Logo
শিরোনাম

সেন্ট মার্টিনে প্রকট খাদ্য সঙ্কট

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের দক্ষিণে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে খাদ্য সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে৷ দ্বীপ থেকে উপজেলা টেকনাফের নৌ যোগাযোগ ২০ দিন ধরে বন্ধ থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷

মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাতের কারণে নাফ নদী ব্যবহার করা যাচ্ছে না৷ নৌপথ ছাড়া যোগাযোগের আর কোনো তেমন পথ নাই৷

আরেকটি বিকল্প সেন্ট মার্টিন থেকে জাহাজযোগে কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ৷ এটা সময়সাপেক্ষ এবং শুধু জাহাজ দিয়েই সম্ভব৷

তবে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, 'এখন সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দারা চাইলে নাফ নদী ব্যবহার করে মূল ভূখণ্ডে যাতায়াত করতে পারেন

আর আইএসপিআর আর জানিয়েছে, 'সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কাছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের একাধিক জাহাজ মিয়ানমারের জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় থেকে নিয়মিত টহল দিচ্ছে৷

 

সেন্ট মার্টিন টেকনাফের একটি ইউনিয়ন৷ জনসংখ্যা ১০ হাজারের মতো৷ সেন্ট মার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, 'এই ২০ দিনে মাত্র একবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেন্ট মার্টিনে খাদ্যসামগ্রী পঠানো হয়েছে৷ আর সেটা ছিল জেলে এবং যারা সরকারের ভিজিএফ কার্ডধারী৷ ফলে এখন খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে৷

তিনি বলেন, 'সেন্ট মার্টিনের কিছু মানুষ জেলে আর অধিকাংশই কৃষক৷ চাহিদার ২০ ভাগ খাদ্যও এখানে উৎপাদন হয় না৷ জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ আছে৷ বন্ধ আছে পর্যটন৷ ফলে আয়ের উৎস যেমন বন্ধ তেমনি বাইরে থেকে খাদ্য আনারও কোনো সুযোগ নাই৷

'আর তিন-চার দিনের মধ্যে যদি খাদ্য সরবারাহ করা না হয় তাহলে অনেককেই অনাহারে থাকতে হবে,' জানান তিনি৷

একই কথা বলেন সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান৷ তিনি বলেন, 'আমাদের এখানে ঈদ নাই৷ আতঙ্কে আর খাদ্য সংকটে আমাদের দিন কাটছে৷ দ্বীপের মানুষের হাতে কোনো কাজ নেই৷ নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় তারা কাজের জন্য কোথাও যেতে পারছেন না৷ দোকানে যে চাল, তেল, ডাল পাওয় যাচ্ছে তার দাম অনেক৷ শাকসবজি শেষ হয়ে গেছে৷ চলাচল শুরু না হলে সামনের দিনে আমরা কী খাবো তাই ভেবে পাচ্ছি না৷

'আমাদের খোঁজ কেউ নিচ্ছে না৷ না জনপ্রতিনিধি, না প্রশাসন৷ একবার মাত্র খাদ্য পাঠিয়ে তারা চুপচাপ আছেন৷ ওই খাদ্যে কয়জনের হয়!

টেকনাফ স্পিডবোট মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলম বলেন, 'গত দু'দিন ধরে আমরা গোলাগুলির শব্দ পাচ্ছি না৷ তবে দূরে মিয়ানমারের সমুদ্র সীমায় তাদের যুদ্ধজাহাজ এখনো অবস্থান করছে৷ আর বাংলাদেশের সমূদ্র সীমায় নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের দুটি জাহাজ টহল দিচ্ছে৷ আমরা খুব কষ্টে আছি৷ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্বীপের বাইরে নেয়ার কোনো সুযোগ নাই৷ একটির নামমাত্র স্বাস্থকেন্দ্র আছে সেখানে সাধারণ রোগেরও চিকিৎসা সম্ভব নয়৷ আর খাদ্য সামগ্রী দ্রুত ফুরিয়ে আনছে৷

'আমাদের এখন দরকার নাফ নদীর চ্যানেলটি নিরাপদ ও উন্মুক্ত করে দেয়া৷ তা না হলে আসলে আমরা বিচ্ছিন্ন হয়েই থাকব৷ কারণ সমূদ্র পথে জাহাজ দিয়ে কক্সবাজারে আমাদের যোগাযোগ সম্ভ নয়৷ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বোট চালক, মাঝিমল্লাররাও বেকার হয়ে পড়েছেন৷

কক্সবজারের জেলা প্রশাসক জানান, 'তাদের খাদ্যের প্রয়োজন হলে আমরা আরো খাদ্য পাঠাবো৷ আর এখন তারা চাইলে নাফ নদী ব্যবহার করতে পারেন৷

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ওখানে যা হচ্ছে তা তো মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার৷ সেন্ট মার্টিনের লোকজন আবহাওয়ার কারণে এখন নৌপথ ব্যবহার করছেন না৷ তারা তো এই পরিস্থিতির মধ্যেই আসাযাওয়া করেন৷ তারপরও আমরা আরো একটু পরীক্ষা করে তাদের এই নৌপথ ব্যবহারের জন্য বলব৷ তবে এখন ব্যবহারে কোনো বাধা নেই৷

এদিকে আইএসপিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, 'বর্তমানে মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একাধিক যুদ্ধজাহাজ অপারেশন পরিচালনা করছে৷ মিয়ানমার নৌবাহিনী সেন্ট মার্টিনের অদূরে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় অবস্থানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে অবহিত করছে৷ এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১২ জুন প্রতিবাদ জানায়৷

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কাছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের একাধিক জাহাজ মিয়ানমারের জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় থেকে নিয়মিত টহল দিচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়৷

বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যৌথ অপারেশন পরিচালনা করছে৷ মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির এই সংঘর্ষের কারণে নাফ নদী এবং নদী-সংলগ্ন মোহনা এলাকায় বাংলাদেশি বোটের উপর অনাকাঙ্খিত গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে৷ এই ধারাবাহিকতায় মিয়ানমার নৌবাহিনী সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় এবং নাফ নদীর মিয়ানমার সীমানায় অবস্থান করে মিয়ানমারের দিকে আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করছে৷ একই সঙ্গে আরাকান আর্মিও মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ও বোট লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করছে৷ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ড এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় চলমান রয়েছে৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইং-এর মহাপরিচালক মিয়া মোহাম্মদ মইনুল কবিবের কাছে সোমবার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আইএসপিআর বিবৃতিতে যা বলেছে এর বাইরে আমাদের কাছে আর কোনো বাড়তি তথ্য নেই'

এদিকে মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল অব. এম শহীদুল হক বলেন, 'নৌবাহিনী এখন যে টহল দিচ্ছে এটা আরো আগে করলে ভালো হতো৷ তাহলে সেন্ট মার্টিনের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হতো না৷ এখন দরকার দ্রুত নাফ নদীর চ্যানেলটি নিরাপদ করে সেন্ট মার্টিনের যোগাযোগ চালু করা৷'

তবে নতুন আরেকটি সমস্যার কথা বলেন তিনি৷ তিনি বলেন, 'আরকান আর্মি কিন্তু রোহিঙ্গা বিরোধী৷ তারা বুধিডং ছেড়ে রোহিঙ্গাদের চলে যেতে বলেছে৷ এর আগে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে৷ এখন ওই রোহিঙ্গারা কোন দিকে মুভ করে তা বাংলাদেশের নজরে রাখা উচিত৷ তা নাহলে নতুন একটি সংকট হতে পারে৷

তার কথা, 'সেন্ট মার্টিন নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা না জেনে শুনে কথা বলছেন৷ সেন্ট মার্টিন কোনো পক্ষেরই টার্গেট না৷ আমরা মাঝখানে পড়ে গেছি৷ তবে আমাদের শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে৷

একই ধরনের কথা বলেন মিয়ানমারের সিটুয়েতে বাংলাদেশের সাবেক মিশন প্রধান মেজর অব. মো. এমদাদুল ইসলাম৷ তিনি বলেন, 'আরাকান আর্মির নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের এখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে, তাদের হয়ে যুদ্ধ করলে নাগরিকত্ব দেয়া হবে৷ এতে আমাদের এখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হতে পারে৷ সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷

তিনিও মনে করেন, সেন্ট মার্টিন মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বা আরকান আর্মির টার্গেট নয়৷ তাই এব্যাপারে রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বহীন কথা বলা উচিত নয়৷ তবে বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই শক্ত অবস্থানের জানান দিতে হবে৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরও খবর

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ বেড়েছে

সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার সময় আবেদন নামঞ্জুর করে এ পরোয়ানা জারি করেন।

পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আজ এ মামলার চার্জ শুনানি ছিল। অসুস্থ থাকায় পরীমণি আদালতে হাজির হতে পারেননি। অপর আসামি জিমির পক্ষেও সময় আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করেন। তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।


আরও খবর



রাজপুর উপজেলা কৃষক দলের নেতা কর্মীদের সতর্ক করে নোটিশ

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নসিম আকনের সদস্য পদ স্থগিত করার প্রতিবাদে গত ২৫ জানুয়ারি কৃষক দলের প্যাডে একটি নোটিশ করা হয়। 

ঝালকাঠী জেলা বিএনপি কর্তৃক রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ নাসিম উদ্দিন আকনের দলীয় পদ স্থগিত করার কারণে রাজাপুর উপজেলা বিএনপি ও সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের সিদ্বান্তে অংশ এক প্রতিবাদ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল রাজাপুর উপজেলার সকল কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ তারিখ বিকেলে ঝালকাঠি জেলা কৃষক দল রাজাপুর উপজেলা কৃষক দলকে সতর্ক করে নোটিশ করে।   নোটিশে বলা  হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা শাখা কমিটি গত ০১/০৯/২০২৪ইং তারিখে বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। অথচ গত ২৫/০১/২০২৫ই তারিখ রাজাপুর উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফেইজবুক এর মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে একটি পোষ্ট করেছেন। উহা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি ও ভিত্তিহীন। জাতীয়তাবাদী কৃষকদল ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা শাখার কোন কমিটির অনুমোদন নেই। অতএব যাহারা এ ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছেন তাদেরকে আগামীদিন গুলোর জন্য সর্তক করা হইল। ভবিষতে এহেন কর্মকান্ড সংঘঠিত হলে জেলা কৃষকদল আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ বিষয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক জানান, আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করার পরেও জেলা - উপজেলার কর্মসূচী পালন করেছি। জেলার প্রোগ্রামে আমাদের ডাকে। আমরা নতুন করে জেলাতে অনুমোদনের নতুন কমিটিও সাবমিট করেছি। আমরা সেই অনুযায়ী বিবৃতি দিয়েছি।


আরও খবর



মির্জাগঞ্জে ভবন নির্মান না হওয়ায় বিদ্যালয় মাঠে পাঠদান

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

কামরুজ্জামান বাঁধন, মির্জাগঞ্জ(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

ঠিকাদারের গাফলতির কারনে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাজিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ। নির্মান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির অযুহাতে বছরের পর বছর পরে আছে ভবন নির্মানের কাজ ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার এমনই অভিযোগ। মাত্র ৬০ শতাংশ কাজ করে লাপাত্তা হয়েছেন ঠিকাদার। ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করতে প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও ঠিকাদারের কাছে বারবার ধরনা দিলেও কাজ হচ্ছে না। শ্রেনীকক্ষের সংকটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাই বাধ্যে হয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় মাঠে পাঠদান করাচ্ছেন। বেশি সমস্যায় পড়ের বৃষ্টির মৌসুমে। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বাজিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার ২০২১ সালে ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বরাদ্ধের পরিমাণ ৮০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ফাউন্ডেশন চারতলা থাকলেও এখন নির্মাণ করা হবে একতলা। তবে কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদার বারবার কাজের সময় বাড়ানোর আবেদন করে সময় ক্ষেপন করেন। কাজে বিলম্ব হওয়াতে ভোগান্তিতে শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবক সূত্রে আরো জানা যায়, বিদ্যালয়ে একটি মাত্র পুরোনো পাঁকা ভবন রয়েছে। এতে তিনটি কক্ষ আছে, ওই সব কক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ। পাঠদান চলার সময় গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর দশম শ্রেনীর কক্ষে সিলিং ফ্যান পড়ে দু’জন শিক্ষার্থী আহত হয়। ক্লাস পরিচালনার জন্য শ্রেনী কক্ষের সংকট রয়েছে। 

শিক্ষার্থীর বলেন, ‘নবম ও দশম শ্রেনীর মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার ক্লাস করার সময় অতিরিক্ত কক্ষের প্রয়োজন হয়। তখন আমাদের বাধ্যে হয়ে বিদ্যালয়ের মাঠেও ক্লাস করতে হয়। সংশ্লিষ্ট কতর্ৃপক্ষের কাছে নতুন ভবনের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’ 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বাবুল হোসেন বলেন, বাজিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এ এলাকার মধ্যে ঐতিহ্য বহন করেন। বিদ্যালয়ে শ্রেনীকক্ষ সংকটের কারনে নতুন ভবন নির্মানের কাজ শুরু হলে ঠিকাদার ভবনের ৬০ শতাংশ কাজ করে বন্ধ রেখেছেন বছরের পর বছর। আমি শ্রেনী কক্ষের সংকটের জন্য বিভিন্ন দপ্তর ও ঠিকাদারকে বলা হলেও তিনি কাজ করছেন না। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাই যাতে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয় এবং বিদ্যালয়ের শ্রেনী সংকট কেটে যায়। 

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘যে পরিমাণ কাজ করা হয়েছে, সেই পরিমাণ বিল উত্তোলন করতে পারিনি। এখন যথাযথ বরাদ্ধ নেই। তবে কাজ ফেলে রাখলে ঠিকাদারেরই লস হয়। তবে অফিসে কাজের পে-অর্ডার দিয়ে রাখা হয়েছে। আমি দুই তিন দিনের নতুন ভবনের বাকী কাজ শুরু করবো।’

পটুয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোশফিকুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ শেষ না হওয়ার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হবে।


আরও খবর



মহার্ঘ ভাতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি

প্রকাশিত:বুধবার ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতা পাবেন কি পাবেন না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

 সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মহার্ঘ ভাতার বিষয় থেকে সরকার সরে আসছে কি না— এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা কে দিলো? কে ঘোষণা দিয়েছে আমি জানি না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আসলে তারপরে সিদ্ধান্ত নেব, দেব কি দেব না। তারপর ঘোষণা দেব।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাবনা গেছে কি না, জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা তো এখনো ঘোষণা দেইনি। আমিতো এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি।

সম্প্রতি সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে মূল বেতনের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার খসড়া প্রস্তুত করেছিল অর্থ বিভাগ। তবে ইতোমধ্যে পাওয়া সরকারি চাকরিজীবীর বাড়তি ৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বাদ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়। অর্থ বিভাগের হিসাবে এটি বাস্তবায়নে এক অর্থবছরে বাড়তি খরচ হবে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের খসড়া প্রস্তাবে ব্যয় কিছুটা কমাতে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও প্রথম থেকে দশম গ্রেডের কর্মচারীদের ১০ বা ১৫ শতাংশ হারে ভাতার বিষয়টি আলোচনায় ছিল। এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকে দশম গ্রেডে ১০ শতাংশ দেওয়া হলে পাঁচ হাজার কোটির কিছু বেশি টাকার প্রয়োজন ছিল। আর ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ব্যয় আরেকটু বেড়ে দাঁড়াত– প্রায় ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ এ পরিমাণ টাকার সংস্থান করে সংশোধিত বাজেটে তা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করে।


আরও খবর

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ বেড়েছে

সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




কুবিতে ‘ইউর ক্যাম্পাস’-এর সেবা চালু; স্বয়ংক্রিয় লন্ড্রি সেবা দিয়ে যাত্রা শুরু

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রা সহজ ও সুবিধাজনক করার লক্ষ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রশাসন এবং ‘ইউর ক্যাম্পাস’-এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রথমে স্বয়ংক্রিয় লন্ড্রি সেবা চালু করা হবে এবং পরবর্তী পর্যায়ে অন্যান্য সেবা চালু করা হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রশাসনের সঙ্গে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। 

‘ইউর ক্যাম্পাস’ একটি উদ্ভাবনী স্টার্টআপ, যা শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে প্রযুক্তি-নির্ভর সেবা প্রদান করে। তাদের সেবার মধ্যে রয়েছে ইউর লন্ড্রি (ওয়াশিং মেশিন), ইউর শপ (ভেন্ডিং মেশিন), ইউর অফারস্ (ই- কমার্স) এবং সেইভ ইউর প্ল্যানেট (স্মার্ট বিন)।

চুক্তি অনুযায়ী, ‘ইউর লন্ড্রি’ সেবার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বল্প খরচে আধুনিক এবং স্বয়ংক্রিয় মেশিন ব্যবহার করে তাদের পোশাক ধোয়ার সুবিধা পাবেন। প্রতিবার ৩০-৫০ টাকায় ১৫-২০টি কাপড় পরিষ্কার করার সুযোগ থাকবে। সেই সাথে থাকবে স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি ই- কমার্স সাইট স্ন্যাকস ও বেভারেজের জন্য ভেন্ডিং মেশিন ইত্যাদি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ও প্রভোস্ট কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক মোঃ জিয়া উদ্দিন, বিজয় ২৪ হলের প্রভোস্ট সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান, কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট সহকারী অধ্যাপক মোঃ হারুন, নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি এবং ‘ইউর ক্যাম্পাস’ এর কো-ফাউন্ডার ও সিআরও মোঃ ইসতিয়াক উদ্দিন। এসময় সুনীতি শান্তি হলের পক্ষে স্বাক্ষর করেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রভোস্ট।

এ বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক মোঃ জিয়া উদ্দিন বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের স্বতন্ত্র চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে শহর থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত হওয়ায়, নগর জীবনের সাধারণ সুবিধাগুলো শিক্ষার্থীরা তত দ্রুত উপভোগ করতে পারে না। শিক্ষার্থীদের এই সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে আমরা প্রভোস্ট কমিটির একটি মিটিংয়ে আলোচনা করে ‘ইউর ক্যাম্পাস’ নামক অর্গানাইজেশনের কার্যক্রম পর্যালোচনা করেছি এবং তাদের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।”


তিনি আরও বলেন, “এই চুক্তির আওতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হল ও একটি ডরমিটরিতে ওয়াশিং মেশিন, ভেন্ডিং মেশিনসহ ‘ইউর ক্যাম্পাস’ এর অন্যান্য সেবা সরবরাহ করা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দুই ধরনের সুফল পাচ্ছে—একদিকে নতুন প্রযুক্তির সাথে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, অন্যদিকে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলো সহজেই উপভোগ করছে।”

‘ইউর ক্যাম্পাস’-এর সিআরও মোঃ ইসতিয়াক উদ্দিন বলেন, “আমরা সবাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পেরেছি শিক্ষার্থীদের হলে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমরা "ইউর ক্যাম্পাস" উদ্যোগটি শুরু করি। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের বেসিক প্রয়োজনগুলোর সমাধান করা। তাই আমরা ভেন্ডিং মেশিন (ইউর শপ), ওয়াশিং মেশিন সার্ভিস (ইউর লন্ড্রি), ই-কমার্স, লকার সার্ভিস, এবং স্মার্ট বিনের মতো শিক্ষার্থী বান্ধব সেবাগুলো নিয়ে কাজ করছি।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে, আমরা ইতিমধ্যে ২৬টি ক্যাম্পাসে পৌঁছে গেছি এবং আমাদের রেজিস্টার্ড অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭৬ হাজারের বেশি। তবে এখানেই থেমে নেই। আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবর্তনে বিশ্বাসী এবং তাদের প্রতি দায়বদ্ধ। শিক্ষার্থীদের আস্থার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য আমরা সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

‘ইউর ক্যাম্পাস’ এর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এম্বাসেডর রুহিত পাল বলেন, “যখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে যাই তখন সর্বপ্রথম ‘ইউর ক্যাম্পাস’ এর সার্ভিসগুলো সম্পর্কে জানতে পারি। তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল নিজের ক্যাম্পাসে এরকম প্রযুক্তি নির্ভর সুযোগ-সুবিধা সমূহ নিয়ে আসার। অনেক প্রচেষ্টার পর অবশেষে ‘ইউর ক্যাম্পাস’ এর সাথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।”

আগামী মার্চ মাসের মাঝের দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইউর লন্ড্রি’ সেবাটি চালু হবে। ভবিষ্যতে ইউর শপ, ‘ইউর অফারস, লকার সার্ভিস এবং সেইভ ইউর প্ল্যানেট সেবাগুলোও পর্যায়ক্রমে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ‘ইউর ক্যাম্পাস’ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের ২৬ টি ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।


আরও খবর