
মোঃআবু কাওছার মিঠু ঃ
দাবিকৃত টাকা দিতে না পারলে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কয়েদিদের উপর অমানষিক ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালত থেকে বন্দিদের জেলখানায় প্রেরণ করা পর থেকেই তাদের পড়তে হয় নানা অনিয়মে। বিনামূল্যের খাবার দেওয়া হয় না। তাও আবার নিম্নমানের খাবার। টাকা ছাড়া কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ডে থাকতে দেওয়া হয় না। টাকা ছাড়া ঘুমানোর জন্য সিট দেওয়া হয় না। স্বজনদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে হয় অতিরিক্ত টাকা খরচ করে। নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে এসকল অনিয়মই যেন এখন নিয়ম।
শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান নারায়ণগঞ্জ জেলে আসার পর থেকেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সন্ত্রাসী আরমান নারায়ণগঞ্জ জেলার ও জেলসুপারের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে কারাগারের সকল অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কারা কেন্টিনের ব্যবসা, সিট বাণিজ্য, ওয়ার্ড বাণিজ্য ও মোবাইল ফোন বাণিজ্যে তারা মেতে উঠেছে। তাদের সহযোগিতা করছে কয়েদি পিচ্ছি সুজন, জহিরুল ইসলাম, ছোট সাহাবাজ, সেলিম, সিদ্ধিরগঞ্জের আলোচিত খোকন হত্যা মামলার আসমি হালিম ও রমজান নিয়ন্ত্রণ করে দুটি ওয়ার্ড। কারাগার কেন্টিনে খাদ্য দ্রব্যের দাম বেশি আদায় করা হচ্ছে। এসকল অতিরিক্ত টাকার জোগান দিতে কয়েদিদের পরিবারের সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কেউ কেউ আবারো অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
কয়েদি ,,,,,,,বলেন, কয়েদিদের সপ্তাহে ১দিন ১০টাকার বিনিময়ে ১০ মিনিট মোবাইল ফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। তবে যেকোন সময় ৩ মিনিট ১০০ টাকা হারে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চক্রটি কয়েদিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে কারাগারে নতুন বন্দি প্রবেশ করলে ১৫ দিন কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ডে থাকার কথা। কিন্তু টাকা আদায় করে তাদেরকে ওয়ার্ডে বদলি করা হচ্ছে। আবার ২/৩ হাজার টাকা আদায় করে নতুন বন্দিদের দ্বিতীয় দিনেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে বদলি করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসী আরমানের ইশারায় চলছে এখন নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার। প্রতিবাদ করলেই হামলা কিংবা অন্য কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নির্ভিগ্নে আরমান ঘুরে বেড়ান জেলা কারাগার। আদায়কৃত টাকা রাতে ভাগ বাটোয়ারা হয়। অবৈধভাবে তার সঙ্গে সব সময় থাকে মোবাইল ফোন।
কারা বিধি অনুযায়ী জেলের নিরাপত্বার বিঘ্ন ঘটে এরকম হাজতীদের ২৪ ঘণ্টা বন্দি থাকার কথা। কিন্তু সন্ত্রাসী আরমান রাত ৮টা পর্যন্ত পুরো কারাগার চষে বেড়ায়। প্রত্যেক বন্দিকে দৈনিক ১৪৫ গ্রাম ডাল দেয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় সর্বোচ্চ ৪০ গ্রাম। এছাড়াও সকল খাদ্যদ্রব্যই চড়া দামে কিনতে হয়।
বন্দিদের জামিন হলেই নারায়ণগঞ্জ ডেপুটি জেলার সোহরাবকে দিতে হয় ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। টাকা না দিলেই তার উপর চালানো শারিরীক নির্যাতন। তিনি ব্যক্তিগত দামি গাড়ি ব্যবহার করেন।
নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে সদ্য জামিনপ্রাপ্ত আসামী মোঃ মাসুদ মিয়া বলেন, কারাগারের ভিতরে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। টাকা না দিলেই কয়েদিদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। খাবারের মান নিন্ম মানের দাম বেশি।
এব্যাপারে নারায়ণণগঞ্জ কারাগারের জেলার মাহবুবুর রহমান বলেন, এসকল অভিযোগ মিথ্যা। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ কারাগার সরকারি সঠিক নিয়মে পরিচালনা করা হচ্ছে। এখানে কোন অনিয়ম নেই।