Logo
শিরোনাম

ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

আমি এর আগেও বলেছি যে, কোনও সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে স্বীকার করতে হবে যে, সমস্যা আছে। আমাদের এটিও স্বীকার করতে হবে, ৫ আগস্টের আগে এবং পরে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের একটি গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সে হিসেবে আমি প্রস্তাব করেছিলাম, আমাদের যে ফরেন অ্যাফেয়ার্স কনসালটেশন আছে সেটি শুরু করবো বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

 জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘৪০তম সার্ক চার্টার দিবস’ উপলক্ষে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) আয়োজিত ‘দ্য সার্ক-পিপল অব সাউথ এশিয়া ক্রেভ ফর’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত যদি আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিতে পারতো তাহলে ভারতের সুবিধা হতো। আমাদেরও সুবিধা হতো। কিন্তু সেটা দুঃখজনকভাবে হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান খুবই ভালো। কিন্তু গত দুই-তিন মাসে যে ব্যবসায়িক মন্দা যাচ্ছে, সেটা কি শুধু বাংলাদেশকে এফেক্ট করছে? এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশকে এফেক্ট করছে না, ভারতকেও এফেক্ট করছে। পরিমাণটা অত কিন্তু বেশি না, তবে এফেট পড়ছে। কলকাতার অর্থনীতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি, এই অচল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব।৷ অচল অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগাযোগ স্থাপন।  ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন। আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করবন। এটা স্ট্যান্ডিং মেকানিজম, এটা অস্বাভাবিক কিছু না। প্রতিবছর আমাদের একজন যান ওপাশে পরের বছর ওপাশ থেকে একজন আসেন। এটাকে কনসাল্টেশন বলা হয়, এটা দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে। আমি আশা করবো, তারা একটা ফলপ্রসূ আলোচনা করবে।

তিনি বলেন, সার্ক শক্তিশালী হোক এই বিষয়ে প্রফেসর ড. ইউনূস অত্যন্ত পজিটিভ এবং আমরা আবারও আঞ্চলিকভাবে একটি স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরে যাই। এটা আমাদেরকে শুরু করতে হব।৷ শুরু করলে একবারে আমরা সবকিছু করে ফেলতে পারবো, সেটি চিন্তা না করাই ভালো।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সরকার অস্থায়ী হতে পারে, কিন্তু দেশ ও স্বার্থ স্থায়ী। আমি নিশ্চিত যে, স্বাভাবিকভাবে সার্ক নিয়ে একটি পজিটিভ অ্যাটিচিউট মানুষের মধ্যে আছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব হচ্ছে— এটিকে এগিয়ে নেওয়া। সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক শুরু হোক, যেটি গত ১০ বছরে হয়নি। তারপর আমরা চেষ্টা করবো্ কীভাবে একটি সামিটে রূপান্তরিত করা যায়।

আঞ্চলিক দারিদ্র্য দূরীকরণে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা যদি পরস্পরকে সহযোগিতা করি, তাহলে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর করা যাবে। দারিদ্র্য থেকে সবাইকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আমরা কিছুটা সাফল্য অর্জন করিনি তা কিন্তু না। আরও কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হবে। সেজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। সার্ককে আমাদের কর্মক্ষমতা পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে৷

এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, আমরা যদি অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করতে চাই, তাহলে আমাদের আঞ্চলিক বাণিজ্য খুবই জরুরি। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য না সবার জন্যই প্রয়োজনীয়। আমরা যদি একে অন্যের সঙ্গে বিরোধপূর্ণভাবে চলতে থাকি, তা আমাদের সুফল বয়ে আনবে না।আমাদের প্রতিবেশী দেশের (ভারত) সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক ভালো নেই। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক হচ্ছে না এখনও। আমরা চাই না বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হোক। আমরা এই অঞ্চলে শান্তি চাই। আমরা চাই সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।

সার্ক জার্নালিস্ট ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল আবদুর রহমান বলেন, এখন আমাদের একটি আঞ্চলিক জোটের খুবই প্রয়োজন। এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের এই জোটের প্রয়োজন। এখন সার্কের কোনও কার্যকরীতা নেই। এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সার্ককে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে। আমি সার্কের দেশগুলোর সাংবাদিকদের আহ্বান জানাই— তারা বাংলাদেশে এসে দেখুক, বাংলাদেশে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিচার করা থেকে বিরত থাকুন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া বলেন, সার্ক ছিল জিয়াউর রহমানের একটি স্বপ্ন। কিন্তু আজকে দুটা দেশের জন্য সার্কের এই অবস্থা। যেখানে ইউরোপ এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের দক্ষিণ এশিয়া বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে। আজকে সার্ক যদি উজ্জীবিত থাকতো, তাহলে আমাদের এই অবস্থা হতো না।

সার্ক জার্নালিস্ট ফোরামের (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) সভাপতি নাসির আল মামুনের সভাপতিত্বে ও সেমিনার অর্গানাইজিং কমিটির কনভেনার রফিকুল ইসলাম আজাদের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন স্ট্রাটেজিক এক্সপার্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তাফা কামাল মজুমদার।


আরও খবর



শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে কিশোরী মা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

কয়েক বছরের ধারাবাহিক অগ্রগতির পর গত দুই বছরে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে শিশুমৃত্যুর হারও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর বড় কারণ বাল্য ও কিশোরী বিয়ে। অল্প বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণের কারণে সন্তান প্রসব করার সময় রক্তক্ষরণ বেশি হয়, যে কারণে তাদের মৃত্যুর হার বেশি। এছাড়া কিশোরী মায়েদের বিভিন্ন সমস্যার প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে। ফলে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, এখনো বিশ্বে প্রতি বছর তিন লাখ নারী গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর পরই মারা যান। বছরে ২০ লাখ শিশু জন্মের প্রথম মাসেই মারা যায়। আর মৃত শিশু জন্ম নেয় ২০ লাখেরও বেশি। অর্থাৎ প্রতি ৭ সেকেন্ডে একটি এমন শিশু মারা যায়, যার মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেটারনাল অ্যান্ড পেরিনেটাল ডেথ সার্ভিলেন্স অ্যান্ড রেসপন্সের (এমপিডিএসআর) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ধারাবাহিকভাবে মাতৃমৃত্যু কমলেও গত দুই বছর আবার বাড়তে শুরু করেছে। ২০২২ সালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু হার ছিল ৬২ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল লাখে ৭৫। ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৯০-এ পৌঁছেছে। গত বছর মাতৃমৃত্যু সবচেয়ে বেশি ছিল সিলেট বিভাগে। এ বিভাগে লাখে ১১ জন নারী মারা যান।

যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৩ সালের হিসাব অনুসারে, প্রতি ১ লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ১৩৬ জন মা মারা যান। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১৫৩। ২০২১ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১৬৮।

নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কিশোরীদের গর্ভধারণের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। ১৯ বছর বয়সের আগে প্রতি হাজারে ১১৩ কিশোরী গর্ভধারণ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিশোরী অবস্থায় বিয়ে ও গর্ভধারণের হার বেড়ে যাওয়ায় মাতৃমৃত্যু বাড়ছে।

লালকুঠি মা ও ‍শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. শাহনাজ খান বলেন, যে হারে মা ও নবজাতক মৃত্যুহার কমার কথা ছিল তা কমছে না। যারা অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ করে তাদের নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। যেমন খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ, পায়ে পানি আসা। মায়েদের এ ধরনের সমস্যা থাকলে সেটার প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে। ফলে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা দেয়। কিশোরী অবস্থায় বিয়ে হলে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ। যে কারণে মাতৃমৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। এমপিডিএসআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সন্তান জন্মদানের সময় যেসব নারী মারা গেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ৪৬ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে এ হার ছিল যথাক্রমে ৩১ দশমিক ৮ ও ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে যেসব নারী মারা যান তাদের বেশির ভাগই প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের একটি বড় অংশ আবার গ্রাম পর্যায়ের। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে তারা গর্ভবতী নারী ও গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। প্রসবের আগে চিকিৎসকের অধীনও হন না। তাদের মধ্যে এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। প্রচার-প্রচারণাও আরো বাড়ানো জরুরি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী দেশে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে। গত বছর প্রকাশিত বিবিএসের বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস প্রতিবেদনে (২০২৩) বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দেশে এক বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার ছিল হাজারে ২৫ জন, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ২৭। পাঁচ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ২১।

অন্যদিকে এক মাসের কম বয়সী নবজাতকের মৃত্যুহার হঠাৎ বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালে প্রতি এক হাজার জীবিত নবজাতকের মধ্যে ২০ জন মারা যায়। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬। পাঁচ বছর আগে ছিল ১৫। এছাড়া ২০২৩ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ জন। ২০২২ সালে ছিল ৩১ জন। পাঁচ বছর আগে ছিল আরো কম, ২৮ জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, নিরাপদ পানি না পাওয়া ও ভেজালযুক্ত খাবারে কারণে শিশু ও মাতৃমৃত্যু বাড়ছে। এছাড়া শিশু ও মাতৃমৃত্যু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বাল্য ও কিশোরী বিয়ে। যে কিশোরী গর্ভধারণ করে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজের ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে খুব একটা সচেতন থাকে না। তাদের পুষ্টির অভাব থাকে, রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

২০২৩ সালে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিবাহের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে অষ্টম ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের ওপর পরিচালিত ইউনিসেফের জরিপে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ নারীর বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। এছাড়া বাংলাদেশে প্রায় ৪8 লাখ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু খর্বাকৃতির শিকার। যার অন্যতম কারণ মায়ের অল্প বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণ, ‍শিক্ষা ও পুষ্টির অভাব। বাংলাদেশে ১২ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের মধ্যে ১২ শতাংশেরই ওজন তাদের বয়স ও উচ্চতার তুলনায় কম। এছাড়া বাংলাদেশে গর্ভবতী নয় এমন প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে উচ্চমাত্রার পুষ্টিহীনতা রয়েছে।


আরও খবর



ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে মাভাবিপ্রবির ছাত্রসংগঠনগুলো

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

জিএসটি গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল শুক্রবার (৯ মে) বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে ‘মাভাবিপ্রবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ (বৈছাআ), শিবির, ছাত্রদল ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতাকর্মীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পরীক্ষার্থীরা যেন কোনো সমস্যায় না পড়েন, সে লক্ষ্যে সংগঠনগুলো ইতোমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

এছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে তথ্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, পরীক্ষার্থীদের জন্য পথনির্দেশনা, জরুরি প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আগত অভিভাবকদের জন্য অস্থায়ী বিশ্রামস্থলের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।

শিবিরের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, “ভর্তি পরীক্ষায় আগত পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের এই উদ্যোগ। আমরা চেষ্টা করছি, যেন তাদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকতে পারি।”আমাদের পক্ষ থেকে যেসব সেবা প্রদান করা হচ্ছে সেগুলো হলো: তথ্যসেবা, ‘আমানত কর্নার’ (পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য), কলম উপহার, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, ছাউনির মাধ্যমে অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা,

চিকিৎসাসেবা এবং হাতপাখা উপহার।

ছাত্রদলের কর্মী মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, “মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের উদ্যোগে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বিগত দিনের মতো ‘এ’ ইউনিটে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্য সহায়তা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া অভিভাবকদের বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি সুপেয় ঠান্ডা পানি, স্যালাইন, বাইক সেবা সহ যত ধরনের সাহায্য দরকার হয়, আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আমাদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল নেতাকর্মীরা উপস্থিত থেকে সর্বপ্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করবে।

মাভাবিপ্রবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব তানভীর ইসলাম তামিম বলেন, “আগামী GST ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতায় মাভাবিপ্রবির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেশ কিছু কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট গেট থেকে সন্তোষ বাজার পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াতে ট্রাফিক ব্যবস্থায় সহযোগিতা করবে সংগঠনটির সদস্যরা। পরীক্ষার্থীদের মোবাইল, ঘড়ি ও ব্যাগ নিরাপদে রাখার জন্য থাকবে সুরক্ষিত জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা। অভিভাবকদের জন্য নির্দিষ্ট বসার স্থান ও পর্যাপ্ত সুবিধা রাখা হবে যেন তারা স্বাচ্ছন্দ্যে অপেক্ষা করতে পারেন। সব মিলিয়ে, কোনো পরীক্ষার্থী যাতে কোনো ভোগান্তির শিকার না হন, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সহানুভূতির সঙ্গে কাজ করবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।”

“আমরা বিশ্বাস করি, এসব উদ্যোগ ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কর্মী আক্তারুজ্জামান সাজু বলেন,"আমরা মাভাবিপ্রবিতে আগত ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কলম উপহার দিয়ে আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছি এবং আগামীকাল ‘এ’ ইউনিটের শিক্ষার্থীদেরও জানাবো। পাশাপাশি তীব্র গরমে তৃষ্ণার্ত পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে পানি বিতরণ করবো, যাতে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।

উল্লেখ্য, ‘এ’ ইউনিটে এবার ১ লাখ ৪২ হাজার ৭১৪ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এর আগে, গত ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা, যার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২৮ এপ্রিল। এছাড়া ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২ মে এবং এর ফলাফল প্রকাশ করা হয় ৫ মে। ‘এ’ ইউনিটে সাধারণত বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে থাকে।


আরও খবর



৮ নায়িকা নিয়ে আসছেন মোশাররফ করিম

প্রকাশিত:রবিবার ১১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

মহানগরর ওসি হারুন থেকে মোবারকনামার মোবারকসহ অসংখ্য চরিত্র দিয়ে দর্শকের মনে দাগ কেটেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। এবার বোহেমিয়ান ঘোড়াতে ট্রাক ড্রাইভার আব্বাস চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের চমক দিতে চান এই অভিনেতা।

অমিতাভ রেজা চৌধুরীর কমেডি ঘরানার বোহেমিয়ান ঘোড়া সিরিজের মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। এতে আছেন একঝাঁক অভিনেত্রী। আছেন তানজিকা আমিন, রুনা খান, মৌসুমী হামিদ, সাদিয়া আয়মান, জুই করিম, ফারহানা হামিদ, অদিতি এবং বৃষ্টি।

অভিনীত চরিত্র নিয়ে মোশাররফ করিম বলেন, অমিতাভ রেজার সঙ্গে এত বড় পরিসরে এটাই আমার প্রথম কাজ। সেই সাথে দুর্দান্ত গল্প ও চরিত্রের কারণেই এই সিরিজের সঙ্গে আমার যুক্ত হওয়া। আর হইচই-এর সাথে আমার সম্পর্কটা তো বহুদিনের তাই এই সিরিজটা নিয়েও প্রত্যাশা অনেক। দর্শক বোহেমিয়ান ঘোড়াতে সম্পূর্ণ নতুন কিছু পাবে বলে আমার বিশ্বাস।

হইচই অরিজিনাল সিরিজ বোহেমিয়ান ঘোড়াতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুনা খান। হইচইয়ের পর্দায় এর আগেও বেশকিছু চরিত্রে তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তবে এই সিরিজে তার চরিত্রটি একদম ভিন্ন- গরম মেজাজের ও আত্মবিশ্বাসী এক নারীর।

বাস্তব জীবনে তানজিকা আমিন যেমন ঠিক তার বিপরীত চরিত্রে দেখা যাবে তাকে বোহেমিয়ান ঘোড়াতে। আর মৌসুমি হামিদকে দেখা যাবে নারী মৌয়ালের চরিত্রে। সাদিয়া আয়মান অভিনয় করেছেন ছটফটে, চঞ্চল এক তরুণীর ভূমিকায়। জুই করিমকে দর্শক দেখবে একদম নতুন আঙ্গিকে। সাথে আছে ফারহানা হামিদ, তার চরিত্রে রয়েছে সংযম, অনুভূতি আর নিঃশব্দ এক অভিজ্ঞান- যা দর্শকদের ছুঁয়ে যাবে। এছাড়া অদিতি ও বৃষ্টি দুইজন নতুন মুখের আবির্ভাব ঘটেছে এই সিরিজে।

নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী তার পুরো মুন্সিয়ানা দিয়েই নির্মাণ করাছেন সিরিজটি। তিনি বলেন, বোহেমিয়ান ঘোড়া সিরিজে আব্বাস কীভাবে ভালোবাসা, প্রত্যাশা আর সন্দেহ একসাথে সামলান, সেই কৌতুকপূর্ণ জটিলতা উঠে এসেছে। সাথে আছে নানা ধরনের রোড অ্যাডভেঞ্চার। আর যারা অভিনয় করেছে তারা সবাই আমার প্রাণের মানুষ। দুর্দান্ত এক জার্নি ছিল আমাদের সবার। এখন শুধু অপেক্ষা হইচইর দর্শকের কাছে আমাদের বোহেমিয়ান ঘোড়া পৌঁছানোর।


আরও খবর



২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো পৌনে ২৮ হাজার কোটি

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

ঈদের আগে দেশের ইতিহাসে রেকর্ড ৩.২৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। রেমিট্যান্সের সেই গতিধারা এখনো অব্যাহত। চলতি মাসের (এপ্রিল) প্রথম ২৬ দিনেই এসেছে ২.২৭ বিলিয়ন (২২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৭ হাজার ৭০৬ কোটি টাকার বেশি। আর প্রতিদিন আসছে ৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের বেশি বা ১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাসের (এপ্রিল) প্রথম ২৬ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৯ কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

এর আগে মার্চের পুরো সময়ে এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন আসে প্রায় ১০.৬১ কোটি ডলার বা ১২৯৫ কোটি টাকা করে।

তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১.৭১ বিলিয়ন বা ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি বছরের মার্চে ১৫৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৪৭০ কোটি ডলার বেশি।

গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়ে মার্চ মাসে। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সবশেষ মার্চে আসে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়।


আরও খবর



ডায়াবেটিস ॥ ভুল ধারণা ও প্রকৃত সত্য

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

অধ্যাপক (ডাঃ) এ বি এম আব্দুল্লাহ:

ডায়াবেটিসকে বলা হয় নীরব ঘাতক। বিশ্বের বহু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। মানুষের মাঝে এ রোগ নিয়ে একাধিক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। আসল সত্য তুলে ধরেন।

(১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস কোনদিনও ভাল হয় না :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিসকে বলা হয় চিরজনমের রোগ। তবে কিছু কিছু রোগের কারণে ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে, তাকে বলে সেকেন্ডারি ডায়াবেটিস। যেমন-এক্রোমেগালি, থাইরোটক্সিকোসিস, প্যানক্রিয়াটিক ডিজিজ, কুশিং সিনড্রোম। এ সমস্ত রোগের চিকিৎসা করলে ডায়াবেটিস ভাল হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধ ব্যবহারে ডায়াবেটিস হয়। যেমন- অনেকদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেলে। এগুলো ছেড়ে দিলে আবার ডায়াবেটিস ভাল হয়ে যায়। নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চললে এবং প্রয়োজনে ওষুধ নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস সেরে যেতে পারে।

(২) ভুল ধারণা- ভাত বা কার্বোহাইড্রেট একেবারেই খাওয়া যাবে না :

* প্রকৃত সত্য- অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস হলে আর ভাত খাওয়া যাবে না। কথাটা একেবারেই সত্য নয়। ভাত বা কার্বোহাইড্রেট পরিমাণ মতো খাওয়া যাবে। সাধারণত সকালে- রাতে গমের রুটি খেতে বলা হয় এবং দুপুরে পরিমাণ মতো মেপে ভাত খেতে দেয়া হয়।

(৩) ভুল ধারণা- কৃত্রিম চিনি ইচ্ছামতো ব্যবহার করা যাবে :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিস রোগীদের কোন প্রকার মিষ্টান্ন খাওয়া উচিত নয় বলে ভাবেন অনেকে। এটি ভুল ধারণা। সাধারণ চিনি না খেয়ে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেটাও হতে হবে পরিমিত। ইচ্ছে মতো অতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা উচিত না।

(৪) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস রোগীরা ফল খেতে পারেন না:

* প্রকৃত সত্য- এটাও একটা ভুল ধারণা। ডায়াবেটিস রোগীরা যে কোন ফল খেতে পারবেন। যেমন- কলা, আপেল, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। তবে তা যেন হয় পরিমিত।

(৫) ভুল ধারণা - মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয় :

* প্রকৃত সত্য- মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয়- এ কথাটা ঠিক নয়। সরাসরি মিষ্টি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার কোন যোগসূত্র নেই। মিষ্টি বেশি না খেলেও ডায়াবেটিস হতে পারে। আসলে পারিবারিক ইতিহাস, ওজন বৃদ্ধি, অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বা পরিশ্রমবিহীন অলস জীবন যাপন ইত্যাদি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই বলে ইচ্ছে মতো চিনি বা মিষ্টি কোনক্রমেই বেশি খাওয়া উচিত নয়।

(৬ ) ভুল ধারণা- মিষ্টিজাতীয় ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস বাড়বে :

* প্রকৃত সত্য- কিছু কিছু সিরাপ জাতীয় ওষুধ বেশ মিষ্টি, যেগুলোতে সামান্য সুগার বা স্যাকারিন দেয়া হয়। অনেক ডায়াবেটিস রোগীর ধারণা এগুলো খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। আসলে তা ঠিক নয়। কারণ, এই সিরাপগুলোতে খুব সামান্য পরিমাণ স্যাকারিন মিশ্রিত থাকে। রোগের কারণে ওষুধটাই জরুরী। এগুলো সেবনে ডায়াবেটিস বাড়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই।

(৭) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে হতে পারে :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিস কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। বরং জেনেটিক বা বংশগত কারণে হতে পারে। যেমন- বাপ-মা, ভাই-বোন, নিকটাত্মীয় কারও ডায়াবেটিস থাকলে অন্যদেরও হতে পারে।

(৮) ভুল ধারণা- হোমিওপ্যাথিক বা হার্বাল মেডিসিনে ডায়াবেটিস ভাল হয় :

* প্রকৃত সত্য- আসলে এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি তিনটা ‘ডি’-

* প্রথম ডি-ডায়েট কন্ট্রোল বা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ। ৬০ থেকে ৮০ ভাগ রোগী এতেই ভাল থাকেন।

* দ্বিতীয় ডি- ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।

* তৃতীয় ডি- ড্রাগ বা ওষুধ, খুব অল্প সংখ্যক রোগীর ওষুধের প্রয়োজন পড়বে।

(৯) ভুল ধারণা- তিতা জাতীয় জিনিস যেমন- করলা, মেথি বা নিমপাতা খেলে ডায়াবেটিস সেরে যায় :

* প্রকৃত সত্য- তিতা স্বাদযুক্ত খাবার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস করে বলে মনে করেন অনেকেই। এ কারণে করলা বা নিম বা অন্যান্য তিতা খাবার খান। এটা একটি ভুল ধারণা। তিতা খেলে ডায়াবেটিস রোগে উপকার হয়, এ রকম ধারণা কমবেশি প্রচলিত থাকলেও বিজ্ঞানসম্মত এর কোন প্রমাণ নেই যে, এগুলো রক্তে গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণ করে।

(১০) ভুল ধারণা- সাধারণ চিনিমুক্ত খাবার বা পানীয় ইচ্ছেমতো খাওয়া যায় :

* প্রকৃত সত্য- এ কথাও সত্য নয়। বাজারে ‘ডায়াবেটিক’ পানীয় যেমন- কোক, পেপসি, সেভেন আপ ইত্যাদি এমনকি ডায়াবেটিক সন্দেশ, বিস্কুট, জ্যাম, চকলেট পাওয়া যায়। এসব খাবারের গায়ে চমকপ্রদ কিছু লেখা আর চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে স্বাভাবিকভাবেই একজন ডায়াবেটিস রোগীর খেতে মন চায়। ডায়াবেটিক রোগীরা মাঝেমধ্যে মিষ্টির বদলে এগুলো খেতে পারেন। তবে সব সময় খাওয়া উচিত না।

(১১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা প্রয়োজনে কাউকে রক্তদান করতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা কখনও অন্য মানুষকে রক্তদান করতে পারেন না, এমনটাই ধারণা অনেকের। তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে বা অন্য কোন সমস্যা না থাকলে রক্তদানে কোন সমস্যা নেই।

(১২) ভুল ধারণা- নিয়ন্ত্রণে এলে অনেকেই শারীরিক সমস্যা হচ্ছে না মনে করে ওষুধ বন্ধ করে দেন। মনে করেন ওষুধ না খেলেও চলে :

* প্রকৃত সত্য- কোন কোন রোগী একবার সুগার নিয়ন্ত্রণে এসে গেলেই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু বাস্তবে ওষুধের কারণেই সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওষুধ বন্ধ করা হলে সুগারের মাত্রা আবার বাড়তে থাকে। তাই নিয়ন্ত্রণে এলেই ওষুধ বন্ধ করা মোটেও ঠিক নয়।

(১৩) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিক রোগীরা ওষুধ খাওয়ার পরে যত খুশি মিষ্টি খেতে পারেন :

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণাটা মোটেই ঠিক নয়। হয়ত মাঝেমধ্যে একটু আধটু মিষ্টি খাওয়া যেতে পারে। তার মানে যত খুশি তত মিষ্টি খাওয়া কোনক্রমেই উচিত হবে না। তবে অনেকেই ডায়াবেটিস অতিরিক্ত কন্ট্রোল করতে গিয়ে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেন বা ছেড়ে দেন। তা মোটেও ঠিক নয়। অবশ্যই পরিমিত পুষ্টিকর বিশুদ্ধ খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে।

(১৪) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস সারা জীবনের সঙ্গী। এটি থেকে আর কোনদিন পরিত্রাণ পাওয়া যায় না :

* প্রকৃত সত্য- এই বিষয়টি সত্যি নয়। সঠিক নিয়ম ও উপায় অবলম্বন করে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস মুক্ত হওয়া যায়।

(১৫) ভুল ধারণা- একবার ডায়াবেটিসের ওষুধ শুরু করলে আর কোন সময়ই তা বন্ধ করা যাবে না :

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। স্থূলকায় ব্যক্তিদের ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়েট কন্ট্রোল এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। প্রয়োজনে ওষুধ বন্ধ করা যেতে পারে।

(১৬) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা তাড়াতাড়ি মারা যায় :

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। শৃঙ্খলা মেনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করলে অবশ্যই জীবনযাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে অনেক ধরনের জটিলতা হতে পারে।

(১৭) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে ইনসুলিন সর্বশেষ চিকিৎসা :

* প্রকৃত সত্য- ইনসুলিন একজন ডায়াবেটিস রোগীর জীবনে যে কোন সময়ই লাগতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়, যে কোন অপারেশনের সময়, কোন গুরুতর রোগে হাসপাতালে থাকাকালীন। যেমন- হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক বা মারাত্মক কোন সংক্রমণের সময়, কিডনি বা যকৃতের জটিলতায় ইনসুলিনই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। এ ছাড়া কোন কারণে রক্তে গ্লুকোজ অনেক বেড়ে গেলেও ইনসুলিন দরকার হবে। ব্যাপারটা এমন নয় যে, ইনসুলিন দেয়া হচ্ছে মানে অবস্থা খুব জটিল বা মরণাপন্ন। তবে অবস্থার উন্নতি হলে ইনসুলিন বন্ধ করা যেতে পারে এবং মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। তার মানে ইনসুলিন সর্বশেষ চিকিৎসা নয়।

(১৮) ভুল ধারণা - একবার ইনসুলিন ব্যবহার করলে সারা জীবনই তা নিতে হবে :

* প্রকৃত সত্য- বিষয়টা আসলে তা নয়। নানা কারণে ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। আবার পরে তা পরিবর্তন করে বা বন্ধ করে ওষুধ খাওয়াও যেতে পারে। যেমন- গর্ভাবস্থা কেটে যাওয়ার পর বা অস্ত্রোপচারের ঘা শুকিয়ে যাওয়ার পর একসময় ইনসুলিন বন্ধ করে আবার ওষুধ খাওয়া যায়। তবে টাইপ ১ ডায়াবেটিস, কিডনি ও যকৃতের গুরুতর সমস্যা এবং সর্বোচ্চ মাত্রায় ওষুধ ব্যবহার করেও যদি গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রিত না হয়, এসব ক্ষেত্রে সব সময়ের জন্য ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে।

(১৯) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের গর্ভধারণ করা ঠিক নয়, এমনকি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো যাবে না:

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণাটা মোটেও ঠিক নয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে গর্ভধারণে কোন নিষেধ নেই, এমনকি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালেও বাচ্চার কোন ঝুঁকি নেই।

(২০) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা কখনোই রোজা রাখতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য- এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। ডায়াবেটিসের চিকিৎসার মূলমন্ত্র হলো খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা। রোজা একটা সুবর্ণ সুযোগ, যা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে রোগীরা অবশ্যই রোজা রাখতে পারবেন। প্রয়োজনে ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। এমনকি রোজা রেখে দিনের বেলায় রক্তের সুগার মাপা যাবে, প্রয়োজনে রোজা রেখে ইনসুলিন ইনজেকশন দেয়া যাবে। এতে রোজা ভঙ্গ হবে না।

(২১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস রোগীরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে ওরস্যালাইন খেতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য - অনেকে মনে করেন ওরস্যালাইনের মধ্যে গ্লুকোজ থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীর ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন খাওয়া উচিত নয়। এ ধারণাটা মোটেও ঠিক নয়। কারণ ওরস্যালাইনে সামান্য গ্লুকোজ থাকে। এতে ডায়াবেটিসের ততটা ক্ষতি হয় না।

সুতরাং যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের এসব ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ডায়াবেটিসকে ভয় না পেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।



আরও খবর