যুক্তরাষ্ট্রে আগামী প্রেসিডেন্ট
নির্বাচনে মুখোমুখি হতে চলেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী
কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড
ট্রাম্প। আগামী নভেম্বর
মাসে এই নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছেন তারা।
এদিনের বিতর্কে ট্রাম্পের
কঠোর সমালোচনা করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি বলেছেন, বিশ্ব নেতারা
‘ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে হাসাহাসি করেন’। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট
ভ্লাদিমির পুতিন তার ‘লাঞ্চে’ ট্রাম্পকে ‘খেয়ে ফেলবেন’ বলেও মন্তব্য
করেছেন তিনি।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর)
এই তথ্য জানিয়েছে
সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার
রাত ৯ টায় মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি নিউজের আয়োজনে কমলা হ্যারিস
ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের
মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। বিতর্ক মঞ্চে প্রবেশ করেই ট্রাম্পের
সাথে হাত মেলান কমলা। এরপর কমলার তার বক্তব্য শুরু করেন এবং একইসঙ্গে
শুরু হয় বিতর্ক।
নিজের বক্তব্যে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার প্রচেষ্টা
চালানোর জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের
কঠোর সমালোচনা করেন কমলা। তিনি ট্রাম্পের
সেই প্রচেষ্টার নিন্দা করে বলেন, আমাদের এমন কোনও প্রেসিডেন্ট
থাকতে পারে না যিনি অতীতের মতো (আমেরিকান জনগণের) রায়কে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, যখন আপনি প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে এইভাবে কথা বলেন এবং ২০২০ সালের ভোটের ফলাফল বারবার অস্বীকার
করেন তখন এটি গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং আমেরিকান জনগণ আরও ভালো কোনও নেতা পাওয়ার দাবিদার।
কমলা হ্যারিস বলেন, বিশ্ব নেতারা ট্রাম্পকে
নিয়ে ‘হাসাহাসি করেন’। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার ‘লাঞ্চে’ ট্রাম্পকে
‘খেয়ে ফেলবেন’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিতর্কে ট্রাম্প জো বাইডেনকে অনুপস্থিত প্রেসিডেন্ট
হিসাবে সমালোচনা করেন এবং এর জবাবে হ্যারিসও পাল্টা আঘাত করেন। কমলা বলেন, আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না, আপনি আমার বিরুদ্ধে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইউক্রেনের প্রশ্নে ফিরে গিয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।
হ্যারিস ট্রাম্পকে বলেন, আপনি আর প্রেসিডেন্ট
নন, আর এতেই আমাদের ন্যাটো মিত্ররা
অনেক বেশি কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, অন্যথায় পুতিন ইউরোপের
বাকি অংশের দিকে চোখ রেখে কিয়েভে
বসে থাকতেন। পুতিন একজন স্বৈরশাসক যিনি আপনাকে দুপুরের খাবারে খেয়ে নেবেন।
ট্রাম্প তখন কমলা হ্যারিসকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইতিহাসের সবচেয়ে
খারাপ ভাইস-প্রেসিডেন্ট’
বলে অভিহিত করেন এবং দাবি করেন, আক্রমণের আগে ইউক্রেন
ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা করে যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন কমলা।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট
কে হবেন, সেটি নির্ধারিত হবে আগামী পাঁচ নভেম্বরের নির্বাচনে।
প্রাথমিকভাবে এই নির্বাচনে
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
কিন্তু গত জুলাইয়ে
বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে
সমর্থন দেন। মূলত এরপর থেকেই ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলকান, উভয় শিবিরেই
নিজ নিজ প্রার্থীর
পক্ষে বেশ জোর প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আসলে কী হবে? মার্কিন নাগরিকরা কি প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রেসিডেন্ট বেছে নিবেন, নাকি রিপাবলিকান
প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে
দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্র
ক্ষমতায় বসাবেন?
উত্তর পেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত।