Logo
শিরোনাম

আজ ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর

প্রকাশিত:শনিবার ১২ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

আজও বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৩২০ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহর। দুবাইয়ের বাতাস আজ জনস্বাস্থের জন্য বিষের মতো। ঢাকার বায়ুমানেরও তেমন কোনো উন্নতি নেই। বায়ুদূষৃণের শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে মেগাসিটি ঢাকার অবস্থান দশে।

শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে ১০টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১১৬ স্কোর নিয়ে দূষণে ১০ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। যা দূষণের দিক থেকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর।

এ সময় বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৩২০ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহর। দুবাইয়ের বাতাস আজ জনস্বাস্থের জন্য বিপজ্জনক। একই সময় ১৬৫ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ, ১৬৪ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কাতারের দোহা, ১৬২ স্কোর নিয়ে ইন্দোনেশীয়ার জাকার্তা রয়েছে চতুর্থ স্থানে,১৫৪ স্কোর নিয়ে কুয়েত সিটি আছে ৬ষ্ঠ স্থানে, ভারতের কোলকাতা ১৩৪ স্কোর নিয়ে আছে ৭ম স্থানে, ভিয়েতনামের হ্যানয় ১৩১ স্কোর নিয়ে রয়েছে ৮ম স্থানে, চীনের উহান শহর ১২৪ স্কোর নিয়ে আছে নবম স্থানে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার এ তালিকা প্রকাশ করে। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে অস্বাস্থ্যকর বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এদিকে ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।


আরও খবর



কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ১০ চুক্তি স্বাক্ষর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

দ্বৈতকর পরিহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।

চুক্তিগুলো হলোউভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকিসংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতাসংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দুদেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠনসংক্রান্ত চুক্তি।

আর সমঝোতা স্মারকগুলো হলোকূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় তাদের। দুপুরে চামেলী হলে দুদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আমির।


আরও খবর



মুজিবনগর সরকার : মুক্তিযুদ্ধে প্রভাব

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

সোহেল মাজহার: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে মুজিবনগর সরকারের ঐতিহাসিক ভূমিকা অপরিসীম। অর্থাৎ অস্থায়ী প্রবাসী মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কার্যকর ও আইনসঙ্গত নেতৃত্ব প্রদান করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬৬ সালে তার ঐতিহাসিক ছয় দফা উত্থাপন করেন। ছয় দফা উত্থাপনের কারণে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মুখোমুখি হতে হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি ও ছয় দফার পক্ষে প্রবল জনমত গঠন হয়। একই ধারাবাহিকতায় ৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি অভিনব ও স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি পান এবং ২৩ ফেব্রয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ছাত্র জনতার পক্ষে তোফায়েল আহমেদ তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। ছয় দফার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ ৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদে ১৬৭ টি আসন ও প্রাদেশিক পরিষদে ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে।

৭১-এর মার্চের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাববিস্তারি ঘটনা হলো রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ। এই ভাষণে মাত্র ১৭/১৮ মিনিটে পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক ২৩ বৎসরের শাসন-শোষণ ও বঞ্চনার নির্মম ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি বাঙালি জাতির গৌরবময় আন্দোলন সংগ্রামের কথা স্মরণ করেন। ভাষণের একটি পর্যায়ে বলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট, যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।

 আরো উল্লেখ করেন, প্রত্যেক পাড়ায়-মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলুন। একেবারে শেষ পর্যায়ে তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, অমোঘ বাণী উচ্চারণ করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। মূলত এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু মুজিব আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করা ছাড়া অলিখিতভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক সংগঠন, সশস্ত্র ট্রেনিং গ্রহণ, সেল্টার ও গেরিলা যুদ্ধ সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামরিক পরিচালনার দিকনির্দেশনা ছিল ৭ মার্চের ভাষণে।

৭ মার্চের ভাষণের আলোকে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র অসহযোগ আন্দোলন সংঘটিত হয় । এই সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু মুজিবের নির্দেশে সমগ্র জাতির উদ্দেশ্যে ৩৫ দফা নির্দেশনা ঘোষণা করেন। এদিকে ৭ মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে খোদ ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক ট্রেনিং সেন্টার স্হাপিত হয়। আবার ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে ঘটে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী জয়দেবপুরে অবস্থানরত বাঙালি রেজিমেন্টেকে নিরস্ত্র করতে চাইলে মেজর শফিউল্লাহ এর নেতৃত্বে বাঙালি সৈনিকগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করে, তা প্রতিরোধ করে।

এই ঘটনায় মনু মিয়া, হুরমত ও নিয়ামতসহ স্হানীয় চারজন শহিদ হন। অন্যদিকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কালক্ষেপণ করে সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ঢাকা শহরে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে। প্রাথমিক অবস্হায় একযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, আবাসিক ভবন - ডরমিটরি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও ই.পি.আর পিলখানায় ব্যাপত গনহত্যা চালায়। এই রাতেই গণহত্যা ঢাকা শহরের বস্তি এলাকা, রাজপথ ও ফুটপাতেও চলে। মোদ্দাকথা এক রাতের মধ্যে ঢাকা শহর মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে। পাকিস্তান বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ৩২নং ধানমন্ডি, তাঁর বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

২৬ মার্চ থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইপিআর, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীসহ স্হানীয় মুক্তিকামী মানুষ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। এ সকল যুদ্ধ ছিল অবিচ্ছিন্ন, অসংগঠিত , তাৎক্ষণিক এবং অনেক ক্ষেত্রে তা নেতৃত্বহীন-অদূরদর্শী। একথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেরণার মূলে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ও ৭ মার্চের ভাষণ। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের একটি প্রবল আইনগত ও সাংবিধানিক ভিত্তি আছে। আর তা হলো ৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় অর্জন।

এটিই মুক্তিযুদ্ধকে সমগ্র পৃথিবীতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ও আইনি বৈধতা দান করে। পৃথিবীর অনেক দেশের ন্যায্য স্বাধীনতা ও মুক্তির লড়াই শুধুমাত্র নিরঙ্কুশ রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি স্বাধীনতাকামী গ্রুপগুলো নিজেদের মধ্যে অন্তঃ লড়াইয়ে যুক্ত হয়ে তা দীর্ঘস্হায়ী হয়েছে । আফগানিস্তান, কাশ্মীর ও আরাকানসহ পৃথিবীতে এরকম অনেক উদাহরণ আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তাঁর উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। যতটুকু অন্তঃবিরোধ, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ছিল, তা যৎসামান্য। মূলত ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠিত হওয়ার ফলে একটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সফলভাবে পরিচালিত হয়।

বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়ে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। আওয়ামী লীগের অনেক জাতীয় নেতা আত্মগোপন করেছেন। নেতারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অনেকের কাছেই অনেকের খবর নেই। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হলেও পাকিস্তান বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে রক্ষণাত্মক ভূমিকায় যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না। রাজনৈতিক নেতৃত্ব শিথিল কিংবা নেই। স্হানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনেক এমএনএ ও এমপিএ প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ অধিকাংশজন আত্মগোপনে চলে যায়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ এই নেতৃত্বহীনতা ও বঙ্গবন্ধু মুজিবের অনুপস্থিতি তীব্রভাবে অনুভব করেন। পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যার পর প্রাথমিকভাবে আত্মরক্ষা করে তিনি ঢাকা থেকে গা ঢাকা দেন। ২৭ মার্চ তিনি ঝিনাইদহ উপস্থিত হন৷ তৌফিক এলাহি ও মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রমের প্রমুখের সহায়তায় সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত চলে যান। মার্চের ৩০ তারিখ পশ্চিম বাংলা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২ এপ্রিল তিনি দিল্লিতে যান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দেন। উভয় নেতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি রাজনৈতিক সরকারের অভাব অনুভব করেন। তাজউদ্দিন আহমদ দিল্লি থেকে ফিরে এসে কুষ্টিয়া সীমান্তে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত এমএনএ ও এমপিদের নিয়ে একটি অধিবেশন আয়োজন করেন।

অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ এপ্রিল অস্থায়ী প্রবাসী সরকার গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের কারাগারে রেখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী হন তাজউদ্দিন আহমদ। মন্ত্রিপরিষদের অন্যন্য সদস্যগণ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এ এইচএম কামারুজ্জামান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ। অস্হায়ী প্রবাসী সরকার ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার ঐতিহাসিক আম্রকাননে শফথ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ, ভারত ও পৃথিবীর আরো কয়েকটি দেশের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার অধ্যাপক ইউসুফ আলী। মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। শফথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সংক্ষিপ্ত ও তাৎপর্যময় বক্তব্য রাখেন।

তাজউদ্দিন আহমদ তার বক্তব্যে বৈদ্যনাথ তলার নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম করেন মুজিবনগর। এই নতুন নামকরণের মধ্য দিয়ে প্রবাসী সরকার মুজিবনগর সরকার নামে অধিক পরিচিতি পায়। মুজিবনগর সরকারের নামকরণের তাৎপর্য অন্য জায়গায়। এই নামকরণের মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হলো পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকলেও বঙ্গবন্ধু মুজিবই মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। তার নেতৃত্বেই অস্থায়ী প্রবাসী সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছে। কার্যত মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বিকল্প ছিল না। যে কারণে অনেকে বিশ্বাস করতেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্ত আছেন এবং তিনি সশরীরে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন।

এর আগে আরো কিছু ঘটনা ঘটে। ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। ৪ এপ্রিল বাংলাদেশের কিছু ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা সিলেটের তেলিয়াপাড়া চা বাগানে মেজর খালেদ মোশাররফের অস্থায়ী দপ্তরে মিলিত হন। তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সামরিক বিবেচনায় তারা সমগ্র বাংলাদেশকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করে। দায়িত্বগুলো ছিল নিম্নরূপ ১. চট্টগ্রাম অঞ্চল - মেজর জিয়াউর রহমান ২. কুমিল্লা অঞ্চল - মেজর খালেদ মোশাররফ ৩. সিলেট অঞ্চল - কে. এম শফিউল্লাহ ও ৪. যশোর অঞ্চল - মেজর কে.এম আবু ওসমান চৌধুরী। কিন্তু যাই হোক প্রবাসী মুজিবনগর সরকার গঠিত না হলে এসব কিছুকে অনুমোদন ও বৈধতা দেওয়ার কেউ ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ আইনের দৃষ্টিতে স্বাধীনতা যুদ্ধ না হয়ে বিচ্ছিনতাবাদী যুদ্ধে রূপান্তরিত হতো।

যা হোক, প্রবাসী সরকারের দপ্তর স্থাপিত হয় ৮ থিয়েটার রোড কলকাতায়। ইতোমধ্যে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর স্বাধীনতা ঘোষণা প্রবাসী সরকার অনুমোদন করে। মুক্তিযুদ্ধকে সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য শফথ গ্রহণের পূর্বেই ১১ এপ্রিল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে ১১ জন সেক্টর কমান্ডারের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়।

'ভারতের মাটিতে অবস্থান করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা আদায়ের রাজনৈতিক সরকারের কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ সরকার কিংবা বৈধ প্রতিনিধি না থাকলে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকার কার সঙ্গে কথা বলবে, নেগোসিয়েটেড করবে। বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রবাসী মুজিব নগর সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক সরকার গঠনের পাশাপাশি প্রশাসন কাঠামো ও সুসংহত আমলাতন্ত্র গঠন করেছিল। ১১ জুলাই সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মুক্তিবাহিনীর সেক্টর গঠনের সমান্তরালে ১১টি আঞ্চলিক পরিষদ ( zonal Council) গঠন করে। ১১টি আঞ্চলিক পরিষদ ১১ জন করে চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে মূলত মুক্তিবাহিনীর উপর বেসামরিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

২০ তারিখের মন্ত্রিপরিষদের সভায় সরকার একটি পূর্ণাঙ্গ সরকার কাঠামো গঠনের লক্ষ্যে কতগুলো মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৩. অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪. মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয় ৫. সাধারণ প্রশাসন বিভাগ ৬. স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় ৭. তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয় ৮. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়(৯) ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় (১০) সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (১১) কৃষি বিভাগ (১২) প্রকৌশল বিভাগ। মন্ত্রী পরিষদের কর্তৃত্বে আরও কয়েকটি সংস্থা গঠিত হয়। সংস্থাগুলো হলো ১. পরিকল্পনা কমিশন ২. শিল্প ও বাণিজ্য বোর্ড ৩. নিয়ন্ত্রণ বোর্ড, যুব অভ্যর্থনা শিবির ৪. ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটি ৫. শরনার্থী কল্যাণ বোর্ড। উপরিউক্ত মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্হা সৃষ্টি করা ছাড়াও অগ্রিম পরিকল্পনা প্ল্যানিং সেল, গণহত্যা সেল ও উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। বিশেষত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য প্রতিনিধিদল প্রেরণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এভাবেই সোভিয়েত ব্লক সহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশসহ তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ব্যক্ত করে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাঁড়ানোর পিছনে প্রবাসী সরকারের তৎপরতা ছিল লক্ষণীয়।

ভারত বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর জন্য ট্রেনিং সেন্টার স্হাপন, অস্ত্র-রশদ সরবরাহ ও লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান, ভারতের মাটিতে প্রায় ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার পেছনে অস্থায়ী সরকারের ভূমিকা ছিল। ৩ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী গঠন, ৬ ডিসেম্বর ভুটানের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায়, ৭ ডিসেম্বর ভারতের স্বীকৃতি প্রদান প্রবাসী সরকারের বড় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সাফল্য। সবচেয়ে বড়ো কথা বাংলাদেশের ১১ টি সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিবাহিনী প্রবাসী সরকারের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে ছিল। প্রবাসী সরকারের অনুমোদন ছাড়া তা মুক্তিযুদ্ধ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে না। মুক্তিবাহিনী সরকারের অনেকগুলো বিভাগের মধ্যে একটি বিভাগ। অবশ্য এটিই ছিল সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ বা অঙ্গ। কাজেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুজিবনগর সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত।

লেখক : অধ্যাপক, কবি ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক। ইমেইল : [email protected]


আরও খবর



বন্ধুত্বের বাঁধনে এক হচ্ছেন তাহসান-মিথিলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

তাহসান খান ও রাফিয়াত রশীদ মিথিলা দুই তারকাই নিজেদের কাজের জন্য জনপ্রিয়। একসময়ের জনপ্রিয় তারকা জুটিও ছিলেন তারা। দীর্ঘদিনের প্রেমের পর ২০০৭ সালের ৩ আগস্ট বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় এই দুই তারকা। তারপর কেটে গেছে ১১ বছর। একসঙ্গে জুটি বেধে অভিনয়ও করেছেন। আমার গল্পে তুমি, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস, ল্যান্ডফোনের দিনগুলোতে প্রেম, মধুরেন সমাপয়েত নাটকসহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন এই জুটি। নাটক ছাড়াও এ জুটি একসঙ্গে গানও গেয়েছেন। মূলত এসব কারণে বিয়ের পর তরুণদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেনতারা। তবে বিয়ের ১১ বছর পর ভক্তদের মন ভেঙ্গে যায়। কারণ, ২০১৭ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয় তাহসান এবং মিথিলার।

তারপর দুজন দুদিকে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে মিথিলা পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখার্জি বিয়ে করে সংসার করছেন কলকাতায়। অন্যদিকে তাহসান বিয়ে না করলেও ব্যস্ত আছেন তার গান এবং অভিনয় নিয়ে। অবশ্য তাহসান এবং মিথিলা একমাত্র মেয়ে আইরা তেহরীম খানকে নিয়ে দুজনের বন্ধুত্ব এখনো অটুট। বিচ্ছেদের পরেও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের জন্য তারা প্রশংসিত। তবে এর পর দুজনকে আর কখনোই একসঙ্গে দেখা যায়নি। এবার তাহসান এবং মিথিলা তাদের ভক্তদের জন্য দিলেন নতুন সুখবর। ফের এক হতে যাচ্ছেন এই দুই তারকা। আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যাবে।

একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করছেন এই জুটি। সাত পর্বের এই ওয়েব সিরিজে দেখা যাবে তাদের। তবে এখনো এ নিয়ে নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী কেউই মুখ খোলেননি।

অন্যদিকে গত ৩১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেয়েছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অভাগীর স্বর্গ গল্প অবলম্বনে সিনেমা ও অভাগী। এটি নির্মাণ করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। কলকাতার এ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। সিনেমাটিতে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন মিথিলা।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে একদিনে ১৭ জনের মৃত্যুর রেকর্ড

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

চলমান তীব্র তাপদাহে রোববার হিট স্ট্রোকে সারাদেশে শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতা, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের হিসাবে দেশের ইতিহাসে এর আগে একদিনে হিট স্ট্রোকে এত মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড নেই। 

গতকাল থেকে পঞ্চম দফায় হিট এ্যলার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা। তাপপ্রবাহের কারণে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল  ১৩ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির ওপরে। ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা শনিবারের চেয়ে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এখন যে পরিস্থিতি, তাতে চলতি মাসে তাপমাত্রার তারতম্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। আজও তাপমাত্রা একই রকম থাকতে পারে। ৫ বিভাগে প্রচণ্ড দাবদাহর মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে এই তিন বিভাগে আবহাওয়া সহনীয়। চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় আজ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।

আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ,যশোরে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৬, খুলনায় ৪২ দশমিক ২ , সৈয়দপুরে ৪০ দশমিক ২, মোংলায় ৪১, টাঙ্গাইলে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসসহ ১৩ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির ওপরে।

হিট স্ট্রোকে ১৭ মৃত্যু 

সংবাদদাতারা জানান, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে কাওরান বাজারে যাওয়ার সময় গরমে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন মো. সেলিম (৫৫) নামের এক যাত্রী। মাদারীপুরের কালকিনি ও ডাসারে হিটস্ট্রোকে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সকালে মারা যান ব্যবসায়ী শাহাদাত্ সরদার (৫২) ও দুপুরে মারা যান কৃষক মোসলেম ঘরামী (৫৮)। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে হিটস্ট্রোকে জাহাঙ্গীর আলম (৫৩) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে হিট স্ট্রোকে মাওলানা মো. মোস্তাক আহমেদ কুতুবী আলকাদেরী (৫৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়া থানার কাদিপুর গ্রামে হিট স্ট্রোকে দলীপ বিশ্বাস (৩৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নরসিংদী আদালত প্রাঙ্গনে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আইনজীবীর সহকারী সুলতান উদ্দিন (৭৮) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় হিট স্ট্রোকে হাবিবা রিক্তা নামে এক স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের মৈখালী গ্রামে বিলে ধান কাটতে গিয়ে হিট ষ্ট্রোকে মারা গেছেন কালাম সানা (৫০) নামের এক কৃষক। নওগাঁর রাণীনগরে তীব্র তাপদাহে হিট স্ট্রোকে কৃষি শ্রমিক রেজাউল ইসলাম (৪৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

বরিশালের বাকেরগঞ্জে গরমের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ  নেতা রিয়াজুল ইসলামের (৪২) মৃত্যু হয়েছে। যশোরে আহসান হাবীব নামে এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিট স্ট্রোকে জাকির মিয়া (৩০) নামে এক  যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মানিকগঞ্জে হিট স্ট্রোকে হাছিনা পারভীন (৪২) নামে এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নে মোজাহার আলী (৬৩) নামে এক রাজমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মরিয়ম আখতার মুক্তা হিট ষ্ট্রোকে মারা গেছেন। একই উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া গ্রামে চা বিক্রেতা ফেরদৌস আলম ঠান্ডু(৫০) মারা গেছেন। এদিকে গাইবান্ধায় গত কয়েকদিনে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১২টি গরু ও শতাধিক মুরগির মৃত্যুর খবর পাওয়া  গেছে।

মধ্য মেতে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির শঙ্কা: কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেমসহ বিভিন্ন মডেল বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। ঘূর্ণিঝড়ই যদি বাস্তবে সৃষ্টি হয় তবে ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে রিমাল। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ১৫ মের পরে সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।


আরও খবর



ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২৫ কি.মি. দীর্ঘ যানজট

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ঢল নেমেছে মহাসড়কে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

দুপুরের পর গাজীপুরের বিভিন্ন পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় বিকেলের দিকে শ্রমিকদের স্রোত নামে মহাসড়কে। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীদের পাশাপাশি সড়কে বাসের সংখ্যাও বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে যানজটও। এতে চরম দুর্ভো‌গে পড়েছেন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ। গভীর রাতে শুরু হওয়া এ যানজট ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাস‌ড়কের টাঙ্গাইল সদরের আশেকপুর বাইপাস থেকে সেতু টোলপ্লাজা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়কে এ যানজটের সৃ‌ষ্টি হয়েছে। এর আগে ভোরে সেতুর উপর ২২ নম্বর পিলারের কাছে এক‌টি ডাবল ডেকার বাস বিকল হয়ে যাওয়ার পর সে‌টি উদ্ধারে ৫‌ মি‌নিট টোল আদায় বন্ধ ছিল। এতে মহাসড়কে প‌রিবহনের চাপ আরও বেড়ে যায়।

বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সেতুর ওপর বাস বিকল ও সেতুতে টোল আদায় বন্ধ থাকার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে রাত যত গভীর হয়েছে যানজটের আকার তত বেড়েছে। এ ছাড়াও সেতুর ওপর প‌রিবহনের দীর্ঘ সারি তৈ‌রি হয়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, মহাসড়কে প‌রিবহনের খুব চাপ রয়েছে। এতে পরিবহনগুলো খুবই ধীরগ‌তিতে চলাচল করছে। এ ছাড়া সেতুর ওপর এক‌টি বাস নষ্ট হওয়ায় ৫‌ মি‌নিট বন্ধ ছিল প‌রিবহন চলাচল। পরিবহনগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কারণেও অন‌্য প‌রিবহনগুলোতে ধীরগ‌তির সৃ‌ষ্টি হয়েছে।

এদিকে হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এক দেড় সপ্তাহ আগে পরিকল্পনা নিয়েছি মহাসড়কের ওপর যত্রতত্র কোনো গাড়ি দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে পারবে না। এখন তার বাস্তবায়ন করছি। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত আমাদের হাইওয়ে পুলিশ তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে। বিভিন্ন জায়গায় অ্যাম্বুলেন্স আছে। সিসিটিভি ও ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করতেছি, যেখানেই অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আজকে ৬০ শতাংশের বেশি পোশাক কারখানা ছুটি হয়েছে। শ্রমিকদের একটি বড় চাপ আছে, এ কারণেই গাড়ির সংখ্যা বেশি। কোথাও গাড়ি থেমে নেই, চলছে। বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাড়ি চলছে, কোথাও থেমে নেই।


আরও খবর