টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বঙ্গোপসাগরে রুপালি ইলিশ শিকারের জন্য নামছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর উপজেলার কয়েক হাজার জেলে। শুক্রবার (২২ জুলাই) মধ্যরাত থেকে আবার কেউ আজ শনিবার সকাল থেকে সরকারি নিষেধাজ্ঞাকাল কাটিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে গভীর সাগরে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
শুক্রবার মধ্যরাতের পর সাগরে নামার জন্য জেলেদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। দল বেঁধে গভীর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। জেলেদের প্রত্যাশা, নিষেধাজ্ঞার ফলে আগের চেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়বে। এর আগে, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
বড়বাইশদিয়া, মৌডুবী, চালিতাবুনিয়া, চরমোন্তাজসহ রাঙ্গাবালী উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক জেলে রয়েছেন। তারা সাগরে যাওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। শুক্রবার মধ্যরাত কিংবা শনিবার ভোর থেকে মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে দলে দলে গভীর সাগরের দিকে যাত্রা করবেন তারা। জেলেদের সমুদ্রযাত্রার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে রাঙ্গাবালীর মাছের আড়ত, বরফকল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
হাফিজুর রহমান নামে এক জেলে বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতেই ৬৫ দিনের অবরোধকালে আমরা মাছ শিকারের জন্য সাগরে নামিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আমরা সাগরে মাছ শিকারে যাব। ইলিশ মাছ ধরাই আমাদের একমাত্র পেশা। এ কারণে এত দিন অলস সময় পার করতে হয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছি। এখন সমুদ্রে ইলিশ ধরা পড়লে সামনের দিনগুলো ধারদেনা পরিশোধ করতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের জাহাজমারা সমিতির সভাপতি নজরুল হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের জেলেপল্লীতে ৬৫ দিন অলস সময় পার করতে হয়েছে। জেলেরা তাদের জমানো টাকা বসে বসে খেয়েছে। কারণ জেলেরা সাগরের মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতে পারে না। তাই আমি মনে করি এবার সাগরে ইলিশ মাছ ধরা পড়লে জেলেরা আগের ধারদেনা পরিশোধ করতে পারবে।’
মৎস্য ব্যবসায়ী বনি আমিন ভূঁইয়া বলেন, ‘এত দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের পাশাপাশি আমাদেরও কষ্ট হয়েছে। তবু সেটা আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়েছে। কারণ এখন আগের চেয়ে জেলেরো মাছ বেশি পাবেন। আর আমরাও বেশি মাছ বিক্রি করে লাভবান হব।’