Logo
শিরোনাম

দুনিয়া যার কাছে খোলা আঙিনার মতো

প্রকাশিত:সোমবার ২১ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ |

Image

দুনিয়া যার কাছে খোলা আঙিনার মতো, তিনি কাজী আসমা আজমেরী। তার আছে জাদুর মতো শক্তি। আর আছে স্বপ্নের সাগর। স্বপ্ন ভাসিয়ে দুনিয়াকে বশ মানিয়েছেন এই নারী। এখন পর্যন্ত পা রেখেছেন ১১৫টি দেশে।

কিভাবে সম্ভব!

একে তো তিনি নারী! তার ওপর সবুজ পাসপোর্টধারী! দুটোই দুনিয়া ভ্রমণের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ওই সব দেয়াল টপকাতে পেরেছেন বলেই কাজী আসমা আজমেরীকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।

সমাজ আর বাস্তবতার দেয়াল টপকানো খুব সহজ নয়। আবার হৃদয় থেকে চাইলে খুব কঠিনও নয়। আজমেরীর বেলায় কঠিন ছিল না। কারণ তার চোখ খুলে গিয়েছিল। খোলা চোখে দুনিয়াকে দেখেছেন। আর পায়ের ছাপও রেখে এসেছেন।

বাংলাদেশের বাস্তবতা বলছে, এমনটি অসম্ভব !

হ্যাঁ, আসমাকেও একই কথা জানিয়েছিলেন তার এক বন্ধুর মা।

সময়টা ছিল আজ থেকে ১২ বছর আগের। তখন আসমার চোখ অন্য আট-দশজনের মতোই ছিল। সবাই যা দেখতে পেত, তিনিও তাই দেখতেন। তবে সবাই যেমন করে ভাবতেন। তিনি ভাবতেন একটু অন্য রকম করে।

আসমার জেদ ছিল বাড়াবাড়ি রকমের। আর ছিল দারুণ চঞ্চলতা। তবে ও দুটোর কোনোটাই ব্যক্তিত্বকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি। বাবা কাজী গোলাম কিবরিয়া প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। মা কাজী শাহিদা আহমেদ বনেদি পরিবার থেকে এসেছেন। তাদের প্রথম সন্তান আসমা। আছে ছোট এক ভাই।

বাবা-মা আর দুই সন্তানের পরিপাটি পরিবার। আসমার জীবনের শুরুটা খুব রকম পরিপাটিই ছিল। খুলনায় পরিবারের সাথে থেকেই স্কুলে যাওয়া-আসা করতেন। খুলনা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে চলে আসেন ঢাকায়। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ, ইস্টওয়েস্ট থেকে এমবিএ শেষ করেন।

কেতাবি শিক্ষা আর পারিবারিক ইতিহাস দেখলে আসমার একজন ব্যবসায়ী হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি হলেন ট্র্যাভেলার।

কেন?

তার চোখ খুলে গিয়েছিল বলেই বিশ্বকে বাড়ির আঙিনার মতো করে দেখতে পেয়েছিলেন। অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন।

২০০৭ সালে থাইল্যান্ড যান আসমা। ওটা ছিল গতানুগতিক ভ্রমণ, অন্য আট-দশজন যেমন করে যান। তখনো মাথায় দুনিয়া চষে বেড়ানোর চিন্তা আসেনি তার।
এক দিন শুনলেন তার এক বন্ধু ২৭টি দেশ ঘুরে এসেছেন। সেই বন্ধুকে দেখতে অনেকেই ভিড় করল। আসমাও গেলেন। ভ্রমণফেরত বন্ধুর দেখা পেয়ে তিনিও ভাসলেন আবেগে। বললেন, ‘পৃথিবী দেখতে আমিও যাবো’। কথাটা শুনলেন ওই বন্ধুর মা। তিনি আসমাকে অনেকটা কটু ভাষায় জানিয়ে দিলেন, একজন নারীর পক্ষে এটা সম্ভব নয়।

জেদি মেয়ে আসমা। কথাটা সহজভাবে নিতে পারলেন না। জেদ চেপে রাখলেন, এক দিন পৃথিবী দেখতে যাবেন-ই। কিন্তু চেপে রাখা এসব জেদ বেশি দিন লালন করা যায় না। অন্য বাস্তবতার সাথে বাতাসেই মিলিয়ে যায়। আসমার বেলায়ও তাই হলো।

তা হলে তিনি কী করে ট্র্যাভেলার হয়ে উঠলেন?

এবার জানুন কাজী আসমা আজমেরীর থেকেই, ‘নেপাল বেড়াতে গিয়ে আমার চিন্তাটা পাল্টে গেল। তখন ২০০৯ সাল। আমার শরীর ও মন খারাপ ছিল। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছিলেন হাওয়া বদল করার। হাওয়া বদলাতে অনেকে নেপালকেই বেছে নেয়। আমিও তা-ই নিলাম।’

তার পর?

আজমেরী বললেন, ‘হাওয়া বদলাতে গিয়ে নিজেই বদলে গেলাম। ঘটনাটা ঘটে যায় এক ঘণ্টার মধ্যে। কাঠমান্ডু থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে এভারেস্ট দেখতে গেলাম। হিমালয়ের মাথার ওপর যখন কপ্টার উড়ছিল, আমার মনে হলো কুয়ো থেকে বেরিয়ে এসেছি। এত দিন আটকে ছিলাম। বদ্ধ ছিলাম সামাজিক দেয়ালে। অথচ পৃথিবী বসে আছে আমার জন্য, খোলা আঙিনা নিয়ে। অনেক অনেক অজানা নিয়ে। তখন পৃথিবীকে দেখার প্রবল ইচ্ছা হলো। হিমালয়ের মাথার ওপর কপ্টারে চক্কর দিতে দিতেই সিদ্ধান্ত নিই আমি পৃথিবী দেখব।’নেপাল থেকে ফিরে এসে নিজের গয়না বিক্রি করে দিলেন কাজী আসমা আজমেরী। ওই টাকা দিয়ে বেরিয়ে যান খোলা আঙিনায়। সেই যে শুরু, এখনো চলছে।

এখন তিনি আছেন নিউজিল্যান্ডে। এক শ’ ছাড়িয়ে আরো ১৫টি দেশের মাটি ছুঁয়ে আসা এই নারী ওই দেশে খণ্ডকালীন কাজ করছেন। কাজের বিরতিতে বাংলাদেশেও আসেন। আবার কাজে ফিরে যান। এবং ছোট্ট কচ্ছপের মতো পিঠে ব্যাকপ্যাক নিয়ে বেরিয়ে যান দুনিয়ার আঙিনায়।

আজমেরীর এই কচ্ছপযাত্রা মোটেও প্রমোদ ভ্রমণ নয়। অনেকটাই দুঃসাহসিক। তিনি এক্সট্রিম ট্র্যাভেলার। কেবল প্রকৃতির সুন্দর নয়, তিনি ছুঁয়ে ছুঁয়ে যান মানুষের সুন্দরকেও। ঢুকে যান মানুষের কৃষ্টির ভেতর। ডুব দিয়ে আসেন সংস্কৃতি আর ইতিহাস থেকে।

ওই সবের সাথে নীল রঙের সাগর আর একটু গরম হাওয়া। আসমার হৃদয়ে ঢেউ তুলতে এর চেয়ে বেশি কিছু লাগে না।

আর তিনি যেটা চান, দেশের মানুষের ভালোবাসা। কারণ তিনি দেশকে ভালোবাসেন। এত বছর নিউজিল্যান্ডে থেকেও ওই দেশের পাসপোর্ট নেননি। তিনি কেবল সবুজ পাসপোর্টের মালিক হয়েই থাকতে চান।

আসমার এই জেদের পেছনেও আছে আরেক গল্প। জানুন তার থেকেই, ‘তখন ২০১০ সাল। আমি গিয়েছিলাম ভিয়েতনামে। দিনটা মনে আছে ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখ। ওই দিন সাড়ে ছয় ঘণ্টা আমাকে ইমিগ্রেশনে আটকে রাখা হয়েছিল কেবল বাংলাদেশী পাসপোর্টের কারণে।’

বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে সাড়ে ছয় ঘণ্টা আটকে থাকতে হবে কেন?

‘কারণ অনেক দেশ সবুজ পাসপোর্টকে বিশ্বাস করতে পারে না। অনেকেই বাংলাদেশী সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে ভ্রমণ করতে গিয়ে ওই দেশে থেকে যায়। তাই কিছু কিছু দেশে সবুজ পাসপোর্ট দেখলেই সন্দেহ করা হয়।’

কাজী আসমা আজমেরী বললেন, ভিয়তেনামে তার সাথে যা ঘটেছিল, ‘ভিয়েতনাম ইমিগ্রেশন পুলিশ আমাকে ২৩ ঘণ্টা কারাগারে আটকে রেখেছিল। তখন মনে অনেক ক্ষোভ জন্মেছিল। কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম সেই রাতে। ওদের অজুহাত ছিল আমি রিটার্ন টিকিট করিনি। হোটেল বুক করিনি ইত্যাদি ইত্যাদি।’

সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে আরো কোনো বাধার মুখোমুখি হয়েছেন?

‘হ্যাঁ, বরাবরই হতে হয়। কিন্তু আমার জেদের কাছে ওসব বাধা টিকতে পারে না। ভিয়েতনামের ঘটনার পর ওই বছরই আমি গিয়েছিলাম সাইপ্রাস। দেশটিতে বাংলাদেশীদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা আছে। কিন্তু তার পরও ছাড় পাইনি। আগেরবারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার হোটেল বুকিং, রিটার্ন টিকিট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিতে ভুল করিনি। কিন্তু ওসব থাকার পরও সবুজ পাসপোর্ট দেখে আমাকে সন্দেহ করা হয়। সাইপ্রাসে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ইমিগ্রেশন অফিসার আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে খাঁচায় ঢুকিয়ে দেয়। খাঁচার ভেতর ২৭ ঘণ্টার ওই লজ্জা কখনো ভুলতে পারব না। অপমানে আমি প্রতিজ্ঞা করি বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়েই বিশ্ব ভ্রমণ করব। দেখিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশীরা কাজ করতে যেমন অন্য দেশে যায়। তেমনভাবে ভ্রমণ করতেও যায়।

সবুজ পাসপোর্টের এই জটিলতা কিভাবে দূর করা সম্ভব ?

এর জন্য আমি কাজ করছি। চেষ্টা করছি বাংলাদেশের সবুজ রঙের পাসপোর্টের মানোন্নয়নে সহায়তা করতে। যারা অবৈধভাবে বিদেশ যান, তাদেরকে নিরুৎসাহিত করছি। সচেতন করছি। ভ্রমণ করতে গিয়ে থেকে যাওয়ার প্রবণতা দূর করতে বলছি। সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে ভ্রমণে মানুষকে উৎসাহিত করছি।’

কাজী আসমা আজমেরী চান তার মতো করেই বাংলাদেশী আরো তরুণের সামনে খুলে যাক পৃথিবীর দরজা। এই দরজা সহজে খুলতে হলে চাই যুৎসই চাবি। আর এই চাবির কারিগরদের একজন তিনি নিজেকে মনে করেন। কেবল আসমাই নন, এই মনে করাটা গোটা দেশবাসীর। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বও এখন তাকে জানে।

কাজী আসমা আজমেরী, দুনিয়ার কাছে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন একজন ট্র্যাভেলার হিসেবে। ডাকসাইটে গণমাধ্যমগুলো তাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। প্রকাশ করেছে আজমেরীর কচ্ছপযাত্রার বিশদ।

যিনি এতগুলো দেশ ঘুরেছেন, তার ঝুলি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় ভরপুর থাকা স্বাভাবিক। আসমা জানালেন, সেসব তো আছেই। তবে একজন নারী হিসেবে যতটা বিপদের মুখে পড়ার কথা, ততটা তাকে পড়তে হয়নি। কারণ তিনি ছিলেন সদা সতর্ক।

সতর্ক থাকলেও কখনো কখনো পথিককে পথভোলা হতে হয়। আসমা জানালেন এমনই এক অভিজ্ঞতা, ‘একবার চেক রিপাবলিক থেকে পোল্যান্ড যাবো বলে ঠিক করেছি। যাচ্ছিলাম সড়কপথে। কিন্তু সড়কটা ঠিক কোথায় গিয়ে ঠেকবে ঠাহর করতে পারছিলাম না। অনেক অনেক পথ যাওয়ার পর জানতে পারলাম, আমি চলে এসেছি মরক্কো।’

সে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। আসমা আজমেরী সলো ট্র্যাভেল করেছেন। অর্থাৎ পৃথিবীর বেশির ভাগ এলাকা ঘুরেছেন একা একাই। খুব দরকারে কিছু এলাকায় অন্য ট্র্যাভেলারদের সাথে দল বেঁধেছেন। এ ছাড়া একলা চলো নীতিই তার।

খোলা পৃথিবীতে নাঙা আকাশের নিচে একা এক নারী!

অনেকে হয়তো এতটা ভাবার সাহসই রাখেন না। কিন্তু আসমা সেটা করে দেখিয়েছেন। কেবল একা থাকার ঝুঁকি নয়, তিনি নিয়েছেন হিচহাইকিংয়ের ঝুঁকিও। ভ্রমণের পরিভাষায় এই শব্দটার অর্থ হলো, বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করা।বাংলাদেশে ‘হিচহাইকিং’ পরিচিত না হলেও ইউরোপ, আমেরিকায় শব্দটার সাথে পরিচয় আছে। ওখানকার ট্রাক ড্রাইভাররা ‘বুড়ো আঙুল’ দেখে অভ্যস্ত। কোনো ট্র্যাভেলার যদি সড়কের পাশে বুড়ো আঙুল তুলে দাঁড়ান। তখন ট্রাক অথবা অন্য কোনো গাড়ির চালক বুঝে যান এর অর্থ। গাড়ি যে দিকে যাচ্ছে, ট্র্যাভেলারের গন্তব্যও যদি সে দিকে হয়, তা হলে তাকে তুলে নেন চালক। হিচহাইকিংয়ে ট্র্যাভেলারদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হয় না। বিনিময় হয় হাসি ও সংস্কৃতির।

কাজী আসমা হিচহাইক করেছেন জর্জিয়া, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায়। অ্যাডভেঞ্চার বেশি হয়েছে জর্জিয়ায়। তবে হিচহাইক করতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়তে হয়নি তাকে। আসমা বললেন, ‘নারীদের জন্য হিচহাইক-এ চ্যালেঞ্জ আছে। আমি অনেক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। তবে ভাগ্য ভালো ওরকম বিড়ম্বনা হয়নি। তা ছাড়া রাতে কারো সাথে হিচহাইক করিনি। ২০১০ সালের একটা ঘটনার কথা বলা যায়। তুরস্কে গিয়ে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছিলাম। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত একটা গাড়িতে ছিলাম। চালক কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। ওর আচরণ দেখে আমি গাড়ি থেকে নেমে যাই।’

এক শ’ পেরিয়ে আরো ১৫টি দেশ, চাট্টিখানি কথা নয়। সবগুলোর তালিকা দিতে গেলে প্রতিবেদনের বড় একটি অংশ বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়াবে। আর সব দেশে আসমার অভিজ্ঞতা জানাতে গেলেও দরকার হতে পারে বড় এক কেতাব রচনা করা। তার চেয়ে ভালো ভূমির বৈশিষ্ট্য ধরে ধরে তার কয়েকটা অভিজ্ঞতা জেনে নেয়া।

আসমা জানালেন, মরুভূমি তার কাছে মোহময়। মরুর চিক চিক করা ক্যানভাস, বালিয়াড়ির ঢেউ জাদুর মতো। তিনি বললেন, ‘সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ছিল সাহারা মরুতে। ওখানে পাঁচ দিনের একটা ট্রিপ ছিল। আমাদের সাথে ছিল ১১টি উটের বহর। মাথার ওপর গনগনে সূর্য, নিচে লাল রঙের তপ্ত বালু। অসাধারণ এক অনুভূতি। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা করে উটের পিঠে করে চলতাম। এক দিন বালুঝড় আমাদের তছনছ করে দিতে চাইল। শরীরে উড়না পেঁচিয়ে কোনোরকম বাঁচতে পেরেছিলাম। তবু চোখে মোটা মোটা বালু ঢুকে গিয়েছিল। এমন পরিপুষ্ট বালু চোখের ভেতর ব্যাপক যন্ত্রণা দেয়।’

আজমেরী জানালেন, সাহারা মরুতে নিজেকে ইবনে বতুতা মনে হয়েছিল তার।

মরুর পর আসা যাক বরফের কাছে। শুনুন তার থেকেই, ‘আমি বেশ কিছু দিন শিকাগোতে থাকতাম। প্রতি সকালে হাঁটতে বের হতাম। অক্টোবর-নভেম্বরে মাঝে মধ্যে হাঁটু পর্যন্ত তুষার জমে যেত। চলতে কষ্ট হতো। তবে অনুভূতি ছিল দারুণ। একবার লন্ডন থেকে প্যারিসে যাওয়ার সময় বরফ আমার পথ আগলেছিল। পরের সকালে প্যারিস পৌঁছতে পেরেছিলাম। তখন আমার পুরো শরীর তুষারঢাকা সাদা।

আসমা জানালেন, তার আরো একটি রোমাঞ্চকর সময়ের কথা। সেই সময়টা কেটেছিল মঙ্গোলিয়ায়। দেশটা যাযাবরদের। রাজধানী উলানবাটোর ছাড়া প্রায় সবটাজুড়েই যাযাবরদের মতোই বসতি। দেশের লোকেরা পশু চরায়। থাকে দুই রকম বাড়িতে। শীতে এক রকম। গ্রীষ্মে অন্য রকম। পশুর জন্য তৃণভূমি পেতে যাযাবরদের রকম পাল্টাতে হয়।

তিনি বললেন, ‘মঙ্গোলিয়ায় চেঙ্গিস খানের সাম্রাজ্যের গুপ্তধন দেখতে গিয়েছিলাম। ওখানে যেতে হয় ঘোড়ায় করে। মঙ্গোলিয়ানরা কিন্তু ঘোড়ার মাংসও খায়।’
এমন করে নিজের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শোনান কাজী আসমা আজমেরী। এসব মন দিয়ে শোনে স্কুল-কলেজের কিশোর-তরুণরা। এরা আসমার গল্প থেকে রসদ নিয়ে নিজেদের স্বপ্ন তৈরি করে।

আসমা বিশ্বাস করেন, এক দিন এই স্বপ্নবাজরাই দুনিয়া জয় করবে।


আরও খবর



ঈদে সড়কে মৃত্যু বেড়েছে, মোটরসাইকেলেই বেশি

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ |

Image

ঈদে প্রতিবারই সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এবারের ঈদুল ফিতরেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদের দিনসহ গত তিন দিনে সড়কে প্রাণহানির পরিমাণটা অর্ধশত ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে উঠতি বয়সী তরুণ এবং যুবকরা ঈদের ছুটিতে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এক মোটসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তিনজন পর্যন্ত মারা যাওয়ার খবর আসছে। যারা মারা যাচ্ছেন তাদের বয়সও বেশি নয়। স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ছাত্রও রয়েছেন। ঈদের ছুটিতে মোটরসাইকেলে ঘোরাঘুরির প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে যায়।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ঈদের দিন সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বেশির ভাগই মোটরসাইকেল আরোহী।নিহতদের মধ্যে পঞ্চগড়ে চারজন, খাগড়াছড়িতে তিনজন, নরসিংদীতে দুইজন, ঢাকায় একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, যশোরে একজন, নেত্রকোনায় তিনজন, চুয়াডাঙ্গায় একজন এবং নড়াইলের দুইজন রয়েছেন।

ঈদের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার এবং আজ তৃতীয় দিন শনিবারও সারাদেশে বেশ কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।

এসব দুর্ঘটনায় শুধু নিহতই নয়, আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করার সংখ্যাটিও বেশ উদ্বেগজনক। শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত মোট তিন দিনে শুধু জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানেই (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিয়েছেন মোট ৪৫৪ জন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সংখ্যাটিও অনেক। এদের মধ্যে বেশির ভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত তরুণ-যুবক।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের আবাসিক চিকিৎসক তপন দেবনাথ গণমাধ্যমকে বলেন, সাধারণত ঈদ ও ঈদ পরবর্তী সময়ে এই হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি থাকে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে আসা রোগীদের বেশিরভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত। জরুরি ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় অনেককে বারান্দায় চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

এই চিকিৎসকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঈদের দিন জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ২৫৬ জন। যাদের মধ্যে ৭৬ জন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। আর শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ১৪০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৫০ জন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত। বেশিরভাগই ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঈদের ছুটিতে রাস্তাঘাট এমনিতেই ফাঁকা হয়ে যায়। এই সুযোগে মোটরসাইকেল চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ফলে দুর্ঘটনার শিকার হন। পাশাপাশি নিয়ম-নীতি না মানা, কমবয়সি কিশোর ও তরুণদের অনিয়ন্ত্রিতভাবে চালানোর কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। দল বেঁধে প্রতিযোগিতা ছাড়াও ট্রাফিক তদারকির অভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শীর্ষে বাংলাদেশ। প্রতি ১০ হাজার মোটরসাইকেলের মধ্যে বাংলাদেশে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশের পর কম্বোডিয়ায় ১১ দশমিক ৯, লাওসে ১১ দশমিক ৫, থাইল্যান্ডে ১১ দশমিক ২, ভারতে ৯, মিয়ানমারে ৮ দশমিক ৬, মালয়েশিয়ায় ৪ দশমিক ৪, ভিয়েতনামে ৪ দশমিক ১, ইন্দোনেশিয়ায় ২ দশমিক ৫ এবং ভুটানে ২ দশমিক ১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ঈদের সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের মোট দুর্ঘটনার অর্ধেকের বেশিই মোটরসাইকেলে ঘটে থাকে। তার মধ্যে ঈদের সময় সবচেয়ে বেশি ঘটে। এই সময় অনেকেই মহাসড়কে যানজট এড়াতে বাড়ির পথে যাত্রা করেন। দেখা যায়, সাধারণ সময়ে হয়তো মোটরসাইকেলে একজন থাকেন; কিন্তু ঈদের সময় স্ত্রী, বাচ্চা এবং নিজে থাকার পরেও পেছনে একটা কাপড়ের ব্যাগ থাকে। যেটা ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করে। এই কারণেই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে।


আরও খবর



ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ |

Image

ভারতে শুরু হয়ে গেল ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হওয়া এ ভোট চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দেশটির প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ৪৭ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পছন্দের জনপ্রতিনিধিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

প্রথম দফায় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ১০২ লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর দুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি রয়েছে। প্রথম দফার ভোটে প্রার্থীর সংখ্যাও ছাড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি।

ভারতের নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে, এবার নথিভুক্ত ভোটারের সংখ্যা ৯৬ কোটি ৮৮ লাখ। এর মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন ৪৭ কোটি ১০ লাখ এবং পুরুষ ভোটার ৪৯ কোটি ৭০ লাখ।

৪৮ হাজার ট্রান্সজেন্ডার ভোটার ছাড়াও এবার শতবর্ষী ভোটারের সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি। একইসঙ্গে ৮৫ বছরের বেশি ভোট দাতার সংখ্যাও প্রায় ৮২ লাখ।

এছাড়াও ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ ভোটারের সংখ্যা ২১ কোটি। সবমিলিয়ে নির্বাচনকে উৎসবে পরিণত করতে প্রস্তুত দেশটির সাধারণ জনগণ। ১০ লাখ ৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে ৫৫ লাখ ইভিএমের মাধ্যমে ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভারতের জনগণ।

ভারতজুড়ে এবার ২ হাজার ৬৬৬টি নথিভুক্ত রাজনৈতিক দল লোকসভা ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে বিজেপি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, ন্যশানাল পিপলস পার্টি, বহুজন সমাজবাদি পার্টির মতো জাতীয় রাজনৈতিক দল যেমন রয়েছে; তেমনই রয়েছে মমতার তৃণমূল, লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মতোর শক্তিশালী প্রদেশিক দলও।

এদিকে, নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও রাজ্য পুলিশ সিআইএসএফসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। শুধু তাই নয়, আকাশপথে এবং ড্রোনের সাহায্যেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।


আরও খবর



নওগাঁয় ধান কাটতে গিয়ে হিটস্ট্রোকে এক জনের মৃত্যু

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে মাঠে ধান কাটতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টার দিকে নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় শিমুলিয়া গ্রামের মাঠে ধান ক্ষেতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত দুলাল উদ্দিন সরদার ঐ গ্রামের কশরত আলীর ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুলাল উদ্দিন সরদার সকাল ৮টার দিকে তার বাড়ির কাছে মাঠে ধান কাটতে যান। সকাল পৌনে ৯টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাঠে ধানের ক্ষেতে পড়ে যান। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মাঠ থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রওশন হ্যাপি বলেন, কৃষক দুলালকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আমাদের ধারণা, প্রচণ্ড গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে তিনি মাঠের মধ্যেই মারা গিয়েছিলেন। তবে তার লো প্রেশার ছিল বলেও জানিয়েছেন স্বজনরা।

এদিকে, গত তিন সপ্তাহ ধরে চলমান তাপদাহে জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার জেলার বদলগাছি আবহাওয়া অফিসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ বুধবার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরও খবর



জারি হতে পারে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ |

Image

গাজায় একের পর এক যুদ্ধাপরাধ ও মানবিকতাবিরোধী অপরাধের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ত এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে নেদার‌ল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

ইসরায়েলের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি। সম্ভাব্য সেই পরোয়ানা এড়াতে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে বলেও এনবিসিকে বলেছেন ওই সরকারি কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে আইসিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে এনবিসির সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, সত্যিই চলতি সপ্তাহে নেতানিয়াহু, গ্যালান্ত ও অন্যান্য ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হচ্ছে কিনা।

জবাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এক মুখপাত্র বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে একটি মুক্ত ও অবাধ তদন্ত পরিচালনা করছি। এই কাজের সুবিধার্থে যে কোনো পদক্ষেপ আমাদের নিতে হতে পারে; কিন্তু যেহেতু এটি তদন্তাধীন বিষয়, তাই এ প্রসঙ্গে এখনই বিস্তারিত কিছু বলার সুযোগ নেই।

২০১৪ সালে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ২০১৭ সালে তার তদন্ত শুরু করেছিল আইসিসি। পরে করেনা মহামারির কারণে তদন্তে বাধা পড়ে। মহামারির ধাক্কা কেটে যাওয়ার পরও তা আর শুরু হয়নি।

কিন্তু গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলা ও তার জেরে গাজায় অভিযান শুরুর পর সেই তদন্ত ফের পুনরুজ্জীবিত করে আইসিসি। গত ডিসেম্বরে গাজা-ইসরায়েল সীমান্ত ঘুরে গেছেন আইসিসির শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খান। সেই সফরে পুরনো সেই তদন্ত ফের শুরুর তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, এবারের তদন্ত হবে গতিশীল, কঠোর এবং পুরোপুরি সাক্ষ্যপ্রমাণ নির্ভর।

ইসরায়েল কিংবা যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের কোনোটিই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বীকৃতি দেয় না। আইসিসি যদি সত্যিই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, তাহলে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রে নেতানিয়াহু কিংবা ইয়োয়াভ গ্যালান্তের গ্রেপ্তার হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

তবে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়। তাই পরোয়ানা জারি হলে ইউরোপের দেশগুলোসহ বিশ্বের অনেক দেশেই সফর বন্ধ করতে হবে নেতানিয়াহু, গ্যালান্ত ও আইডিএফের সামরিক কর্মকর্তাদের। কারণ পরোয়ানা বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত সেসব দেশে গেলে গ্রেপ্তার হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে তাদের।

সূত্র : এনবিসি


আরও খবর



আল-আকসায় ঈদ জামাতে মুসল্লিদের ঢল

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো ফিলিস্তিনেও ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে আজ বুধবার। তবে অন্যান্য সব দেশে ঈদ উৎসবে পরিণত হলেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সেটি অবাস্তব। ঈদের রাতেও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন। স্বজনদের দাফনের মাধ্যমে গাজায় কাটছে ঈদ। ঈদের নামাজে আল আকসা মসজিদে সমবেত হন হাজার হাজার মুসলিম।

ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে নুসিরাত ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই শিশু। ইসরায়েলের গণহত্যা থেকে ছয় মাস বেঁচে থাকা গাজার বাসিন্দা আবুবকর বলেন, 'এবার ঈদ হবে আমাদের আরও প্রিয়জনকে কবর দেওয়ার মধ্য দিয়ে।' খবর আল জাজিরার ও মাকতুব মিডিয়ার।

আবুবকর বলেন, 'অপুষ্টির কারণে আরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে, আরও বেশি যুদ্ধে আহত হচ্ছে। প্রতিদিন আরও বেশি লোক মারা যাচ্ছে।পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'বাড়িতে বোমা ফেলা হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় আঘাত করা হচ্ছে। রাফায় স্থল আক্রমণ করা হতে পারে এ নিয়ে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।

মধ্য গাজার ফিলিস্তিনি যুবক জানান, এবারের ঈদের কোনো মানে নেই। তার কথায়, 'এটা শুধু দুঃখের। এটা শুধুই অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং বিষাদময়। আমরা উদযাপন করতে পারি এমন কিছু নেই।'

এরপরও আবুবকররা আশা দেখছেন যে, এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের অবসান হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঈদুল ফিতরের বার্ষিক শুভেচ্ছায় গাজা এবং অন্যত্র মুসলমানদের উপর সহিংসতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি বলেন, 'আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে যে গাজা, সুদান এবং আরও অনেক জায়গায়, সংঘাত ও ক্ষুধার কারণে মুসলিমরা সঠিকভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবে না।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে রয়েছে অন্তত ৮ হাজার মানুষ।


আরও খবর