ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ নারী দল। চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পরাজিত হলেও শেষ ওভার পর্যন্ত সমান তালে লড়াই করেছিল টাইগ্রেসরা। যার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি ভারতের বিপক্ষে। নিগার সুলতানা জ্যোতির দল হেরেছে ১১০ রানের বড় ব্যবধানে। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়েই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নিগার বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারতের মতো দলকে মোটামুটি স্কোরে আটকে রেখে আমাদের বোলাররা আজকেও চমৎকার কাজ করেছে। রান তাড়া তখনই কঠিন হয়ে যায়, যখন টপ অর্ডার রান করতে না পারে। দেখা যায় যে, লোয়ার ও মিডল অর্ডারের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়।
টপ অর্ডাররা যদি অবদান রাখতে পারত, তাহলে ম্যাচটি ভিন্ন হতে পারতো। অন্তত আমরা আরও কাছাকাছি যেতে পারতাম।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতাকে বড় করে দেখছেন নিগার। হারের দায় নিচ্ছেন নিজের কাঁধেও, ‘টপ অর্ডার ধসে পড়ার জন্যই আজকের ম্যাচে এই অবস্থা। কোনো অজুহাত দেয়ার কিছু নেই। এটা টপ অর্ডারদেরই দায়ভার পুরোটা। আমরা যদি দলের জন্য কিছু কিছু রান করতে পারতাম, আমিসহ, যদি তখন আউট না হতাম, যদি একটি জুটি গড়তে পারতাম, সেক্ষেত্রে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারত।’ মঙ্গলবার হ্যামিল্টনে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২২৯ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ৪০.৩ ওভারে ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় বাঘিনীদের ইনিংস। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে ভারতের এটি তৃতীয় জয়, পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশের চতুর্থ হার। এই নিয়ে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৫ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হারলো বাংলাদেশ।
জয়ের লক্ষ্যে নেমে দলীয় ৩৫ রানেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ৫ ব্যাটারের মাত্র একজন ছুঁতে পারেন দুই অঙ্ক। ৫৪ বলে মুর্শিদা খাতুন ১৯ রান করেন। শারমিন আক্তার ৫, ফারাজানা হক ০, অধিনায়ক জ্যোতি ৩ এবং রুমানা আহমেদ ২ রান করেন।
বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ জুটি গড়েন লতা মন্ডল এবং সালমা খাতুন। দুই ব্যাটার মিলে করেন ৪০ রান। দলীয় সংগ্রহ ৭৫ রানে সালমা ফিরলে (৩২) ভাঙে এই জুটি। এরপর লতা-ঋতুর জুটিতে আসে ২৫ রান। ঋতু মণি ১৬ রান করেন। লতা ২৪ রান করে আউট হন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের দুই ওপেনার শেফালি ভার্মা ও স্মৃতি মান্ধানা মিলে গড়েন
৭৪ রানের পার্টনারশিপ। তবে এরপর টানা তিন উইকেট ফেলে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্মৃতি ৫১ বলে ৩০ রান করে আউট হওয়ার পর শেফালিও (৪২) ফেরেন সাজঘরে। অধিনায়ক মিতালি রাজকে রানের খাতাই খুলতে দেননি ঋতু মণি। ফারজানা হকের দারুণ সরাসরি থ্রোয়ে অভিজ্ঞ হারমানপ্রিত ফেরেন ৩৩ বলে ১৪ রান করে। রিচা ঘোষ ২৬ রানে ধরা পড়েন নিগারের হাতে। স্বস্তিকা ফিফটি ছুঁয়েই আউট হয়ে যান ঋতু মণির বলে (৮০ বলে ৫০)। শেষে পূজা বস্ত্রাকর (৩০*) ও স্নেহ রানা (২৭) ৪৮ রানের জুটি গড়েন। শেষ ৫ ওভারে ভারত সংগ্রহ করে ৪৫ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ঋতু মণি।