Logo
শিরোনাম

শারদীয় দুর্গোৎসব বুধবার শুরু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

আগামীকাল বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। ১৩ অক্টোবর রবিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী এই উৎসবের।

লোকনাথ পঞ্জিকা অনুযায়ী, ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী ও ১২ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সারা দেশে এ বছর ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে।


আরও খবর



ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

শীত এলে আমাদের ত্বক আর চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ঠোঁট ফাটার সমস্যা হয় প্রায় সবারই। অনেক সময় নানা উপকরণ ব্যবহার করেও ঠোঁট ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। ব্যবহার কিছুক্ষণ পরই আবার ঠোঁট শুকিয়ে যায়। অনেক সময় ঠোঁট ফেটে রক্তও বের হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে ব্যবহার করতে পারেন ঘরোয়া উপাদান। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঠোঁট ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায়-

মাখন ব্যবহার

মাখন কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, এর রয়েছে অনেক উপকারিতাও। বিশেষ করে ফাটা ঠোঁটের সমস্যায় মাখন বেশ উপকারী। তাই সুযোগ পেলেই ঠোঁটে মাখন মাখতে পারেন। এভাবে নিয়মিত ঠোঁটে মাখন ব্যবহার করলে তা ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হতে সাহায্য করবে। এছাড়া মাখন সামান্য গরম করে ঠোঁটে হালকা হাতে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতেও আরাম পাবেন।

মধু ব্যবহার

রূপচর্চায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু। এটি কাজে লাগাতে পারেন আপনার ঠোঁটের যত্নেও। ঠোঁটে নিয়মিত মধু মাখতে পারেন। মধু ফাটা ঠোঁট সারিয়ে তুলতে কাজ করে। প্রতিদিন গোসলের আগে হাতে মধু নিয়ে ম্যাসাজ করুন। ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হবে।

দুধের সর ব্যবহার

আমাদের ত্বকের যত্নে আরেকটি কার্যকরী উপাদান হতে পারে দুধের সর। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে দুধের সর মেখে রাখতে পারেন। এই উপাদান ত্বক হাইড্রেটেড করতে দারুণ সাহায্য করে। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। তাই এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে দূর হবে ঠোঁট ফাটার সমস্যা।

অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার

ত্বকের পরিচর্যায় এর আগেও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করেছেন নিশ্চয়ই? এটি চুল ভালো রাখতেও কাজ করে। তবে এবার আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন ঠোঁটের যত্নে। প্রথমে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন। এরপর ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। এতে ঠোঁট মোলায়েম হবে ও ফাটা ত্বক নিমেষে দূর হবে।

অলিভ অয়েল ব্যবহার

শীতে আপনার ঠোঁট ভালো রাখতে অন্যতম সঙ্গী হতে পারে অলিভ অয়েল। এই তেল আপনার ঠোঁটের ফাটা সারিয়ে তুলতে কাজ করবে। সেইসঙ্গে ত্বককে হাইড্রেটেড করবে যাতে ত্বক শুষ্ক হয়া না পড়ে। নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যা দূর হয়।


আরও খবর

এখন দরকার নানারকম শীতের পোশাক

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪

শীতে বিয়ের কনের স্কিন কেয়ার রুটিন

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪




সমালোচনায় মাহিয়া মাহি

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

বছরজুড়েই কাজের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই বেশি আলোচনা-সমালোচনায় থাকেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। কখনও বিয়ে কিংবা বিচ্ছেদ নিয়ে, কখনও সন্তান নিয়ে। কখনওবা আবার রাজনৈতিক মাঠে দাপিয়ে বেড়ানোর জন্য খবরের শিরোনামে উঠে আসেন তিনি।

এবার মাহির একটি স্ট্যাটাস নিয়ে শোরগোল পড়ে গেছে নেটদুনিয়ায়, যা নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ভক্ত-অনুরাগীরা ভাবছেন, হয়তো হতাশা থেকে এমন কথা বলেছেন মাহি।

গত ১৬ নভেম্বর নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটস দিয়েছেন তিনি। ক্যাপশনে মাহি লিখেছেন, ‘ঝগড়া করারও কেউ নেই।’ অভিনেত্রী পোস্টটি করা মাত্রই তার কমেন্টসবক্সে মন্তব্যের ঝড় উঠেছে নেটিজেনদের। একজন লিখেছেন, আমারও ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে। আরেকজন লেখেন, কোনো চিন্তা করবেন না, যার কেউ নেই তার জন্য আমি আছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে বিয়ে করেছিলেন মাহি। সেই সংসার ভেঙে যাওয়ার পর ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ রাকিব সরকারকে বিয়ে করেন এই নায়িকা। তাদের সংসারে একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। কিন্তু দাম্পত্য জীবনের আড়াই বছর মাথায় দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন মাহি-রাকিব।


আরও খবর

রটারডাম উৎসবে ‘কাজলরেখা

রবিবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪




ফুলবাড়িতে,সুইয়ের ফোঁড়ে স্বাবলম্বী নারী রাজিয়া সুলতানা

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

উত্তম কুমার মোহন্ত,ফুলবাড়ী :

জীবন জীবিকার তাগিদে নিজের ইচ্ছে শক্তি আর সুঁই-সুতার বুননের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এখন স্বাবলম্বী নারী মোছাঃ রাজিয়া সুলতানা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে হস্ত শিল্পের উপর হাতেখড়ি নিয়ে নিজে স্বাবলম্বীর পাশাপাশি তার হস্ত শিল্প পণ্য এখন এলাকার গন্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সারা দেশে।


এই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক নারী বর্ধন মুলক এ কাজ করে সংসারে এনেছেন ‌স্বচ্ছলতা রাজিয়া সুলতানা এখন উপজেলার প্রথম সারির নারী উদ্যোক্তা। যিনি নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজ এলাকা সহ-দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিচিত লাভ করেছেন।


কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গা মোড় ইউনিয়নের অজপাড়া গাঁয়ে সরে জমিনে গিয়ে জানাযায়,২০২৩ সালে জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে হস্ত শিল্পের উপর এক মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়িতে ব্লক বাটি, হ্যান্ড পেইন্টিং,ও সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন রাজিয়া সুলতানা। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পেয়ে যান সাফল্য তার নিজের সফলতার পর এলাকার বেকার নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নিজ উদ্যোগে ৫০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন।


রাজিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুঁচের ফোঁড়ে ফোঁড়ে নকশিকাঁথার উপর ফুটিয়ে তুলছেন নানা রংয়ের ফুল,পাখি, লতাপাতা সহ-বিভিন্ন কারুকাজ,আবার কেউ কেউ করছে রংয়ের কাজ এতে যা মজুরি পাচ্ছে তা দিয়ে তাদের সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। দোকান থেকে কাপড়, রং ও মেডিসিন ক্রয় করে তারা তৈরি করছেন থ্রিপিচ,চাদর, বেডশিট, পাঞ্জাবি ,শাড়িসহ অনেক কিছু। তৈরিকৃত প্রতিটি থ্রিপিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পাঞ্জাবি ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে।


রাজিয়া সুলতানার কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া নারী সাথী আক্তার,লুনা,শাহনাজ পারভীন,হ্যাপি বেগম বলেন,আমাদের মতো সমাজে পিছিয়ে পড়া নারীদের আইডল হলো রাজিয়া আপা।ওনার অনুপ্রেরণায় আমরা কাজ শুরু করেছি তাতে আমাদের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছি।এবং আমাদের মতো অনেকেই আপাকে দেখে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে।


রাজিয়া সুলতানার স্বামী মোঃ রাজীব মিয়া বলেন দৃঢ় মনোবল এবং আত্নবিশ্বাস থাকলে যথোপযুক্ত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সংসার করার পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তা হত্তয়া সম্ভব। তিনি আরো বলেন আশাকরি আত্ম তৃপ্তির পাশাপাশি এটি আমাদের ভবিষ্যৎ চলার পথকে আরও মসৃণ করবে।


নারী উদ্যোক্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন,আমি জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে এক মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আমার নিজ বাড়িতে ব্লক বাটি,হ্যান্ড পেইন্টিং,ও সেলাইয়ের কাজে সফলতা অর্জন করার পর আমার গ্রামের বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করি এখন আমার বাড়িতে ৫০ জন বেকার নারী কাজ করে তাদের পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে।এখান থেকে প্রতি বছরে আমার প্রায় এক লাখ টাকা আয় হচ্ছে তিনি আরও জানান শুধু আমার গ্রামেই নয় আমার ইচ্ছে আছে আমি পুরো উপজেলার বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই।


এব্যাপারে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ললিত মোহন রায় জানান,যব উন্নয়ন থেকে রাজিয়া সুলতানা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এক জন সফল উদ্যোক্তা হয়ে বেকার নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন সেই তিনি বছরে এক লাখের ও বেশি টাকা আয় করছেন। আমি নারী উদ্যোক্তা রাজিয়া সুলতানার সফলতা কামনা করছি।


আরও খবর



সরকারি চাকরিতে বড় নিয়োগ আসছে

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

ক্যাডার ও নন–ক্যাডার মিলে ২২ হাজার নতুন নিয়োগ আসছে। রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেয়া হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ২২ হাজার নতুন নিয়োগ আসছে। এখানে সব কটিই কর্মকর্তা পদ। বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ হবে, নাকি বিশেষ বিসিএস হবে, বিষয়টি দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেয়া হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোকলেসুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে সিভিল সার্ভিস নিয়োগ নিয়ে কথা বলবেন। নিয়োগের ব্যাপারে তিনিই বিস্তারিত জানাবেন।


আরও খবর



রমেশ শীল সুন্নিয়তের এক মহান কবি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী থানার পূর্ব গোমদন্ডী গ্রাম। পিতাঃ শ্রী চণ্ডীচরণ শীল। বঙ্গের কবিগানের ভূবনে কিংবদন্তির নায়ক, মরমী গানের ধারায় মাইজভাণ্ডারী গানের সফল সংযোজক, একুশে পদকে ভূষিত, কবিয়াল রমেশ শীল শুধু মাইজভাণ্ডারী গানের গীতিকারই ছিলেননা; তিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। তিন শতাধিক মাইজভাণ্ডারী গান রচনা করে তিনি এই জগৎকে আশ্চর্যরকম ভাবে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। শুধু সংখ্যার বিচারে নয়; গুণগত বিচারেও এগুলো উচ্চমার্গীয়, অনেকগুলোই কালোত্তীর্ণ। এতদিন মাইজভাণ্ডারী গান ছিল মূলত সাধনসঙ্গীত। রমেশ শীল তাঁর ব্যাপক কবিয়াল পরিচিতি এবং সৃজনশীল প্রতিভার পরশে মাইজভাণ্ডারী গানে এক নতুন ভাব-জোয়ারের সৃষ্টি করে সাধনসঙ্গীতকে নিয়ে আসেন লোকসঙ্গীতের কাতারে; জনপ্রিয় করে তোলেন যুগপৎ দরবারে ও সুধীমহলে। এ ক্ষেত্রে শিল্পী আব্বাস উদ্দীনের অবদানের সাথে তাঁর অনেকাংশে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

বাংলার লোক সঙ্গীতকে পল্লী ও শহর অঞ্চলে সমান তালে পরিচিত ও জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে শিল্পী আব্বাস উদ্দীনের (১৯০১-১৯৫৯) যে অবদান, মাইজভাণ্ডারী গানকে মাইজভাণ্ডারী পরিমণ্ডলের পাশাপাশি সুধী-সমাজে পরিচিত ও জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে রমেশ শীলের অবদান প্রায় অনুরূপ। এ প্রসঙ্গে ফোকলোর বিশেষজ্ঞ ডক্টর ওয়াকিল আহমদের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য-

আধ্যাত্মিক ভাবধারায় রচিত মাইজভাণ্ডারের গান বাংলা লোক সংগীতের সখা-চারণকবি রমেশ শীল ছিলেন এ ধারার প্রধান রূপকার ও প্রচারক। মাইজভাণ্ডারের গান মূলত আধ্যাত্মিক হলেও এতে সমাজচেতনা অনুপস্থিত নয়: প্রতীক ও রূপকের ভাষায় সমাজের সমালোচনাও প্রকাশ পায়। আমার মনে হয়, এই কারণে মাইজভাণ্ডারের গান বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে স্থায়ী আসন লাভ করবে।১

আমাদের ধারণা, রমেশ শীলের ঐতিহাসিক অবদানের কথা স্মরণ রেখেই শেষোক্ত মন্তব্যটুকু সংযুক্ত করা হয়েছে।

এতদিন মাইজভাণ্ডারী গান ছিল মাইজভাণ্ডার দরবার ভিত্তিক। রমেশ শীল একে দরবারি মজলিস থেকে বের করে এনে সাধারণ শ্রোতার কাছেও পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ ক্ষেত্রে লালন সঙ্গীত-সাধক অমূল্য শাহের সাথেও তাঁর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অমূল্য শাহ লালন সঙ্গীতকে তাল-মাত্রায় ফেলে গাইবার নিয়ম প্রবর্তন করেছিলেন, রমেশ শীলও অনুরূপ মাইজভাণ্ডারী গানকে তাল-মাত্রায় ফেলে গাইবার পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। রমেশ শীলের মাইজভাণ্ডারী গানগুলো উচ্চমার্গীয় সাধন সঙ্গীত হিসেবে রচিত হয়েও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। রমেশ শীলের মাইজভান্ডারী গানকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজ জীবনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও দ্বন্দ্বের একটি প্রবহমান গতিধারার যথার্থ চিত্রও খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমাদের ধারণা।

মাইজভাণ্ডারী তরিকার উদার, মানবিক, অসাম্প্রদায়িক বক্তব্যে আকর্ষিত হয়ে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী লোকজনও মাইজভাণ্ডারী তরিকার প্রতি ঝুঁকে পড়ে। মাইজভাণ্ডারী পরিমণ্ডলে এরকম উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- খ্রিষ্টান মাইকেল পেনারু, বৌদ্ধ ধনঞ্জয় বড়ুয়া, হিন্দু সম্প্রদায়ের গুরুদাস ঠাকুর ও কবিয়াল রমেশ শীল। রমেশ শীল শুধু ঝুঁকে পড়েননি, মাইজভাণ্ডারী ত্বরিকা ও পীরমাহাত্ম্য বর্ণনা করে আধ্যাত্মিক উচ্চমার্গীয় সঙ্গীতও রচনা করেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবেও মাইজভাণ্ডারী পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলেন, তাঁর গানসমূহ দারুণভাবে সমাদৃত হয়েছিল। কিন্তু সাধারণভাবে অনেকে এটি সহজভাবে নিতে পারেনি। 

চট্টগ্রামের অভিজাত মুসলমান সম্প্রদায়েরই একটা অংশ রমেশ শীলকে, এমনকি রমেশ শীলের কারণে মাইজভাণ্ডারী ত্বরিকাকেও তীব্রভাবে সমালোচনা করেছে-


নয়া সুন্নি


নয়া এক ফেরকায়ে বাতেল হায় জাহের


বানাতে হোঁ মুসলমানো-কো কাফের।


নয়া সুন্নি নয়া উনকো আকিদা


আজব সুন্নি সুনিদা হাম নাদিদা।


পুরানে সুন্নিও ছে হেঁ ওয়ো বেজার


কমিউনিষ্ট আওর সেকুলারকা মদদগার।


আজব সুন্নি গজব উনকা তরিকা


রমেশ শীল ভি হায় উনকো এক খলিফা।


শুধু মুসলমান সম্প্রদায়ের একাংশ নয়, রমেশ শীল স্ব-সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকেও বিদ্রূপাত্মক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন। মাইজভাণ্ডার যাওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে তাঁকে 'একঘরে' করে রাখা হয়েছিল। তীব্র মনোদুঃখে রমেশ শীল রচনা করেন নিম্নোক্ত গানটি-


আমার প্রাণে খোঁজে মাইজভাণ্ডার।

নিন্দা করলে কি ক্ষতি আমার।


নিন্দুকেরা নিন্দা করুক, 

নিন্দা করা স্বভাব তার।।

কিসে হারাম হল তাল,

তালে লোহা পিটে বানায় দা ছুরি কোদাল,

তালে মাটি পিটে কুলাল ভাণ্ড বাসন হয় তৈয়ার।।

দেখ খোদার তৈয়ার ঢোল, 

দুনিয়াময় চামড়া ছানি ভিতরে তার খোল, 

নানা শব্দে বাদ্য বাজে শুনতে লাগে চমৎকার।।

শুন যত বন্ধুগণ, 

নিন্দুকেরে তোমরা কভু ভেবনা দুশমণ, 

তারা ত্বরিকতের ধোপার মতন ধুয়ে করুক পরিষ্কার।।

খাদেম রমেশের বাণী, 

প্রাণ দিয়েছি পীর কদমে যা করেন তিনি,

ঐসব নিয়ে টানাটানি করা আমার কি দরকার।। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রমেশ শীল শুধু মাইজভাণ্ডারী গানের গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীই ছিলেন না, মাইজভাণ্ডার পরিমণ্ডলের অনেকের বিশ্বাস, রমেশ শীল ছিলেন মাইজভাণ্ডারের ফয়েজপ্রাপ্ত একজন খলিফাও। 


আরও খবর

সুফীবাদের মূলনীতি ও স্তর সমূহ

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪