নিজস্ব প্রতিবেদক :
২ দিনব্যাপী সিপিবির জাতীয় পরিষদের সভা শেষ হয়েছে
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ২ দিনের জাতীয় পরিষদের সভা আজ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যায় রাজধানীর মুক্তিভবন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শেষ হয়েছে। এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটি সভা ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা চালু, সিন্ডিকেট ভাঙা, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনজীবনের শান্তি বিধান, দুর্নীতি লুটপাট দখলদারিত্ব বন্ধ, পাচারের টাকা, খেলাপি ঋণ উদ্ধার, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন সহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার এর আলোচনা শুরু এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, জুলাই-আগস্ট হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে আগামী ৪ ও ৫ অক্টোবর দেশব্যাপী সমাবেশ এর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয় বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসলাম খান। সভায় বিভিন্ন জেলা ও শ্রেণীপেশার ৮২ জন প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংগঠক, কন্ট্রোল কমিশন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বলা হয়, নীতিনিষ্ঠ বামপন্থী-প্রগতিশীল শক্তিই পারে গণ অভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম অগ্রসর করতে। এজন্য সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মাঝে যেয়ে সংগঠনের বিস্তার ঘটানো এখনকার প্রধান কর্তব্য। সভায় পতিত স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তৎপরতা সম্পর্কে সজাগ থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের আন্দোলন গড়ে তোলার উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভা থেকে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার, গণ-অভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের তালিকা তৈরি, আহতদের সুচিকিৎসা এবং নিহত-আহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা, অবিলম্বে সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করা, পাচারের টাকা ফেরত আনা, খেলাপি ঋণ আদায়, দুর্নীতি-লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করে বিদ্যুৎ সংকটের স্থায়ী সমাধান, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য, মন্দির-মাজার এবং নারীর ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকারকে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ, সর্বত্র বিতর্কিতদের অপসারণ করে দক্ষ-যোগ্যদের নিয়োগ প্রদান, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা চালুসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারসহ পতিত স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করার দাবিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জানানো হয়।
সভায় ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম অগ্রসর করতে, মানুষের মাঝে গিয়ে প্রতিটি বিষয় সিপিবির বিকল্প প্রস্তাবনা তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়। সভায় নেতৃবৃন্দ পার্বত্য অঞ্চলে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নৃশংসহ হত্যাকাণ্ড এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো সন্তোষজনকভাবে উন্নত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় যথাযথভাবে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় দেশের উপর সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য শক্তির হস্তক্ষেপের বিষয়ে দেশবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়। গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সংকট ও সম্ভাবনার মধ্যে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সর্বত্র দৃঢ় ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সারাদেশের পার্টির সদস্য সমর্থক শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান হয়।