এখন প্রচণ্ড গরম পড়ছে! তাপমাত্রার এই ব্যাপক তারতম্যে প্রথম শিকার হয় শিশুরা। বড়দের মতো আবহাওয়ার দ্রুত তারতম্যের সাথে শিশুরা নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেক সময়ই পারে না। গ্রীষ্মকালের গরম সবার জন্যই কষ্টকর। তবে শিশুরা খুব বেশি স্পর্শকাতর বলে অনেক গরম আবহাওয়ায় সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না।
তাই অন্যান্য সময়ের তুলনায় গরমকাল শিশুদের জন্য বেশি কষ্টকর ও অসহনীয় হয়ে ওঠে। তাই জ্বর, পেট খারাপ, সর্দি, কাশিসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। গরমে ভাইরাল জ্বরে ভুগতে পারে।
জ্বরের লক্ষণ
শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাই (>৯৮.৬ ড় ফা.) হলো জ্বর। তবে, জ্বর কোনো রোগ নয়, শরীরের কোনো অসুস্থতা বা সংক্রমণের লক্ষণ অর্থাৎ রোগের উপসর্গ হলো জ্বর ।
বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন ধরনের জ্বর হতে পারে। যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, নিউমোনিয়া, হাম এবং প্রস্রাবের সংক্রমণ ইত্যাদি নানা কারণে জ্বর হতে পারে।
জ্বরের সাধারণ চিকিৎসা
জ্বর কমানোর জন্য প্রথমে দেহের তাপমাত্রা কমানোর ওষুধ প্যারাসিটামল (এইস, নাপা) খাওয়াতে হবে। তবে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক সঠিক মাত্রায় পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে হবে। তবে ভাইরাস জ্বরে এন্টিবায়োটিক লাগে না। শিশুদের বেলায় জ্বর হলে একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখতে হবে ৩-৪ দিনের মধ্যে শিশুর জ্বর, সর্দি-কাশি না কমলে এবং জ্বর সাথে যদি শিশুর বেশি বমি হয় বা পাতলা পায়খানা হয়, অনবরত কাঁদতে থাকে, শরীরে গুটি বা দানা দেখা দেয়, খিঁচুনি হয় তাহলে জরুরিভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
প্রয়োজনীয় উপদেশ
- গরমে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং ধুলাবালি থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে।
- বাইরে বের হলে শিশুর জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি সবসময় সাথে রাখতে হবে।
- ঘেমে গেলে ঘাম মুছে দিতে হবে। শরীরের ঘাম শুকিয়ে গেলে শিশুর ঠান্ডা লাগতে পারে।
- যতটা সম্ভব শিশুকে সদ্য তৈরি খাবার ও তাজা ফলমূল খাওয়াতে হবে।
- ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে, যেন র্যাশ জাতীয় সমস্যা না হয়।
- প্রচুর পানি খাওয়াতে হবে, যেন প্রস্রাবের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে।
- সদ্যজাত শিশুদের সবসময় ঢেকে রাখতে হবে, যেন শরীর উষ্ণ থাকে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘেমে না যায়।
- গরমের সময় মশা, মাছি, পিঁপড়া ইত্যাদি পোকামাকড়ের প্রকোপ বেড়ে যায়। এগুলো শিশুর অসুস্থতার কারণ হতে পারে। ঘরকে পোকামাকড় মুক্ত রাখতে হবে।
- গরমের সময় প্রচুর মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। মৌসুমি ফল শিশুকে খেতে দিন। জুস করে দিতে পারেন। এতে শিশুর ভিটামিন চাহিদা মিটবে ও শিশুর পুষ্টিরও পূরণ হবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।