নিজস্ব প্রতিবেদক::
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শোক দিবস পালন করায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের শিক্ষক, সিনেট সদস্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.আ.ক.ম.জামাল উদ্দীনকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার দাবিতে তার অফিস কক্ষ বুধবার সকালে (২১ আগস্ট) ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে তালা মেরে দেয়।
এতে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র, মার্কস, বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, ফাইনাল ও মিট-টার্মের উত্তরপত্র, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্র, মার্কস, ব্যাক্তিগত সার্টিফিকেট সমূহ, ব্যাংক ডকুমেন্টস কার্ড, টাকা-পয়সা ও ল্যাপটপ সহ মূল্যবান ব্যবহার্য্য সামগ্রী খোয়া যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।
তারা বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার পদত্যাগের দাবীতে তার কক্ষেও তালা মেরে দেয়। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ৪ দফা দাবীতে বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে বিভাগীয় অফিস থেকে বের করে দিয়ে সকল কলাপসিবল গেটসমূহ তালাবদ্ধ করে সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২৪ উপলক্ষে পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী ১৪ই আগস্ট রাত ৯টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ.ক.ম জামাল উদ্দীন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে মোমাবাতি প্রজ্জলনের জন্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের মাথায় পৌছালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা দেশীয় অস্ত্রসহ তাকে এবং তার সাথে থাকা নেতাকর্মীদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে অতর্কিত হামলা চালায়।
আনুমানিক রাত ৯টা ১০ মিনিটে তাদের হাত থেকে প্রানভয়ে বাঁচার জন্য অধ্যাপক জামাল দৌড় দেন। সেসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা তাকে ধাওয়া করে কয়েক দফা মারতে মারতে রাসের স্কয়ারের সামনে থেকে স্কয়ার হাসপাতালের মাঝামাঝি পর্যন্ত নিয়ে যায়। সেখানে চতুরদিক থেকে অধ্যাপক জামালকে ঘিরে আবারও উপর্যুপরি মারতে থাকে। এতে তিনি রক্তাক্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে মৃত ভেবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন এবং কাছে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে অধ্যাপক জামালকে ফেলে যায়।
এসময় স্থানীয় জনতা তাকে উদ্ধার করে রিক্সায় করে পশ্চিম রাজা বাজারের একটি বাসায় নিয়ে যান। সেখানে ওই বাড়ির দারোয়ান প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে জ্ঞান ফেরান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ইতোমধ্যেই এই ঘৃণিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে।