Logo
শিরোনাম

রাশিয়ার দাবিগুলো খুবই বাস্তবসম্মত : নমনীয় জেলেনস্কি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৭ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

রাশিয়া দাবি করেছে যে, ইউক্রেনের সাথে চুক্তির কিছু অংশ নিয়ে একটি শান্তি চুক্তি করা সম্ভব হতে পারে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন যে, ইউক্রেনের জন্য ‘নিরপেক্ষ অবস্থা’ এখন টেবিলে রয়েছে। ল্যাভরভ রাশিয়ান চ্যানেল আরবিকে টিভিকে বলেছেন, ‘নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ অবস্থা গুরুত্বের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে’। ‘এমন কংক্রিট ফর্মুলেশন রয়েছে যা আমার দৃষ্টিতে একমত হওয়ার কাছাকাছি’। তিনি যোগ করেছেন যে, আলোচনায় একটি ‘ব্যবসার মত চেতনা’ও উঠে আসছে। মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বক্তব্য ‘ইউক্রেনকে মেনে নেওয়া উচিত যে, তারা ন্যাটো নিরাপত্তা জোটের সদস্য হবে না’ আসার পর তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

এক ভিডিও বার্তায় মি. জেলেনস্কি বলেছিলেন, ‘ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য নয়। আমরা সেটা বুঝি। আমরা কয়েক বছর ধরে শুনেছি যে, দরজা খোলা ছিল, কিন্তু আমরা এটাও শুনেছি যে, আমরা যোগ দিতে পারিনি। এটি একটি সত্য এবং এটি অবশ্যই স্বীকৃত হবে’।
মি. ল্যাভরভ অবশ্য সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, ইউক্রেনের সাথে আলোচনা সহজ ছিল না, কিন্তু বলেন যে, ‘একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর কিছু আশা ছিল’। শত্রæতা বন্ধ করার আগে মস্কো অন্যান্য বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনে রুশভাষী জনগণের অধিকার, দেশের নিরস্ত্রীকরণ এবং পূর্ব ইউক্রেনের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘যুদ্ধের তিন সপ্তাহে এসে রাশিয়ার দাবিগুলো খুবই বাস্তবসম্মত হয়ে গেছে। ‘আলোচনার জন্য আরো সময় দরকার, আর এ আলোচনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চলতে থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আলোচনা চলতে থাকবে, আমাকে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু খুবই বাস্তবসম্মত মনে হচ্ছে। কিন্তু ইউক্রেনের স্বার্থরক্ষার মতো সিদ্ধান্তে আসতে আরো সময় দরকার।’ পাশাপাশি ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র, আকাশসীমায় নো-ফ্লাই জোন ও রাশিয়াকে শাস্তি দিতে দেশটিকে আরো অবরোধ দেয়ার আহŸান জানান জেলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রুশ সেনারা ইউক্রেনে অগ্রসর হতে পারেনি, তবে শহরগুলোর ওপর তাদের গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আগের থেকে অনেকটা নমনীয় হয়ে এসেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা ত্যাগ করেছেন। এবার জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা এখন অনেক বেশি বাস্তবসম্মত জায়গায় এসেছে। তবে আলোচনা সফল হতে এখনো কিছুটা সময় লাগবে।

ওদিকে রাশিয়ার অভিযান ও তীব্র সঙ্ঘাতের মধ্যেই ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা দিতে ট্রেনে করে মঙ্গলবার কিয়েভ সফর করেছেন পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও সেøাভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মোরাভিয়েৎস্কি সামাজিক মাধ্যমে ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এখানে, এ যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভে, ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। এখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়ছেন। আমাদের ভবিষ্যৎ একটা সরু সুতোর ওপর ঝুলছে।’ এই তিন নেতাই ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতিনিধি হিসাবে গেছেন। তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন। পোল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী কাচয়েনস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি, ইউক্রেনে একটা শান্তি মিশন জরুরি। ন্যাটোর একটা আন্তর্জাতিক কাঠামো আছে। এ বাহিনীর নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা থাকবে এবং তা ইউক্রেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাজ করবে।’ তার বক্তব্য, ‘এটা হবে শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য মিশন। তারা মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেবে। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী তাদের রক্ষা করবে।’

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন, জার্মানির চ্যান্সেলার শলৎস আগে জানিয়েছেন এবং ন্যাটোর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, তারা ইউক্রেনে সেনা পাঠাবেন না। ইউক্রেনে আসার আগে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মোরাভিয়েৎস্কি টুইট করে বলেছিলেন, ‘ইউরোপ যেন ইউক্রেনের স্বাধীনতার গ্যারান্টি দেয়। তারা যেন ইউক্রেনের পুনর্গঠনে সাহয্য করে।’ পোল্যান্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই নেতারা ইইউ-র তরফে সাহায্যের প্যাকেজও ইউক্রেনকে দেয়ার কথা জানাবেন। কিয়েভে তাদের উপস্থিতির অর্থই হলো, ইউক্রেনকে সমর্থনের বার্তা দেয়া। তার পাশাপাশি প্যাকেজের কথাও তারা ঘোষণা করবেন।

চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী ফিয়ালা টুইট করে বলেছেন, ‘এই সফরের উদ্দেশ্য হলো, ইউক্রেন এবং তাদের স্বাধীনতার প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুস্পষ্ট সমর্থন জানানো।’ সেøাভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানসাও টুইট করে বলেছেন, ‘আমাদের এই মহাদেশে ইউক্রেনের থেকে বড় ইউরোপীয় দেশ আর নেই। ইউক্রেনের মানুষ যেভাবে জীবন দিয়ে ইউরোপীয় মূল্যবোধ রক্ষা করছেন তার প্রশংসাও করতেই হবে।’

জার্মানির চ্যান্সেলর শুলৎস এ তিন প্রধানমন্ত্রীর ইউক্রেন সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দিক থেকে চেষ্টা ও সাহায্য করাটা ভালো।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ইউক্রেনকে সাহায্য করার স্পষ্ট রাজনৈতিক নীতি নিয়েছে।’ তার মতে, ‘এখন জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলা যেমন দরকার, তেমনই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও কথা বলে তাকে যুদ্ধবিরতির জন্য উৎসাহ দেয়া দরকার।’ ইইউ-র ২৭টি সদস্য দেশ ইউক্রেনের সেনার জন্য একশ কোটি ইউরোর সামরিক সাহায্য দেয়ার ঘোষণা করেছে।

আরো নমনীয় হয়েছেন জেলেনস্কি : গত বেশ কিছুদিন ধরেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে সরাসরি আলোচনার ইচ্চা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। মঙ্গলবার তিনি তার শেষ ফেসবুক ভিডিও ভাষণে বলেছেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে জয় পেতে গেলে ইউক্রেনের সব নাগরিককে কাজ করতে হবে। যে আলোচনাকারী দল রাশিয়ার সঙ্গে এখন কথা বলছেন, তাদেরও কাজ করে যেতে হবে।’ এই আলোচনা বুধবারও চলে। আলোচনাকে এখন অনেক বেশি বাস্তবসম্মত বললেও জেলেনস্কি তার কোনো বিশদ ব্যাখ্যা দেননি।
রাশিয়া দাবি করেছে, ইউক্রেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে হবে, তারা ন্যাটোতে যোগ দেবে না। এছাড়া দনেৎস্ক, লুহানস্ক ও ক্রাইমিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে ন্যাটোকে। জেলেনস্কি এর আগে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তিনি আর ন্যাটোতে যোগ দিতে ইচ্ছুক নন।

জেলেনস্কি বুধবার মার্কিন কংগ্রেসেও ভিডিও-ভাষণ দেন। এই নিয়ে একমাসের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসে এটা তার দ্বিতীয় ভাষণ। এর পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে ৮০ কোটি ডলারের অতিরিক্ত সাহায্যের কথা ঘোষণা করতে পারেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ঘোষণা হলে, এক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনকে একশ কোটি ডলারের সাহায্য দেয়ার কথা জানাবে আমেরিকা। এদিকে মার্কিন সেনেট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সর্বসম্মতভাবে যুদ্ধাপরাধী বলে ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, পুতিন যে ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা নিয়ে হেগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিন্যাল কোর্টের তদন্ত করা উচিত।
তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে : ইউক্রেন সঙ্কট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে তুরস্ক। এর মাধ্যমে ভ‚-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যেই চলমান সঙ্কটের সমাধান খুঁজে বের করার জন্য ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার সাথে সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু রাশিয়া এবং ইউক্রেন সফর করবেন। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। আঙ্কারায় প্রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাভুসোগলুর বুধবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কো সফর করার কথা, তারপর যুদ্ধের একটি ক‚টনৈতিক সমাধান খোঁজার জন্য আমাদের প্রচেষ্টার সুযোগের মধ্যে ইউক্রেনে যাবেন।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ তুরস্কে অনুষ্ঠিত আন্টালিয়া ক‚টনীতি ফোরামের সাইডলাইনে কাভুসোগলু রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে একটি যুগান্তকারী ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করার কয়েকদিন পর এটি আসে। আন্টালিয়া ক‚টনীতি ফোরাম এবং তুরস্কে বিশ্ব নেতাদের সাম্প্রতিক সফরের বিষয়ে, এরদোগান বলেছিলেন যে, তার দেশ ক‚টনীতির একটি কেন্দ্র হিসাবে তার অবস্থানকে আরো উন্নত করছে। ‘আমি বিশ্বাস করি আন্টালিয়া ক‚টনীতি ফোরাম অংশগ্রহণকারীদের প্রোফাইল, সেখানে প্রদত্ত বার্তা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়নের প্রতি আমাদের দেশের মনোভাব উভয়ের ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম,’ তিনি বলেছিলেন এবং ফোরামে অবদানকারী সকলকে ধন্যবাদ জানান।

‘রিকোডিং ক‚টনীতি’ থিমের অধীনে ১১-১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ফোরামে ৩ হাজার জনেরও বেশি লোক অংশগ্রহণ করেছিল। আনাদোলু এজেন্সি (এএ) ছিল ইভেন্টের বৈশ্বিক যোগাযোগ অংশীদার, যা ১৭টি রাষ্ট্রপ্রধান, ৮০ জন মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার ৩৯ জন প্রতিনিধি সহ ৭৫টি দেশের অংশগ্রহণকারীদের একত্রিত করেছিল। তুরস্ক এটিকে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগের অবসানের দায়িত্ব হিসাবে দেখে এবং এই বিষয়ে ক‚টনৈতিক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সচেষ্ট হয়েছে।

নরওয়েতে সামরিক মহড়া শুরু ন্যাটোর : ইউক্রেনে হামলার ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে রাশিয়া। ক্রমে আরো ভয়ানক হচ্ছে পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে নরওয়েতে শুরু হয়েছে ন্যাটো গোষ্ঠীর সামরিক মহড়া। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ২৮টি দেশ ‘কোল্ড রেসপন্স ২০২২’ নামের এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ১৪ মার্চ ন্যাটো সামরিক জোটের ৩০ হাজার সেনা, ২০০টি বিমান ও ৫০টি যুদ্ধজাহাজ শুরু করেছে মহড়া। বিবিসি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধের আবহেই এই মহড়া ঘিরে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি এই মহড়ার মাধ্যমেই প্রচ্ছন্ন চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ন্যাটো? তেমন সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন সামরিক জোটের শীর্ষকর্তারা।


সূত্র : এপি, রয়টার্স, বিবিসি, ডেইলি সাবাহ


আরও খবর



তাপদাহ পেরিয়ে এলো 'মধুমাস'

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

নানান ফলের সমাহার নিয়ে এসেছে জ্যৈষ্ঠ মাস। হরেক রসালো ফলের মৌ মৌ ঘ্রাণে এখন প্রকৃতি উতলা।

বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী, বৈশাখের বিদায়ের মধ্য দিয়ে আজ বুধবার (১৫ মে) শুরু হলো জ্যৈষ্ঠ। যা লোকমুখে মধুমাস বলেই পরিচিত। যদিও বাংলা অভিধানে চৈত্রকেই মধুমাস বলা হয়। তাছাড়া মধু ফলের মধ্যে নয়, ফুলের মধ্যে থাকে। কিন্তু অভিধানের সে মধুমাস অভিধানেই থেকে গেছে। ফলপ্রিয় বাঙালি জ্যৈষ্ঠকেই মধুমাস বলে চিনে আসছে। তাদের মুখে, জিভে ও বিশ্বাসে জ্যৈষ্ঠই যেন মধুমাস।

জ্যৈষ্ঠের আগমনে এখন গাছে গাছে নানা জাতের বাহারি সুস্বাদু ফল। অবশ্য এরই মধ্যে শহর কিংবা গ্রামের বাজারগুলোতেও দেখা মিলছে হরেক ফলের। পাকা ফলের মধুর ঘ্রাণ আর মৌমাছির গুঞ্জরনে মুখরিত চারদিক। জ্যৈষ্ঠে ঘরে ঘরে দেখা যাবে ফল উৎসবের আমেজ। একে অন্যের বাড়িতে উপহার হিসেবেও পাঠাবে ফল।

খুলনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গার গাছে গাছে পেকে আছে আম। কোনোটা সিঁদুরে, কোনোটা হলদে, কোনোটা উভয়েরই মিশ্রণে রাঙানো। একেক আমের একেক নাম। ওদিকে পেকেছে লিচু। লিচুর গাছে দিনে পাখি আর রাতে বাদুড়ের কোলাহল। পাকা জামও জিভে আনছে জল। সেই জামের মধুর রসে মুখ রঙিন করার স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছে।

এছাড়া জামরুল, আনারস, করমচা, আতা, তরমুজ, ফুটি, বাঙ্গি, বেল, কাঁচাতাল, জাম্বুরা, কাউফল, গোলাপজাম, কামরাঙা, লটকনসহ হরেক ফল জাগিয়ে তুলেছে বাঙালির রসনাবিলাসকে। পুষ্টিকর এসব ফলের প্রাচুর্য জ্যৈষ্ঠকে করেছে প্রকৃতির অনন্য মাস।

এই জ্যৈষ্ঠে গাছ থেকে নামানো তাজা ফলের সুবাস ছড়াবে গ্রামের হাটবাজারে। শুধু হাটবাজার নয়, শহরের ফলের দোকানেও দেখা মিলবে বাহারি ফলের সাজানো পসরা।

যদিও অনেক অসাধু বিক্রেতা ফলকে তাজা দেখাতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করে এরই মধ্যে কিছু ফল বাজারে তুলেছেন। এ অপতৎপরতা বন্ধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের সিনিয়র কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, মধুমাসের মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল মিশে আছে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে। দেশীয় ফল আমাদের সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐতিহ্যের বড় একটি অংশ। জ্যৈষ্ঠ মাসের ফল পরিবেশের যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তেমনি স্বাদ ও পুষ্টিতেও অনন্য।

তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় পুরোপুরি পুষ্ট হওয়ার আগেই এসব ফল হারভেস্ট (পেড়ে বাজারজাত) করছেন। ফলে স্বাদ ও পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভোক্তা। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক বেঁধে দেওয়া সময়ে হারভেস্ট (পাড়া ও বাজারজাত) করার আহ্বান করা হয়েছে।


আরও খবর



ঢাকায় পৌঁছেছেন ডোনাল্ড লু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লু। মঙ্গলবার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রীলংকান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় পৌঁছান।

ডোলান্ড লু'র দুইদিনের এই সফরে মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গেও তার বৈঠক হতে পারে। মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক পাশাপাশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সঙ্গে বসার কথা রয়েছে। যেখানে আলোচনা হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম অধিকার, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়।

এছাড়া মঙ্গলবার রাতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসায় নৈশভোজে অংশগ্রহণ করতে পারেন। পরদিন বুধবার (১৫ মে) সকালে পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

এর আগে ডোনাল্ড লুর সফর সম্পর্কে গত ৯ মের এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ডোনাল্ড লু ১০-১৫ মে ভারত, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ সফর করবেন। তার সফর এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করবে এবং মুক্ত-উন্মুক্ত ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মার্কিন সমর্থনের কথা তুলে ধরবে।

এতে আরও বলা হয়, প্রথমে ভারতের চেন্নাই সফর করবেন লু। সেখানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে কনস্যুলেট কর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব আরো গভীর করতে শ্রীলংকা সফর করবেন। সেখানে তিনি শ্রীলংকার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের পাশাপাশি একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাইয়ে ডোনাল্ড লু সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সফরে তিনি মার্কিন বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন। তার আগে গত বছর ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন লু। ওই সফরে সম্পর্কোন্নয়নের ঘোষণা দিয়ে ঢাকা ছেড়েছিলেন তিনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এটি হবে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।


আরও খবর



ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওতে বন্ধ হচ্ছে বাইক

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএ। এ সময় মাত্রার অতিরিক্ত গতি, ওভার ট্রাকিং ও হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে যাত্রীবাহী বাসের চালক ও প্রাইভেট কারসহ ১১টি যানবাহনকে ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মহাসড়কের তিনটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শিফা নুসরাতসহ হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। এ সময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার ও হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, মহাসড়কের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপে যাচ্ছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিগগিরই সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে মহাসড়কে। এছাড়া প্রথম দিনের অভিযানে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে যাত্রী ও পথচারীদের অনীহা ও যানবাহনের ওভার ট্রাকিংসহ অতিরিক্ত গতিতে চলাচলের চিত্র চোখে পড়েছে। ফলে দ্রুত এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে যানবাহন ও চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্থায়ীভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 এছাড়া শিগগিরই মহাসড়কের মূল সড়কের মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে, তবে নিয়ম মেনে মহাসড়কের পাশে সার্ভিস লেনে চলতে পারবে মোটরসাইকেল। কারণ গত এক বছরের মহাসড়কের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী সব থেকে বেশি দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে মোটরসাইকেল চালক ও যাত্রীরা, যার সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশেরও বেশি।

অন্যদিকে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মহাসড়কে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। ফলে শিগগিরই মহাসড়কে হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এছাড়া স্পিডগানের মাধ্যমে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্তে মহাসড়কে বৃদ্ধি করা হচ্ছে হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি।

এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিআরটিএ চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) অতিরিক্ত সচিব নুর মোহাম্মদ মজুমদার ও হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ের আদালত ৪ এর ম্যাজিস্ট্রেট শিফা নুসরাত এসব অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় মহাসড়কে ৯৫ থেকে ১১৫ গতিতে যেসব যানবাহন চলাচল করে সেগুলোকে জরিমানা করা হয়েছে। এতে ১১টি যানবাহন থেকে মোট ২৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কে যানবাহনের দ্রুত গতির কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ফলে অসংখ্য মানুষকে প্রাণহানিসহ পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে এমন জোরালো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


আরও খবর



আগামী সপ্তাহে আবারও তাপপ্রবাহের শঙ্কা

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ |

Image

গত দুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে দেশের অনেক জেলাতেই তাপপ্রবাহ কিছুটা কমার পাশাপাশি বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।

শনিবার দেশের তিনটি বিভাগে (খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর) মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। তবে আগামী সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হয়েছে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক ছিল। তবে পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলার ওপর দিয়ে গতকালও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।

চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলা এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং খুলনা বিভাগের বিভিন্ন অংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ রবিবার ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আজ থেকে দেশের কিছু স্থানে যে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে, তা শেষ হওয়ার পরই বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারতের ওপর দিয়ে আবারও তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে।

আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি। সোমবার ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি হ্রাস পেতে পারে।


আরও খবর



গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না বাংলাদেশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গঙ্গা চুক্তির চেয়ে গত দুই থেকে তিন বছর বেশি পানি পেলেও এবার চুক্তির চেয়ে অনেক কম পানি পেয়েছে বাংলাদেশ। শুকনো মৌসুমে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতুর উজান ও ভাটিতে পদ্মার পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা পরিণত হয়েছে ছোট নদীতে। মৃত্যু ঘণ্টা বেজেছে এই অঞ্চলের সুতা নদী, কমলা নদী, ইছামতি নদী ছাড়াও আরও অন্তত ১৭টি নদীর।

ভারতের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি হয়েছিল সেই ২৮ বছর আগে। এর মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়েছে, পানির চাহিদা বেড়েছে, অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। তাই পদ্মাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং এ অঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে গঙ্গা পানি চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এবারের ফারাক্কা দিবসের প্রাক্কালে এমন দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে নদী গবেষক ও বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নদীকে নদীর মত করে বাঁচতে না দিলে প্রাণ-প্রকৃতি ক্রমেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পৃথিবী। গঙ্গা পানি চুক্তি রিভিউ করে তা বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন গবেষক ও পরিবেশবিদরা।

তাদের মতে, পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পদ্মাসহ সকল শাখা নদী এখন মৃতপ্রায়। ফলে বছরের পর বছর ধরে হুমকির মুখে পড়ে আছে পদ্মার দুই পাড়ের পরিবেশ ও জৈববৈচিত্র। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও হাইড্রোলজি বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতীয় প্রতিনিধি দল এ বছর খরা ও অনাবৃষ্টির ফলে ফারাক্কায় পানির প্রবাহ কমে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন। ঈশ্বরদীর পাকশী পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মায় পানির প্রবাহও কমেছে একই কারণে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে মরুময়তার হাত থেকে রক্ষার জন্য ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩০ বছরের পানি চুক্তি হয়। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী দেব গৌড় ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হায়দ্রাবাদ হাউজে ঐতিহাসিক ৩০ শালা পানি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৩৫ হাজার কিউসেক পানি দেয়ার কথা।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বুধবার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ হাজার ১৬৯ কিউসেক। তার আগের দিন মঙ্গলবার এখানে পানি পাওয়া গেছে ২৬ হাজার ৬৫৬ কিউসেক।

পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন জানান, বুধবার ভারতীয় নদী কমিশনের সদস্য ও নির্বাহী প্রকৌশলী অপর্ভা রাজ ও সুদীপ্তা মাহান্তিসহ ভারতীয় প্রতিনিধি দল পদ্মা নদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সরেজমিনে পানি পরিমাপ করেছেন। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত প্রতিদিন তারা পনির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, পানির প্রবাহ প্রতিদিনই একটু একটু করে বাড়ছে।

ভারতীয় নদী কমিশনের সদস্য ও নির্বাহী প্রকৌশলী অপর্ভা রাজ বলেন, পানি কমের কারণে এখন ফারাক্কা প্রান্তে যে পানি প্রবাহ হচ্ছে তা দুই ভাগে ভাগ করে অর্ধেক বাংলাদেশে দেয়া হচ্ছে।

পরিবেশবিদ ও সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর শাহনেওয়াজ সালাম বলেন, পরিবেশ ও জৈববৈচিত্র এখনো হুমকির মুখে। এসব থেকে রক্ষা পেতে আমার মনে হয় নতুন করে গঙ্গার পানি চুক্তি হওয়া দরকার।

উত্তরাঞ্চলীয় পানি পরিমাপ বিভাগ ও পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ১৯৯৬ সালের চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি দেয়ার কথা। সে অনুযায়ী বর্তমানে আমরা কম পানি পাচ্ছি।


আরও খবর