Logo
শিরোনাম

শিক্ষকের বলাৎকারের শিকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদ্রাসা পড়ুয়া সাত বছরের এক শিশুকে বলাৎকার করেছে এক  শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর মা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষক। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তারাবো পৌরসভার মুগরাকুল হাদিউল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে।

  শিক্ষার্থীর মায়ের দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, তাদের বাড়ি পার্শবর্তী সোনারগাঁও উপজেলায়। তিনি তার ছেলেকে কোরআনে হাফেজ করার উদ্দেশ্যে কয়েকমাস পূর্বে মুগরাকুল হাদিউল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় ভর্তি করান। সেখানে বোর্ডিংয়ে থেকে  লেখাপড়া করতো সে। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীর থাকার কক্ষ থেকে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আবু সুফিয়ান  তার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক  বলাৎকার করে শিশুটিকে। এমনকি ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য শিশুটিকে হুমকি প্রদান করে শিক্ষক। এদিকে শিশুটির শারিরীক অবস্থার অবনতি  হলে সে  ঘটনাটি তার পরিবারকে জানায়। পরে তাকে বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার  শিশুটির মা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। 

   এব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি/ তদন্ত  আতাউর রহমান বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়মিত

মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।


আরও খবর



নওগাঁয় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ১৫শ' পরিবার পানিবন্দি, আতঙ্কে মানুষ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর মহাদেবপুর ও মান্দা উপজেলায় 'আত্রাই নদীর' উভয় তীরের মোট ৫ স্থানে নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১৫শ' পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে ইট ভাটা, মন্দির সহ হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধানের ক্ষেত। ভেসে গেছে পুকুরে থাকা মাছ। চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন। এরমধ্যে মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নে মঙ্গলবার সকাল সারে ৯ টারদিকে আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধ হঠাৎ করেই ভেঙ্গে যায়। বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে প্রথমে মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান ও তরুন সমাজ সেবক সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন এবং সাথে সাথে ঘটনাটি জানালে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এভাঙ্গনে মহূর্তের মধ্যে একটি ইট ভাটা সম্পূর্ণ ও মন্দীর তলিয়ে যায়। এসময় পুকুরের মাছ সব ভেঁসে যায়।

অপরদিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় 'আত্রাই নদীর' উভয় তীরের মোট ৪ স্থানে নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পক্ষে ১৫শ' পরিবার। পানির নিচে তলিয়ে গেছে হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধানের ক্ষেত। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, মান্দাতে বিপৎ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের বেশকিছু স্থান ইতি মধ্যেই চরম ঝঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আতঙ্কে দিন ও রাত পার করছেন নদী পাড়ের মানুষ। এ অবস্থায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টিকিয়ে রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে বস্তায় বালু ভরে মেরামতের একটানা কাজ করছে শ্রমিকেরা। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় এসব কাজ বাস্তবায়ন করছে মান্দা উপজেলা প্রশাসন। মান্দাতে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন এর ৭টি গ্রাম। এ ইউনিয়নের নুরুল্লাবাদ ও পারনুরুল্লাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৪শ' টি পরিবার এবং ফকিন্নি নদীর তীরবর্তী এলাকায় আরো অন্তত ৬শ' টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া প্রসাদপুর ইউনিয়নের বাইবুল্যা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন আরো ৫শ' পরিবার। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার সকাল থেকে আত্রাই নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এ পানি বেড়ে এখন বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত এ নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে আরো কয়েকদিন পানি বাড়তে পারে। নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এ ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের অন্তত ১হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের পানিবন্দি মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, এরই মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে বস্তায় বালু ভর্তি করে মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সার্বক্ষনিক তদারকি করা হচ্ছে 


আরও খবর



ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়াল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৪১ জনে। এছাড়া নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৯৪৪ জন। সবমিলিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৫১ হাজার ২৭২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেনিন্স অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে আগর ২৪ ঘণ্টার তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, রোববার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৯৪৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯৬৭ জন ও ঢাকার বাইরের এক হাজার ৯৭৭ জন। একই সময়ে যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে সাতজন ঢাকার ও চারজন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৫১ হাজার ২৭২ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৮ হাজার ২৬ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৮৩ হাজার ২৪৩ জন ভর্তি হয়েছেন।

বছরের একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৪০ হাজার ৭১৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৩ হাজার ২৯১ জন এবং ঢাকার বাইরের ৭২ হাজার ৪২৪ জন।

এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।

২০২০ সালে কভিড মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।


আরও খবর



খুলে দেওয়া হলো কাপ্তাই হ্রদের ১৬টি গেট

প্রকাশিত:বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০23 | হালনাগাদ:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 |

Image

কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আবারো খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের স্লুইসগেট (জলকপাট)।  ১৯ সেপ্টেম্বর বাঁধের ১৬টি স্লুইসগেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই হ্রদ থেকে নিষ্কাশিত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে।

বাঁধ খুলে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে আজ লেকের পানির উচ্চতা আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে হ্রদে পানির লেভেল ১০৮ দশমিক ২৪ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। যা রুল কার্ভ থেকে প্রায় ৭ ফুট বেশি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে আজ আবারো ১৬টি গেইট দিয়ে ৬ ইঞ্চি করে পানি ছেড়ে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে। যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও প্রায় ২৫ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধির ফলে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি গেইট একযোগে খুলে দেওয়া হয়েছিল।


আরও খবর



খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা অনিশ্চিত

প্রকাশিত:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ০২ অক্টোবর তার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে। কিন্তু বিদেশে পাঠানোর অনুমতির জন্য আদালতে যেতে রাজি নয় খালেদা জিয়ার পরিবার ও বিএনপি। বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের দাবি, সরকার চাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে।

এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলা হলেও খালেদা জিয়ার আবেদন বাতিল হওয়ার পেছনে অন্য কারণের কথা বলছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত না মানায় খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছিল। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কথাবার্তা বলে তার পরিবার আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। তাদের ধারণা ছিল, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে এবার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। সরকারের তরফ থেকেও ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছিল, খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য করা পরিবারের আবেদন ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত সেই আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে।

রবিবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এর আগে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মতামত দিয়েছেন, তা-ই আইনের অবস্থান এবং সেটিই সঠিক।

পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রথম যে আবেদনটি ছিল, যা ২০২০ সালের মার্চে নিষ্পত্তি হয়। সেই আবেদনে বলা ছিল, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা যেন করা হয়। তখন দুটি শর্তে তার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১-এর উপধারা-১-এর ক্ষমতাবলে দেওয়া হয়েছিল। শর্তগুলো হলো প্রথমত, তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। দ্বিতীয়ত, তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। সেই শর্তগুলো মেনে খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্ত হন এবং বাসায় ফিরে যান। সেভাবেই সেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়। তবে প্রতি ছয় মাস বৃদ্ধি করা যাবে কি না, বিষয়টি উন্মুক্ত ছিল। এরপর সেই সময়সীমা ছয় মাস করে মোট আটবার বাড়ানো হয়েছে।

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনে কেন সুযোগ নেই, সেই ব্যাখ্যা তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় কোনো দরখাস্ত যদি একবার নিষ্পত্তি করা হয়, সেই নিষ্পত্তি করা দরখাস্ত পুনর্বিবেচনা করার অবকাশ আইনে থাকে না। আমরা ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১-এর উপধারা ১, , , , ৫ এবং সর্বশেষ উপধারা ৬ ব্যাখ্যা করে মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেই মতামত হচ্ছে, ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে যে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে, সেটি অতীত ও শেষ হয়ে গেছে। এটি আর খোলার কোনো উপায় নেই।

এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার পরিবার তাকে বিদেশে পাঠাতে চাইলে তাদের করণীয় সম্পর্কে জানতে জান একজন সাংবাদিক। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তাকে ফৌজদারি ৪০১ ধারায় দুটি শর্তযুক্তভাবে যে আদেশবলে সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেটি বাতিল করে তারপর আবার ফের বিবেচনা করার সুযোগ থাকলে তা করা হবে।

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হলে তাকে আদালতে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আদালত যদি অনুমতি দেন, তাহলে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপমহাদেশে ৪০১ ধারার ক্ষমতা যখন সরকার প্রয়োগ করে, তখন সেটিকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় না বলে সিদ্ধান্ত আছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন, সেটি হচ্ছে এখন যে আদেশ আছে, যদি সেটি বাতিল করে তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়, তাহলে আদালতে যেতে পারেন। এ অবস্থায় তিনি আদালতে যেতে পারেন বলে এ রকম সুযোগ নেই।

এরপর একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তাহলে সেই আদেশ বাতিল করা হবে কি না? জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বাতিল করাটা অমানবিক হবে, বাতিল করব না।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন বাতিল হওয়ার পর গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জে বিএনপির রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল দাবি করেন, খালেদা জিয়াকে শর্ত দেওয়া হয়েছিলতিনি যদি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান, তাহলে বিএনপিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসতে হবে। বিএনপি থেকে উত্তর দেওয়ার আগেই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তার জীবনে গণতন্ত্রের জন্য কোনো শর্ত নেই। ভোটের অধিকারের জন্য, এই দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য কোনো শর্ত নেই। কোনো শর্ত খালেদা জিয়ার নামের সঙ্গে যায় না এবং আমরাও তা মানি না।

এদিকে চিকিৎসার জন্য অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে না দেওয়ার সরকারি এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে মনে করছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদন আইনগতভাবে বিবেচনা না করে রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, দেশে আইনের শাসন নেই। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার প্রতি এক ভয়ংকর তামাশা করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, সরকার চাইলেই নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দিতে পারত এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারত।

জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পরিবারের করা আবেদন নাকচ হওয়ায় একদফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে এই ইস্যুকে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত করবে বিএনপি। একদফা দাবি আদায়ে জোটগত কর্মসূচির পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে দলীয়ভাবে কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। আজ সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে সরকার নতুন করে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তাতে দেখা যায়, আন্দোলনের মাধ্যমে সুরাহার পথ বের করতে হবে।

তিনি বলেন, এর আগে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় আ স ম আবদুর রব এবং প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন কেন পাবেন না? খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার যা করছে তাতে মনে হয়, তাদের কাছে আইন ও বিধিবিধান কিছুই নয়। সরকার পরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নেত্রীর যদি কিছু হয়, তাহলে এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।

এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

লিভার জটিলতা ছাড়াও ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ফুসফুস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫৩ দিন ধরে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উনার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেজন্য তাকে দ্রুত বিদেশে উন্নত মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো দরকার।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে সরকার তাকে শর্তসাপেক্ষে কারামুক্তি দেয়। এরপর পরিবারের আবেদনে ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর এই মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়।


আরও খবর



নিরাপত্তাহীনতায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন নাগরিকরা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3 |

Image

যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। শুনতে অবাক লাগলেও, সম্প্রতি এমন তথ্যই দিয়েছে ইউরোপীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো ইউরো স্ট্যাট। এর কারণ হিসেবে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, বন্দুক হামলাসহ একাধিক বিষয়কে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইউরোপীয় অভিবাসীদের জন্য পছন্দের জায়গা যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ। নানা সংকটের মুখে লাখ লাখ ইউরোপীয় নাগরিক একসময় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটছে উল্টো ঘটনা।

ইউরোপের পরিসংখ্যান ব্যুরো ইউরো স্ট্যাটের তথ্যমতে, আমেরিকান হাজার হাজার নাগরিক দেশ ছেড়ে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য পাড়ি জমাচ্ছেন। ভালো স্বাস্থ্যসেবা, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, বর্ণবাদমুক্ত পরিবেশ আমেরিকানদের ইউরোপে বসবাসে আগ্রহী করে তুলেছে বলে মত অনেকের।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি বন্দুক সহিংসতা। এসব কারণে অনেকেই দেশটি ছাড়ছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

গত এক যুগে ইউরোপের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি অনেকটা এগিয়ে গেলেও, সেখানে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বন্দুক হামলা ও বর্ণবাদ। এছাড়া জীবন ধারণের জন্য ইউরোপের তুলনায় আমেরিকানরা প্রতিদিন অনেক বেশি সময় কাজ করে থাকেন। যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা ইউরোপে প্রায় বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

ইউরোপের অনেক দেশেই স্থায়ীভাবে বসবাস করা কঠিন। তাই মাল্টা, পর্তুগাল, স্পেন, সাইপ্রাস ও ক্রোশিয়ার মতো সহজে স্থায়ীভাবে বসবাসের উপযোগী দেশগুলোতে বেশি আবেদন করছেন তারা।


আরও খবর

পাকিস্তানি ১৬ ভিক্ষুক আটক

সোমবার ০২ অক্টোবর 2০২3