Logo
শিরোনাম

শাহবাগ মোড় ছেড়ে আন্দোলনকারীদের ধর্মঘটের ডাক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image



সদরুল আইন:


সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।



 আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ সন্ধ্যা ৬টায় প্রত্যাহার করা হয়।  দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ থাকার কারণে রাজধানীর শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। 



আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে। সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড় ছেড়ে যাওয়ার সময় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা।



 দাবি আদায়ে আগামী রোববার সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।



আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালে বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এই কোটা পদ্ধতির ফলে চাষার ছেলে চাষা, রাজমিস্ত্রির ছেলে রাজমিস্ত্রি, মজুরের ছেলে মজুর থেকে যাবে। আমরা একই প্রশ্নে পরীক্ষা দেব, একই প্রশ্নে রিটেন লিখব, একই প্রশ্নে ভাইভার মুখোমুখি হব।



 কিন্তু তারা কোটা সুবিধার কারণে একাই সুবিধা পাবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। তাহলে কি জন্মই আমাদের আজন্ম পাপ? 


হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সরকার কোটা চায় না, প্রশাসন কোটা চায় না, শিক্ষকরা কোটা চায় না, বিশ্ববিদ্যালয় কোটা চায় না, তাহলে কোটা চায় কে? সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছে সেখানে কোন অদৃশ্য শক্তি বলে এই কোটা বহাল করা হয়? আমরা এই অদৃশ্য শক্তির হাত গুঁড়িয়ে দেব। 



আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, হাইকোর্ট শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রহসন করছে। তারা পুনরায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক এবং শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনা করুক। আমরা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে না। 



তারা নিজেদের মতো কাজ করে যাবে কিন্তু আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরব। আজ আমরা ফিরে যাচ্ছি কিন্তু আগামীতে আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে রাজপথে নামব। 



আজ সারা দেশে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আশা করি, আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। 


এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় শাহবাগ মোড়ে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানেই অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। 


প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 



এতে করে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং শাহবাগ ও আশপাশের এলাকা অচল হয়ে পড়ে।



আরও খবর



আশার আলো দেখছেন রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়ে থাকা আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে আংশিক যাচাই-বাছাইয়ে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গার চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসেবে ছবি ও নাম মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। ওই তালিকার বাকি সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমার।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পের অধিকাংশ রোহিঙ্গা আশার আলো দেখছেন। দীর্ঘদিন পর নিজের জন্মভূমিতে ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন তারা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার খবরে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ক্যাম্পে হুলুস্থুল কাণ্ড বয়ে যাচ্ছে, অনেকে আনন্দ উল্লাসে মেতেছে। তবে উদ্বিগ্ন ও ভয়ের কারণও দেখছেন অনেক রোহিঙ্গা। এছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে জটিল সমীকরণও দেখছেন বিশ্লেষকরা।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা ফয়েজ উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন পর একটা সুসংবাদ পেলাম। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আরাকানে ফিরে যেতে। আরাকান আমাদের দেশ আমাদের চিরস্থায়ী বসবাস সেখানে হবে৷ রোহিঙ্গা ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, আমাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

রোহিঙ্গা বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, জন্মভূমি আরাকানে ফিরতে পারবো খবরটি শুনে খুব ভালো লেগেছে। জানি না কবে সেটি কার্যকর হবে। তবে দাবি থাকবে আরাকানে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আজকেই আমরা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।

রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা সালাউদ্দিন বলেন, আরাকান আমাদের জন্মভূমি, সেখানে ফিরতে পারলে আমাদের সকলের জন্যে ভালো। কিন্তু এই প্রত্যাবাসন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কি না! সেটিও ভাবতে হচ্ছে। বর্তমানে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের অনেক রাজ্য আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন সঠিক প্রক্রিয়ায় হবে কি না সেটি নিয়েও ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।

উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় নাগরিকেরা জানান, অনেক হয়েছে এবার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। তাদের কারণে স্থানীয়রা অনেক হয়রানি, বিড়ম্বনা ও ঝুঁকির মধ্যে আছে। এসব রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের বনভূমি, কৃষিজমি, শ্রম বাজার নষ্ট হয়ে গেছে। বেড়ে গেছে খাদ্য পণ্যের দাম। রোহিঙ্গাদের বর্জ্যের কারণে শত শত একর কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা জন্মসনদ ও জাতীয়তা সনদ নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। স্থানীয় এবং দেশকে ঝুঁকিমুক্ত করতে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এত সহজ হবে না। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এই প্রক্রিয়াটি আলো'র মুখ দেখতে পারে। অধিকাংশ রোহিঙ্গা আরাকানে ফিরতে ইচ্ছুক। তবে কিছু এনজিও সংস্থার 'প্রেসক্রিপশন' এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতে পারে। এতদিন রোহিঙ্গাদের ভুলভাল বুঝিয়ে কিছু এনজিও সংস্থা ফায়দা নিয়েছিল। কারণ রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন তাদের (এনজিও) লাভ। দেশ এবং কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রক্ষায় দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হোক। তারা যতদিন থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।

বাংলাদেশের একজন সাবেক কূটনীতিক মুন্সী ফয়েজ আহমদ জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে, এখনই কোনো উপসংহারে পৌঁছানো উচিত হবে না বলে মনে করছেন তিনি। নিঃসন্দেহে এটি একটি পজিটিভ ডেভেলপমেন্ট। কিন্তু, এর মধ্য দিয়ে কনক্লুসিভ ডেভেলপমন্টে পৌঁছানো সহজ হবে না। কারণ রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি ও রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। সময়টা একটু জটিল। রাখাইন এখন প্রধানত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ফলে, জান্তার তৎপরতার পাশাপাশি অন্যদের সম্পৃক্ততা জরুরি। যেহেতু এক লাখ আশি হাজার রোহিঙ্গার একটা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিললো, আজ হোক কাল হোক প্রত্যাবাসনের জন্য একটা প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করবে এই স্বীকৃতি। তবে, রাখাইনে জান্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ ফিরে না পেলে, সেগুলো নিছকই দলিল হয়েও থেকে যেতে পারে। আর যদি জান্তা বাহিনী বা কেন্দ্রীয় সরকার কখনো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়ও, স্থানীয় প্রশাসনে রাখাইনদের আধিপত্য থাকবেই। সেক্ষেত্রে, তাদের সঙ্গেও একটা বোঝাপড়া কিংবা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। রাখাইনের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থিতিশীল, যেখানে নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিবও বলেছেন, রাখাইনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই প্রত্যাবাসনের কথা বিবেচনা করা হবে। এখন সেখানে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য বাড়িঘর নেই। দ্বিতীয়ত, যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাদের বসতি ছিল, সেসব এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে? কখন, কীভাবে, কার ক্লিয়ারেন্সে তা সম্ভব হবে এসবই অনিশ্চিত।

সরকার প্রধানের দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে এ তথ্য জানান মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ। বাংলাদেশ ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ছয়টি ধাপে ওই আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টার দফতর বলছে, মিয়ানমার প্রথমবারের মতো ‘প্রত্যাবাসনের যোগ্য’ রোহিঙ্গাদের এমন তালিকা দিল, যা দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতেও সই করে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতিতে রোহিঙ্গারা আস্থা রাখতে না পারায় সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়।

এরপর আসে কোভিড মহামারী; রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগেও ঢিল পড়ে। বিশ্বজুড়ে সেই সংকটের মধ্যেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আসে নতুন ধাক্কা।

এর মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে কয়েকবার রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের যুদ্ধের তীব্রতার মধ্যে প্রত্যাবাসনের আলোচনা কমে আসে। উল্টো রাখাইনে যুদ্ধের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়।

এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে আরও ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া সব এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দখলে চলে যাওয়ার মধ্যে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগেও ভাটা পড়ে ঢাকার।

এর মধ্যে গত ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কষ্ট নিজের চোখে দেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে তিনি সেদিন ইফতারও করেন।

প্রত্যাবাসনই যে রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান, সে কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ প্রধান সেদিন বলেন, “শেষমেষ মিয়ানমারেই সমাধান পেতে হবে আমাদের। এখানে থাকা সব শরণার্থীর স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হব না।


আরও খবর



২৬ মার্চ বন্ধ থাকবে ঢাকার যেসব সড়ক

প্রকাশিত:সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ২৬ মার্চ বঙ্গভবনের আশপাশের এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, আগামী ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

এ অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের যানবাহনে সুষ্ঠুভাবে চলাচলের জন্য বঙ্গভবনের আশপাশ এলাকায় চলাচলরত অন্যান্য গাড়ি চালকদের জন্য ২৬ মার্চ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো:

১। সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স (গুলিস্তান) হতে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত (টয়েনবী সার্কুলার রোডে) সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

২। অ্যালিকো গ্যাপ হতে দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা ও রাজউক ক্রসিং পর্যন্ত (ডিআইটি রোডে) সকল প্রকার গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

৩। পার্ক রোডের উত্তর প্রান্ত হতে ইত্তেফাক মোড় (টয়েনবী সার্কুলার রোড) অভিমুখী কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করবে না।

৪। শাপলা চত্ত্বর ও দৈনিক বাংলা হতে রাজউক-গুলিস্তানগামী সকল বাস দৈনিক বাংলা, ইউবিএল, প্রেসক্লাব হয়ে চলাচল (আসা-যাওয়া) করবে কিংবা অন্য কোন সুবিধাজনক বিকল্প রাস্তায় চলাচল করবে।

৫। দৈনিক বাংলা হতে রাজউক অভিমুখী কোন বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচল করবে না।

উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো বঙ্গভবনে আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

উল্লিখিত রাস্তাগুলো পরিহার করে অন্য কোনো সুবিধাজনক বিকল্প রাস্তায় চলাচল করার জন্য গাড়ি চালকদের অনুরোধ করা হলো। এ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ফলে রাস্তা ও এলাকায় যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটায় ডিএমপি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।


আরও খবর

চেনা রূপে ফিরেছে রাজধানী

রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫




দেশে জঙ্গিবাদ উত্থানের মতো কিছুই ঘটেনি

প্রকাশিত:বুধবার ০২ এপ্রিল 2০২5 | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দেশে কোনও জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত সমস্যা উত্থিত হয়নি। তিনি বলেন, আজকের থানা পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিলো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও তাদের খোঁজ-খবর নেয়া। বুধবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর খিলক্ষেত, বাড্ডা, ভাটারাসহ বিভিন্ন থানায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোন পত্রিকা কি বলে তা নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে কোনও উদ্বেগ দেখছি না।

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর প্রথমে সরকার ছিলো না, তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। এখন সবাই একত্রে চেষ্টা করছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও এই উন্নতি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, এজহারে অনেকের নাম এসেছে, তবে এমন অনেকেই রয়েছে যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন এবং সে সময় বিদেশে ছিলেন। আমরা প্রপার তদন্ত করছি এবং নির্দোষ কোনও ব্যক্তিকে সাজা দেয়া হবে না।


আরও খবর



রাজধানীতে ফিরে এলো ৪০০ বছরের ঈদ ঐতিহ্য

প্রকাশিত:সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

সুলতানি আমলে পুরান ঢাকায় একসময় ঈদ মিছিল হতো। সেই ঐতিহ্য অনুসরণ করে এবার ঈদ আনন্দ মিছিল বের করা হবে, পাশাপাশি আয়োজন করা হবে ঈদ মেলার।

১২০৪ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা হলেও নামাজ, রোজা ও ঈদ উদ্‌যাপনের প্রচলন হয় তার বেশ আগে থেকেই। তবে ঘটা করে ঈদ পালনের রীতি শুরু হয় স্বাধীন সুলতানি আমলে।

ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে আনন্দ ভাগাভাগি হতো। তবে বঙ্গদেশে ঈদ উদযাপনকে প্রাণবন্ত করে তোলে মোগলরা। মোগলদের সময় ঈদ উদযাপনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ঈদ মিছিল। রাজধানীতে ঈদের দিন মোগল সম্রাটরা নামাজ পড়তে যেতেন মিছিল করে। মোগলাই জৌলুস প্রকাশিত হতো সেই ঈদ মিছিলে। 

১৬১০ সালে বাদশাহ জাহাঙ্গীরের আমলে সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতী যখন বাংলা সুবার রাজধানী বিহারের রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। নায়েব-নাজিমদের আমলে ঈদ মিছিল বিস্তৃতি লাভ করে ও বর্ণাঢ্য হয়। ব্রিটিশ আমলেও সগৌরবে বহাল ছিল ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য। পাকিস্তান আমলে এটি অব্যাহত থাকলেও এক পর্যায়ে বন্ধও হয়ে যায়।

এরপর গত শতাব্দীর শেষ দশকের শুরুতে চালু হয় ঢাকার ঈদ মিছিল। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আর সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবেদন ধরে রাখতে না পেরে এখন প্রায় হারিয়ে গেছে পুরান ঢাকার ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য।

গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি এই সরকারের পক্ষ থেকে হারানো ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, দিন যত যাচ্ছে ঈদ আয়োজনটি ক্রমে কালেক্টিভ, সামাজিক রূপ থেকে ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক উৎসবে রূপান্তরিত হচ্ছে। আমরা ঈদের দিন অনেকটাই টিভি দেখে, ঘুমিয়ে কাটাচ্ছি।

তাই আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে তিনি বলেন, সুলতানি আমল কিংবা মোগল আমলে ঈদের ঐতিহ্য নামাজের পর ঈদ মিছিল, আমরা সেই ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করতে চাই। এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আগারগাঁওয়ে পুরনো বাণিজ্য মেলা মাঠে ঈদের জামাতের পর একটি বর্ণাঢ্য ঈদ আনন্দ মিছিলের আয়োজন করব।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠে ঈদের জামাতের পর ঈদ আনন্দ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠ থেকে শুরু হয়ে সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হবে। ঈদ মিছিলটি হবে বর্ণাঢ্য। মিছিলের সামনে শাহি ঘোড়া ও সামনে-পেছনে ২০টির মতো ঘোড়ার গাড়ি থাকবে। ঈদকে আরো বেশি আনন্দময় ও জমকালো করতে থাকছে ঐরাবত হাতি। ব্যান্ড পার্টি থাকবে, সুলতানি-মোঘল আমলের ইতিহাসসংবলিত চিত্রকলাও থাকবে। নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই ঈদ আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করবে। অন্যান্য ধর্মামাবলম্বীও আসবেন। এর মাধ্যমে ঢাকার ৪০০ বছরের ঈদ ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা হবে।

ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, ঈদ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। ঈদ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সেমাই ও মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। এ ছাড়া ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাতাসা থাকবে আপ্যায়নে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী ঈদ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে ২০০টির মতো স্টল থাকবে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নানা ধরনের পণ্যসামগ্রী, খাবার, চটপটি থাকবে। শিশুদের আনন্দের জন্য নাগরদোলা ও খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। এই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আমাদের ঈদ আনন্দ উৎসব শুধু পুরুষ বা নারীর জন্য নয়, এখানে শিশুদের জন্যও নানা আয়োজন থাকবে। পুরো পরিবার নিয়ে সবাই যেন উপভোগ করতে পারেন এই ব্যবস্থা থাকছে ডিএনসিসির ঈদ আনন্দ উৎসবে।


আরও খবর

চেনা রূপে ফিরেছে রাজধানী

রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫




ঈদকে সামনে রেখে কর্মব্যস্ত তাঁত পল্লি

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লি গুলো কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে। বর্তমান বাজার ভালো থাকায় দীর্ঘ দিনের নানা সমস্যা কাটিয়ে লাভের আশা করছেন তাঁত মালিকরা। গত বছরের তুলনায় এবছর চাহিদা অনেক বেশি বলে জানান তাঁত মালিকেরা ।

তাঁত সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত সিরাজগঞ্জ। সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও চৌহালী উপজেলায় পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুম রয়েছে অন্তত ৫ লাখ তাঁত রয়েছে । তাছাড়াও উল্লেখিত এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার তাঁত কারখানা রয়েছে । এতে প্রায় ২৩-২৪ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, গামছা, থ্রিপিস তৈরি করছে । তবে, ৯০ শতাংশ তাঁতে মূলত তৈরি হয় শাড়ি ও লুঙ্গি । আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সব কারখানায় দিন- রাত ব্যস্ততা বেড়েছে। এখানে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক মানের জামদানী, কাতান, সিল্ক, বেনারশি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, গামছা ও থান কাপড়। এখানকার উৎপাদিত কাপড় সমূহের কদর রয়েছে দেশ জুড়ে।

জেলার অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম এ শিল্পটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে অন্তত ৫ লাখ মানুষ। বছরে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার তাঁত পন্য উৎপাদিত হয় প্রায় ৭০ কোটি মিটার কাপড়। এ কারণে জেলার ব্র্যান্ডিং ঘোষণা করা হয় তাঁতশিল্পকে। নাম দেয়া হয় তাঁতকুঞ্জ সিরাজগঞ্জ।

দিনের আলো ফোটার সাথে সাথেই তাঁতের খট খট শব্দে মুখরিত থাকতো সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলো। কালের আবর্তে এবং আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে তাঁত কারখানাগুলোতে। উৎপাদন বাড়াতে প্রতিটি কারখানায় যন্ত্র চালিত পাওয়ার লুম দিয়ে শাড়ী, লুঙ্গি আর গামছা তৈরি করা হয়। তাঁত শ্রমিক হামিদ, শহিদুল, আলামিন, মিতু বেগম, জাহানারা জানান, ঈদকে সামনে রেখে এখন এখানকার তাঁত মালিকরা পুরোদমে কারখানা চালু করেছে । ফলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে । এখন প্রতিদিনই কাজ হচ্ছে । এখন তাঁত চালু হওয়ায় আমাদের অভাব অনেকটাই দুর হয়েছে।

তাঁত শ্রমিক শফিকুল জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছি। ফলে সাপ্তাহে ৫ হাজার টাকার বেশি মজুরি পাই। এতে পরিবারের সবার চাহিদা মিটিয়ে সকলকে নিয়ে এবার সুন্দরভাবে ঈদ করতে পারব।

কাপড় ব্যবসায়ী শহীদ সরকার জানান, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের এনায়েতপুর ও সোহাগপুর হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতারা এখান থেকে কাপড় পাইকারি কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করেন।

বেলকুচি উপজেলার শফিকুল ইসলাম শফি, খুকনীর ফিরোজ উইভিং ফ্যাক্টরির মালিক ফিরোজ হাসান অনিক আলামিন, আব্দুল আজিজ বাবু সহ একাধিক তাঁত মালিক বলেন, বর্তমান বাজার ভালো থাকায় দীর্ঘ দিনের নানা সমস্যা কাটিয়ে লাভের আশা করছি। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ব্যবসা ভালো হবে বলে মনে করেন তাঁত মালিকরা।

খামার গ্রামের সফল জাতীয় কারুশিল্পী পদকপ্রাপ্ত তাঁতি আফজাল হোসেন লাভলু বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে এবার ভারতে শতকোটি টাকার সুতি শাড়ি ইতিমধ্যেই রপ্তানি হয়েছে। আমিও কয়েক কোটি টাকা মূল্যের শাড়ি রপ্তানি করেছি।

বেলকুচি পাওয়ারলুম এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ এম.এ বাকী বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে তাঁত বস্ত্রের মোট উৎপাদনে ৭০-৭৫ ভাগ সিরাজগঞ্জ জেলাতে উৎপাদিত হয়। যার মূল্য কয়েকশো কোটি টাকা। মালিকেরা সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত কাপড়ের সুনাম ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা, তাঁত মালিকদের নানা সমস্যা দূরিকরণে সরকারি সহয়োগিতা একান্ত প্রয়োজন। তাছাড়াও সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প রক্ষায় বাইরের দেশ থেকে অবৈধভাবে শাড়ি আসা বন্ধ এবং রং-সুতা সহজলভ্য করতে না পারলে এই তাঁত শিল্প উন্নয়নে হোচট খাবার কথাও জানান তিনি।

বাংলাদেশ তাঁতবোর্ড সিরাজগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত লিয়াজো অফিসার ইমরানুল হক বলেন, কোন কুচক্রি মহল যেন সুতা ও রংগের দাম বাড়াতে না পাড়ে সেজন্য সরকারি হত্যক্ষেপ কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, ক্ষুদ্র তাঁতশিল্প রক্ষায় ৫% হারে ঋণসহ বাহারি ডিজাউনের শাড়ী তৈরীর জন্য তাঁতীদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতি সমিতির সভাপতি আলহাজ আব্দুস ছামাদ খান জানান, ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জসহ দেশের তাঁতশিল্পে শ্রমিক ও মালিকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। বিশেষ করে তাঁতকুঞ্জ সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত শাড়ির সুনাম দেশজুড়ে রয়েছে। তবে এই শিল্পের প্রসার ও ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে সমিতির পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগ নেয়া হবে।


আরও খবর