Logo
শিরোনাম

সাইয়্যিদ থেকে স্যালি, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের করা একটি মামলার গল্প

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ জানুয়ারী 20২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

আরিফুর রহমান, সাংবাদিক ও গবেষক :

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় পুরো দুনিয়ায় ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার এক অন্যতম কেন্দ্র। এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য এক অনন্য তাৎপর্য ধারণ করে।

 মিশরের কায়রোর কেন্দ্রে এক হাজার বছর আগে প্রতিষ্ঠিত আল-আজহার সারা বিশ্বব্যাপী বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশের একটা প্রতীক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত। 

হাজার বছর ধরে সারা বিশ্বের মুসলিম মেজরিটি দেশগুলোতে এই সম্মানের জায়গাটা আল-আজহারকে দেয় কারণ আল-আজহার যেকোন জ্ঞানের নির্মাণ ও প্রচারে কোরআনের শিক্ষার সাথে কখনো আপোষ করেনি। 

গোটা বিশ্বের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি হিসাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের বৌদ্ধিক চেহারা নির্মাণে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছ। পাশাপাশি প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই বিশ্ববিদ্যালয় অসংখ্য ইসলামি স্কলার, ধর্মতাত্ত্বিক এবং চিন্তাবিদ তৈরি করেছে, যেই স্কলারেরা ইসলামী চিন্তাধারার বিকাশে সারা দুনিয়াজুড়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। 

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্বের মধ্যপন্থা ও সহনশীলতার কেন্দ্রস্থল হিসেবে স্বীকৃত।

 এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সব সময়ই একটা ভারসাম্যপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশকে উতসাহ দেন- যা সংলাপ, শিক্ষা এবং বোঝাপড়াকে উত্সাহিত করে। 

কোরআনকে সেন্টারে রেখে মধ্যপন্থার প্রতি আল-আজহারের এই কমিটমেন্টের কারণে বিশ্বব্যাপী চরমপন্থী মতাদর্শ আর অতি উদারপন্থি মতাদর্শের ভারসাম্যের স্থান হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছে আল-আজহার। এই বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী আইনশাস্ত্র এবং ধর্মীয় ফিকাহ শাস্ত্রেরও একটি কেন্দ্র। 

আল-আজহার স্কলারদের ফতোয়া পড়লে এটা কি ফতোয়া নাকি গবেষণাপত্র সেটা আলাদা করা যায় না।  আল-আজহারের এই এপ্রোচ অমুসলিমদের ইসলাম সম্পর্কে বোঝাপড়ার চিরাচরিত ধারণাকেই ভেঙে দেয়।

আজকে আমরা আল আজহারের এক ছাত্রের শরীফ থেকে শরীফার হয়ে যাওয়ার কাহিনী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ঘটনাটাকে কিভাবে ডীল করলো সেই বিষয় নিয়ে আলাপ করবো। 

এক.

আশির দশকের শুরুতে, সাইয়্যিদ আবদুল্লাহ নামের একজন প্র্যাক্টিসিং মুসলমান যুবক আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফ্যাকাল্টিতে পড়ালেখা করতেন। 

তার পড়ালেখা চলাকালীন সময়ে সাইয়্যিদ নিজের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে অস্পষ্টতা ভুগতে শুরু করেন। সমস্যা বাড়তে থাকলে সাইয়্যিদ প্রথমে একজন মনোবিজ্ঞানীর সাথে যোগাযোগ করেন। 

সাইকোলজিস্ট প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে সাইয়্যিদকে বলেন তিনি চরম বিষণ্নতায় ভুগছেন। 

আরও পরীক্ষার পর সাইয়্যিদের মনোবিজ্ঞানী দেখতে পান সাইয়্যিদ মনস্তাত্ত্বিক হারমাফ্রোডিটিজমে (আল-খুনুথা আল-নাফসিয়া) ভুগছেন। 

এরপর এই মনোবিজ্ঞানী তিন বছর ধরে সাইয়্যিদের চিকিৎসা করতে থাকেন, তার পুরুষ যৌন পরিচয় পুনরুদ্ধার করার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য প্রচেষ্টা করতে থাকেন, কিন্তু এতো কিছু করেও কোন লাভ হচ্ছিলো না। সাইয়্যিদ আরও বেশি বিষণ্ণ হয়ে পড়ছিলেন। তার ভেতর আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়তে থাকে। 

এক পর্যায়ে মনোবিজ্ঞানী হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। 

এর পরে, এই সাইকোলজিস্ট সাইয়্যিদকে পরামর্শ দেন তার এই সমস্যার একটাই সমাধান আছে, আর সেটা হচ্ছে অপারেশন করে লিঙ্গ পরিবর্তন করা। 

সমস্যা বাড়তে থাকলে বাধ্য হয়ে সাইয়্যিদ একজন সার্জনের সাথে দেখা করেন, এই সার্জন সাইয়িদকে দ্বিতীয় আরেকজন সাইকোলজিস্টের কাছে রেফার করেন। 

দ্বিতীয় মনোবিজ্ঞানীও পরীক্ষা নিরিক্ষা করে মত দেন সাইয়্যেদের সুস্থতার একমাত্র উপায় অস্ত্রোপচার। 

অবশেষে, আশির দশকের শেষের দিকে সাইয়্যিদ তার লিঙ্গ পরিবর্তন অপারেশন (Sex-Reassignment Surgery) করেন। সার্জারি করে সুস্থ হওয়ার পরপরই তিনি 'স্যালি' নাম ধারণ করেন।

এবারে এই অস্ত্রোপচারের পরে স্যালি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফ্যাকাল্টিতে তার ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দিতে গেলে মেডিকেল অনুষদের ডীন তাকে পুরুষদের সাথে পরীক্ষায় বসতে দিতে অস্বীকৃতি জানান। 

একই সময়ে, ডীন তাকে মহিলাদের সাথে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতেও অস্বীকার করেন। 

 আল-আজহারের ম্যাডিকেল অনুষদের ডীন স্যালিকে তার নতুন লিঙ্গ এবং নতুন নামের আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছাড়া কোনধরণের পরীক্ষায়  বসতে দেবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন।

স্যালি এরপর আল-আজহারের এডমিনিস্ট্রেশন অফ সিভিল ম্যাটারস (মাসলাহাত আল-আহওয়াল আল-মাদানিয়া) এর কাছে তার নাম সাইয়্যিদ থেকে স্যালিতে পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন।

ঘটনা জটিল হতে শুরু করে।

দুই.

ঘটনাটায় ঝামেলা শুরু হয় এরপর থেকে। এডমিন থেকে স্যালির এই সার্জারির খবর জানাজানি হয়ে যায়। সারা দেশে বিষয়টা নিয়ে আলাপ শুরু হয়।

 ইজিপ্সিয়ান দৈনিক আল-আহরামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্যালি দাবী করেন সার্জারির পরে তো বটেই এই সার্জারির আগে থেকেই আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তার সাথে নানা বৈষম্যমূলক আচরণ করছিলো।  

পত্রিকায় স্যালির এই মন্তব্য ছাপা হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্যালির এই সার্জারির মাস দুইয়ের আগেই তার এই সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলো। 

এবং সেই কমিটি সাইয়্যিদকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে সাইয়্যিদ বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে শতভাগ পুরুষ।

তিন.

ঘটনা বড় হয়ে গেলে রাষ্ট্রীয় ডাক্তারেরা এই ঘটনার সাথে জুড়ে যান।

এই অপারেশন নিয়ে জনরোষ আর উত্তেজনা সৃষ্টি হলে গিজা শহরের ডাক্তারদের সিন্ডিকেট তাদের নেতা হুসাম আদ-দীন খতিবের নেতৃত্বে আরেকটি তদন্ত কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেয়। 

এই তদন্ত কমিটি স্যালির অপারেশনকারি সার্জন ইজ্জাত আশম আল্লাহ জিবরাইল, অপারেশনের অ্যানেস্থেটিস্ট, রামজি মিশেল জাদ এবং সাইয়্যিদের মনোবিজ্ঞানীর সাথে আলোচনা করে।

আলোচনার পরে  ডাক্তারদের সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্তে আসেন যে,  সার্জন আশম আল্লাহ জিবরাইল কোন 'গুরুতর শারীরিক ত্রুটি' না থাকার পরেও সাইয়িদের শরীরের ওপর এই অপারেশনটি করেছেন। 

চার.

এরপর ১৯৮৮ সালের ১৪ মে এই ডাক্তারদের সিন্ডিকেট প্রজাতন্ত্রের গ্র্যান্ড মুফতি সাইয়্যিদ তানতাভির কাছে এই বিষয়ে একটি ফতোয়া চেয়ে  চিঠি পাঠায়।

গ্র্যান্ড মুফতি সাইয়্যিদ তানতাভির এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত একটি ফতোয়া দেন। তিনি তাঁর ফতোয়ায় বলেন:

"যদি ডাক্তার সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন যে এই অপারেশনটি এই রোগের নিরাময়ের জন্য করা হচ্ছে, তাহলে এই চিকিৎসা জায়েজ আছে। এবং এতে রোগীর কোন দোষ নেই।"

এই ফতোয়াতেও সমস্যার সমাধান না হয়ে আরও ঘোলা হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। 

কারণ এই ফতোয়া ইসলামিক আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে মনস্তাত্ত্বিক হারমাফ্রোডিটিজমকে ডাক্তার রোগ হিসেবে শনাক্ত করতে পারে কি-না সে প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে। 

ফলে অপারেশনের বিরোধীরা এটিকে তাদের সমর্থনের ফতোয়া হিসাবে ব্যাখ্যা করতে থাকে,  কারণ এই ফতোয়ায় রোগীর ইচ্ছায় লিঙ্গ পরিবর্তনের অপারেশনেরের বৈধতাকে বাতিল করে। ফলে কেউ  'বেলাল্লাপনা' করার সুযোগ পাবে না। ইচ্ছে হলেই লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারবে না।

 অন্যদিকে, স্যালিও এই ফতোয়াকে তাদের পক্ষে গিয়েছে বলে দাবী করেন।  কারণ তার সার্জারি একজন মেডিকেল ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করেই করা হয়েছিলো। তিনিও শখ করে নারী সাজতে চাননি।

পাঁচ.

এবারে মঞ্চে আসে মিশরের আদালত।

 ১৯৮৮ সালের ১২ জুন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় এই বিবাদটি দেশের আদালতে নিয়ে যায়। 

গ্র্যান্ড মুফতির ফতোয়ার ভিত্তিতে  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবার দাবি করে: 

'রোগীর দোষ না থাকলেও- যেই সার্জন এই অপারেশনটি করেছে তিনি এই পেশেন্টকে স্থায়িভাবে অসুস্থ করে ফেলার অপরাধে দোষী। মিশরের পেনাল কোডের ২৪০ ধারা অনুসারে এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।" 

আদালত একজন পাবলিক প্রসিকিউটরকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য নিয়োগ দেন। আন-নিয়াবা আল-আম্মারের নেতৃত্বে তদন্তদল কাজ শুরু করে। 

পাবলিক প্রসিকিউটর একজন মেডিকেল প্রফেশনাল অধ্যাপক  ফাখরি সালিহকে ঘটনার তদন্তে যুক্ত করে এই প্রসঙ্গে একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাবী করে রিপোর্ট করতে বলেন। 

এরপর অধ্যাপক ফাখরি সালিহ এই বিষয়ের সমস্ত প্রাসঙ্গিক সায়েন্টেফিক লিটারেচার তদন্তকারি প্রসিকিউটরের সামনে হাজির করেন। 

এরপর এই তদন্তদল দেশের মেডিকেল এবং সাইকোলজিস্টদের  সাথে দীর্ঘ আলোচনা করে আদালতকে বলেন: 

"প্রফেশনালেরা সম্পূর্ণ একমত যে শারীরিক দৃষ্টিকোণ থেকে, সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ একজন পুরুষ ছিলেন, কিন্তু মনস্তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে তিনি কোনভাবেই একজন পুরুষ ছিলেন না।"

তদন্তে দেখা যায়  সাইয়্যেদর মনস্তাত্ত্বিক হারমাফ্রোডিটিজম নির্ণয়কারী সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা সঠিক ছিলো এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়েছিলো সঠিক ভাবেই।

এবং  এটিও সঠিক যে বয়ঃসন্ধির পরে যদি এই সমস্যা নির্ণয় করা হয় তাহলে তা কেবলমাত্র অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য।

তদন্তে দেখা যায় স্যালির সার্জন  আশম আল্লাহ জিবরাইল তার পেশার সমস্ত নিয়মকানুন সঠিকভাবেই মেনে চলছিলেন, সার্জারির আগে এই বিষয় নিয়ে দেশের এবং বিদেশের একাধিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েছিলেন এবং অপারেশনটি সঠিকভাবে সম্পাদন করেছিলেন। 

সার্জন আশম আল্লাহ জিবরাইল রোগীর কোন স্থায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি। 

প্রসিকিউটর এবং তদন্তদল একই বছরের সেপ্টেম্বরে স্যালিকে সরাসরি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেন এবং সাক্ষ্য ও দলিলে পাওয়া সব তথ্যের সত্যতা খুঁজে পান।

ছয়.

কিন্তু গিজা শহরের ডাক্তারদের ঐ সিন্ডিকেট এই মেডিক্যাল বোর্ডের ফলাফল গ্রহণ করেতে অস্বীকৃতি জানায়।

তারা আগের মতোই দাবী করতে থাকেন সাইয়্যিদের এই সার্জারি মিশরীয় সমাজের নীতি, মূল্যবোধ, নৈতিকতা এবং ধর্মের উপর আক্রমণ। 

এরপর এই সিন্ডিকেট স্যালির সার্জন ইজ্জাত আশম আল্লাহ জিবরাইলের সদস্যপদ বাতিল করে, আর এনেস্থেসিস্ট রামজি মিশেল জাদকে এই অপারেশনে অংশগ্রহণ করার জন্য তিনশ ইজিপ্সিয়ান পাউন্ড জরিমানা করে।

সাত.

কিন্তু আদালতের রায় আসে স্যালির পক্ষে। 

২৯ ডিসেম্বর ১৯৮৮, আদালত সার্জন আশম আল্লাহ জিবরাইলকে স্থায়ীভাবে এই অভিযোগ থেকে খালাস দেন।

পাবলিক প্রসিকিটর  তার দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলেন, এই অপারেশনটি সঠিকভাবেই সম্পাদিত হয়েছে। 

১৯৮৯ সালের অক্টোবরে মিশরের আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয় এবং এক মাস পর নভেম্বরে স্যালি আদালতের কাছ থেকে নারী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।  

এই আইনি লড়াই মিশর সহ ইসলামি দেশগুলোতে ট্রান্সজেন্ডার আন্দোলনের এক মাইলফলক মামলা হিসেবে পরিচিতি পায়। 

আল-আজহার এই পুরো বিষয়টিকে একনলেজ করে এবং স্যালি তার ছাত্রত্ব ফিরে পান।

আট.

বারবার একটা কথা বলি, ডিফরেন্ট ন্যারেটিভ নিয়ে আমাদের আলাপ করতে হবে। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে নিজেদের বোঝাপড়ার জায়গা নির্মাণ করতে পারতে হবে। 

 জেন্ডার সেনসিটিভ ইস্যু দুনিয়াতে আজকেই প্রথম আসে নাই। পাঠ্যবই ছিঁড়ে ফেলা কিংবা সমকামি পিটিয়ে মেরে ফেলার ভেতরে এই সমস্যার সমাধান নাই। বরং সমাজ, ধর্ম আর বিজ্ঞানকে এক করে কিভাবে সমন্বিত উপায়ে ভিন্ন রকম মানুষদের একটা কল্যাণকামী মমতার রাষ্ট্র নির্মাণের সাথে আরও বেশি মাত্রায় যুক্ত করা যায় সেই প্রচেষ্টায় আমরা যতো ব্রত হবো, যতো সচেষ্ট হবো, তত এইসব সংকটের মীমাংসা সহজ হবে। 

আপনি খেয়াল করলে দেখবেন ইসলামে বহুত্বকে এম্ব্রেস করার উদারতম প্রতিনিধির নাম আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। সঙ্গীত, চিত্রকলা, ভাস্কর্য নির্মাণ, ভিন্ন বিশ্বাসিদের সাথে ব্যাবহার থেকে শুরু করে লৈঙ্গিক বিচিত্রের মতো বিষয় নিয়ে পুরো ইসলামি এরেনায় সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নাম আল-আজহার। স্যালির ঘটনার মিমাংসার পর আল-আজহার ক্যাম্পাসে লিঙ্গ সংক্রান্ত এমন জটিলতা আর দেখা যায়নি।

আমার পরামর্শ হচ্ছে উন্মাদনা নয়- সময়, সবর, স্কলারলি এটিচিউড এবং বহুত্বকে এম্ব্রেস করার মানসিকতা এইসবকয়টা জিনিসকে একত্র করে আমরাও যদি চেষ্টা করি তাহলে আমরাও পারবো।


আরও খবর

আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫




বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়সহ বাংলাদেশ ও ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন।

এছাড়া বৈঠকে বর্তমান বিশ্বের ভূরাজনৈতিক নানা ইস্যুও ভারতীয় ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় স্থান পেয়েছে।  ৬ মার্চ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাজ্যে সরকারি সফরে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। দুই মন্ত্রী ইউক্রেন, বাংলাদেশ, পশ্চিম এশিয়া এবং কমনওয়েলথ নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জয়শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ বলেছেন।

অবশ্য বাংলাদেশ বিষয়ে তারা ঠিক কী আলোচনা করেছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জয়শঙ্কর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া ওই পোস্টে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ইউক্রেন ইস্যু, পশ্চিম এশিয়া, বাংলাদেশ, কমনওয়েলথসহ নানা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছি। অনিশ্চিত ও অস্থির বিশ্বে ভারত-যুক্তরাজ্য স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথে অবদান রাখছে।

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। গত বছরের আগস্টে পদচ্যুত হয়ে ভারতে পালানোর পর হাসিনাকে ঘিরে কিছু জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছিল।

শোনা গিয়েছিল, হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য তাকে আশ্রয় দেয়নি। ইউরোপের এই দেশটি সেসময় বলেছিল, এই পরিস্থিতিতে কাউকে আশ্রয় দেওয়ার কোনও আইনি ব্যবস্থা তাদের নেই।

এছাড়া শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ বের হয়ে আসছে এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের একজন ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নী।

বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর গত জানুয়ারি মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। মূলত টিউলিপ ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং পদত্যাগের আগে তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।

অবশ্য লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে।

এসবের মধ্যেই দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টিও টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল।


আরও খবর

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরতে চায়

শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫




লেবু-শসার দামে আগুন, বেগুনেও অস্বস্তি

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

পবিত্র রমজানে ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ লেবু ও শসা। রোজা শুরুর একদিন আগে থেকে ইফতারের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান লেবু চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। শুধু লেবু নয় শসার বাজারেও আগুন। বেড়েছে বেগুনের দামও। এগুলো দেখারও যেন কেউ নেই।রাজধানীর শাহজাহানপুর ও খিলগাঁও কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামীকাল শনিবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগেই বাজারে প্রায় সকল পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতি বছরের মতো লেবু, শসা এবং বেগুনের দাম বেড়ে গেছে।

বাজারে এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকায়। দেড় সপ্তাহ আগেও লেবুর সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ৪০ টাকা। সে সময় ২০ টাকাতেও এক হালি লেবু কেনা গেছে। এখন ৬০ টাকার নিচে মিলছে না। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক হালি এলাচি লেবু ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিলেটের শরবতি লেবুর দাম এক হালি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। অন্যদিকে কাগজি লেবু এক হালি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রোজায় ইফতারির অন্যতম উপকরণ হলো শসা। বাজারে এখন ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে শসা। যা আগে ছিল ৫০ টাকা।

এদিকে বেগুনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে এবং গোল বেগুন ৮০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে।

শুধু ক্রেতারাই নয়, খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন লেবুর হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক। রোজায় শরবত তৈরির জন্য লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। এটাকেই সুযোগ হিসেবে নিয়ে সরবরাহকারীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এখন লেবুর মৌসুম নয় বলে দাম বাড়তি থাকা স্বাভাবিক। তবে যতটা বেড়েছে তা স্বাভাবিক নয়।

লেবু এবং শসা ক্রয় করেছেন খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, প্রতিবছর রোজার মাস আসলেই অধিকাংশ পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লেবু এবং শসা। এভাবে দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। রমজান মাসের আগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে এভাবে প্রতিবছর ইফতারের আনুষঙ্গিক পণ্যগুলোর দাম বৃদ্ধি করে থাকে। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই।

সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, আড়তে গিয়ে লেবু পাওয়া যাচ্ছে না। আড়ত থেকে লেবু আনার জন্য যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এক মাস পূর্বেও যে দাম ছিল এখন তার দ্বিগুণ হয়েছে। সকালে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ ক্রেতা দাম জিজ্ঞেস করেছেন, কিন্তু দাম শুনে কেউ নিতে সাহস করছে না। এ পর্যন্ত দুই থেকে তিনজনের কাছে বিক্রি করেছি। আমাদের তো এখানে কিছুই করার নেই। অতিরিক্ত দাম দিয়ে আমাদের কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।


আরও খবর



গেন্ডারিয়া থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

নিজস্ব সংবাদদাতা:  

মামলার ঘটনা অত্র থানাধীন ফজলুল হক মহিলা কলেজে রেলওয়ে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থী কর্তৃক ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষায়  অসৎ উপায় অবলম্বন করা দুজনকে গ্রেফতার করেছে গেন্ডারিয়া থানা পুলিশ ।

এই মামলার এজাহারভুক্ত গ্রেপ্তারকৃত আসামী ১জন। আসামীর নিকট থেকে একটি ইলেকট্রনিকস ডিভাইস উদ্ধার করা হয় এবং আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী আরেকজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই আসামির নিকট থেকেও আরেকটি সেইম ডিভাইস উদ্ধার করা হয় এবং তার মোবাইল থেকে  AAAA নামে একটি whatsapp group এর সন্ধান পাওয়া যায়। যার মেম্বার সংখ্যা ৭ জন। উক্ত AAAA নামের Whatsapp group এর  Admin রাশিদুল আলম পিং জাফর সরকার, সাং তাম্বুলপুর, পীরগাছা, রংপুর| 

গেন্ডারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মনজুরুল হাসান মাসুদ, এসআই/মোঃ তৌফিক আনাম, এএসআই/মাসুদুর রহমান সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সের সহায়তায় মতিঝিল দিলকুশা এলাকা হইতে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল হোতা ধৃত আসামী  মোঃ রাশেদুল আলম (৪০), পিতা- মোঃ আবু জাফর সরকার, মাতা- মোছাঃ রোকেয়া বেগম, স্থায়ী ঠিকানা-গ্রাম- অজ্ঞাত । (সাং-তাব্বুলপুর) , উপজেলা/থানা- পীরগাছা, জেলা -রংপুর, বাংলাদেশ, বর্তমান ঠিকানা-(সাং- ৩৭/১ সাইকি ভবন বসুন্ধরাগলি, মিরপুর রোড) , উপজেলা/থানা- নিউমার্কেট, জেলা -ঢাকা, বাংলাদেশ এবং তার সহযোগী ও মোস্তাফিজুর রহমান (২৬), পিতা- মোঃ সাইদুর রহমান, মাতা- মোছাঃ লিপি বেগম, স্থায়ী ঠিকানা-গ্রাম- ভরত খালী, উপজেলা/থানা- সাঘাটা, জেলা –গাইবান্ধাকে ইং-২৮/০২/২০২৫ তারিখ আটক করেন এবং উক্ত আসামীর বিরুদ্ধে গেন্ডারিয়া থানার ,এফআইআর নং-১৯, তারিখ- ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪; জি আর নং-৪১, তারিখ- ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪; সময়- ১৬.৩০ ঘটিকা ধারা- ২৩ সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩; তৎসহ 9(b) The Public Examinations (Offences) Act, 1980 বিবাদীদ্বয়কে ইং-২৮/০২/২০২৫খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।


আরও খবর

তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী

সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫




দমনপীড়নে অংশ না নিতে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় দমনপীড়নে অংশ না নিতে জাতিসংঘ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।, তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দমনের পথে গেলে শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অংশগ্রহণ বন্ধের সতর্ক বার্তা দিয়েছিল জাতিসংঘ।

সম্প্রতি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের হার্ডটক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (৫ মার্চ) বিবিসির ওয়েবসাইটে অনুষ্ঠানের এই পর্ব প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে গাজা, সুদান, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘকে ক্ষমতাহীন মনে হচ্ছে বলে জানান বিবিসির উপস্থাপক স্টিফেন সাকার। জবাবে উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করেন ভলকার তুর্ক।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, জুলাই-আগস্টে ব্যাপক আন্দোলন করেছিল শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনার সরকার দমনপীড়ন চালিয়েছিল। তাদের (ছাত্ররা) জন্য বড় আশার জায়গা ছিল আসলে আমরা কী বলি, আমি কী বলি, আমরা কী করতে পারি এবং আমরা ওই পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করি।

‘আমরা সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিলাম, যদি তারা জড়িয়ে পড়ে তাহলে আর শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী হিসেবে থাকতে পারবে না। ফলে আমরা পরিবর্তনটা দেখতে পেলাম। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের দায়িত্ব নিলেন। ফলে স্পটলাইটে কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা আমরা এখানে দেখলাম।’ বলেন ভলকার তুর্ক।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এই হাইকমিশনার বলেন, অধ্যাপক ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিলেন, তিনি আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে বললেন, আপনি কি একটি তথ্যানুসন্ধানী দল পাঠাতে পারেন, পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব দিতে পারেন এবং সেখানে যা ঘটছি, তা তদন্ত করতে বললেন। আমরা এগুলোই করেছিলাম। এবং এটা কার্যত সাহায্য করেছিল।

ভলকার তুর্ক আরও বলেন, আমি গত বছর বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমরা একটি অবস্থান নেওয়ায়, আমরা কথা বলায় এবং তাদেরকে সহযোগিতা করায় ছাত্ররা আমাদের প্রতি খুব কৃতজ্ঞ ছিল।

২০২৪ সালের জুলাইতে শুরু হওয়া সরকারি কোটা সংস্কারের আন্দোলন সংহিসতার জেরে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলন ঠেকাতে ব্যাপক দমন পীড়ন চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। তীব্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

জুলাই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দল অনুসন্ধান চালায়। ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই তথ্যানুসন্ধানের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা সংগঠিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেফতার, নির্যাতন ও অতিরিক্ত বল প্রয়োগের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন, বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত ছিলেন বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছিল।

বুধবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টার পর জেনেভায় বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ভলকার তুর্ক।

সেখানে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ দমাতে শেখ হাসিনাসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিলেন বলে জানান তিনি।


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




১ মার্চ প্রথম রোজা হলে

৩৩ বছর পর ঘটতে যাচ্ছে ‘বিরল’ ঘটনা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যায় আকাশে নতুন চাঁদের দেখা মিললে পরের দিন শনিবার (১ মার্চ) সেসব দেশে পালিত হবে প্রথম রোজা।

আর এমনটি হলেই মধ্যপ্রাচ্য ও ইসলামিক বিশ্বের কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ করবেন- চন্দ্র ও সৌর মাস একসঙ্গে শুরু হওয়ার ‘বিরল’ ঘটনা। যেটি প্রতি ৩৩ বছর পর পর মাত্র একবার ঘটে থাকে। মানে এবার আরবি বর্ষপঞ্জিকার রমজান মাসের প্রথমদিন আর ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার মার্চ মাসের প্রথমদিন একই দিনে হবে। অর্থাৎ দুটি পঞ্জিকার নতুন মাসের প্রথম দিনটি একসঙ্গে শুরু হবে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

সৌদির জেদ্দার জ্যোতির্বিদ্যা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মাজেদ আবু জাহরা বলেছেন, 'এটি এমন একটি ঘটনা যেটি প্রত্যেক ৩৩ বছর পর একবার হয়। এটি যে কোনো মাসেই হতে পারে।' তিনি আরও বলেছেন, 'সৌর ও চন্দ্রচক্রের মধ্যে যে জটিল পারস্পরিক ক্রিয়া রয়েছে এটি তারই একটি স্বাক্ষ্য।

সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর ঘূর্ণনের হিসাব করে সৌর বর্ষপঞ্জিকার দিন গণনা করা হয়। এতে লিপ ইয়ারের (অধিবর্ষ) বছরটি হয় ৩৬৬ দিনের। আর সাধারণ বছরগুলো হয় ৩৬৫ দিনের। কিন্তু চন্দ্রবর্ষপঞ্জিকা গণনা করা হয় চাঁদের পর্যায় অথবা চন্দ্রচক্রের ভিত্তিতে। আর এ কারণে রমজান মাস প্রতি বছর ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার ভিন্ন ভিন্ন দিন এবং মাসে শুরু হয়।


আরও খবর

রোজা রাখার বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলে?

শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫