সেন্ট অগাস্টিন বলেছেন, ‘পৃথিবী একটা বই, আর যারা ভ্রমণ করে না, তারা বইটি পড়তে পারে না’। ভ্রমণপিপাসু মানুষ বদ্ধ ঘরে না থেকে ছুঁটে বেড়ায় এক স্থান থেকে অন্যত্র।
যারা বনের কাছে যেতে চান? পাখির আওয়াজে মুগ্ধ হতে চান? ঝি ঝি পোকার ডাক শুনতে চান? তারা নববর্ষের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন সুন্দরবনের দ্য ফরেস্ট রিট্রিটে।
এখানে রাত্রিযাপন করতে পারবেন প্রকৃতির কোলে। এই রিসোর্টের রুম থেকেই সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। দোলনায় দোল খেতে খেতে বানর, হরিণ, মেছো বাঘ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, জলজ্যান্ত কুমির দেখতে পারবেন। কখনোবা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হুংকারও শুনতে পারবেন।
ইকো রিসোর্ট দ্য ফরেস্ট রিট্রিট খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নের পশ্চিম ড্যাংমারি গ্রামে গড়ে উঠেছে।
ড্যাংমারি গ্রামে বয়ে যাওয়া চাংমারি খালের পাশে বাঁশ-কাঠ, গোলপাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই রিসোর্ট।
যেভাবে বুকিং করবেন : রিসোর্টের নিজস্ব ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট রয়েছে। তার মাধ্যমে অগ্রিম বুকিং করতে হবে।
দরদাম : এখানে বিভিন্ন আকৃতি ও সুবিধার কটেজ ও ডুপ্লেক্স কটেজ রয়েছে। এখানে জনপ্রতি ৩৪৫০ টাকা থেকে ৪,৯০০ টাকায় জনপ্রতি রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
নিরাপত্তা : এগুলোতে আছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ। আছে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। এ ছাড়া কোস্ট গার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং বন বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময় টহল দেন এসব এলাকায়।
প্যাকেজে যা রয়েছে : এক দিনের প্যাকেজে দুপুর, রাত ও সকালের খাবার সংযুক্ত। আগাম বুকিং দিলে নির্দিষ্ট রিসোর্ট মোংলা ঘাট থেকে ট্যুরিস্ট বোটে নিয়ে যাবে। এতে এক ঘণ্টার নদী ভ্রমণ হয়ে যাবে। এ ভ্রমণে দেখা যাবে মোংলা বন্দর, মাছেদের নাচানাচি, ডলফিনের লাফালাফি। এ ছাড়া কুমিরের বিচরণ তো রয়েছেই। আর থাকবে চোখজুড়ানো বন। দুপুরে লাঞ্চ। বিকেলে পর্যটকদের বইঠা নৌকায় সুন্দরবনের ভেতরে এক ঘণ্টা ক্রুজিং করানো হয়। এ ভ্রমণ জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ধারিত হয়। রাতে রিসোর্টে রাতযাপন। দ্বিতীয় দিন সকালে নাশতা শেষে ১১টায় চেক আউট শেষে বোটে নিয়ে যাবে করমজল। সেখানে ঢোকার জন্য ৪৬ টাকা জনপ্রতি টিকিট কাটতে হবে। করমজলে বিভিন্ন বন্য প্রাণীর দেখা মিলবে। তারপর ওয়াচ টাওয়ারে উঠে উপভোগ করা যাবে সুন্দরবনের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
যেভাবে যাওয়া যায় : ঢাকা থেকে সরাসরি মোংলায় যাওয়া যায় বাসে। সেখানে নেমে যাঁরা প্যাকেজে আসবেন, তাঁরা রিসোর্টের নিজস্ব বোটে চলে যাবেন। যাঁরা রুম বুকিং দিয়ে আসবেন, তাঁরা বোট ভাড়া করে রিসোর্টে যেতে পারবেন। এ ছাড়া সেপ্টেম্বর থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত নিজস্ব গাড়ি নিয়েও রিসোর্টে যাওয়া যাবে। সড়কপথে যেতে চাইলে মোংলা যাওয়ার তিন কিলোমিটার আগে লাউডোব ফেরিঘাটে নেমে যেতে হবে। সেখান থেকে ফেরি পার হয়ে সরাসরি রিসোর্টগুলোতে যাওয়া যাবে। তবে বর্ষাকালে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌকা।
খাবারদাবার : প্যাকেজে গেলে রিসোর্টগুলোর মেনু অনুযায়ী তিন বেলা খাবার পাবেন। চাইলে অর্ডার করেও খাওয়া যাবে। এগুলো অবশ্যই বুকিংয়ের সময় রিসোর্টে জানাতে হবে। এখানে দক্ষিণাঞ্চলের বৈচিত্র্যময় মাছ পাওয়া যায়। ঘুরতে এলে সেগুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের যেকোনো খাবার খেতে পারেন।
সাবধানতা : পরযটকদের খেয়াল রাখতে হবে প্রকৃতি ও পরিবেশের কোনো ক্ষতি যাতে না হয়।