Logo
শিরোনাম

তুমি যাকে শিরক বলছ, তা আমার কাছে ধর্ম

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

পুলক ঘটক, সিনিয়র সাংবাদিক :

তুমি যাকে শিরক বলছ, তা আমার কাছে ধর্ম। তুমি মেনো না, কিন্তু আমাকে বাধা দিবে কেন? তুলনা করলে বা প্রতীক বানিয়ে উপাসনা করলে আমার ঈশ্বর ক্ষিপ্ত হয় না। এ কাজ আমার ধর্মের ঈশ্বরের কাছে কোনো অপরাধ নয়; আমার কাছেও অপরাধ নয়। আমার বিবেচনায় ঈশ্বর উপাসনার সকল পন্থাই বরং উত্তম। এ কোনো ক্রাইম নয়। 

ঈশ্বর কেমন, তাঁর চরিত্র কেমন, কিসে তিনি ক্ষিপ্ত হন, কিসে তিনি রাগান্বিত হন ইত্যাদি সম্পর্কে সব ধর্মের বর্ণনা এক রকম নয়। যেমন সনাতন ধর্ম অনুযায়ী ঈশ্বর জগৎ ও জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন দূর আকাশের কোনো শক্তি বা বস্তু নন। তিনি আকাশ থেকে শাসন করা রাজা নন। তিনি আকাশেও আছেন, মাটিতেও আছেন। তিনি জীবন ও জগতের সাথে মিশে আছেন –সৃষ্টির পাতায় পাতায় মিশে আছেন। এর বাইরেও তাঁর স্বতন্ত্র সত্তা আছে। তিনি একাধারে এক এবং বহু; তিনি একাধারে নিরাকার এবং সাকার। তাঁর কোনো শেষ নেই। জল যেমন বাষ্প হতে পারে, আবার বরফের মতো আকৃতি নিতে পারে; তেমনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সব হতে পারে। নিরাকার হতে পারে, সাকারও হতে পারে। এক হতে পারে, আবার বহুরূপও হতে পারে। তাই সব রূপের মাঝেই তাঁকে সন্ধান করা বা তাঁর উপাসনা করা সনাতন ধর্মে অপরাধ নয়, বরং ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের পন্থা। 

"বহু রূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর" –সনাতন ধর্মের অমোচনীয় বাণী। এখন আমি যদি এটা বিশ্বাস করি এবং এভাবে উপাসনা করি, এজন্য তুমি কি আমার উপর অত্যাচার করবে? আমার উপাসনার স্থান ক্ষতিগ্রস্ত করবে? কেন করবে? আমি তো তোমাকে এভাবে উপাসনা করতে বলিনি! তুমি তোমার বিশ্বাস অনুযায়ী এবাদত কর। কিন্তু আমার ঈশ্বর উপাসনায় তুমি বাধা দাও কেন? 

"ব্রহ্ম হতে কীট পরমাণু, সর্বভূতে সেই প্রেমময়” –এটি আমার মৌলিক ধর্মীয় দর্শন। ঈশ্বর সর্বব্যাপী এবং প্রকৃতির সবকিছুতেই ঈশ্বরের উপস্থিতি –এ আমি বিশ্বাস করি। 

"আছ, অনল-অনিলে, চিরনভোনীলে, ভূধর সলিলে, গহনে;

আছ, বিটপীলতায়, জলদের গায়, শশী তারকায় তপনে।" 

–ঈশ্বরকে আমি এভাবে দেখি; সর্বত্র দেখি।

মাদারীপুরে যে বট গাছটি তোমরা কেটে ফেলেছ, তার মধ্যে ঈশ্বরের বিশেষ উপস্থিতি আমি অনুভব করি। অসীমের এক প্রবল উপস্থিতির সন্ধানে সেখানে গিয়ে আমি শ্রদ্ধায় নিরব হই; অথবা প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করি। আমি তো তোমার ক্ষতি করি না। এ আমার বিশ্বাস, আমি আমার মতো চলি। আমি তোমাকে বাধা দেইনি, বা তোমাকে সেখানে গিয়ে উপাসনা করতে বলিনি। তাহলে তুমি প্রকৃতির এই গাছটি কাটবে কেন? তুমি শুধু প্রকৃতির ক্ষতি করনি, তুমি আমার উপরেও জুলুম করেছ। 

হিমালয় থেকে সাগর পর্যন্ত যেখানেই বৃহৎ কিছু, সেখানেই আমার (ঈশ্বরের) বৃহৎ উপস্থিতি। গ্রহ, নক্ষত্র, হাতি, ঘোড়া, কচ্ছপ সবকিছুর মধ্যে যা কিছু বৃহৎ, তা আমার (ঈশ্বরের) বিশেষ উপস্থিতিতে বা বিভূতিতে বৃহৎ –এটা বেদ, উপনিষদ ও গীতার ঈশ্বর শিখিয়ে গেছে। আমি এই শিক্ষায় ও এই বিশ্বাসে গড়ে ওঠা। তুমি আরেক রকম শিক্ষায় ও আরেক রকম বিশ্বাসে গড়ে ওঠা। এজন্য আমি তোমাকে বাধা দেবো না, তুমিও আমাকে বাধা দেবে না –এটাই তো সংস্কৃতি হওয়া উচিত।  

হ্যাঁ, আমার বিশ্বাসের যুক্তিপূর্ণ সমালোচনা, এবং তোমার বিশ্বাসেরও যুক্তিপূর্ণ সমালোচনা হতে পারে। সেটা সবাই করতে পারে, গণতান্ত্রিক সহনশীলতার সাথে। সত্য সন্ধান এবং জ্ঞান বিস্তারের জন্য আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা দরকার আছে। মিথ্যা বিশ্বাসগুলো যুক্তির দ্বারা অপনোদনের প্রয়োজন আছে। সুতরাং আমি ধর্মেরও সমালোচনার পক্ষে। কিন্তু একজনেরটা আরেকজনের উপর চাপিয়ে দেয়ার বা জুলুম করার পক্ষে না। অন্যরা উপাসনা করে জন্য তার গাছটা কেটে ফেলার পক্ষে না। 

ঈশ্বর এমন হিংসাত্মক কেন হবেন, বা তার অনুসারীদের এমন হিংস্র আচরণ কেন করতে বলবেন? তাঁকে কখনো সামনাসামনি দেখতে না পাওয়ায় নিছক বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে কে কিভাবে তাঁর উপাসনা করে –তাতে যদি অদেখা ঈশ্বরের মনে রাগ হয়ে থাকে, তবে তিনি নিজে সে জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারেন। সেই জাতির মানুষের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা রহিত করে দিতে পারেন। অথবা তিনি সহজেই দেখা দিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভ্রান্তি নিরসন করে দিতে পারেন। দেখা না দিয়েও ঈশ্বর মানুষকে বদলে দিতে পারেন, কারণ তিনি সর্বশক্তিমান। মানুষের কোন উপাসনা পদ্ধতিতে তাঁর আপত্তি থাকলে সে মানুষকে বদলে দেওয়া ঈশ্বরের নিজের দায়। সেই দায় নিজের ঘাড়ে তুলে নিয়ে মানুষ হয়ে মানুষের উপর উৎপীড়ন করা অপরাধ। 

আমার মতে ঈশ্বরকে এমন নিষ্ঠুর ও হিংসাত্মক চরিত্রের ভাবাটাও ন্যায়সঙ্গত নয়। তাঁর সাথে কারও তুলনা করলেই ঈশ্বর হিংসায় ফেটে পড়বেন – এমন হিংসুক স্বভাবের একজন মানুষের মতো চরিত্র ঈশ্বরের উপর আরোপ করলে তাঁর প্রতি ন্যায়বিচার করা হয় না। তাঁর প্রতিমূর্তি রচনা করে তাঁর উপাসনা করলে তিনি ব্যাপারটিকে প্রেমময় দৃষ্টিতে না দেখে হিংসার চোখে দেখবেন– ঈশ্বরের চরিত্র এমন হতে পারে না। এ আমি বিশ্বাস করি না; এটা আমার বিশ্বাসের ধরন। এভাবে বিশ্বাস করা আমার অপরাধ নয়। 

আমরা আমাদের শ্রদ্ধার ও প্রিয়জনের মূর্তিতেই আমাদের ভালবাসা দেই; ফুল দেই; আলো জ্বালাই। এতে আমার প্রিয়জন ক্ষিপ্ত হতে পারে না। ঘরে মা ও বাবার ছবি/মূর্তি শ্রদ্ধার সাথে রেখেছি –এজন্য আমার প্রতি পিতামাতার স্নেহ নষ্ট হওয়ার কথা নয়। আমার প্রিয়ার ছবি আমার মানিব্যাগে রেখেছি জন্য ঐ ছবিটির প্রতি হিংসায় আমার প্রিয়তমা জ্বলে উঠবে না। 

যতক্ষণ দেখিনি ততক্ষণ ঈশ্বর কাল্পনিক বটে। জাগতিক বা কাল্পনিক কোন কিছুর সাথে সেই ঈশ্বরের তুলনা করলে বা তাঁর ছবি বা মূর্তি রচনা করলে সেই বস্তু বা প্রতীকটির প্রতি ঈশ্বর হিংসা করবেন –ঈশ্বরের চরিত্র আমার কাছে এমন মনে হয় না। যে কোনো প্রকার তুলনায় বা প্রতিমূর্তি রচনায় শিরক হয়ে যাবে; ধর্ষণ, হত্যা, নিরীহ মানুষের খাবার কেড়ে নেওয়া, জুলুম, নির্মম অত্যাচার ইত্যাদির চেয়ে বড় অপরাধ হয়ে যাবে– আমার ধর্ম বিশ্বাস এমন নয়। 

এই যে আমার ধর্ম বিশ্বাস, একে ভুল প্রমাণের জন্য আপনি যুক্তি দেখাতে পারেন। কিন্তু এজন্য আমার উপর হামলা করতে পারেন না, জোর-জুলুম করতে পারেন না এবং আমার উপাসনার উপাদানকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারেন না। আসুন সভ্য ও গণতন্ত্রী হই; আলোচনায়-পর্যালোচনায় সত্য সন্ধান করি। ধ্বংস ও অত্যাচারের পথ সঠিক নয়।


আরও খবর

আগামী ২৫ বছর গরমকালে হজ হবে না

মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫

হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু

মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫




বিশ্ব বাবা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনুভূতি

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

‎মো. হৃদয় হোসাইন‎, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

‎পৃথিবীর অধিকাংশ ভালোবাসা উচ্চারিত হয় শব্দে, আবেগে, চোখের জল আর হাসিতে। কিন্তু কিছু সম্পর্ক আছে, যা প্রকাশিত হয় নিঃশব্দে—অভিনয়ের বাইরে, নিঃস্বার্থ আর নিরব ভালোবাসায়। এমনই এক সম্পর্ক—বাবা আর সন্তানের। বাবা, যিনি হয়তো আবেগপ্রবণ নন, কিন্তু তার জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে, প্রতিটি পরিশ্রমে সন্তান থাকে সবচেয়ে বড় প্রেরণা।

‎বিশ্ব বাবা দিবস উপলক্ষে দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে  খোঁজার চেষ্টা করেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস  সাংবাদিক মো. হৃদয় হোসাইন। 

‎বাবা আমার জীবনের প্রথম হিরো

‎বাবা আমার জীবনের প্রথম হিরো। আমি যখন হাঁটতে শিখিনি, তখনও তিনিই আমার পথের দিশারি ছিলেন। আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, কিন্তু এখনো কোনো সমস্যায় পড়লে প্রথম মনে পড়ে বাবার কথা। তার নীরব ত্যাগই আমার জীবনের ভিত্তি। বাবার অনুপ্রেরণায় আমি এতোদূর আসতে পেরেছি। বাবা নামটিই নিরব এক ভালোবাসার উচ্চারণ। 

‎তামান্না

‎শিক্ষার্থী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়  

‎বাবা আমার ছায়ার মতো সঙ্গী

‎আমার বাবা কখনো আমাদের সামনে আসেন না, নিজের আবেগ প্রকাশ করেন না। কিন্তু যখন প্রয়োজন হয়, তিনি ঠিক আমার পেছনে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি হয়তো বলেন না ‘ভালোবাসি’, কিন্তু তার প্রতিটি কাজই সে কথাটাই বলে দেয়, আরও দৃঢ়ভাবে। বাবারা খুব একটা প্রকাশ করেন না। তারা ফুলের তোড়া, কার্ড বা স্ট্যাটাসের ভাষায় নিজেদের ভালোবাসা বোঝাতে পারেন না। কিন্তু তাদের নিঃশব্দ পরিশ্রম আর ছায়ার মতো উপস্থিতিই সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয়।

‎ মীর মাহফুজারা রহমান

‎শিক্ষার্থী, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

‎আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি

‎বাবা হচ্ছেন আমার আত্মবিশ্বাসের উৎস। যেকোনো ব্যর্থতায় আমি যখন ভেঙে পড়ি, তিনি খুব অল্প কথায় আমাকে আবার নতুন করে দাঁড়াতে শেখান। জীবনে বহুবার হেরেছি, কিন্তু বাবার মুখটা মনে করে আবার উঠে দাঁড়িয়েছি।

‎রাকিবুল বাপ্পি

‎শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

‎বাবা হলেন আমার প্রথম শিক্ষক ‎

‎বাবা শুধু  আমার অভিভাবক নন, আমার জীবনের শিক্ষকও। তিনি শিখিয়েছেন কীভাবে সম্মান করতে হয়, দায়িত্ব নিতে হয়, মানুষ হতে হয়। এখন বুঝি, তার শাসনের আড়ালে ছিল অগাধ ভালোবাসা। বিশ্ব বাবা দিবসে বাবাকে বলতে চাই, বাবা, আপনি আমাদের জীবনের নায়ক। আপনার অবদান কোনো দিবসে সীমাবদ্ধ নয়, তা আমার প্রতি নিঃশ্বাসে জড়িয়ে থাকে।

‎মো: ইথারুল ইসলাম‎, শিক্ষার্থী, বুয়েট


আরও খবর



সরকার নগদ পরিচালনায় স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করবে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ পরিচালনায় স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর এ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দুই জনই কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত সরকারের আমলে নগদে যত অনিয়ম যা হয়েছে, ইতোমধ্যে তা বের করা হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ করে আরেকটা গ্রুপ ঢুকে নগদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, যাদের নামে মামলা রয়েছে। তারা কেউ নগদে ঢুকতে পারবে না। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, নগদকে পুনর্গঠন করে আলাদা স্বতন্ত্র বোর্ডের কাছে দেওয়া হবে। এটা বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগ পরিচালনা করবে না। পুরোপুরি স্বতন্ত্র বোর্ড পরিচালনা করবে। অর্থ উপদেষ্টার মতে, নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা গ্রহণকারী মো. শাফায়েত আলমকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তারা অবৈধভাবে এটি দখল করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক যার নামে মামলা করেছে তাকেই আবার নগদের সিইও করা হয়েছে- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিচারাধীন থাকায় এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়। তবে সরকার তা মানবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক তার (সাফায়েত আলমের) বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তা চলমান। তাহলে কি ডাক বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরোধ সৃষ্টি হবে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো বিরোধ হবে না।

গভর্নর বলেন, তার (সাফায়েত আলমের) সিইও পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। অবশ্যই উনি জালিয়াতি করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী শুনানির দিন উপস্থিত হননি। এর কারণ কী? এমন প্রশ্নে আহসান এইচ মনসুর বলেন, কারণ বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে জানানো হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগে আট সপ্তাহের জন্য যে, স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তা ছিল হাতে লেখা।

এর আগে গতকাল শনিবার জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোটি কোটি জনগণের সম্পৃক্ততা আছে এবং শত শত কোটি টাকার আমানত এখানে জড়িত- তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িক প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়।

আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদে অর্থ তছরুপের ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তাঁদের মধ্যে একজন আসামিকে প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করা হয়। তাঁকে নগদের পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দেয়নি, নিয়োগ দিয়েছেন পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধান নির্বাহী। তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁদের সব ধরনের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেন। ফলে গ্রাহকেরা ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছেন। এ জন্য দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।


আরও খবর



রসালো দেশি ফলে ভরে গেছে রাজধানীর বাজার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই রসালো দেশি ফলে ভরে গেছে রাজধানীর বাজার। তবে এসব ফলের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। খুচরা থেকে ভ্রাম্যমাণ দোকান- সবখানেই রাজত্ব করছে আম, লিচু, তালের শাঁস, আনারস, জাম, লটকন, বেতফল, আতাফল, জামরুলের মতো নানা স্বাদের ফল। এমনকি অনলাইন প্লাটফর্মেও বিক্রি হচ্ছে ফল। কিন্তু অনেক ফলের দাম এখনও নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।

বাসাবো এলাকার বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম ফরিদ বলেন, আপেল, কমলা, মাল্টা, আনার- এগুলো এখন দামি ফল। জ্যৈষ্ঠ মাসে অপেক্ষা করি সামর্থ্যরে মধ্যে দেশি ফল খাওয়ার। কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখি লিচু, আম, জাম- সবকিছুর দাম অনেক বেশি। একই অভিজ্ঞতা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ওয়াহেদ উজ জামানের। তিনি বলেন, ১০০ পিস ছোট আকারের লিচুর দাম ৪০০-৫০০ টাকা। বড় আকারের রাজশাহীর লিচুর দাম আরও বেশি। জামের কেজি চাইছে ৪৫০-৫৫০ টাকা।

তবে তালের শাঁস ও আনারসের মতো কিছু ফল এখনও তুলনামূলক সস্তায় মিলছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের ধারে। দিনের বেলায় গরমের মধ্যে একটু স্বস্তি পেতে পথচারীরা ভিড় করছেন এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোয়। রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় ভ্যানে করে তালের শাঁস বিক্রি করছেন মো. হাসনাত রুবেল। তিনি জানান, তালশাঁসের সরবরাহ বেড়েছে, খুচরায় ১০ টাকা পিস বিক্রি করছি। আস্ত তাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা।

এক ক্রেতা মো. নুরুল হক বলেন, এই গরমে পানিজাতীয় ফল খেতে ভালো লাগে। এক পিস ছোট ডাবের দাম ১২০-১৫০ টাকা হলেও তালশাঁস মাত্র ১০ টাকায় পাচ্ছি। আনারসও ৩০-৫০ টাকায় মিলছে।

বিদেশি ফলের দাম বেড়ে অনেক আগেই নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে। খুচরা বাজারে আপেলের কেজি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কালো আঙ্গুর ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, সাদা আঙ্গুর ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। একইভাবে মাল্টা, কমলা, আনারসহ অন্যান্য বিদেশি ফলের দামেও আগুন জ্বলছে যেন। চড়া দামে এসব ফল কিনে খাওয়া অনেকের কাছে এখন বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে। এমনকি মধ্যবিত্তদেরও এগুলো কিনে খেতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হচ্ছে। তাই সামর্থ্যরে মধ্যে রসালো ফলের খোঁজে সবার নজর এখন জ্যৈষ্ঠের ফলের দিকে।

কারওয়ানবাজারের ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশি ফলের সরবরাহ গত দুই সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সাতক্ষীরা, রাজশাহী, যশোর থেকে আম আসছে। রাজশাহী ও দিনাজপুরের বড় আকারের লিচুর চালানও শিগগির বাড়বে।

পাইকারি বিক্রেতা মো. আসফাক আলী ও সুরুজ মিয়া জানান, দিন যত এগোবে আমের সরবরাহ বাড়বে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাজশাহী ও দিনাজপুরের বড় লিচুর সরবরাহ বাড়বে। তখন দামও কিছুটা কমে আসবে। অন্যদিকে গাজীপুর ও সাভারের পাকা কাঁঠাল রাজধানীর বাজারে পুরোপুরি উঠতে আর সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগবে। জাম, লটকন, বেতফল, আতাফলসহ অন্যান্য দেশি ফলগুলোর সরবরাহ সন্তোষজনক রয়েছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে জাতভেদে ১০০-১৫০ টাকা, ১০০ পিস লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। কালোজামের কেজি ৪০০-৬০০ টাকা, আনারসের পিস ৩০-৫০ টাকা, তাল ৩০-৪০ টাকা, আর ডাবের দাম ১২০-১৫০ টাকা।

তবে বাজারে এখনও সুলভ দামে পাওয়া যাচ্ছে পেঁপে, কলা, পেয়ারা, বাঙ্গি, ও মৌসুম শেষে থাকা তরমুজ। জ্যৈষ্ঠের শুরুতে দেশি ফলের সরবরাহ বাড়লেও দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেই বাজারে ফিরবে স্বস্তি- এই প্রত্যাশাই এখন সাধারণ ক্রেতাদের।


আরও খবর



বাণিজ্য উত্তেজনার প্রভাবে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমবে

প্রকাশিত:বুধবার ১১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ |

Image

বিশ্বব্যাংক ২০২৫ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়েছে। সংস্থাটির মতে, এ বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৩ শতাংশ হবে।

সংস্থাটির ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপ্রেক্ট’ বা ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ ও অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রায় সব অর্থনীতির জন্যই একটি বড় ‘প্রতিবন্ধকতা’ তৈরি হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে তাদের মাত্র ৬ মাস আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে বলে জানানো হয়েছে। সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপ এবং উদীয়মান ৬টি অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে।

সংস্থাটির মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একের পর এক শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর শুল্কহার ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে দুই অঙ্কে উঠেছে, যা গত প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে সর্বোচ্চ। চীনসহ অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক বৃদ্ধির পাল্টা জবাব দিয়েছে।

বিশ্বব্যাংক ট্রাম্পের অনিয়মিত বাণিজ্যনীতির কারণে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, শুল্ক বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং এখনো অনুমোদন না পাওয়া করছাড় নীতির মাধ্যমে পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

বিশ্বব্যাংক সরাসরি মন্দার পূর্বাভাস না দিলেও জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে এমন এক দুর্বল অবস্থায় নামবে, যা ২০০৮ সালের পর মন্দা ব্যতিরেকে সবচেয়ে দুর্বল। আগামী ২০২৭ সাল নাগাদ বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা ১৯৬০-এর দশকের থেকে কোনো একক দশকে সবচেয়ে ধীরগতির প্রবৃদ্ধি।


আরও খবর



দুর্গাপুরের বিজয়পুর সীমান্তে তিন বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ |

Image

মোঃ মাসুম বিল্লাহ, দুর্গাপুর(নেত্রকোনা) :

ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক তিন বাংলাদেশিকে বিজিবি‘র কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার (০৩) জুন সকালে নেত্রকোনার দুর্গাপুর বিজয়পুর সীমান্তের ১১৫২/এমপি পিলারের নিকট শূন্যরেখায় ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে এই হস্তান্তর কার্যক্রম করা হয়।  

এ বিষয়ে ৩১ বিজিবির বিজয়পুর সামীন্ত ফাঁড়ির নায়েক শাহ আলম দুর্গাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিন বাংলাদেশীরা হলেন, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ী থানার বিড়ালশাখ গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে মোঃ সিরাজ উদ্দিন (৩১), শেরপুরের ডোবারচর গ্রামের সুলতান মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার সিমা (২৫) ও পাবনার চটমোহর থানার মথুরাপুর বাজার এলাকার মুরাদ খন্দকারের মেয়ে মারুফা খাতুন (২৮)। তারা ২জুন সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।

বিজিবি জানায়, সকাল পৌনে ৯টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফ দলের ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। পরে বিএসএফ তিন বাংলাদেশীকে বিজিবির কাছে হন্তান্তর করে। মিটিং শেষে বিজিবি তাদের দুর্গাপুর থানায় নিয়ে যায় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিজ নিজ জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। 

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, পতাকা বৈঠকের পর হস্তান্তর কার্যক্রম শেষে দুর্গাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন বিজিবি। পরবর্তীতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।


আরও খবর