আপনাদের সবার প্রতি। কৃতজ্ঞতা ব্র্যাকে আমাদের সব সহকর্মীকে। দেশে ফেরার পর যে মানুষটি পরিবারই খুঁজে পাচ্ছিলেন না অবশেষে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে আমরা তাঁর পরিবারের সন্ধান পেয়েছি। আজ বিকেলে আবুল কাশেম নামের ওই বৃদ্ধকে তাঁর পুত্র ও কণ্যাসহ পরিবারের সদস্যদের কাছে আমরা হস্তান্তর করতে পেরেছি। 


আপনারা যারা আমার আগের স্ট্যাটাস দেখেছেন তারা জানেন, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে সৌদি আরব থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিলেন এই বৃদ্ধ। কিন্তু তিনি নিজের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। তাঁর কাছে পাসপোর্টও ছিলো না। অনেক কিছু ভুলে গিয়েছেন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী এই বৃদ্ধ সম্ভবত শুক্রবার দিবাগত রাতে জেদ্দা থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছেন। তাঁর কাছে কোন পাসপোর্ট ছিল না। তিনি ট্রাভেল পাস নিয়ে এসেছেন। 


বিমাবন্দরের এপিবিএনর সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান রনি আমাদের ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যনেজার আল আমিন নয়ন ভাইকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানান। আমাদের সহকর্মী শাকিল বিমানবন্দরে গিয়ে বিমানবন্দরের উল্টো দিকে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসেন। শনিবার থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন। 


আমাদের সেন্টারে আসার পর আমাদের সাইকোসোসাল কাউন্সিলর মাহমুদা ও মাশকুরা দীর্ঘক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। আমাদের কাউন্সিলিরা জানান, শারিরীকভাবে সুস্থ মনে হলেও তিনি ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত। এ কারণেই তিনি সঠিকভাবে তাঁর ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। তবে তিনি জানাচ্ছিলেন তাঁর নাম আবুল কাশেম। আমাদের ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যনেজার আল আমিন নয়ন, কেস ম্যানেজার রায়হান, ঢাকা সেন্টারের ম্যানেজার অনোয়ার ভাই, নয়ন ভাই, আখি আপা, নজরুল ভাই, নীলা আপাসহ সবাই লোকটার যত্ন নিতে থাকেন। 


শুনলে অবাক হবেন তাকে যখন পাই তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ। কয়েকবার তিনি মলমূত্র ত্যাগ করে ভাসিয়েছেন। আমাদের সহকর্মীরা নিজের বাবার মতো করে খেয়াল রেখেছেন। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা আমারও আগেও পেয়েছি। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, সিভিল এভিয়েশনসহ সবার সহযোগিতায় আমরা অতীতেও এ ধরনের কাজ করেছি। তবে এবার কোনভাবে আগাবো ঠিক নিশ্চিত ছিলাম না। বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে লোকটাকে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেব। 


আমি চট্টগ্রামে বড় হয়েছি এবং চট্টগ্রামের ভাষা নিজে গিয়ে যখন লোকটার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললাম। চট্টগ্রামের ভাষা শুনে কাশেম চাচা আমাকে বোধহয় তাঁর আত্মীয় ভেবেছিলেন। তাই তিনি অনেক কথা বলতে থাকলেন। তিনি জানালেন তাঁর বাবার নাম নাম ফজেল আহমেদ। মা সাবানা। স্ত্রীর নাম বলছেন আমেনা। 


তবে নিজের ঠিকানা তিনি কখনো বলছেন চট্টগ্রামের নয়াবাজার। কখনো রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের গরিশংকরহাটের কথাও বলছেন। আবার বলছেন, চট্টগ্রামের নতুন বাজার হালিশহরের কাছে, ঈদগাহের মাঠ বউ বাজার এলাকায় তাঁর ছেলের তরকারির দোকান আছে। আমরা তাঁর বাড়ি কোথায় নিশ্চিত হতে না পারলেও ভাষা শুনে এটুকু বুঝতে পেরেছিলাম তার বাড়ি চট্টগ্রাম অঞ্চলে। 


আবুল কাশেম দাবি করছিলেন, তাঁর ৬ মেয়ে ও ৩ ছেলে রয়েছে। তাঁর তিন ছেলের নাম মান্নান, নূর হাসান, এনামুল হাসান। এর মধ্যে নূর হাসানের তরকারির দোকান আছে। ছোট ছেলে এনামুল হাসান দুবাই থাকেন। মান্নান সৌদি থাকেন বলে দাবি তাঁর। ৮-১০ জন নাতি নাতনি আছেন। কিন্তু যেহেতু দীর্ঘ ২৫ বছর দেশে নেই সঠিকভাবে সব বলতে পারছিলেন না। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কথা বলেছি পুলিশের বিশেষ শাখায়। কিন্তু তাঁর কোন পরিচয়পত্র না কাগজ পাচ্ছিলাম না যেটি তাঁর ঠিকানা নিশ্চিত করে। 


আমি তখন পুরো ঘটনা জানিয়ে দুদিন অগেই ফেসবুকে পোস্ট দেই। অসংখ্য মানুষ পুরো ঘটনা শেয়ার করেছেন। যেহেতু তিনি চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলছিলেন কাজেই আমরা চট্টগ্রামের পুলিশসহ নানা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা তাঁর পরিবারের সন্ধানে গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা চাই। অনেকেই তাঁর বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপরও আমরা পরিবারের সন্ধান পাচ্ছিলাম না। 


বিকল্প ভাবছিলাম তখন। ওই বৃদ্ধ কখনো চট্টগ্রামের হালিশহর, কখনো হাটহাজারী, নয়াবাজারসহ বেশ কিছু ঠিকানা বলছিলেন। তিনি যখন যেসব এলাকার কথা বলছিলেন আমাদের চট্টগ্রামের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মীরা সেসব এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিচ্ছিলেন। ওই বৃদ্ধ বলছিলেন চট্টগ্রামের নয়াবাজার এলাকায় তাঁর ছেলে তরকারি বিক্রি করে। তখন একটা বিকল্প চিন্তা শুরু করলাম সেই পুরোনো আমলের চিন্তা। আমাদের চট্টগ্রাম টীমকে বললাম পরিবারের সন্ধান চাই শিরোনামে ছবিসহ শত শত পোস্টার বানানা। চট্টগ্রামে বিলি করে বেড়ান। 


আমাদের চট্টগ্রামের সহকর্মী মং, আনিকা, নানজীবাসহ সবাই এরপর চট্টগ্রাম শহরের হালিশহর, নয়াবাজার, বউবাজার, ঈদগাহ, পাহাড়তলী সহ আরো বেশ কয়েকটি স্থানে দেয়ালে দেয়ালে আমরা পোস্টার লাগান। আমরা বিশ্বাস রেখেছিলাম গণমাধ্যমকর্মীসহ সবার সহযোগিতায় আমরা তাঁর পরিবারকে খুঁজে বের করবোই। এসব পোস্টার দেয়ালে লাগানো ও বিতরণ করার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের আমাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র (২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর) আব্দুস সবুর লিটন ও তাঁর সহযোগী মুন্না যোগাযোগ করেন। তিনি জানান, পোস্টারের ছবির লোকটিকে তিনি চিনতে পেরেছেন। 


এরপর আমাদের চট্টগ্রামের সাইকোসোসাল কাউন্সিলর নানজীবা ও আরেক সহকর্মী মং তাঁর অফিসে যান। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা তাঁর ছেলে সবজি ব্যবসায়ী জনাব নূর হাসানের খোঁজ পাই। পরবর্তীতে কাউন্সিলর অফিসে নুর হোসেনকে আসতে বলে বুঝতে পারি জানতে পারি আবুল কাশেম তাঁর বাবা। আমরা এরপর তাঁর বাড়িতে যাই। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেও আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হই। 


নুর হাসানের কাছ থেকে আমরা পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলি। দুবাইতে থাকা তাঁর এক ছেলের সঙ্গেও কথা বলি। এরপর বৃদ্ধ আবুল কাশেমের ছোট মেয়ে রুমা বেগম ও তার স্ত্রী আমেনা বেগমের সাথে ঢাকা থেকে ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেই। এ সময় যে আবেগঘণ পরিবেশের সৃষ্টি হয় সেটি ভাষায় বলা কঠিন। এরপরই আমাদের লোকজনের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা তাকে নিতে ঢাকায় রওয়ানা হন। আজকে সকালে তাঁরা ঢাকায় এসে পৌঁছান। 


আজকে উত্তরায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে যখন বাবার সঙ্গে ছেলে-মেয়েদের দেখা হলো যেন স্বর্গ দেখলাম নিজ চোখে।আবুল কাশেমের বড় ছেলে নূর হাসান বাবাকে ফিরে পেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ব্র্যাকসহ আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। অনেকদিন ধরে বাবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল না। আমরা জানতাম না তিনি সৌদি আরবের কোথায় আছেন। তিনি যে দেশে এসেছেন সেটাও আমরা জানতাম না। পোস্টার দেখে ও স্থানীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে ব্র্যাকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হেয়। আমরা তার পরিবারের সদস্য হয়েও যা করতে পারিনি ব্র্যাক আমার বাবার জন্য তার চেয়ে বেশি কিছু করেছে। 


দীর্ঘদিন পর পরিবারকে পেয়ে আবুল কাশেম তাঁর সন্তানদের বারবার জড়িয়ে ধরছিলেন। তাঁকে নিতে আসা কন্যা পারভীন আক্তার বলেন, আমার বাবা যখন ২৫ বছর আগে সৌদি আরবে যায় অমার ছোট বোন রূমা তখন মায়ের পেটে। বাবার সঙ্গে আমাদের স্মৃতি খুব কম। আমরা এখন বাবাকে ফেরত পেলাম। আমাদের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। 

পরিবারকে হস্তানের সময় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার মোঃ রাসেল তালুকদার, সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান রনি এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক মোঃ ফখরুল আলম উপস্থিত ছিলেন। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা যা করছি আপনাদের সবার সহযোগিতায় করতে পেরেছি। 

আমি এই সুযোগে আমাদের ব্র্যাকের সব সহকর্মীকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ গণমাধ্যমকে। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে। ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে ঠিকানাহীন একজন মানুষকে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছানোর কাজটি কতো কঠিন সেটা আমরা যারা এমন কাজ করি তারাই বুঝতে পারি। কিন্তু আপনাদের সবার সহযোগিতায় অসম্ভব সেই কাজটাও আমরা করতে পেরেছি। 


আরও খবর



পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি সিপিবি’র

প্রকাশিত:শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে গত দু’দিন ধরে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের যে হানাহানির ঘটনা ঘটছে তার তীব্র নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, পাহাড়ের আদিবাসী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। গত কয়েকদিন ধরে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের যে নৃশংস ঘটনা ঘটছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বছরের পর বছর ধরে স্যাটেলাররা আদিবাসীদের ভূমি দখল করে নিচ্ছে। তাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তার ওপর আবার অঘোষিত সেনা শাসন পাহাড়িদের জীবনকে নানা ধরনের বেড়াজালে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে রেখেছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরাপত্তার নামে দেশের একটি জনগোষ্ঠীর জীবন যাপনকে নিয়ন্ত্রিত করা কোনভাবেই কাম্য নয়।

দীঘিনালায় পাহাড়ীদের ঘর-বাড়ি-ব্যবসা কেন্দ্র আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে করে দেয়া হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন পাহাড় ও সমতলের সর্বক্ষেত্রে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। ‘মব জাস্টিস’ এর নামে দেশে অরাজকতা তৈরি হয়েছে, অতি দ্রুত কঠোর হস্তে দমন করতে না পারলে জনজীবনে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, অবিলম্বে হানাহানি-জীবননাশ বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ পাহাড়ি আদিবাসীদের প্রতি তাদের সমান অধিকার এবং নিরাপদ জীবন রক্ষার লড়াইয়ে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠীর মানুষ তার নিজ নিজ ভূমিতে স্বাধীন ও নিরাপদভাবে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। সে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে কমিউনিস্ট পার্টি তাদের সাথে থাকবে।


আরও খবর