Logo
শিরোনাম

উত্তাপ ভোগ্যপণ্যের বাজারে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |

Image

এবার বছর জুড়েই উত্তাপ ছড়িয়েছে ভোগ্যপণ্যে অস্বাভাবিক দাম। ডিসেম্বরে এসেও যা অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর বাজারে এ মাসেও যথারীতি চড়াই রয়েছে আটা-ময়দা, চিনি, ডাল, আলু ও পেঁয়াজের দাম। এর মধ্যে আমদানি পণ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশীয় পণ্যের বাজার চড়া, ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে।

তবে বছরের শেষ মাসে এসে কিছুটা স্বস্তি ডিম ও সবজির বাজারে। এ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে ডিম এবং ৫০ টাকায় মধ্যে বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। তবে বছর জুড়েই এ দুই পণ্যের অস্বাভাবিক দামও ভুগিয়েছে ক্রেতাদের।

গত মাসের শুরুতে বেড়ে যাওয়া আটা-ময়দা, চিনি ও মসুর ডালের দাম এ মাসেও অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বাজারগুলোতে বাড়তি দামেই বিক্রি হয়েছে খোলা ও প্যাকেটজাত আটা-ময়দা। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কোম্পানিগুলো নতুন রেটে ২ কেজির আটা ও ময়দার প্যাকেট সরবরাহ করেছে। তবে দাম এক লাফে ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। নতুন দামে ২ কেজির আটা ১২০ টাকা এবং ময়দা ১৪০ টাকা করা হয়েছে। যা নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১শ ও ১২০ টাকা দরে। ফলে বাজারে খোলা আটা ও ময়দা প্রতি কেজি ৫০ ও ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একই অবস্থা চিনি ও মসুর ডালসহ বেশিরভাগ আমদানি পণ্যের দরেও। এদিন বাজারে প্রতি কেজি চিনি এবং ছোট দানার মসুর ডালের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকার উপরে। অন্যদিকে গত ৪ মাস ধরে উত্তাপ ছড়ানো পেঁয়াজের বাজার এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকার উপরে। এর আগে এত দীর্ঘ সময় পেঁয়াজে এমন দাম দেখা যায়নি।

এদিকে বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু করলেও দাম স্বস্তি পাচ্ছে না ক্রেতারা। এখনো বাজারে ৫০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে পুরানো আলু। অন্যদিকে নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ বছরের শেষ মাসে এসে ডিম ছাড়া অন্য কোনো পণ্যে সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি।

অন্যদিকে বছর শুরুতে খাদ্য পণ্যে ৭.৭৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি থাকলেও শেষ হচ্ছে প্রায় ১৪ শতাংশে। বিশেষ করে শেষ চার মাসে গড়ে প্রায় ২ শতাংশ হারে বেড়েছে এর হার। এর ফলে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতিকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯.৪০ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, বছরের শুরুতে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে খাদ্য উৎপাদন ও পরিবহণে বাড়তি খরচ খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তা সার্বিক মূল্যস্ফীতির থেকে তা ছিল। তবে জুন-জুলাইয়ে পর রিজার্ভ সংকট ও ডলারের বিপরীতে টাকার মান হ্রাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি সার্বিক মূল্যস্ফীতিকে ছাড়িয়ে যেতে থাকে। মূলত বাজার সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে এখাতে মূল্যস্ফীতির এমন অস্বাভাবিক প্রবণতা দেখা গেছে। অর্থাৎ অন্য যে কোনো পণ্যের থেকে খাবারে ভোক্তার ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ।

তবে গত দু-সপ্তাহ ধরে বাজারে কমতির দিকে ডিমসহ পোল্ট্রি পণ্যের দাম। এদিন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকা মধ্যে। সে হিসেবে প্রতি পিস ডিমের দাম ১০ টাকার কম। যা সরকার নির্ধারিত দামের থেকেও প্রতি পিসে প্রায় আড়াই টাকা কম। ফলে ডিম আমদানির অনুমতি নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ডিম আনছেন না। এছাড়াও বাজারে প্রতি সপ্তাহেই কমেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। এদিন প্রতিকেজি ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা ও সোনালি ২৯০ টাকা দরে।

অন্যদিকে বাজারে শীতের সবজির ব্যাপক সরবরাহ দেখা গেছে। যদিও হরতাল-অবরোধে সবজি পরিবহণ কমছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত দু-সপ্তাহ ধরে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। ফলে সবজির কম এলেও তা ক্রেতা চাহিদার থেকে বেশি। ফলে দামও কমতির দিকেই রয়েছে। এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি।

অন্যদিকে, প্রায় অপরিবর্তিত দাম রয়েছে মাছের বাজারে। এদিন মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪শ, বড় কাতল ৪শ, বড় পাঙ্গাশ ২শ, চাষের কই (ছোট) ৩২০, তেলাপিয়া আড়াইশ ও শিং মাছ ৬শ, শোল মাছ ৮শ টাকা, পাবদা ৫শ থেকে ৬শ, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৬শ থেকে ৭শ, মলা মাছ ৫শ, বাইলা ১ হাজার টাকা, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪শ, মাঝারি আকারের বোয়াল ৫শ থেকে ৬শ, গুড়ামাছ ৩শ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫শ টাকা, গলদা ৭শ এবং বাগদা ৮শ থেকে ৯শ ও রূপচাঁদা ৯শ টাকা দরে।

 


আরও খবর

স্বস্তি ফেরেনি নিত্যপণ্যের বাজারে

শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪




এমপক্স: পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের ?

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ |

Image

মো. মামুন হাসান, পিআইডি :


২০২০ সালে হয়ে যাওয়া করোনা মহামারীর রেশ এখনও পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববাসী তার মধ্যেই নতুন ভাইরাস দেখা গেল সারা বিশ্বে উঁকি দিতে শুরু করেছে নয়া বিপদ, যার নাম এমপক্স বা মাঙ্কিপক্স ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এই মাঙ্কিপক্সের দাপট বেশ কয়েকটি দেশে দ্রুত ছড়াচ্ছে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আরও এক মহামারীর জন্য দিন গুনছে পৃথিবী? স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টিকে ঘিরে বাড়তে শুরু করেছে উদ্বেগমাঙ্কিপক্স পশুবাহিত রোগ তাই মূলত পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার দেশগুলিতেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশিকঙ্গোয় দাবানলের মতো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই মাঙ্কি পক্স নিয়ে ২০২৪ সালের ১৪ই আগস্ট বিশ্বে জরুরি অবস্থা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ২০২২ সালের পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মাঙ্কি পক্স নিয়ে সতর্কতা জারি করল হু২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এটি আফ্রিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু ২০২৪ সালের ১৫ই আগস্ট প্রথম আফ্রিকার বাইরে সুইডেনে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল এক ব্যক্তির হাত ধরে


কী এই এমপক্স ?

এমপক্স একটি ভাইরাল রোগ, যা অর্থোপক্সভাইরাস গণের একটি প্রজাতি। বিজ্ঞানীরা ১৯৫৮ সালে প্রথমবার এই ভাইরাসটি শনাক্ত করেন। বানরের মধ্যেই সবার প্রথম এই 'পক্স-জাতীয়' রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সেখান থেকেই তা ছড়িয়ে পড়ে মানবশরীরে। অনেকটা গুটিবসন্তের সমগোত্রীয় এই ভাইরাস। পরবর্তীতে এই সংক্রামক রোগ ছড়িয়েছে মানুষ থেকে মানুষেও। বিশ্বব্যাপী বিশেষজ্ঞদের সাথে একের পর এক আলোচনার পর, হু একটি নতুন পছন্দের শব্দ "এমপক্স" (Mpox) ব্যবহার করা শুরু করেছে "মাঙ্কিপক্স" (monkeypox) -এর প্রতিশব্দ হিসেবে

আশির দশকে প্রথম মাঙ্কি পক্সের খোঁজ মেলে। তার পর থেকে মূলত পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার দেশগুলিতেই এই রোগ সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ মাঙ্কি পক্স পশুবাহিত রোগ। আর যে ধরনের পশুর শরীর থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা তাদের বাস মূলত গ্রীষ্মপ্রধান এলাকার বৃষ্টি বনাঞ্চলে (রেইন ফরেস্ট )

এমপক্স ভাইরাসের ধরণ : এই ভাইরাসের দুটি ধরণ রয়েছে সাধারণত, প্রথমটি ক্লেড ভাইরাস। যার প্রাদুর্ভাব গত কয়েক দশক ধরেই কঙ্গোতে বিক্ষিপ্তভাবে ছিল। যেখানে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। ক্লেড ধরনটি এর থেকে কম গুরুতর। তবে গত বছরে সংক্রামিত অনেকের তুলনামূলকভাবে নতুন আরও গুরুতর ধরনের এমপক্স ক্লেড ১বি-তে আক্রান্ত হয়েছেন। যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, “২০২৪ সালের শুরু থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ এমপক্সে আক্রান্ত হয়েছে আর এতে ৪৫০ এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় সংক্রমণের ক্ষেত্রে ১৬০ শতাংশ এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে ১৯ শতাংশ বেশি।২০২২ সালে এমপক্সের মৃদু ধরন ক্লেড এর কারণে জরুরি জনস্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। এশিয়া এবং আফ্রিকার মতো যে দেশগুলোতে সাধারণত এই ভাইরাস দেখা যায় না এমন প্রায় ১০০টি দেশে এটি ছড়িয়ে পড়ে