টানা কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও সারাদেশ আতঙ্ক তৈরি করেছে ডেঙ্গু। মহামারি করোনাভাইরাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমান তালে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এডিস মশাবাহিত রোগটি, সেই সঙ্গে ঘটচ্ছে প্রাণহানিও। শুরুতে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বছরের মাঝামাঝিতে এসে ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে ভাইরাসঘটিত রোগটির। স্থানীয় সরকার, সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টাতেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।
রাজধানী ঢাকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের শতকরা ৭৫ ভাগের বেশি রোগী ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। আর বাকি রোগীরা ঢাকা মহানগরের বাইরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে মৃত্যুর ঘটনায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। রোগীর সংখ্যা ঢাকা মহানগরের মোট তিন ভাগের একভাগ হলেও মৃত্যুর দিক থেকে এগিয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস বিভাগের তথ্যমতে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১৮ হাজার ৬৪৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানী ঢাকার ৫০টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ হাজার ১২৯ জন এবং ঢাকার বাইরে চার হাজার ৫১৭ জন। এদিকে, মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩১ জন ঢাকায় এবং ৩২ জন দেশের অন্যান্য স্থানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আক্রান্ত মৃত্যুর তথ্য মাসভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছরে জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১২৬ জন, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ২০, এপ্রিলে ২৩ এবং মে মাসে ১৬৩ জন রোগী। প্রথম পাঁচ মাসে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে জুন মাসে হঠাৎ করেই ডেঙ্গু চিত্রে পরিবর্তন আসে। এ মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৭৩৭ জন, আর মারা যায় একজন। জুলাই মাসে ভর্তি হয় এক হাজার ৫৭১ জন, আগস্টে তিন হাজার ৫২১ জন, সেপ্টেম্বরে নয় হাজার ৯১১ জন এবং অক্টোবরের ৫ তারিখ পর্যন্ত দুই হাজার ৫৫৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।