
নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘গুণিন’ ছবির শুটিংয়ে নববধূ সেজেছিলেন পরীমণি। বর শরিফুল রাজ। এই নবদম্পতিকে ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করেছিলেন পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম। সেদিন এই নির্মাতা নিজেও হয়তো কল্পনা করেননি, তাঁর ছবির বর-বধূ বাস্তবেও গাঁটছড়া বাঁধবেন।
গিয়াসউদ্দিন সেলিম মজা করেই পরীকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কী বর পছন্দ হয়েছে?’ জবাবে পরী এক চিলতে মিষ্টি হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর মনের কথা। এরপর ক্যামেরার একেকটি ফ্রেমে নিজেদের বন্দি করতে গিয়ে কখন যে মন-দেওয়া নেওয়া হয়ে গেছে, সেটা রাজ-পরী নিজেরাও বুঝতে পারেননি। ছবির কলাকুশলীরা ঠিকই আন্দাজ করেছিলেন। তাই কানাঘুষাও থেমে ছিল না। কারণ একটাই, প্রেমের খবর গোপন করা কারও জন্য সহজ নয়।
২০২১ সালে শুরু হয়েছিল ‘গুণিন’ ছবির শুটিং। মাঝে কেটে গেছে একটি বছর। ততদিনে রাজ-পরীর প্রেমের খবর অনেকের জানা হয়ে গেছে। অনুরাগীরা তাই অপেক্ষায় ছিলেন পরিণয়ের ঘোষণা শোনার। অবশ্য সেই শুভ সংবাদ শোনার জন্য অবশ্য বেশিদিন অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। গুঞ্জনের সমাপ্তি ঘটিয়ে গত বছরের ২২ জানুয়ারি রাতে পরিণয় সম্পন্ন হয় দুই তারকার। আগের দিন ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় হলুদসন্ধ্যা। বিয়ের আয়োজনও একেবারে সাদামাটা ছিল না। তাদের বিয়েতে অতিথিও হয়েছিলেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। ছিলেন রাজ-পরীর প্রেমের সূত্রধর নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম, চয়নিকা চৌধুরী, রেদওয়ান রনিসহ ক্যামেরার পেছনের মানুষগুলো।
এতকিছু যখন হয়ে গেল, তখন হঠাৎ বেরিয়ে এলো আরেক গোপন খবর। ‘গুণিন’-এর শুটিং চলাকালেই বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। সেই তারিখটা হলো ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর। বিয়ে একবার হোক বা দু’বার, পাত্র-পাত্রী তো বদলে যাননি– তাহলে আর সমস্যা কোথায়? এ প্রশ্নই ছিল অনেকের। তাই এ নিয়ে আর জলঘোলাও হয়নি। এমনকি বিয়ের বছর পূর্ণ হতে না হতেই পরীর মা হতে খবরেও চমকে যাননি অনুরাগীরা। তাদের কাছে সবই স্বাভাবিক মনে হয়েছে।
এ পর্যন্ত রাজ-পরীর প্রেমের গল্পটা বহুপঠিত সাদামাটা গল্পের মতোই। কাহিনির বাঁকবদল মূলত বিয়ের কিছুদিন পর। এমনিতেও পরীমণির জীবন কাহিনিতে নাটকীয় ঘটনার কমতি ছিল না কোনোকালেই। কখনও তা হয়ে উঠেছে রোমহর্ষক, নয়তো করুণ রসের। প্রেম কিংবা প্রবঞ্চনার ঘটনাবহুল অধ্যায়ও যোগ হয়েছে সেই কাহিনিতে। তবু পেছনের বিষাদময় সব অধ্যায় ছুড়ে ফেলে নতুন করে পরীর স্বপ্ন বুনন শুরু হয়েছিল পুত্র শামীম মুহাম্মদ রাজ্যের পৃথিবীতে আগমনে। কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীকে ঘিরে তাঁর মনে জমতে থাকে সন্দেহের মেঘ। যে কারণে বেশ কয়েকবার রাজ-পরী দু’জনই সরে গেছেন দু’দিকে। সত্যি এটাই, ক’দিন পরপর রাজ-পরী বিচ্ছেদের আভাস, একে অপরকে ছেড়ে থাকার খবরে অনেকটাই বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন তাদের ভক্ত-অনুরাগীরাও।
এবার আর কোনো আভাস নয়, পরীমণি সরাসরি জানিয়ে দিলেন, ‘গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছেন। হয়তো তা কার্যকরও হয়ে যাবে শিগগিরই।’ পরীর কথায়, ‘যার সঙ্গে শারীরিক, মানসিক সম্পর্ক নেই, যে একরকম আমাকে ছেড়ে চলেই গেছে, তাঁর সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না।’ এই যখন খবর, তখন রাজ কথা বললেন ভিন্ন সুরে। বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, ‘পরী ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছে নাকি! কই, আমি তো কিছু জানি না। এই প্রথম শুনলাম। মাত্রই ঘুম ভেঙেছে আমার, তাই এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারছি না। তাছাড়া কোনো কিছু ঠিকভাবে জানিও না।’