Logo
শিরোনাম
এক হাসপাতালেই ৫ হাজার রোগী

ভয়াবহ রূপ নিয়েছে রোটা ভাইরাস

প্রকাশিত:শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

রোটা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর ফলে ডায়রিয়া ও কলেরা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় চাঁদপুরের মতলবের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়া ডিজিজ রিসার্স (আইসিডিডিআর’বি) হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ। গত ১৫ দিনে প্রায় পাঁচ হাজার রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগীই ছিল শিশু।

এদিকে শুধু চাঁদপুরই নয়, আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই শিশুসহ নানা বয়সী রোগীর ভিড় বাড়ছে এই হাসপাতালে। সরেজমিনে দেখা যায়, ধারণা ক্ষমতা ছাড়িয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বারান্দায় বেড বসিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঠাণ্ডা, দূষিত পানি এবং দূষিত খাবার খাওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে ধারণা চিকিৎসকদের।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দূর-দূরান্ত থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা। তারা জানান, তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত বাড়িতে পাতলা পায়খানা, বমি হচ্ছিল বাচ্চাদের। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসায় কাজ না হওয়ায় অবস্থা খারাপ দেখে রোগীদের আইসিডিডিআর’বি হাসপাতালে নিয়ে আসছেন তারা।

আইসিডিডিআর’বি মতলব হাসপাতালের তথ্যমতে, ৭০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ৭ জানুয়ারি ডায়রিয়া আইসিডিডিআর’বি হাসপাতালের শয্যার তুলনায় চারগুণেরও বেশি রোগী এসেছে। আর গত ১৫ দিনে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৮৪১ জন রোগী। যা গতবছরের তুলনায় অনেক বেশি।

আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর, শরীয়তপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনি, মুন্সীগঞ্জ, নীলফামারী জেলাসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে এ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা আসছেন।

আইসিডিডিআর'বি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. চন্দ্র শেখর দাস বলেন, রোটা ভাইরাসে আক্রান্তদের পাতলা পায়খানা, বমি সঙ্গে জ্বরও থাকতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদি শিশু খুব দুর্বল হয়ে নেতিয়ে পড়লে ঘণ্টায় তিন বার বা তার বেশি বমি করলে, শিশুর পেট ফুলে গেলে, শ্বাস কষ্ট হলে, পায়খানায় রক্ত গেলে, জ্বর বা খিচুনি হলে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে অতি দ্রুত কাছের হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে শিশুকে পরিমাণ মত খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াবেন এবং অন্যান্য পথ্য চালিয়ে যাবেন। প্রতি প্যাকেট স্যালাইন আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে নিবেন এবং শিশুর যত কেজি ওজন প্রতিবার পায়খানার পর ততো চা চামচ স্যালাইন খাওয়াবেন। অর্থাৎ শিশুর ওজন ১০ কেজি হলে ১০ চামচ স্যালাইন খাওয়াবেন। পাঁচ বছরের শিশুকে একটি করে জিংক ট্যাবলেট দশ দিন খাওয়াবেন। দুই বছরের শিশুকে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাবে। ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশু খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বাসায় রান্না করা সব ধরনের খাবার খাবে। রোগীকে বেশি বেশি ডাবের পানি, চিড়ার পানি, সুপ ইত্যাদি খাওয়াবেন। রোগীকে কোমল পানীয়, ফলে জুস, আঙ্গুর, বেদানা খাওয়াবেন না। সাধারণত এই নিয়ম মেনে চললে আক্রান্ত শিশুরা এক সপ্তাহের মধ্যেই সেরে উঠে।

মতলব স্বাস্থ্য ও গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআরবির প্রধান ডা. মো. আলফজল খান বলেন, শীতকালে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। যা সাধারণত রোটা ভাইরাসজনিত কারণে হয়ে থাকে বলে আমরা মনে করি। গত ১৫ দিন ধরে গড়ে ৩শ’ রোগী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। যার প্রায় ৮৫ ভাগই দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু।

তিনি বলেন, পাতলা পায়খানার সঙ্গে বাচ্চার বমি ও জ্বর থাকতে পারে। খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। ছয় মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাকে প্রতিদিন একটি করে বেবি জিংক দশ দিন খাওয়াতে হবে। এই ডায়রিয়া ভালো হতে সাধারণত তিন থেকে সাত দিন সময় লাগতে পারে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতির অবনতি হলে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করবেন। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ এবং বেডের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিকে আমরা সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারবো বলে আশাবাদী।

ডা. মো. আলফজল খান বলেন, আমাদের তথ্য অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি রোগী আসছেন। প্রতি বছরই আমরা দেখছি দূর-দূরান্ত থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা মতলব হাসপাতালে আসছেন। যার ফলে আমাদের সেবা দেয়ার এলাকা বাড়ছে। বর্তমানে আমরা প্রায় ৩৫টি উপজেলার মানুষকে ডায়রিয়া স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছি।


আরও খবর



রাণীনগরে ভূমি উন্নয়নে বিশেষ শুনানি অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:শনিবার ৩১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁয় অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, হোল্ডিং খোলা, ভিপি লিজ মানি আদায় ও ভূমি বিষয়ক জটিলতা নিরসনে ইউনিয়ন ও মৌজা ভিত্তিক বিশেষ শুনানি কার্যক্রম করে আসছে জেলা প্রশাসন। এতে করে প্রতিটি মৌজার ভূমির মালিকরা তাদের ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষনিক সমাধান খুজে পাচ্ছেন। ডিজিটাল পদ্ধতিতে হিসাব খুলে নিজের মোবাইলের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করাসহ নানা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অপরদিকে সরকারের ঘরে জমা পড়ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।

বৃষ্টি ভেজা বৃহস্পতিবার বিকেলে রাণীনগর উপজেলার করজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিভিন্ন মৌজায় বিশেষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেবা গ্রহিতাদের নানা সমস্যার কথা শোনেন ও সেগুলো তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধান করে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসানসহ বিভিন্ন মৌজার ভূমির মালিকসহ স্থানীয় সুধিজনরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন ভূমিসেবা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ভূমিসেবার বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি বিশেষ করে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, হোল্ডিং খোলা, ভিপি জমির লিজমানি আদায় এবং ভূমি বিষয়ক জটিল সমস্যা সম্পর্কে জমির মালিকদের জানার কোন বিকল্প নেই। জমি সংক্রান্ত নানা জটিল সমস্যার সমাধান জানতে এবং অন্যদের জানাতে জেলার প্রতিটি মৌজার ভূমির মালিকদের সচেতন করতে আগামীতেও এই ধরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। 


আরও খবর



বন্যা মোকাবিলায় ঘাটতি সাড়ে ৫ কোটি ডলার

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ২১ জুন ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশই অবনতির দিকে যাচ্ছে।জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এই জরুরি পরিস্থিতিতে আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাঠে নেমেছে। ২০২৫ সালে বন্যা মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতিতে ঘাটতি রয়েছে সাড়ে ৫ কোটি ডলার। তবে এর মধ্যেও সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জরুরি চাহিদা পূরণে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছে ডাবলুএফপি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ঢাকায় ডব্লিউএফপির কার্যালয়। এতে জানানো হয়, ২৯ মে সরকারের অনুরোধে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় বন্যার পূর্বাভাস জারির মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডব্লিউএফপি আগাম সহায়তা কার্যক্রম চালু করেছে।

এই কার্যক্রমের আওতায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবারের প্রত্যেকে ৫ হাজার টাকা সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে খাদ্য, জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার পাশাপাশি নিজেদের ঘরবাড়ি ও জীবিকা রক্ষায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পেরেছেন পরিবারগুলো।

ডব্লিউএফপির আগাম আর্থিক সহায়তার উপকারভোগী নুরুল বেগম বলেন, আগের বন্যাগুলোতে কখনো কোনো আর্থিক সাহায্য পাইনি। এবার এই টাকা দিয়ে আমি আমার সন্তানদের খাবার কিনব, আমার ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামত করব এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখব। এই সহযোগিতার জন্য ডব্লিউএফপিকে ধন্যবাদ।

ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি বলেন, জলবায়ুজনিত দুর্যোগ সবসময়ই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা জনগোষ্ঠীর ওপর। আমাদের আগাম পদক্ষেপ নেওয়ায় এসব পরিবার দুর্যোগ মোকাবিলায় দৃঢ়তা ও মর্যাদার সাথে নিজেদের প্রস্তুত করতে পেরেছে।

২০২৫ সালে জলবায়ুজনিত সংকট মোকাবিলায় ডব্লিউএফপি একটি চারধাপের জরুরি প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে– দুর্যোগের আগে আগাম প্রস্তুতি, দুর্যোগের পরপরই জরুরি খাদ্য সরবরাহ, বাজার সচল হলে আর্থিক সহায়তা এবং নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজসহ বিভিন্ন কার্যক্রম।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ডব্লিউএফপি ৬০ লাখের বেশি দুর্যোগ প্রবণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তবে কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে বর্তমানে ৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতি রয়েছে, যার বেশিরভাগই আগাম প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন।

ডম স্ক্যালপেলি আরও বলেন, আগাম প্রস্তুতির ফলে পরিবারগুলো খাদ্য সংগ্রহ ও নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছে। কিন্তু এই উদ্যোগের জন্য সময় ও সম্পদ খুবই সীমিত। আমরা আমাদের অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে তারা দ্রুত ও বৃহৎ পরিসরে আমাদের পাশে দাঁড়ান এবং পরবর্তী বন্যার আগেই মানুষের জীবন রক্ষায় সহায়তা করেন।

ডব্লিউএফপির এ পদক্ষেপ বাংলাদেশের বৃহত্তর জাতীয় পর্যায়ের আগাম প্রস্তুতির অংশ। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলন, কেয়ার, সেভ দ্য চিলড্রেন, স্টেপ এবং স্টার্ট ফান্ডসহ বিভিন্ন সংস্থা মিলে ১৫টির বেশি আগাম প্রস্তুতি কাঠামো কার্যকর করে। ২০২৫ সালে ৪৬টি সংস্থা এই ধরনের কাঠামো বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ভূমিধস, খরা ও তাপপ্রবাহসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।

ডব্লিউএফপির এই আগাম প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে সার্বিকভাবে সহায়তা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক দাতা সংস্থা। জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় জরুরি সহায়তা তহবিল এবং বেলজিয়ামের মতো দেশগুলোর বহুপাক্ষিক সহযোগিতাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে, যেখানে ১০ লক্ষেরও বেশি শরণার্থী বসবাস করেন, টানা ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৩৩টি শিবিরের সবগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডব্লিউএফপির এ শিবিরগুলোতে স্থানচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও গরম খাবার সরবরাহ করছে। বাংলাদেশে স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে ব্যবহৃত অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন সমৃদ্ধ পুষ্টি বিস্কুটের স্থানীয় মজুদ পুনরায় পূরণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ মার্কিন ডলার অতিরিক্ত তহবিলের প্রয়োজন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ঢাকায় ডব্লিউএফপির কার্যালয়। এতে জানানো হয়, ২৯ মে সরকারের অনুরোধে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় বন্যার পূর্বাভাস জারির মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডব্লিউএফপি আগাম সহায়তা কার্যক্রম চালু করেছে।

এই কার্যক্রমের আওতায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবারের প্রত্যেকে ৫ হাজার টাকা সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে খাদ্য, জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার পাশাপাশি নিজেদের ঘরবাড়ি ও জীবিকা রক্ষায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পেরেছেন পরিবারগুলো।

ডব্লিউএফপির আগাম আর্থিক সহায়তার উপকারভোগী নুরুল বেগম বলেন, আগের বন্যাগুলোতে কখনো কোনো আর্থিক সাহায্য পাইনি। এবার এই টাকা দিয়ে আমি আমার সন্তানদের খাবার কিনব, আমার ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামত করব এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখব। এই সহযোগিতার জন্য ডব্লিউএফপিকে ধন্যবাদ।

ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি বলেন, জলবায়ুজনিত দুর্যোগ সবসময়ই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা জনগোষ্ঠীর ওপর। আমাদের আগাম পদক্ষেপ নেওয়ায় এসব পরিবার দুর্যোগ মোকাবিলায় দৃঢ়তা ও মর্যাদার সাথে নিজেদের প্রস্তুত করতে পেরেছে।

২০২৫ সালে জলবায়ুজনিত সংকট মোকাবিলায় ডব্লিউএফপি একটি চারধাপের জরুরি প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে– দুর্যোগের আগে আগাম প্রস্তুতি, দুর্যোগের পরপরই জরুরি খাদ্য সরবরাহ, বাজার সচল হলে আর্থিক সহায়তা এবং নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজসহ বিভিন্ন কার্যক্রম।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ডব্লিউএফপি ৬০ লাখের বেশি দুর্যোগ প্রবণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তবে কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে বর্তমানে ৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতি রয়েছে, যার বেশিরভাগই আগাম প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন।

ডম স্ক্যালপেলি আরও বলেন, আগাম প্রস্তুতির ফলে পরিবারগুলো খাদ্য সংগ্রহ ও নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছে। কিন্তু এই উদ্যোগের জন্য সময় ও সম্পদ খুবই সীমিত। আমরা আমাদের অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে তারা দ্রুত ও বৃহৎ পরিসরে আমাদের পাশে দাঁড়ান এবং পরবর্তী বন্যার আগেই মানুষের জীবন রক্ষায় সহায়তা করেন।

ডব্লিউএফপির এ পদক্ষেপ বাংলাদেশের বৃহত্তর জাতীয় পর্যায়ের আগাম প্রস্তুতির অংশ। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলন, কেয়ার, সেভ দ্য চিলড্রেন, স্টেপ এবং স্টার্ট ফান্ডসহ বিভিন্ন সংস্থা মিলে ১৫টির বেশি আগাম প্রস্তুতি কাঠামো কার্যকর করে। ২০২৫ সালে ৪৬টি সংস্থা এই ধরনের কাঠামো বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ভূমিধস, খরা ও তাপপ্রবাহসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।

ডব্লিউএফপির এই আগাম প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে সার্বিকভাবে সহায়তা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক দাতা সংস্থা। জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় জরুরি সহায়তা তহবিল এবং বেলজিয়ামের মতো দেশগুলোর বহুপাক্ষিক সহযোগিতাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে, যেখানে ১০ লক্ষেরও বেশি শরণার্থী বসবাস করেন, টানা ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৩৩টি শিবিরের সবগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডব্লিউএফপির এ শিবিরগুলোতে স্থানচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও গরম খাবার সরবরাহ করছে। বাংলাদেশে স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে ব্যবহৃত অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন সমৃদ্ধ পুষ্টি বিস্কুটের স্থানীয় মজুদ পুনরায় পূরণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ মার্কিন ডলার অতিরিক্ত তহবিলের প্রয়োজন রয়েছে।


আরও খবর

ভাতা পাবেন চব্বিশের আহতরা

মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫




যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির শীর্ষে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি থেকে এপ্রিল) মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এখন শীর্ষে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস (OTEXA) এই তথ্য জানিয়েছে। তাদের সর্বশেষ হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ২৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৬২১ কোটি ৮০ লাখ) ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৬৫ শতাংশ বেশি।

চীন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ—এই তিন দেশ মূলত মার্কিন বাজারে বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। ভিয়েতনাম এ বছর ৫০৮ কোটি ৯১ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। বছরে প্রবৃদ্ধির হার ১৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীন থেকে পোশাক আমদানি হয়েছে ৪৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের। প্রবৃদ্ধি মাত্র শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ।

তবে প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে উজ্জ্বল। এ সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২৯৮ কোটি ৩১ লাখ ডলারের পোশাক। প্রবৃদ্ধির হার ২৯.৩৩ শতাংশ—যা ভিয়েতনামের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।

রপ্তানি প্রবৃদ্ধির তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০.৩০ শতাংশ। এরপর রয়েছে ইন্দোনেশিয়া (১৫.৬০ শতাংশ), পাকিস্তান (১৯.৭৯ শতাংশ) এবং কম্বোডিয়া (১৯.৫৭ শতাংশ)।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে এমন প্রবৃদ্ধির পেছনে আছে কয়েকটি কারণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—নিয়মিত উৎপাদন, প্রতিযোগিতামূলক দাম, এবং গুণগতমান রক্ষা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশের এই সাফল্য বাজারের চাহিদা, মান বজায় রাখা এবং দাম নিয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্তের ফল। তবে এই ধারা বজায় রাখতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। শুধু স্বল্পমেয়াদি সুবিধায় নির্ভর করলে ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ আসতে পারে।


আরও খবর

কালো টাকা বৈধ করার পথ বন্ধ

রবিবার ২২ জুন ২০২৫




৬ বছরেরও প্রত্যাহার হয়নি ওসি প্রদীপের হাতে নির্যাতিত সাংবাদিক মোস্তফার ৬ মামলা

প্রকাশিত:শনিবার ২১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

মেজবাহ আজাদ :

মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি খুনী ওসি প্রদীপ কুমার দাসের হাতে অমানবিক নির্যাতনের শিকার কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৬টি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। ফলে সাংবাদিক ফরিদ মোস্তফা পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীন ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

অবিলম্বে সাংবাদিক ফরিদ মোস্তফার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম। গত ১৫ মে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর বলেন, রাষ্ট্রীয় আইন ও বিচার বিভাগ আন্তরিক হলেই কেবল মামলা গুলো প্রত্যাহার করতে পারে। একই সাথে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র করে একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা এবং চিকিৎসা খরচ বহনের ব্যাপারেও আদালত আদেশ দিতে পারেন। আমরা আশা করছি, সরকার দ্রুত মামলা গুলো প্রত্যাহার করা হবে। 


বিগত ৫ বছর আগে জামিনে কারামুক্তির পর এবং এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর, ডিসি, এসপি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে আবেদন নিবেদন করা হলেও রহস্যজনক কারণে তা ঝুলে আছে, প্রত্যাহার হয়নি মামলা। শুধু আবেদনের রিসিভ কপি আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া এই মুহূর্তে ফরিদুল মোস্তফার আর কিছুই নেই।


ফরিদ মোস্তফা বলছেন, ওসি প্রদীপের মৃত্যুদন্ডাদেশ একটি যুগান্তকারী রায়। তবে প্রদীপের মামলার বোঝা আর সইতে পারছিনা। মামলা ও চিকিৎসা চালাতে আর্থিক দৈন্যদশায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। আমি পরিত্রাণ চাই, আমাকে উদ্ধারে দেশের সকল সাংবাদিক বন্ধুদের পাশে চাই । 


সূত্রমতে, বিচার বহির্ভুত মানুষ হত্যা, উখিয়া টেকনাফের সাবেক এমপি মাদকের গডফাদর আবদুর রহমান বদি, ওসি প্রদীপ এবং তার লালিত মাদক ঘুষ সিন্ডিকেটের মাদক নির্মুলের নামে নিজেদের মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে "টাকা না দিলে ক্রসফায়ার দেন টেকনাফের ওসি প্রদীপ" শিরোনামে ২০১৯ সালে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি তৎকালীন কক্সবাজারের সাবেক পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়েন। ফলে সেই সময়ে মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে দেখা করে জীবনের নিরাপত্তা এবং মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে আবেদন করেন ফরিদুল।


কিন্তু দুর্ভাগ্য জুলুম নির্যাতন হয়রানি থেকে  রেহাই পাওয়াতো দুরের কথা ফরিদুল মোস্তফা কে বিনা মামলায় ঢাকা থেকে ওসি প্রদীপের টেকনাফ থানা পুলিশ তুলে এনে ২০১৯ সালে কয়েক দিন আটকে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজীর ৬ সাজানো মামলা দিয়ে চালান দেন আদালতে।


তবে আশ্চর্যের বিষয় ঐ সময়ে ওসি প্রদীপের ভয়ে ফরিদ মোস্তফার ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং ৬টি মামলায় জড়িয়ে হয়রানি, গ্রেফতারের খবর কোনো মিডিয়ায় প্রচারের সাহস পায়নি। কারাবন্দী ঘটনার সাড়ে ১০ মাস পর বিষয়টি বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। তখন সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ঢাকা থেকে সাংবাদিকদের ৭ সদস্যের একটি টিম কক্সবাজারে যান। সেখানে গিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের পাশাপাশি  সংগঠনের আইন উপদেষ্টা পরিষদ ও শাখা কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণে বৈঠক করে আইনী লড়াইয়ে নামে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। 


বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে আইনী লড়াইয়ে তিনি টানা ১১ মাস ৫ দিন কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি পান । অসুস্থ অবস্থায় কারাগার থেকে বের হবার পর চিকিৎসার জন্য বিএমএসএফ তাকে এক লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে।  


এদিকে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ফরিদ মোস্তফা একটি মামলা দায়ের করলে গত ৫ বছর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি।


আরও খবর



ভেনিসে মসজিদ বন্ধের বিরুদ্ধে আপিল, হাজার মুসল্লী পার্কে

প্রকাশিত:শনিবার ২১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

পলাশ রহমান :

ভেনিসে মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি নামাজের স্থান 'মসজিদুল ইত্তেহাদ' স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়। 

নগর কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তর প্রতিবাদে ইত্তেহাদ কর্তৃপক্ষ ভেনিসের একটি পার্কে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেন, একই সাথে আইনি লড়াই অব্যাহত রাখেন।

মসজিদ বন্ধের কার্যক্রম শুরু হয় মূলত ৩ বছর আগে, মসজিদুল ইত্তেহাদ প্রতিষ্ঠার সূচনা থেকে। স্থানীয় একটি সাবেক সুপার মার্কেট ভাড়া নিয়ে, সংস্কার করে ইত্তেহাদ কর্তৃপক্ষ একটি নামাজের স্থান তৈরি করেন। তখন নগর কর্তৃপক্ষ একটি আইন দেখিয়ে বলে, শহরের ভেতরে নামাজের স্থান করা যাবে না। করতে হবে লোকালয়ের বাইরে। ইত্তিহাদ কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, মুসলমানরা দিনে পাঁচবার মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে। শহরের বাইরে মসজিদ হলে- তা কোনভাবেই সম্ভব নয়। এটা সরাসরি নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা। মানবাধিকার লঙ্ঘন করা।

তখন মসজিদুল ইত্তিহাদ কর্তৃপক্ষ নগর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নিম্ন আদালত তাদের মামলার বিপক্ষে রায় দেয়। এরপর তারা ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। গত তিন মাস আগে আপিলটি খারিজ করে দেয় আদালত। 

গত ১৯ তারিখ আপিল খারিজের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালত কাসাসিওনে ফের আপিল করেছেন ইত্তেহাদ কর্তৃপক্ষ। তারা আশা করছেন, এবার ন্যায় বিচার পাবেন।

আপিলটি কাসাসিওন কোর্টে নথিভুক্ত হয়েছে নং ১২৬৯০/২০২৫ হিসেবে।

মসজিদ বন্ধের প্রতিবাদে গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ইত্তেহাদ কর্তৃপক্ষ পার্কের খোলা চত্বরে জুমার নামাজ আয়োজন করছেন। 

শুক্রবার (২০ জুন) পার্কে আয়োজিত জুমার জামাতে প্রায় এক হাজারের বেশি মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন- যা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার পালনের অধিকার কেবল সাংবিধানিক বিষয় নয়, মানুষের মনের গভীর থেকে উৎসারিত একটি অপ্রতিরোধ্য প্রয়োজন।


আরও খবর