Logo
শিরোনাম

মোবাইল আসক্তি কমাবেন যেভাবে

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

মোবাইল আসক্তিকে কিছু গবেষক সেল ফোনের উপর মনস্তাত্ত্বিক বা আচরণগত নির্ভরতার একটি রূপ হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। এটি সবার জন্যই ক্ষতিকর। এতে ছোটদের মধ্যে বাড়ছে চোখের সমস্যা। বড়দেরও জীবনযাত্রায় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অতিরিক্ত স্ক্রিন দেখার কারণে পর্যাপ্ত ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। অনেকে চেষ্টা করছেন স্ক্রিন টাইম কমাতে কিন্তু পারছেন না। সেক্ষেত্রে থেরাপিস্টদের কিছু পরামর্শ মাথায় রাখতে পারেন।

১. মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। জীবনধারার যে কোন পরিবর্তন আনতে এটাই হল চাবিকাঠি। অনেকেরই রাত জেগে সিরিজ দেখা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করা অনেকটা নেশার মতো। একাকীত্ব কাটাতেও অনেকে রাত জেগে সময় কাটান সোশ্যাল মিডিয়ার। সেক্ষেত্রে নিজেকে কাছেই নিজে প্রশ্ন করুন- যা করছেন সেটা আপনার শরীরের জন্য ঠিক কিনা। তাহলে নিজেকেই অনুপ্রাণিত করতে পারবেন এই অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য।

২, স্মার্টফোনের গ্রে-স্কেল সেটিংস পরিবর্তন করুন। থেরাপিস্টরা মনে করছেন ফোনের রঙিন আলো অনেক সময় অতিরিক্ত স্ক্রিন দেখার আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে।

৩. ফোনের নোটিফিকেশন, দিনের নির্দিষ্ট সময়ের পর বন্ধ করে রাখুন। এতে মেসেজ এলেই ফোন দেখার অভ্যাসটা কমে যাবে।

৪. অফিসের কাজের ফাঁকে, পড়ার ফাঁকে, এমনকি ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেকের ফোন দেখার অভ্যাস আছে। নিজের সীমানা নিজেই ঠিক করুন। অল্প সময়ের বিরতিতে বরং চেষ্টা করুন কিছু এক্সারসাইজ করতে। এতে উপকার পাবেন।

৫. ঘুমাতে যাওয়ার সময় নিজের কাছ থেকে মোবাইল বা অন্যান্য গ্যাজেট দূরে রাখুন। ঘুম থেকে উঠেই মোবাইলে চোখ রাখবেন না। সে সময়টা ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এতে মানসিকভাবে ভালো থাকবেন।

৬. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ স্মার্টফোন থেকে মুছে ফেলুন। ওই সময়টা বই পড়া, গান শোনা বা কোনও সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত করে রাখুন।


আরও খবর



৬৫ ঘন্টায় ৭২ ধর্ষণ

প্রকাশিত:সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

গত ৬৫ ঘন্টায় ৭২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। 

সিংগাইরে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, অটোরিকশা থেকে নামিয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, অবকাশ কেন্দ্রে বেড়াতে গিয়ে ধ'র্ষণের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী, চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ, শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া মেটানোর আশ্বাস দিয়ে নারীকে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ, ট্রলারে মাওয়া ঘাট পার হতে গিয়ে গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, বাবা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার এ ধরণের শিরোনামে সংবাদের চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। 

দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে নারীদের প্রতি অবমাননাকর ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং সুরক্ষার জন্য আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মানববন্ধন করা হলেও কমছে নয়া ধর্ষণের সংখ্যা। ফলে দেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করার প্রশ্নও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বেঁধে দিলো সরকার

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ |

Image

অবশেষে আলু সংরক্ষণের জন্য কোল্ডস্টোরেজের সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। কৃষি বিপণন আইন, ২০১৮-এর ১৬ (খ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৬ টাকা ৭৫ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত মাসের ৮ তারিখে বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন আলু সংরক্ষণের জন্য প্রতি কেজি ভাড়া ১ টাকা বাড়িয়ে ৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল, যা গত বছর ছিল ৭ টাকা। বিষয়টি হিমাগারগুলোতে জানিয়ে চিঠিও দেওয়া হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলনে তার যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন হিমাগারমালিকেরা। এ ছাড়া এক বস্তায় ৫০ কেজির বেশি রাখা যাবে না বলেও জানান হিমাগার মালিকেরা।

ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ জানান। গত শনিবার লালমনিরহাটে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা মহাসড়ক অবরোধ করে ৩ ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ৪০৪টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে, যার মধ্যে ২৯ লাখ টন আলু সংরক্ষণ সম্ভব। বর্তমানে ৩৫০টি কোল্ডস্টোরেজ কার্যক্রম চালু রয়েছে এবং এর ধারণক্ষমতা ৩০০ কোটি কেজি আলু, যা দেশের মোট আলু উৎপাদনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ।


আরও খবর



মোরেলগঞ্জে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্ধোধন

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ |

Image

এম.পলাশ শরীফ,নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাগেরহাটের  মোরেলগঞ্জ উপজেলার নব্বইরশি বাস ষ্ট্যান্ডে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।  বুধবার বিকেলে এ উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়য়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু: আ: আউয়াল হাওলাদার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল্লাহ’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: মিছবাহ উদ্দিন, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মমিনুর ও বাগেরহাট ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো: আশেকুজ্জামান, মোরেলগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ বদরুদ্দোজা।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন যৌথভাবে তৃণমূল পর্যায়ে ইসলামি জ্ঞানের চর্চা ও গবেষণা কার্যক্রমের প্রসারে ২০২৩-২০২৫ সালে প্রায় ১৬ কোটি টাকা অর্থ ব্যায়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদর নব্বইরশি বাস ষ্ট্যান্ডে নান্দনিক এ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।  

  সরকারিভাবে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩য় তলা বিশিষ্ট এই ভবনটি নির্মিত হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ সময় সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 


আরও খবর

রোজা রাখার বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলে?

শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫




ঝালকাঠিতে এলজিইডি হিসাবরক্ষকের দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠি এলজিইডির হিসাবরক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হয়রানি এবং উৎকোচ দাবির প্রতিবাদে স্থানীয় ঠিকাদাররা মানববন্ধন করেছেন। আজ ৫ মার্চ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি এলজিইডি দপ্তরের সামনে স্থানীয় ঠিকাদারদের ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, ঠিকাদার আরিফ হাওলাদার, হিরু, মো. শামীম, সাদ্দাম হোসেন, শফিকুল ইসলাম রানা, রুবেল খান, তৌহিদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও মাসুম খলিফাসহ আরো অনেকে।  মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদাররা সাইফুল ইসলামের দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 

তার জানান, সাইফুল ইসলাম ১০ ফেব্রুয়ারি রাজাপুর উপজেলায় বদলি হলেও সেখানে যোগদান না করে বদলির আদেশ স্থগিত করেছেন। তারা হুশিয়ারি দেন যে, সাইফুল ইসলাম যদি পুনঃরায় ঝালকাঠি এলজিইডিতে ফিরে আসেন, তবে তারা আরো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।


আরও খবর



বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন?

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

দাম নিয়ন্ত্রণ করে বাজারকে সহনীয় পর্যায়ে আনার সরকারি চেষ্টায় কমতি নেই। সয়াবিন ও পাম তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের মূসক কমানো, ডিমসহ কিছু পণ্যের দাম ধরে দেয়া ইত্যাদি পদক্ষেপের একমাত্র টার্গেট বাজার নিয়ন্ত্রণ। অভিযানসহ নিয়ন্ত্রণমূলক আরো কিছু কাজও চলছে। কিন্তু, কাঙ্খিত ফল মিলছে না। বিশ্বে বাংলাদেশই এখন একটি দেশ, যেখানে প্রশাসনের চেয়েও সিন্ডিকেট শক্তিমান। চাল- তেল-ডিম-মাছ-সবজি এমন কি কচুর লতি-চ্যাপা শুঁটকিতেও সিন্ডিকেট। শ্রম বাজার, পরিবহন জগতেও সিন্ডিকেটের নাটাই। তা মাদকের কেনাবেচায়ও। এ থেকে মুক্তির কি উপায় নেই?

বাজারে গিয়ে মানুষ দিশাহারা। চড়া দামের জন্য বাজারে যাওয়া যাচ্ছে না। চাল, চিনি, পেঁয়াজ, তেল, আলু, সবজিসহ সবকিছু সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের সমান্তরালে এই সিন্ডিকেট দমনও জরুরি। বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া ও তাদের সাজার আওতায় আনার বিকল্প নেই। এরই মধ্যে চক্রটি বুঝিয়ে দিয়েছে, এরা দমবে না। সরকার বা কেউ তাদের দমাতে পারবে নাÑ এমন একটি ভ্যাংচি-আস্ফালন লক্ষনীয়। বর্তমান সরকার অরাজনৈতিক। তার কোনো ষ-া-গু-া, সিন্ডিকেট পোষার দরকার পড়ে না।

সেই বিবেচনায় সরকার কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে তাদের রুখে দেয়ার কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। তারপরও কেন কুলাতে পারছে না সরকার? এর বিপরীতে সিন্ডিকেট বা চক্র বিশেষ রীতিমতো বেপরোয়া। তারা যথেচ্ছ দাম বাড়িয়ে লুটে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কষ্টের অর্থ। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মৌলিক ও প্রধানতম উপকরণ হচ্ছে নিত্য খাদ্যপণ্য। এই খাদ্যপণ্যের মূল্য যখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, তখন জনরোষের সাথে দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়ে পারে না। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি হিসাবে, এক সপ্তাহে, অর্থাৎ ৭ থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে ১২টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে সয়াবিন তেল, পাম তেল, চালের কুঁড়ার তেল বা রাইস ব্র্যান অয়েল, আলু, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, জিরা, দারুচিনি, ধনে, গরুর গোশত ও ডিম।

এ সরকারও মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা করছে। এই ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার এবং ভোক্তাসহ সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষার কথা। কিন্তু, বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর। বেশ কিছু পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও সিন্ডিকেট সদস্যরা তাদের ক্রিয়াকর্ম ঠিকই কার্যকর করে ছাড়ছে। ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু তার বাস্তব প্রয়োগ ঘটছে না বাজারে। দফায় দফায় দামের ডিগবাজিতে হতভম্ব ক্রেতা সাধারণ। সেই অস্থিরতা কাটাতে এবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডাররা একত্রে বসে ডিমের যৌক্তিক উৎপাদন খরচসহ উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জেলার পোল্ট্রি খামারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দৈনিক প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যায়, ফলে চাহিদা ও জোগানের মাঝে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়।

এমন সংকটকালে একটি মহল অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করলে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। দেশ ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিপিআইসিসি ১৫ দিনের যে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকায় পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থা, ডিম উৎপাদনকারী বড় খামারি ও পাইকারি আড়ৎদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এ উদ্যোগকে সফল করবে বলে আশা করা হচ্ছিল। উল্লেখ্য, ডিমের দাম ইতোমধ্যে কিছুটা কমেছে।

 অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এমতাবস্থায়, আর কী করতে পারে সরকার প্রশ্নটি এসে যাচ্ছে আপনাআপনি। পাল্টা প্রশ্ন আসছে সরকার কী তাহলে ব্যর্থ? না, তা মোটেই ভাবা যায় না। এ সরকার ব্যর্থ হলে আশা-ভরসার আর জায়গা থাকে না। এমন কি দেশের কী পরিস্থিতি হবে- তা ভাবনায়ও কুলানোর মতো নয়। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে সবার সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি হুঙ্কার দিয়েছেন কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বলেছেন, তাদের দৌরাত্ম্য আমরা ভাঙব। কামনা থাকবে, এ হুমকি-হুঁশিয়ারিকে সফল করবেন তিনি এবং সরকার। এসব সিন্ডিকেট প্রতিদিন নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করে বলে মন্তব্যও করেছেন এই উপদেষ্টা।

রোগ যখন ধরতে পেরেছেন, সেইদৃষ্টে এখন ওষুধ প্রয়োগের অপেক্ষা। হোক তা মেডিসিন বা সার্জিকেল। বলতেই হয়, মেডিসিন বা ডাকদোহাইর ঝাড়ফুঁকে এরা দমবে না। কেস একদম সার্জিকেল। সার্জনের ভূমিকায় যেতেই হবে সরকারকে। বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতেই হবে। পেছনে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। কোনো অজুহাত বা কাউকে দায়ী করারও আর অবকাশ নেই। মানুষ এসব শুনতে চায় না। তারা চায় অ্যাকশন।

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যেও তা স্পষ্ট। সম্ভবত পাবলিক পাল্স ধরতে পেরেছেন এই অর্থনীতিবিদ ও অ্যাকাডেমিশিয়ান। তিনি বলেছেন, বাজারে ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের অতিরিক্ত দামের জন্য সিন্ডিকেটের কথা বলে পার পাওয়া যাবে না। এরা নিশ্চয়ই সরকারের চেয়ে শক্তিশালী নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও রোগ ধরে বলেছেন, কারওয়ান বাজারে ডিম ট্রাকে থাকা অবস্থাতেই চারবার হাতবদল হয়। এখন পর্যন্ত এই সরকার কোনো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। শুধু সিন্ডিকেটের সাইনবোর্ড পরিবর্তন হয়েছে। সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে এই অভ্যুত্থানের প্রাথমিক মাহাত্ম্য কী?

ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেছেন, গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের দোসর লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তারাই এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে কোনও কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অবিলম্বে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির জন্য নয়; নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বিগত সরকারের আমলের ন্যায় বর্তমানেও বহাল তবিয়তে থাকা সিন্ডিকেটের কারণে। এই সিন্ডিকেট নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মনগড়া বৃদ্ধি করছে। এতে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা।

এখন পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে না। পুলিশ, শ্রমিক নেতা কিংবা দলীয় কোনো পারপাসে চাঁদাবাজি নেই। ট্রাক ভাড়াও আগের চেয়ে কমেছে। তারপরও নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকার কারসাজি একদম না বোঝার বিষয় নয়। বিগত সরকারের আমলে বড় বড় যে সকল সিন্ডিকেট ছিল, তারা এখনো রয়েছে। আর তাদের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণেই নিত্যপণ্যের দাম দিনকে দিন বাড়ছে। তবে, কি বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে ছাত্র-জনতাকে আবারো সক্রিয় হতে হবে? সরকার পতনের পর ছাত্ররা যেভাবে বাজার তদারকি করেছিল, সেটি আবারো নিয়মিত করতে হবে?

বলার অপেক্ষা রাখছে না, গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও বাজার সিন্ডিকেটবাজ ও চাঁদাবাজদের পতন হয়নি। নিত্যপণ্যকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে যারপরনাই সক্ষমতা দেখিয়েই চলছে তারা। সরকারের এখন পর্যন্ত কার্যক্রম ঘুরছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায়। দমনের কার্যকর পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি। সরকার বিভিন্ন সংস্কারের জন্য কমিশন করেছে। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা নিত্যপণ্যের দামে আগুন নেভানোর কোনো কমিশন করেনি। সরবরাহ বৃদ্ধিতে আমদানির অনিয়ম দূর করতে দেশে একটি কমিশন কিন্তু আছে।

প্রতিযোগিতা কমিশন নামের কমিশনটির কাজ হচ্ছে বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী রীতি-নীতি নির্মূল করার পাশাপাশি প্রতিযোগিতা উৎসাহিত করা। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও তাদের কাজ। এই পরিস্থিতিতে কমিশনটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে। বাজারে কোথায় ও কীভাবে প্রতিযোগিতা বিনষ্ট হচ্ছে বা একচেটিয়া তৈরি হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে আইনি উদ্যোগ নিতে পারে এই কমিশন। তারা ব্যবসায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারে।

পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ টাস্কফোর্সের ও ভোক্তা অধিকারের কার্যক্রম সারা দেশে চালু করার কাজটিও বাকি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী, মজুতদার, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা শোনানো হলেও সেই দৃষ্টে পদক্ষেপ নেই। বিশ্লেষকরা বাজার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা দেখছেন। বলছেন, এই সংকট মোকাবিলায় যতটা দ্রুততার সঙ্গে আমদানি করা দরকার ছিল, তা হচ্ছে না। কর ছাড় দেওয়া হলেও যথেষ্ট নয়। যে কারণে অভিযানে সাফল্য আসছে না।

 এছাড়া, বিচ্ছিন্ন কোনো শক্ত উদ্যোগেও এই সংকটের সমাধান আশা করা যায় না। তবে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সমন্বিত ব্যবস্থা কাজে আসতে পারে। বাণিজ্যের সাথে অর্থ, কৃষি, মৎস্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন একটি ড্রাইভ দিতে পারে। তাহলে ডিম, মুরগি, গরুর গোশত, দুধ, সব্জি, মাছ, চাল-ডাল কোনটা কোন মন্ত্রণালয়ের সেই প্রশ্ন কেটে যাবে। দায়িত্ব ভাগাভাগি না হয়ে কাজও চলে আসবে একটি অভিন্ন প্যাকেজে।

মনে রাখতে হবে, ছাত্র-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মসনদ তছনছ করে দিয়ে তাকে দেশছাড়া করেছে, সেখানে দায়িত্বশীলরা কেন ফ্যাসিস্টের অনুসারী বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না? কেন তারা বিপ্লবী চেতনায় নিজেদের উজ্জীবিত করতে পারছেন না? সবাইকে মনে রাখা উচিত, এ সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। বিপ্লবের যে প্রত্যাশা, তা সকলে এক হয়েই পূরণ করতে হবে।


লেখক: রিন্টু আনোয়ার, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]


আরও খবর

আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫