Logo
শিরোনাম

বাংলায় ইসলাম প্রচারে সুফিদের অবদান

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

ইসলাম প্রচারমুখী ধর্ম। বিশ্বের যে প্রান্তেই ইসলামের পদচারণা হয়েছে সেখানেই ধর্মটি ধর্মান্তরিতদের মধ্যে দ্রুত সমপ্রসারিত হয়েছে। ঐতিহাসিক অবিভক্ত বাংলায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। উপনিবেশ আমলে ১৮৭২- সর্বপ্রথম লোকগণনায় দেখা গেল, সারা বাংলায় মুসলমানদের সংখ্যাভিত্তিক অনুপাত ৪৮ ভাগ। তথ্যটি তখন বিস্ময় সৃষ্টি করলেও তার যুক্তি প্রমাণভিত্তিক ব্যাখ্যা ছিল। সারা উপমহাদেশের মধ্যে বাংলায় অধিবাস ছিল সামাজিকভাবে বঞ্চিত নিগৃহীত অধিক মানুষের; তারাই ইসলামের উদার কল্যাণমুখী আবেদনে সাড়া দিয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিল। কেন এবং কীভাবে ব্যাপক ধর্মান্তরণ হয়েছিল তা ইতিহাসের এক চমকপ্রদ বিতর্কের বিষয়। যেমন পশ্চিমের অনেক গবেষক বলতে চেয়েছেন, ইসলাম বিস্তৃত হয়েছে মুসলিম শাসকদের তরবারির জোরে।  কিন্তু লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, দিল্লি আগ্রা ছিল দোর্দণ্ড মুসলিম প্রতাপের কেন্দ্র, কিন্তু যেখানে ধর্মান্তরিত মুসলমান মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশও ছিল না। অন্যদিকে তুলনামূলকভাবে বাংলায় মুসলিম শাসন ছিল দুর্বল। সেকারণে অধ্যাপক পিটার হার্ডি যথার্থই বলেছেন, ...those who argue that Indian Muslims were forcibly converted generally failed to define either force or conversion&_ leaving us to presume that a society can and will change its religious identity simply because it has a sword at its neck

তাহলে বাংলায় ইসলাম-বিস্তৃতির ব্যাখ্যা কী? প্রথমত, ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে ইসলামের অন্তর্লীন মানবতাবাদী আবেদনের কথা। দ্বিতীয়ত এবং প্রধানত, এমন ইসলামের ধারক, বাহক প্রচারক সুফিদের অবদান। সুফিবাদী ইসলামের দুটো মৌল বক্তব্য বা ধারণা আছে। এক, ইন্নামাল আমানু বিন্নিয়্যাত। অর্থাৎ মনোবাঞ্ছার ওপর ধার্মিকতা বা ঈমান নির্ভরশীল। আরো উল্লেখ্য, এমন ইসলামে অন্তরের শুচিতা বড়; এবং তার সঙ্গে সংযোজিত হবে আবশ্যকীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা, তবে যা কখনই আচার-অনুষ্ঠানসর্বস্বতায় পর্যবসিত হবে না। দুই, মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু- নিজকে জানলে স্রষ্টাকে চেনা হয়।

অনুপুঙ্খ বিচারে বাংলায় ইসলামের আবির্ভাব, প্রচার প্রসার মুসলিম রাজনৈতিক শক্তি থিতুকরণে পাটাতন হিসেবে কাজ করেছে। অন্যভাবে বললে ইসলামের গতিময় ব্যাপ্তি রাজশক্তি বিকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল। বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতাসর্বস্ব নয়, বরং অন্তর্লীন প্রণোদনায় প্রাণিত উদারপন্থী ইসলাম প্রচারিত হয়েছিল এমন ইসলামী মননসমৃদ্ধ সুফিকুল দ্বারা। তাদের মানবিক প্রণোদনা-উৎসারী ইসলামী আবেদন স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মানুসারী মানুষের মধ্যে সহজ ক্রমবর্ধমান গ্রাহক পেয়েছিল। অতীতের আচার-অনুষ্ঠানক্লিষ্ট ধর্মে বীতশ্রদ্ধ স্থানীয় হিন্দু (নমশূদ্র), বিশেষ করে ধর্মের কারণে সমাজচ্যুত সংক্ষুব্ধ আমজনতা যেন উদারপন্থী মানবিক ইসলামের মধ্যে এক অচলায়তন ভাঙার ইঙ্গিত পেয়েছিল।

ইসলাম প্রচারধর্মী হলেও বাংলায় ধর্মটির প্রচারকৌশল পদ্ধতি যে মানবিক অনুভূতিসমৃদ্ধ ছিল তা বিশেষ আলোচনার দাবি রাখে। বাংলায় মুসলমানরা ক্ষমতা দখল করেছিল তেরো শতকের শুরুতে; কিন্তু সুফিবাদী ইসলামের আগমন হয়েছিল আট শতকেই। অর্থাৎ মুসলিম রাজনৈতিক বিজয়ের পূর্বসূরি হিসেবে কাজ করেছিল ধর্মবিজয়। এটাও তো বলা অত্যুক্তি হবে না যে, রাজনৈতিক বিজয়পূর্ব ধর্মবিজয় রাজনৈতিক বিজয়ের পথ সুগম করেছিল।
পারসিক সুফিদের ইসলাম প্রচার-কৌশলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল সংশ্লেষণমূলক (syncretic) দৃষ্টিভঙ্গি। ইসলাম গ্রহণের সময় স্থানীয় ধর্মান্তরিতদের ঐতিহ্যবিচ্যুত হতে হয়নি। কারণ ধর্মপ্রচারক সুফিরা তা করতে বলেননি। ফলে বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ইসলাম হয়েছে সংশ্লেষণবাদী। সুতরাং স্থানীয়দের পক্ষে ইসলামে ধর্মান্তরণ সহজ হয়েছিল। উল্লেখ্য, খোদ আরবেই ইসলাম স্থানীয় অনেক ঐতিহ্যকে আত্মস্থ করে বিকশিত হয়েছিল। উপরন্তু লক্ষণীয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই ইসলাম সমপ্রসারিত হয়েছে সেখানেই অভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। ধর্ম প্রচারের এমন পদ্ধতি নিঃসন্দেহে শুধু বিচক্ষণই নয়, মনস্তাত্ত্বিকভাবে মানবিকও বটে।

অন্যদিকে সুফি-সাধক পরিচালিত তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলায় ইসলাম প্রচারে পরিপূরক ভূমিকা পালন করেছিল। প্রথম প্রতিষ্ঠানটি ছিল লঙ্গরখানা। লঙ্গরখানায় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সব অন্নহীন মানুষকে সমাদরে এবং বিনামূল্যে আপ্যায়িত করা হতো। অর্থের জোগান আসতো মুসলিম শাসকদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে। ব্যবস্থার ফলে সবচেবেশি উপকৃত হয়েছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী সেন শাসনে (১১৬১-১২০৪) নিগৃহীত জাতিভেদ প্রথার শিকার হয়ে সমাজচ্যুত নমশূদ্ররা। জাত-পাতের পার্থক্যহীন সব মানুষের এমন সম্মিলন ছিল বাংলায় দৃষ্টান্তরহিত। বলা যায়, এক ধরনের সামাজিক বিপ্লবই ঘটে গিয়েছিল। আর এমন বিপ্লব যারা আস্বাদন করেছিল সেই স্থানীয়রা এমন এক উপলব্ধিতে প্রাণিত হয়েছিল যে, নতুন ধর্ম ইসলাম সামাজিকভাবে সমতাবাদী (socially egalitarian), যা বৌদ্ধ ধর্মে থাকলেও কট্টর হিন্দুত্বে ছিল না। কাজেই নিম্নবর্গের হিন্দু অভাজনদের কাছেই ইসলামের আকর্ষণ ছিল বেশি; এবং তারাই কালক্রমে মুসলমান সমাজের গরিষ্ঠ অংশ হয়েছিল। অবশ্য কিছু সংখ্যক বৌদ্ধও পরিস্থিতির চাপে মুসলমান হয়েছিল।

ইসলাম প্রচার-সহায়ক দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানটি ছিল খানকাহ। লঙ্গরখানা ছিল সামাজিক ইসলামের বাস্তব দৃষ্টান্ত; আর খানকাহ তাত্ত্বিক ইসলামের প্রশিক্ষণকেন্দ্র। সুফিরা ছিলেন প্রশিক্ষক। লঙ্গরখানায় হার্দিকভাবে তৃপ্ত উন্নতজীবন প্রত্যাশী শোষিত-বঞ্চিত মানুষ খানকাহ- গিয়ে যে আগ্রহী ঐকান্তিক প্রশিক্ষণার্থী হবে সেটাই ছিল স্বাভাবিক। দুটো প্রতিষ্ঠানই তাদের ইসলামে দীক্ষা গ্রহণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করেছিল। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় সুফি-প্রয়াসলগ্ন ইসলাম-বিস্তৃতির বাস্তবানুগ ব্যাখ্যার জন্য একটি উদ্ধৃতির সাহায্য গ্রহণ করা যেতে পারেঃ yThe foremost consideration appears to be an intent to find a refuge where there would not be a social stratification and discrimination as these people had been going through under the Sena rule; and Islam appeared to be a refuge of such specification. Moreover, there had been clear material considerations uppermost in the psyche of the converts and the background to which was the way which the Sufis welcomed these people first by the Langarkhana, and then Khanqah (দ্রষ্টব্য Syed Anwar Husain, Human Rights in Bengal: Atish Dipankar to Sufis)

বাংলায় ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করা তৃতীয় প্রতিষ্ঠানটি ছিল দরগাহ। দরগাহে সমাবেশ হতো সব ধর্মের মানুষের, যে রীতি আজও চালু আছে। দেখা যায় যে, ক্রমাগতভাবে দরগাহ খানকাহ- স্থান দখল করে নিয়েছে। দরগাহ- এমন প্রাধান্যের সূচনা বাংলায় হুসেইন শাহী শাসনামলে (১৪৯৩-১৫৩৮) তবে দরগাহ- কিছু ইসলামি চেতনাপরিপন্থী আনুষ্ঠানিকতাও দৃশ্যমান হয়েছিল, যার রেশ আজও দেখা যায়।
বরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল করিম মন্তব্য করেছেন,  Bengal, not to speak of the big cities but even not a small city or a hamlet will be found where the Darwishes have not come and settled অর্থাৎ বাংলার বড়-ছোট সব শহর এমন কী গ্রামেও তারা পদার্পণ করেছিলেন, এবং স্থায়ীভাবে থেকে গিয়েছিলেন। কাজেই বাংলার সমগ্র ভূখণ্ড জুড়েই তারা ইসলাম প্রচার করেছিলেন। মুসলমান রাজশক্তি ইসলাম প্রচারে সুফিদের সহায়ক হয়েছিল, কিন্তু এমন শক্তির প্রভাবে ইসলাম বিস্তৃত হয়নি। বাংলায় ইসলামের আলো ছড়িয়েছিলেন সুফিরাই।


আরও খবর



স্বস্তি ফেরেনি নিত্যপণ্যের বাজারে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

এবার অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্য ডিমের বাজারেও। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। অস্বস্তি রয়েই গেছে মাছ মাংসের বাজারে। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজসহ বাজারের প্রায় সব ধরনের সবজি।

শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। যা গেল সপ্তাহেও ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। হালি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪৮-৫০ টাকা।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকার দোকানদার আল-আমীন বলেন, কয়েক দিন আগে আমি নিজেই বিক্রি করেছি ১২০ টাকা ডজন। এখন আমরা এই দামে কিনতেও পাই না।

এদিকে সবজির বাজারে লম্বা বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, গোল বেগুন ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ৬০-৭০, করলা ৮০-৯০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঢেরস ৪০-৫০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৬০-৮০ টাকা, শশা ৫০-৬০, ছোট সাইজের মিষ্টি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, জালি ৫০-৬০ টাকা, পেপে ৪০-৫০, কাচা কলা ডজন ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গেল সপ্তাহজুড়ে প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে।

শাকের মধ্যে পাট শাক ১৫-২০, কলমি শাক ১০-১৫, পালং ১০-১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০-৪০, লাল শাক ১৫ টাকা, পুই শাক ৩০-৪০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ভ্যানে কিংবা ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে আলু ৫০-৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০-১৪০ টাকা, আমদানির পরেও খুচরা বাজারে কমেনি পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকা, রসুন ১৮০-২০০ টাকা, আদা ২০০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারভেদে দাম কিছুটা কমবেশি হচ্ছে।

অস্বস্তি রয়েই গেছে মাছ-মাংসের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২২০-২২৫ টাকা। সোনালি ৩৫০-৩৮০ টাকা। বাড়তি দামেই গরুর মাংস। বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি।

মাছের বাজারে সাইজভেদে তেলাপিয়া ২২০-২৩০ ও পাঙাশ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। যা গেল সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ২৮০ থেকে শুরু করে সাইজভেদে ৪০০-৪৫০ টাকা। এছাড়াও ৬০০ টাকার নিচে নেই পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছ।


আরও খবর



মোরেলগঞ্জে দিনমজুর পরিবারকে হত্যার উদ্যোশে গভীর রাতে বসতঘরে আগুন

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

এম.পলাশ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে দিনমজুর মো. শাহীন হাওলাদারের বসতঘরে গভীর রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মোরেলগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নিকটস্ত ফাড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

  অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের দিনমজুর মো. শাহীন হাওলাদার প্রতিদিনের ন্যায় স্ত্রী নাজমা বেগমসহ শিশুদের নিয়ে রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে দিকে ঘরের মধ্যে ধোয়ায় শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি হইলে আমার সন্তানেরা কাশি দিতে থাকে তখন স্ত্রীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। পিছনের দিকে আগুন জ্বলতে দেখে ডাৎকচিকার দিলে আমিসহ পিতা ও স্থানীয়রা ছুটে এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে নেয়। কাঠের বেড়া কেটে ১ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে রের হই।  

দিনমজুর মো. শাহীন হাওলাদার বাদি হয়ে মো. আলমগীর গাজী, মো. রবিউর খানকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

দিনমজুর মো. শাহীন হাওলাদার ও স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, প্রতিবেশী মো. আলমঙ্গীর গাজীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ইতোপূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ, থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আলমঙ্গীর গাজীকে বিবাদী করে অভিযোগ দিলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করার পায়তারা করে আসছে। আমার স্বামীকে বিভিন্ন সময়ে মারধরও করেছে। তারই জের ধরে গভীর রাতে হত্যার উদ্যেশে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দিনমজুর পরিবারের দাবি।  

এ বিষয়ে আলমঙ্গীর হোসেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

   এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, শাহীন হাওলাদার ও আলমঙ্গীর গাজীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বসতঘরে আগুনের বিষয়টি শুনেছেন এবং সরেজমিনে গিয়েছিলেন।  

   এ বিষয়ে সন্ন্যাসী ফাঁড়ির এএসআই মাসুদুল আলম বলেন, টহলরত অবস্থায় ওই রাতেই শুনেছি বসতঘরে আগুন লাগার খবর। ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি কেরোসিনের বোতল উদ্ধার করেছি। 


আরও খবর



এবারের বাজেট পরিধি ৮ লাখ কোটি টাকা

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটে অনুমোদন দিয়েছেন। আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে এ বাজেট উপস্থাপন করা হবে।

সূত্রটি জানায়, সোমবার (১৩ মে) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাজেট সংক্রান্ত এক সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

সভায় আগামী বাজেটে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার পক্ষে মতো দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সতর্কতার সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

সূত্রটি আরও জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম বাজেটে নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন দেখতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুত করা এই বাজেটে তার প্রতিফলন রয়েছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



তিন মাস ধরে দুবাইয়ের হিমঘরে পরে আছে রাণীনগরের মিন্টুর মরদেহ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ)  :

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার এনায়েতপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত্যু জামাল জোয়ারদারের ছেলে মিন্টু হোসেন। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে আর দশজনের মতো পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে থাকার আসায় তিন বছর আগে দুবাই পারি জমান তিনি। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সেখানে হাসপাতালের হিম ঘরে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে পরে রয়েছে মরদেহ। কিন্তু অর্থ সংকটের কারনে মিন্টুর মরদেহ দেশে ফেরাতে পারছেননা স্বজনরা। ফলে একদিকে স্বজন হারানোর শোক অন্যদিকে অর্থাভাবে মরদেহ আনতে পারার বেদনা পরিবারকে যেন ঘোর হতাশার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

মিন্টুর মামা আব্দুল মতিন জানান,মিন্টুর স্ত্রী-দুই মেয়ে নিয়ে সংসার ছিল। মাথাগোঁজার ঠাই ছাড়া আর কোন সম্পদ নেই তার। শ্রমীকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো মিন্টু। এরই মধ্যে স্বপ্ন জাগে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর এবং স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাল চলার। গত ২০২১সালে ধার-দেনা করে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ করে দুবাই যান মিন্টু। সেখানে যে কোম্পানীর ভিসায় গিয়েছিলেন সেই কোম্পানীতে কাজ না থাকায় অন্যত্র চলে যান মিন্টু। কিন্তু কোম্পানীর লোকজন পাসপোর্ট আটকে দেয়ায় অবৈধ হয়ে পরেন। তার পর থেকে অনেক চেষ্টা করেও পাসপোর্ট-ভিসা হাতে পাননি। ফলে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করলেও সুষ্ঠু বেতন পায়নি। এরই মধ্যে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পরলে দুবাইয়ের আজমানস্থ খলিফা হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ফেব্রæয়ারী মারা যান মিন্টু। এর পর মৃত্যুর খবর এপর্যন্ত পরিবারের লোকজন জানতে না পারলেও গত ১০মে এক স্বজনের মাধ্যমে মিন্টুর মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবার। এর পর থেকে তার মরদেহ দেশে ফেরাতে নানা চেষ্টা করছেন পরিবারের লোকজন। আব্দুল মতিন জানান, কোম্পানীর আওতায় থাকলে কোম্পানীর খরচে তার মরদেহ দেশে আসতো। কিন্তু অবৈধ থাকার কারনে নিজ খরচে মরদেহ দেশে আনতে হচ্ছে। এতে প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যায় হবে। যা পরিবারের পক্ষে যোগান দেয়া সম্ভব নয়। তাই মিন্টুর মরদেহ দেশে ফেরাতে সমাজের বিত্তবানদের নিকট আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। নগদ একাউন্ট নাম্বার- ০১৭৩৫ ১৯১৭৭৩(স্ত্রী),বিকাশ একাউন্ট নাম্বার-০১৭৮৩ ৮৪০৭৪৪(মামা)।


আরও খবর



ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলার, আমদানির মানদণ্ডে শেষপ্রান্তে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

  ডিজিটাল ডেস্ক :


ডলার সংকটের সঙ্গে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম থাকায় দিন দিন কমছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ডলারের যে সংকট শুরু হয়েছিল, তা এখনো কাটেনি।


 বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের যে হিসাব গত সপ্তাহে প্রকাশ করেছে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ তার চেয়ে অনেক কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ এখন  ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা কম।


২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে তা কমে হয়েছে ২ হাজার ৩৭২ কোটি মার্কিন ডলারে (২৩ দশমিক ৭১ বিলিয়ন) নেমেছে। 


আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন এক হাজার ৮৩০ কোটি ডলারে (১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন)।



এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার (১৩ মে) বিকালে আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ বিপিএম-৬ অনুযায়ী ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ আছে ২৩ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।


প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব শুধু আইএমএফকে দেয়। যা প্রকাশ করে না। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।



বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৮২ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। আকুর ১৬৩ কোটি ডলার দায় পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮১৯ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার।


মূলত, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন অর্থাৎ আকু একটি আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দুই মাস অন্তর এশিয়ার ৯টি দেশের (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান) মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে, যদিও এখন তা ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কম।


এদিকে প্রতি মাসে দেশের আমদানি দায় মেটাতে এখন প্রায় ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হচ্ছে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসের শেষদিকে বা আগামী মাসের শুরুতে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেলে রিজার্ভ ফের বাড়বে।


আরও খবর