Logo
শিরোনাম

সিন্ধু নদে বাঁধ দিলে হামলা করবে পাকিস্তান

প্রকাশিত:শনিবার ০৩ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

পাকিস্তানে সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে ভারত যদি তার সীমানায় এই নদের ওপর বাঁধ বা এ জাতীয় কোনো স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, সেক্ষেত্রে সামরিক হামলা চালাবে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

শুক্রবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ টেলিভিশন প্রোগ্রামে অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন খাজা আসিফ। সেখানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “শুধু বন্দুকের গুলি বা কামানের গোলা ছুড়লেই আগ্রাসন হয় না। বহুভাবে আগ্রাসন চালানো যায়। যেমন সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া বা পানিপ্রবাহকে ভিন্নপথে চালিত করাও একপ্রকার আগ্রাসন। কারণ এর ফলে ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কারণে মৃত্যু হবে লাখ লাখ মানুষের।”

“তাই সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ আটকাতে যদি তারা (নয়াদিল্লি) বাঁধ বা এই জাতীয় স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে— সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই আমরা আঘাত করব এবং সেই স্থাপনা ধ্বংস করব।”

“তবে আপাতত আমরা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি (সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি) নিয়ে আলোচনা করছি এবং নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”

গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।

স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলাকারীরা অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করে, আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। নিহতরা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।

ভয়াবহ এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত এবং তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে আনা, ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি।

এদিকে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে ইসলামাবাদ। তবে নয়াদিল্লির শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধ, পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।

এ হামলাকে ঘরে গত ১১ দিন ধরে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরবৈরী প্রতিবেশী দেশেল মধ্যে। গত মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পাকিস্তান হামলার জন্য সবুজ সংকেত তিনি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী এখনও কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়নি, তবে খাজা আসিফ মনে করেন— এখনও দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

“যুদ্ধের হুমকি আমরা এড়িয়ে যেতে পেরেছি— এখনও এমনটা ভাবার সময় আসেনি”, জিও নিউজকে বলেন খাজা আসিফ।


আরও খবর



মোদির বৈঠক বয়কট করলেন মমতা

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ মে 20২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশটির রাজধানী দিল্লিতে দেশটির নীতি আয়োগের বৈঠক ডাকা হয় শনিবার (২৪ মে)। ওই বৈঠকে একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত হলেও অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

এর আগেও গত বছরের ২৭ জুলাই নীতি আয়োগের বৈঠক হয়েছিল। ওইবার বৈঠকের মাঝপথে বেড়িয়ে যান মমতা ব্যানার্জী। তখন মমতা অভিযোগ করেছিলেন, তার বক্তব্যের মাঝে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সে কারণেই তিনি বৈঠক ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে এসেছিলেন।

নীতি আয়োগের এই বৈঠকে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোর মধ্যে সরাসরি আলোচনার সুযোগ থাকে। বিশেষ করে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী উপস্থিত থাকেন। ফলে রাজ্যের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার কথা সরাসরি বলার সুযোগ থাকে।

এবারের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর যোগ না দেওয়া নিয়ে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে নীতি আয়োগের বৈঠকে সকলের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত, সেখানে মাইক বন্ধ করে দিয়ে ঘৃণ্য ঘটনা ঘটেছে। মমতা ব্যানার্জী কেন যাবেন সেখানে? আর বাংলার কথা কোথায় বলবেন? অপমানিত হতে? বাংলার বঞ্চনার কথা মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেছেন। সেখানে গায়ের জোরে মাইক বন্ধ করে কেন্দ্র কি বোঝাতে চাইছে? এর থেকে খারাপ ঘটনা এর আগে হয়নি। ভবিষ্যতে হবে কি না, জানি না।

এদিকে, মমতা ব্যানার্জীর এই সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক অভিমান’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন বিজেপির দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, নীতি আয়োগের বৈঠক রাজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মমতা ব্যানার্জীর এই বয়কটের ফলে পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তিনি নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ দেখছেন। রাজ্যের উন্নয়নের কথা ভাবছেন না।

জানা গেছে, ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হাওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে ভারত। এই লক্ষ্যে কোন পথে এগোনো যায়, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এদিন সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে আলোচনা করেন। এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীদের অপারেশন সিঁদুর নিয়েও বিস্তারিত বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এ ছাড়া চলতি অর্থবছর এবং আগামী ২০২৬ সালের গৃহীত বাজেটে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ভারতের অর্থনীতির সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, সেগুলো ছিল এই বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়।


আরও খবর



শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক বিআরটিএ’র মাহাবুবুর রহমান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

সরদার মাহাবুবুর রহমান। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিএ) ক্যাশিয়ার হিসেবে যোগ দেন। তখন তাঁর বেতন ছিল দেড় হাজার টাকা। পদোন্নতি পেয়ে ২০২৩ সালে উপপরিচালক (ডিডি, অর্থ) হন তিনি। এখন তাঁর বেতন প্রায় ৭০ হাজার টাকা। সরকারি এই কর্মকর্তা ঢাকায় গড়েছেন বহুতল ভবন, ফ্ল্যাট। কিনেছেন গাড়ি। গোপালগঞ্জ জেলা শহরে নির্মাণ করছেন ১৪ তলা ভবন।

মাহাবুবুর রহমানের পুরো চাকরিজীবনের হিসাব করলে দেখা যায়, বেতন পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৮৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে তাঁর প্রয়াত কৃষক বাবা কিছু আবাদি জমি রেখে গেছেন, সেগুলো সেভাবেই আছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর বিপুল সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অর্থ) সরদার মাহাবুবুর রহমান যেন টাকার কুমির। ঘুষ ছাড়া তিনি কিছুই বোঝেন না। ঘুষ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তি। ঢাকার মোহাম্মদপুরে রয়েছে তার বাড়ি, মিরপুর ও গোপালগঞ্জে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। এছাড়া স্ত্রীর নামেও রয়েছে গাড়ি, সন্তানদের নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার এফডিআর। ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা বেতনের একজন কর্মকর্তা বছরের পর বছর শ্বশুরবাড়ি গোপালগঞ্জের প্রভাব ব্যবহার করে এসব অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন।


মাহাবুবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামে। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া আবাদি জমিজমা এখন পর্যন্ত বিক্রি করেননি মাহাবুবুর রহমান বা তাঁর শরিকরা। তাঁর স্ত্রী মিন্নি বেগম গৃহিণী। তিন ছেলেমেয়ে এখনও শিক্ষার্থী। শ্বশুরবাড়ি থেকেও বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অনিয়ম-দুর্নীতির অর্থ দিয়েই গড়েছেন এসব সম্পদ।

বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলা ও সার্কেল অফিসগুলোর জন্য বার্ষিক বরাদ্দ হয়। কোন অফিস কত বরাদ্দ পাবে তা নির্ধারণ করতেন মাহাবুবুর রহমান। একক ক্ষমতা ছিল তাঁর হাতে। বাজেট বাড়িয়ে দিয়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেল থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন তিনি। কেনাকাটার ভাউচার পাস করাতেও কমিশন দিতে হতো তাঁকে। এ ছাড়া বিআরটিএর বেসরকারি ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের বিল পাস করাতে উৎকোচ নিতেন। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাজেট সংক্রান্ত কমিটি হওয়ায় বর্তমানে তাঁর ক্ষমতা অনেকটা খর্ব হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহাবুবের বাবা আব্দুর রাশেদ সরদার প্রায় ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। তারা দুই ভাই ও দুই বোন। ডুমুরিয়া গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ছয়জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাহাবুবের বাবা রাশেদ সরদার কৃষিকাজ করতেন। তিনি চাষাবাদের যে জমিজমা রেখে গেছেন, তা ছেলেমেয়েরা বিক্রি করেননি। পৈতৃক টিনের বাড়ি ছিল। সেটি ভেঙে এখন একতলা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।

 

ঢাকার মোহাম্মদপুরে ৯তলা বাড়ি
টোলারবাগ, মিরপুরে ফ্লাট
স্ত্রীর নামে গাড়ি ও একাধিক সিএনজি
গোপালগঞ্জ সদরে জমি ও আলিশান বাড়ি
ছেলের নামে কোম্পানী খুলে ব্যবসা
স্ত্রী ও কন্যাদের নামে কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর
নড়াইল ও গোপালগঞ্জে কয়েকশ বিঘা জমি


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানের ২নং রোডের ব্লক-এ তে ৬.৫ শতাংশ জমির উপর তিনি গড়েছেন ৯তলা বাড়ি, যার বাড়ি নম্বর ১৯। বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের আমলে, ২০২১ সালে। এছাড়া ১৯/সি/২ উত্তর টোলারবাগ, মিরপুর এবং গোপালগঞ্জে রয়েছে ফ্লাট। তার স্ত্রী রাশিদা খানম (মিন্নী) একজন গৃহিনী, নিজের কোন আয় না থাকলেও তার নামে রয়েছে গাড়ি (রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-গ-৩১-৪৩২৩) এবং ২টি সিএনজি। স্ত্রীর নামে গোপালগঞ্জ সদরের ক্রয় করেছেন ৬ শতাংশ জমি। গোপালগঞ্জ সদরে রয়েছে আবেদা মঞ্জিল নামে কয়েক কোটি টাকা মুল্যের আলিশান বাড়ি। সরকারী কর্মচারীদের ব্যবসা করার বিধিনিষেধ থাকলেও সরদার মাহাবুবুর রহমান তা উপেক্ষা করে তার ছেলে এস.এম মাহিরের নামের সাথে মিল রেখে খুলেছেন মেসার্স মাহির এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তার স্ত্রী ও দুই কন্য সন্তানদের নামে রয়েছে কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র এবং এফডিআর।

সরদার মাহাবুবুর রহমান ধানমন্ডি ৩ নম্বর রোডের ২৯/বি নম্বর বাড়ির যে ফ্লাটে ভাড়া থাকে সেই ফ্লাটের মাসিক ভাড়া সত্তর হাজার টাকা। গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার পদ থেকে উপ-পরিচালক(অর্থ) পদে প্রমোশন পাওয়ার পর তার বেসিক বেতন হয় ৩৫,৫০০ টাকা। সবকিছু মিলিয়েও তার মাসিক বেতন ষাট হাজার টাকার কম। অথচ অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দিয়ে সরদার মাহাবুব নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার ডুমারিয়া গ্রামে এবং এবং আশপাশের এলাকায় কয়েকশত বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। একইভাবে তিনি তার স্ত্রীর নামে গোপালগঞ্জের মিয়াপাড়ায় কয়েশ শতক জমি ক্রয় করেছেন। এমনকি তার ছেলে এস.এম মাহির অর্ক এবং জমজ দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস অর্থি এবং জান্নাতুল মাওয়া অর্নি নামকরা কলেজ অধ্যয়ন করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও হিসাব শাখার কয়েকজন কর্মচারী এবং বিআরটিএর একাধিক ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন সরদার মাহবুবের ঘুষ নেওয়ার বিভিন্ন পন্থা। ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সিএনএস লিমিটেডের সাথে বিআরটিএর চারটি সার্ভিস চুক্তি রয়েছে, যেগুলোর বিল প্রতি মাসে মাসে পরিশোধ করা হয়। এগুলো হলো এমভিট্যাক্স, বিআরটিএ-আইএস, আর্কাইভিং এবং মোটর ভেকল ইনসফেক্সন সেন্টার (ভিআইসি) চুক্তি। এর মধ্যে এমভিট্যাক্সের বিল সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে এমভিট্যাক্সের বিল বাবদ প্রতি মাসে দুই কোটি টাকার উপরে সিএনএসকে বিল প্রদান করা হয়। সরদার মাহাবুব হিসাব রক্ষণ কর্মকতা থাকাকালীন এমভিট্যাক্সের বিল ছাড় বাবদ ১% হারে মাসিক ২ লক্ষ টাকার উপরে ঘুষ নিতেন। উপ-পরিচালক (অর্থ) পদে প্রমোশন পাওয়ার পরে তিনি ২% হারে ঘুষ গ্রহণ করেন।

সিএনএস লিমিটেড ডিসেম্বর মাসে এমভিট্যাক্সের ছয় কোটি টাকার উপরে বিল সাবমিট করেছে, সেই বিল ছাড় বাবদ ইতোমধ্যে সিএনএস তাকে ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছে এবং ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া এখনও বাকী আছে। এছাড়া এমভিট্যাক্স চুক্তির বিল থেকে প্রতি মাসে সিএনএস লিমিটেড এই চুক্তির ডেক্স অফিসার অর্থাৎ যার মাধ্যমে কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং বিল আপ হয়, বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার মোঃ শাহাজান কবিরকে ১% হার ঘুষ প্রদান করে। শাহাজান কবিরের ৬ লক্ষ টাকা ইতোমধ্যে সিএনএস লিমিটেড দিয়েছে। একইভাবে সরদার মাহাবুবকে প্রতি মাসে আর্কাইভিং-এর বিলের জন্য এক লক্ষ টাকা টাকা, ভিআইসির জন্য এক লক্ষ টাকা, বিআরটিএ-আইএস এর জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ দেয় সিএনএস লি.। সিএনএস লিমিটেডের পক্ষ থেকে এই মাসোহারা দেওয়ার কাজ করে সিএনএসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মতিউর রহমান। মোঃ মতিউর রহমান বিআরটিএ-আইএস চুক্তির আওতায় টিম লিডার হিসেবে বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে মাসিক এক লক্ষ টাকা বেতনে চাকরি করে এবং তার প্রধান কাজ সিএনএস লিমিটেডের এই চারটি চুক্তির প্রতি মাসের বিল ছাড়ানো।

অন্যদিকে মাদ্রাজ প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের (এমএসপিপিএল) সাথে বিআরটিএর ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে। প্রত্যেকটি বিল পরিশোধের সময় টাকার পরিমাণের উপর নির্ভর করে এমএসপিপিএল এক/দুই/তিন/চার লক্ষ টাকা ঘুষ দেয় সরদার মাহাবুবকে। সর্বশেষ কয়েকটি বিল বাবদ এমএসপিএল যে আট কোটি টাকা বিল নিয়েছে যেখান থেকে সরদার মাহাবুবকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছে এমএসপিএল। দাবিকৃত অর্থ সরদার মাহাবুবকে দিতে দেরি হলে তিনিও বিভিন্ন অজুহাতে বিল প্রদান করতে বিলম্ব করেন। তবে ডিআরসি এবং নম্বর প্লেটের চুক্তি বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ) অর্থাৎ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এখান থেকে কোন ঘুষ নিতে পারে না সরদার মাহাবুব।

এই কর্মকর্তার বিষয়ে আরও জানা যায়, বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের জন্য খোলাবাজার থেকে পন্য ক্রয় করা হলে ১৫% হারে তাকে ঘুষের টাকা প্রদান না করলে বিভিন্ন অজুহাতে সেই বিল আটকে দেয়। আরএফকিউএর মাধ্যমে ক্রয় করা হলে নুন্যতম বিশ হাজার টাকা তাকে দিতে হয়। ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে কোন পন্য ক্রয় হলে ক্রয় মূল্যের ৫-৬% হারে তাকে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষের সব অর্থই তিনি এজি অফিসের কথা বলে নেন। এজি অফিস থেকে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানসমুহের বিলের চেক নিজের কাছে এনে রাখে এবং তার দাবিকৃত অর্থ প্রদানের পর সেই চেক সংশ্লিষ্ঠ ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে।

এছাড়া বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে কোন কর্মচারী নিয়োগ পেলে, সরদার মাহাবুবকে ঘুষ না দিলে সহসা তাদের বেতন হয় না। বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের একাধিক ড্রাইভারের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের ওভারটাইমের টাকার একটা নির্দিষ্ট অংশ সরদার মাহাবুবকে না দিলে, নানা কারণ দেখিয়ে তাদের ওভারটাইমের টাকা দিতে বিলম্ব করে এমনকি কেটেও রাখে। বিআরটিএতে এগুলো ওপেন সিক্রেট। বিআরটিএর বিভিন্ন বিভাগীয়, মেট্রো এবং সার্কেল অফিসের খরচের বাজেট বরাদ্দ সদর কার্যালয়ের অর্থ শাখার মাধ্যমে হয়ে থাকে। যে সব অফিস থেকে তাকে অর্থ দেওয়া হয়, সেই সব অফিসে সে বেশি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং অন্যান্য অফিসে অনেক কম। এই বিষয়ে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে বিআরটিএর মাসিক সমন্বয় সভায় বিআরটিএর বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক প্রশ্ন উত্থাপন করলে বিআরটিএর তখনকার চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সরদার মাহাবুবকে তিরস্কার করে। সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার তাকে অর্থমন্ত্রী বলে ডাকতো।

অভিযোগ রয়েছে, বিআরটিএর লিফটের ভেন্ডর কনসেপ্ট এলিভেটরস ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিল আটকে রেখে তাদের দিয়ে সরদার মাহাবুব তার ঢাকা উদ্যানের বাড়ির লিফটের কাজ করিয়ে নেয়। একইভাবে বিআরটিএর এসির ভেন্ডর অলোকের ইঞ্জিনিয়ারিংস লিমিটেডের বিল আটকে রেখে, তাদের সার্ভিস ম্যান দিয়ে বাসার এসি সার্ভিসিং করায়। বাংলাদেশের সকল জেলায় বিআরটিএর নিজস্ব অফিস কাম ট্রেনিং সেন্টার এবং ভিআইসি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান। এই কাজে এখন পর্যন্ত যে সকল জেলায় জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে, সেসব জমি অধিগ্রহনের অর্থ ছাড় দিতেও তাদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করে এবং আদায় করে। সম্প্রতি বিআরটিএ ভবন এবং ডাটা সেন্টারের ইলেকট্রিক লাইন স্থাপন, বেইজমেন্ট-এ টাইলস স্থাপনসহ ভবনের সার্ভিসিং এর কাজ পিডব্লিউডির মাধ্যমে তিন কোটি টাকার উপরে কাজ করানো হয়েছে। কিন্তু সরদার মাহবুব পিডব্লিউডির মাধ্যমে কাজ করানোর ঘোর বিরোধী ছিলো। কারণ পিডব্লিউডি কাজ করলে এজি অফিসের কথা বলে সরদার মাহবুব কোন ঘুষ নিতে পারে না।

জানা গেছে, সরদার মাহাবুবুর রহমানের বাড়ি নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার ডুমারিয়া গ্রামে। শ্বশুরবাড়ী গোপালগঞ্জের মিয়াপারায় হওয়ায় সকলের কাছে বাড়ি গোপালগঞ্জ বলতো এই দুর্নীতিবাজ সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। ৫ আগষ্টের পর আবার সবার কাছে বলে আমার বাড়ি নড়াইল জেলায়। তার বড় ভায়রা খন্দকার আজিজুর রহমান পুলিশের সাবেক পরিদর্শক। খন্দকার আজিজুর রহমানের বাড়ি গোপালগঞ্জে। খন্দকার আজিজুর রহমানের মাধ্যমে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের সাথেও সরদার মাহাবুবের সখ্যতা ছিলো। হাবিবুর রহমানের সঙ্গে একসাথে তোলা ছবি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যবহার করে ক্ষমতার জাহির এবং অপব্যবহার করতো। তার নামে পূর্বে একাধিকবার দুদকে মামলা হলেও, গোপালগঞ্জ বাড়ি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের সাথে সখ্যতা এসব বিভিন্ন চতুর উপায় অবলম্বন করে পার পেয়ে গেছেন এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।

বিএরটিএর একাধিক কর্মকর্তা জানান, যেহেতু বর্তমান সরকার ঘুষ দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রতিষ্ঠিত, তাই বিআরটিএর মত জনবান্ধব এবং সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানে উপ-পরিচালক (অর্থ)-র মত গুরুত্বপূর্ণ পদে এই ধরনের ঘুষখোর, চতুর, সুবিধাবাদী এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে রাখলে তা নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে অন্তরায় হবে। বিআরটিএর বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াসীন (গ্রেড-১) দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানেরও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। তাই আশা করা যায়, সরদার মাহাবুবুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে, তার দুর্নীতির ব্যাপারে আরও গভীর অনুসন্ধান করে যথপোযুক্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত সরদার মাহাবুবুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এমনকি মুঠোফোনে টেক্সট করা হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।

মাহাবুবুর রহমানের একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেন। তবে ব্যক্তিগত চালক রাখেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একজন জানান, মাহাবুবুর রহমানের সরকারি গাড়ির চালক সেলিমকে দিয়ে ওই গাড়ি চালানো হয়। মাহাবুবুর রহমান সরকারি গাড়িতে সকালে অফিসে আসেন, ছুটি হয় বিকেলে। এই সময়ের মধ্যে পরিবারের সদস্যদের কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে তিনি চালক সেলিমকে ধানমন্ডির বাসায় পাঠিয়ে দেন প্রাইভেটকার ড্রাইভিং করার জন্য।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫




নওগাঁয় নেশাগ্রস্থ স্বামীর হাসুয়ার কোপে স্ত্রীর হাত বিচ্ছিন্ন, গণপিটুনীতে স্বামীর মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় নেশা গ্রস্থ স্বামীর হাসুয়ার কোপে স্ত্রীর হাত বিচ্ছিন্ন, গণপিটুনীতে স্বামীর মৃত্যু। এঘটনাটি নওগাঁ সদর উপজেলার আনন্দনগর বাবু বাজার এলাকায় ঘটে।নেশাগ্রস্থ স্বামী সুমন (৩২) এর হাসুয়ার এলোপাতাড়ি কোপে স্ত্রী ময়ূরী আক্তার (২৪) গুরুত্বর আহত হয়েছে। এসময় স্ত্রীর একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এছাড়া একাধিক স্থানে গভীর জখমের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় স্ত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে স্বামী সুমনকে গণপিটুনি দিলে তার মৃত্যু হয়। 

নিহত সুমন নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের দুবলহাটি গ্রামের বাবু সরদারের ছেলে।

জানা যায়, গত প্রায় ৪ বছর আগে নওগাঁ শহরের আনন্দনগর বাবু বাজার এলাকার আব্দুস সামাদের মেয়ে ময়ূরীর সাথে সুমনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুমন তার স্ত্রীর সঙ্গে আনন্দনগর বাবু বাজার এলাকায় শ্বশুর বাড়ীতে বসবাস করতেন। সুমন বিভিন্ন সময় নেশাগ্রস্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করতেন এবং স্ত্রীকে সাংসারিক কোন খরচ দিতেন না। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টারদিকে সুমন মাদকাসক্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করেন। তার এক পর্যায়ে হাসুয়া দিয়ে স্ত্রীর গলা এবং হাতে কোপ দেন। এতে স্ত্রীর বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমন নির্মম ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে স্থানীয়রা সুমনকে গণপিটুনী দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামী ও স্ত্রীকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালে নিলে ময়ূরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় এবং সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। পুলিশ আহত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী দু জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। স্থানীয়দের গণপিটুনীতে স্বামী সুমন মারা গেছে। সুমনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়ূরীর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মৃতদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা শেষে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। 


আরও খবর



কালো টাকা সাদা করার সুযোগে বৈষম্য বাড়বে: সিপিডি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী বলে মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। মঙ্গলবার সকালে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এই সুযোগ থাকলে মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য প্লট বা ফ্ল্যাট কেনা অসম্ভব হয়ে যাবে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য হবে।

সিপিডি জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত কর ব্যবস্থায় সরকার ব্যক্তি পর্যায়ে নির্ধারিত বিশেষ কর প্রদানের মাধ্যমে ভবন, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ রেখেছে। যদিও করের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে।

সিপিডি তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার যখন অবৈধ আয়, অবৈধ লেনদেন, অর্থপাচার রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তখন এ ধরনের উদ্যোগ জনগণের কাছে ভুল বার্তা পাঠানোর ঝুঁকি তৈরি করছে।এটা জুলাইয়ের চেতনার পরিপন্থী।

ব্রিফিংয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, জুলাই আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজের জন্য হয়েছিল। বাজেটের প্রত্যয়টা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার, সেটার সঙ্গে এই প্রস্তাব চরমভাবে সাংঘর্ষিক।

বাজেটে অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে গেলে সেখানে অপ্রদর্শিত আয় দেখিয়ে বর্ধিত হারে বিশেষ কর দিয়ে সেটি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আমরা সবসময় বলে এসেছি কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব একেবারেই বন্ধ করা উচিত। এটা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়, আমরা এটা সমর্থন করছি না।

এই প্রস্তাব সৎ করদাতাদের অনুৎসাহিত করবে জানিয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, তাদের নৈতিকতার ওপর আঘাত। আমরা এই প্রস্তাব উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করছি। এটা বৈষম্য সৃষ্টির হাতিয়ার।

এর সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

উল্লেখ্য, গত বছর জুলাইয়ে শুরু হওয়া গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় ৫ আগস্ট। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।


আরও খবর



বিশেষ সুবিধা পাবেন চাকরিরত ও পেনশনভোগীরা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

আগামী ১ জুলাই থেকে সরকারি-বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ বাহিনীতে চাকরিরতদের বিশেষ সুবিধা হিসেবে ন্যূনতম এক হাজার টাকা ও পেনশন ভোগীদের ন্যূনতম ৫০০ টাকা দেবে সরকার।

মঙ্গলবার (৩ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ১৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত সরকারি-বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী এবং পুনঃস্থাপনকৃত পেনশনাররাসহ পেনশনভোগী ব্যক্তিদের জন্য ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে বেতনগ্রেড ভেদে (গ্রেড ১ এবং তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড ৯ পর্যন্ত) ১০ শতাংশ এবং (গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ পর্যন্ত) ১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রদান করা হলো। এ ‘বিশেষ সুবিধা’ চাকরিরতদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০০০ টাকা এবং পেনশন ভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০০ টাকা হারে প্রদেয় হবে।

এ বিশেষ সুবিধা নিম্নরূপভাবে কার্যকর হবে:

(ক) ০১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে প্রতিবছর ০১ জুলাই তারিখে প্রাপ্য মূল বেতনের ওপর গ্রেড ১ ও তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড ৯ এর অন্তর্ভুক্ত চাকরিরত কর্মচারীরা ১০ শতাংশ হারে এবং গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ এর অন্তর্ভুক্ত চাকরিরত কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন।

(খ) অবসর-উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকা কর্মচারীরা পিআরএল গমনের পূর্বকালীন সর্বশেষ প্রাপ্ত মূল বেতনের ভিত্তিতে উপর্যুক্ত (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেডভিত্তিক হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন।

(গ) পেনশন পুনঃস্থাপনকৃত কর্মচারীরাসহ সরকার থেকে পেনশন গ্রহণকারী কর্মচারীরা পেনশনের বিদ্যমান অংশের ওপর উপর্যুক্ত (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেডভিত্তিক হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন।

(ঘ) যেসব অবসর গ্রহণকারী কর্মচারী তাদের গ্রস পেনশনের ১০০ শতাংশ অর্থাৎ সম্পূর্ণ অংশ সমর্পণ করে এককালীন আনুতোষিক উত্তোলন করেছেন এবং এখনো পেনশন পুনঃস্থাপনের জন্য উপযুক্ত হননি, তাদের ক্ষেত্রে এ ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রযোজ্য হবে না।

(ঙ) জাতীয় বেতনস্কেলে নির্ধারিত কোনো গ্রেডে সরকারি কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অব্যবহিত পূর্বে সর্বশেষ আহরিত তার মূল বেতনের ভিত্তিতে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে। তবে শর্ত থাকে যে এরূপ চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত ব্যক্তি পেনশনভোগী হলে পেনশনের বিদ্যমান অংশ অথবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত হওয়ার অব্যবহিত পূর্বের সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে যেকোনো এক ক্ষেত্রে এ সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

(চ) সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মচারীরা সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্বের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ (অর্ধেক) এর ওপর উপর্যুক্ত (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেডভিত্তিক হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন; এবং

(ছ) বিনা বেতনে ছুটিতে (লিভ উইদাউট পে) থাকাকালীন কর্মচারীরা এ ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের রাজস্ব বাজেট থেকে প্রদত্ত অনুদানে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীদের ক্ষেত্রে যারা জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ এর আওতাভুক্ত, এ ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রদান বাবদ প্রয়োজনীয় ব্যয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব বাজেট থেকে মেটাতে হবে।

অর্থ বিভাগের আদেশ নং ০৭.০০.০০০০.১৬১,৯৯.০১০,২৩-১৩২, তারিখ: ১৮/০৭/২০২৩ বাতিল করা হলো বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো এবং ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে এটি কার্যকর হবে।


আরও খবর

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫