ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ঈমানী দায়ভার থেকে এই সমাবেশ। বাংলাদেশে করুন অবস্থায় যারা নিজেদের অর্থ সময় শ্রম দিয়ে এখানে এসেছে তাতে আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই। ইসলামী ছাত্র ও যুব আন্দোলন অন্যায় দূরীভূত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য। বর্তমানে বাংলাদেশকে মানুষের দেশ বলা যায় না। দেশের যেদিকে তাকাই সেদিকেই সমস্যা। যারা দিনের ভোট রাতে করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে মানুষকে মানুষ হিসেবে গন্য করছে না। প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বলছি এই দেশ আমার। অনেক ত্যাগ কুরবানির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন দিল্লি আছে তো আমরা আছি বলে দেয়া বক্তব্য প্রশ্ন আসে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বীকার করে কিনা। সরকার দেশে উন্নয়নের কথা বলে সঠিক নির্বাচন আয়োজনে ভয় পান কেন? বাংলাদেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে উন্নয় হয়েছে, সরকারের বাবার টাকায় নয়। এ অবস্থায় আমরা বসে থাকলে চলবে না।
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে চলতি সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (চজ) পদ্ধতির প্রবর্তন ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবীতে আগামী ২৭ অক্টোবর শুক্রবার : সারাদেশে জেলা ও মহানগরে
বিক্ষোভ মিছিল এবং ৩ নভেম্বর শুক্রবার : ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, ৩ নভেম্বর বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ। তারা কিভাবে ক্ষমতায় থাকতে নানা ছল চাতুরী করে যাচ্ছে। সংবিধান দেশের জনগণের জন্য কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকারকে ক্ষমতায় রাখার জন্য নয়। আওয়ামীলীগের যারা ঔদ্ধত্য বক্তব্য রাখেন তাদের কথায় মনে হয় দেশ তাদের। কিন্তু এই দেশ পীর আউলিয়ার। আওয়ামী লীগের সাথে সন্ত্রাসী ছাড়া কোন জনগন নেই। আগামী নির্বাচন আপনাদের অধীনে নয় জাতীয় সরকারের অধীনে হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু ছেড়ে বসে থাকবে বলছেন কেন? তিনি ১৫ বছরে রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেন নি? তবে তিনি একথা বলেন কেন? সরকার যদি ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ না করে ক্ষমতায় থাকতে চান তবে আমরা কঠিন থেকে কঠিন কর্মসূচি পালন করবো। আগামী দিনে হাতপাখা কে ক্ষমতায় আনতে পাড়া, মহল্লায় জনগনকে ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, ভোটের ও ন্যায্য অধিকার আদায় করে মান সম্মান ইজ্জত রক্ষায় সমাবেশে উপস্থিত হয়েছি। ১৪ সালের নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন ছিলো। ১৮ র নির্বাচন ডাকাতের নির্বাচন ছিলো। উন্নয়নের নামে তারা মেঘা, চুরি, ডাকাতি খুন করেছে। আবরারকে খুন করেছে। দেশকে লুটপাট করার ষড়যন্ত্র করেছে। আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করবো। ফিলিস্তিনীরা অধিকার আদায় করার জন্য বুলেটের সামনে ঝাপিয়ে পড়তে পারে তবে অধিকার আদায় করার জন্য আমরাও ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছি। যখন আন্দোলনের আহবান আসবে তখনি আমাদেরকে আন্দোলনের ময়দানে নামতে হবে। বিশ্রামের কোম সময় নেই।
আগামী নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হবে না। আগামী নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন হতে দিবো না। দিল্লির গোলামী আমরা মানবো না।
প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী বলেন, যে কোন ত্যাগ ও কুরবানির মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। ক্ষমতাকে ধরে রেখে দিনের ভোট রাতে করেছে। দিল্লির ভয় দেখিয়ে দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। এই সরকারের পতন না ঘটানো পর্যন্ত ছাত্র যুবকদেরকে ময়দানে থাকতে হবে।
মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইজরায়েলের হামলায় নিহতদের শাহাদাৎ কামনা করছি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষ পেটনীতি করে না তারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। শিক্ষা সিলেবাসে নাস্তিকদের শিক্ষা প্রচন করা হয়েছে। ইসলাম দেশ ও মানবতার কল্যানে কাজ করার জন্য সরকারকে আহবান জানান।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, মানুষের জীবন চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ছাত্ররা যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে তখন অন্য একটি ছাত্র সংগঠন লুটপাট,দুর্নীতি ও লুটপাট করে অর্থ পাচার করছে। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে না দিলে এই সরকারের উন্নয়ন মানুষ গ্রহন করবে না। অন্যান্য দেশে উন্নয়নে যে টাকা ব্যায় হয় শেখ হাসিনার আমলে ৩/৪ গুন টাকা ব্যায় হচ্ছে। এই টাকা কোথায় কিভাবে ব্যায় হয়েছে তা জনগন জানতে চায়। ভবিষ্যতে যাতে আর এক দফার আন্দোলন করতে না হয় সেজন্য স্থায়ী ব্যাবস্থা করতে হবে।
প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ডিসি টিএনও দেরজন্য নতুন গাড়ী কেনার অর্থ কি তাদেরকে প্রলোভন দেয়া নয়? ১৩ থেকে ১৫ লক্ষ ভারতীয়রা কাজ করছে কিন্তু আমার দেশের যুবকরা বেকার কেন?
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যে কোন সময়ে বিস্ফোরণ ঘটবে। বাংলাদেশের মানুষ অবৈধ সরকার ও অবৈধ সংসদ দেখতে চায়না। তারা জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। পীর সাহেব চরমোনাই জালিম সরকারকে নিরাপদে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইছেন। ওবায়দুল কাদের এর কথা অনুযায়ী ১৪, ১৮ র মতো এবারো সংবিধানের দোহাই দিয়ে মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করতে চায়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ক্ষমতাকে ব্যাবহার না করে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে জালিম সরকারের পতন ঘটাতে চাই। প্রত্যেকটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। এই রাষ্ট্রকে মেরামত করতে হবে।
এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে ভোট দেয়া যাবে না। ভোট দিতে হলে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ এর উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ চত্বরে, বেলা ১১ ঘটিকা থেকে শুরু হওয়া ছাত্র ও যুব সমাবেশ এ অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন